Search

Saturday, July 5, 2025

আস্কারা এবং এর অকল্পনীয় ফল!

লেখক: Kamrul Hassan Mamun

(https://www.facebook.com/share/16jaJmFZ4f/) [লেখকের লিখিত অনুমতিক্রমে প্রকাশিত]

"চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পদোন্নতির জন্য সাক্ষাৎকার দিতে আসা শিক্ষককে বরখাস্তের দাবিতে একদল শিক্ষার্থী ভিসির রুমে ঢুকে যায় এবং সেখানে যেভাবে হট্টগোল করেছে তা অকল্পনীয়!

একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অফিসে কি এমন মব হতে পারে? সেখানে ছাত্ররা ঢুকে গিয়ে এইরকম আচরণ করতে পারে? কোন অজুহাত বা কোন কারণে কি এমন হতে পারে? অথচ এটি দেশের চারটি পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি! 

ওখানে ভিসি প্রফেসর ইয়াহিয়াকে আংগুল উচিয়ে একজন শিক্ষার্থী বলেছে:

"স্যার আপনাকে আমরা বসাইছি, আপনি নিজের যোগ্যতায় এখানে আসেননি"!

কী সাংঘাতিক কথা! সেই ভিসি তো, আর এক মুহূর্তও সেই পদে থাকেন কি করে? উনার পদত্যাগে একটা 'ক্যাসকেডিং ইফেক্ট' হতে পারে যার মধ্যে দিয়ে আরেকটা ভালো কাজের সূচনা হতে পারে। ব্যক্তিগত ভাবে আমি উনাকে যতটা জানি উনি একজন ভালো মানুষ। কিন্তু এই দেশের কোন ভালো মানুষই সম্মান পান না। আজকে তিনি যদি খারাপ বা ততোধিক খারাপ হতেন ওঁর চারপাশে শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে যারা গুন্ডাপান্ডা প্রকৃতির, তারা তাঁকে ঘিরে রাখতো। 

আসলে আমাদের বড় পদে যাওয়া মানুষজন পদত্যাগ করতে জানেন না। যত অপমান-অপবাদই আসুক ততক্ষন পর্যন্ত পদ আগলে রাখে যতক্ষণ না পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া না হয়। কখন পদত্যাগ করতে হয় এইটা না জানাটা অযোগ্যতার লক্ষণ

ইনফ্যাক্ট ৫ আগস্টের পর দেশের অধিকাংশ পদে যারাই বসেছেন তাদের সবার পদ পাওয়াকে শিক্ষার্থীরা মনে করে তারা বসিয়েছেন। আসলে শিক্ষার্থীরা মনে করে স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টাকেও তারা বসিয়েছে এবং যেটা প্রধান উপদেষ্টা প্রথম থেকেই বলে আসছেন। কথা তো ঠিক। আজকে চারিদিকে যে অরাজকতা দেখছেন এইসব সেই আস্কারার ফলাফল।

প্রধান উপদেষ্টা সেদিন যদি শিক্ষার্থীদের বলতেন:

"তোমরা তোমাদের কাজ করেছ। এখন আমাদেরকে আমাদের কাজ করতে দাও আর তোমরা তোমাদের কাজে ফিরে যাও।'

উনি সেটা না-করে উল্টো তাদেরকে আরও বেশি করে আস্কারা দিয়ে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তুলেছেন। যার ফল বর্তমান বাংলাদেশের যত অরাজকতা। 

প্রথম আলোর রিপোর্ট বলছে 'একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা হাবিবুল্লাহ খালেদ উচ্চ স্বরে কথা বলছে। তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যরাও হইচই করছে। তাঁদের সামনে শিক্ষক কুশল বরণ চক্রবর্তী। উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াহইয়া আখতার, সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় উপাচার্যকে নির্লিপ্তভাবে চেয়ারে বসে থাকতে দেখা গেছে'।

আওয়ামী বুদ্ধিজীবীদের দ্বারা তৈরী করা ন্যারেটিভকে এই শিক্ষার্থীরাই সত্য প্রমান করছে। যা আরও দুঃখজনক। 

সেই ভিডিওটি আমিও দেখেছি। শিক্ষার্থীদের যে আচরণ দেখলাম তা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হতে পারে না। কোন কারণে বা কোন অজুহাতেই হতে পারে না। আর সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অফিসের ভেতরে? কল্পনা করতে পারেন? এই শিক্ষার্থীরা যখন বিসিএস সরকারি চাকুরী পাবে, তখন সে কি করবে? বা এমপি মন্ত্রী হলে কি করবে?

আসলে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আমাদের শিক্ষার্থীরা সকল কু-কর্মগুলো শেখে তারপর বড় হয়ে চাকুরী পেয়ে চাকুরী স্থলেও এইসবই করে। এর জন্য দায়ী দলীয় ভিত্তিতে ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি। খোঁজ নিয়ে দেখেন এর পেছনের আর্কিটেক্ট হলো ছাত্র ও শিক্ষক রাজনৈতিক শাখার নেতারা। এই দেশ ভালো হবার আর কোন সম্ভবনা দেখি না।"

* লেখকের উল্লেখিত ভিডিও ক্লিপ এটি:


**লেখক: Kamrul Hassan Mamun,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের একজন সম্মানিত অধ্যাপক। কেবল এটাই তাঁর পরিচয় না। আমাদের দেশের ক্রান্তিলগ্নে, হোক শিক্ষায় বা রাজনীতিতে- শিরদাঁড়া সোজা করে অল্প যে ক'জন মানুষ ঢালের মত দাঁড়িয়েছেন, তিনি তাঁদের একজন।

Wednesday, July 2, 2025

এক যোদ্ধা: ক্যামেরার পেছনের কুশীলব!

লেখক: শাফকাত রাব্বী অনীক (https://www.facebook.com/share/1D28Vv2eDL/) [লেখকের লিখিত অনুমতিক্রমে প্রকাশিত]

"ছবিটি হচ্ছে শেখ হাসিনার পালানোর দিন, আগস্ট ৫, ২০২৪ সালের গণভবনের দুপুরের পূর্বে অপ্রকাশিত স্যাটেলাইট ইমেজ।