Search

Friday, December 31, 2010

রক্তচোষা-সুদখোর কেবল ইউনূস না, সরকারও

ড. ইউনূসকে নিয়ে আর লিখব না বলে পণ করেছিলাম [১]। কিন্তু কপালের ফের! কাল আমার একজন সুহৃদ বিরাট হইচই শুরু করলেন। তিনি হাত-পা নেড়ে, গা দুলিয়ে যা করলেন তাকে অল্প কথায় বলা চলে আমার উপর কামান থেকে আগুনের গোলা ছুঁড়ে দেয়া। আমি গুছিয়ে হয়তো দু-কলম লিখতে পারি কিন্তু কথার পিঠে কথা চালিয়ে যাওয়া আমার 'কম্মো' না। এই সব আগুনের গোলা সামলাই কেমন করে!

প্রবাসে থাকা এই মানুষটার আমার উপর বেজায় রাগ কারণ ড. ইউনূসকে নিয়ে আমি বেশ কিছু লেখা লিখেছি। এই মানুষটার মনোভাব খানিকটা আঁচ করতে পারি। দেশের বাইরে থাকলে অনেকে লালন করে থাকেন দেশের জন্য অহেতুক একগাদা আবেগ। কোন প্রকারে দেশ বা দেশের মানুষের নাম আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে চলে এলে এদের উল্লাস দেখে কে!
আমাদের আবার এই সব উল্লাস তেমনটা স্পর্শ করে না কারণ দেশে আমরা মারা যাই হররোজ। এই আমিই কি দু-নম্বুরি করছি না? কালই বাড়তি দাম দিয়ে ট্রেনের টিকেট কিনেছি কালোবাজারির কাছ থেকে। না-কিনে কোন উপায় ছিল না। এর পক্ষে যত যুক্তিই প্রদর্শন করি, অন্যায় তো অন্যায়ই। দেশে থাকলে অনিচ্ছায় অন্ধকারের সঙ্গে জড়াজড়ি করে থাকতে থাকতে আমাদের অনুভূতি হয়ে যায় ভোঁতা। একটা নিরেট অথর্ব! এতো দেশ-দেশ করার আগ্রহ কোথায় আমাদের।

আমার এই সুহৃদের স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, আমি কেবল ড. ইউনূসের দোষ কেন বারবার বলছি। অন্যদের দোষ কেন উপেক্ষা করছি? কেন-কেন-কেন?
এই হয়েছে এক যন্ত্রণা, আমি জানি না অনেকের কেন যেন এমন একটা ধারণা জন্মায় এ দেশের সমস্ত অসঙ্গতি আমার চোখ এড়াবে না। বাপু রে, আমি কী বাজপাখি! তাছাড়া একটা মানুষের একটা মাত্রই মস্তিষ্ক থাকে, আজ পর্যন্ত শুনিনি কারও দুইটা! তবে শুনতে পাই অনেকের আবার মস্তিষ্কই থাকে না। অন্যদের কথা জানা নেই অন্তত আমার নিজের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তা, এতো যন্ত্রণা না-করে কোন বিষয়টা আমার চোখ এড়িয়ে গেছে এটা বললেই হয়, তা না-করে আগুনের গোলা ছুঁড়ে ছুঁড়ে কারও গা ঝলসে দেয়াটা কোন দেশের বিচার! যাক, বিষয়টা তিনি খুলে বলেন। আমি চোখ বড়ো বড়ো করে জনান্তিকে বলি, ওয়াল্লা, তাই তো!

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, "ড. ইউনূস...দরিদ্র বিমোচনের নামে ঋণ দিয়ে গরিব মানুষের রক্ত চুষে খাওয়া হচ্ছে"...। (প্রথম আলো, ৬ ডিসেম্বর, ২০১০)
এটা প্রধানমন্ত্রীর সবেমাত্র জানলেন? তাও এক লাল চামড়া এটা নিয়ে বলার পর! আমাদের দেশের এতো সব সংস্থা তাহলে আছে কেন? আমরা আমাদের ট্যাক্সের টাকায় কেন তাহলে এই সব সংস্থার লোকজনদের লালন করছি?

আমাদের সময় পত্রিকার সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান প্রশ্ন করেন, "...গ্রামীন ব্যাংকে সরকারের মালিকানা আছে। কিন্তু কোন তথ্য পাওয়া যায় না। ..."। (প্রথম আলো, ৬ ডিসেম্বর, ২০১০)
ওহে, নাঈমুল ইসলাম খান, কোনও তথ্য পাওয়া যায় না, সত্যি? তা আপনাদের মতো দেশ কাঁপানো সাংবাদিক আছেন কী কারণে? এসি অফিসে বসে বসে তথ্যের ভান্ডারে তথ্য উপুড় করের দেয়ার জন্য বুঝি?
আর গ্রামীন ব্যাংকে সরকারের মালিকানা? বেশ-বেশ, সরকার বুঝি গ্রামীন ব্যাংকের একটা অংশের মালিকও? বাহ, তাহলে সরকার জেনেশুনে গরীবদের কাছ থেকে চড়া সুদ নিচ্ছে? হা ঈশ্বর, ড. ইউনূস রক্তচোষা হলে তাহলে দেখি সরকারও রক্তচোষা? যখন যে সরকার ক্ষমতায় ছিলেন তিনি এর দায় এড়ান কেমন করে এটা আমার মস্তিষ্কবিহীন মাথায় আসছে না!

সহায়কসূত্র:
১. ইউনূসনামা: http://www.ali-mahmed.com/2010/12/blog-post_26.html    

Thursday, December 30, 2010

এই দেশের স্টিয়ারিং যাদের হাতে

পূর্বের এক লেখায় লিখেছিলাম [১], "এটা একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ভিজিটিং কার্ড। কার্ডটার হুবহু স্ক্যান করে দিলাম। কেবল নীতিগত কারণে ফোন নাম্বার এবং ইমেইল বাদ দিয়ে। ভাঁজ করা যায় এমন দু-পাতার এই কার্ডে দেখা যাচ্ছে তিনি M.Phil এবং Ph.D এই দুইটা ডিগ্রিই ব্যবহার করেছেন। তবে আমরা এটাও জানতে পারছি Self-withdrawn after one year. 

ভাল-ভাল। তাহলে কার্ডে আমার নামের সঙ্গে আইন উপদেষ্টা এলএলবি অমুক এটা লিখতে সমস্যা কোথায়! আমিও যে কি অবশ্য ব্রাকেটে Self-withdrawn after one year. বা নিয়ার এবাউট... এটা অবশ্যই উল্লেখ থাকবে।  :)
পত্রিকায় জানা যাচ্ছে, এই ইউএনও সাহেবের দেশের বাড়ি আখাউড়ায়। তার একজন ভাই এখানকার মেয়র প্রার্থী।  ভাইয়ের পক্ষে এক জনসভায় তিনি বলেছেন, "...আমি সাভারের ইউএনও। আমার কাছে গিয়ে কেউ কোন দিন খালি হাতে ফিরে আসেনি। সমাজসেবার জন্যই ভাইকে ঢাকায় না নিয়ে আপনাদের পাশে রেখেছি..."।
বুকটা জুড়িয়ে যায় কিন্তু এই মানুষটার কাছে গিয়ে কেউ খালি হাতে ফিরে আসেনি এটা বুঝতে খানিকটা সমস্যা হয়। এর মানে কী! লোকজন ওখানে কি চাইতে যায়, আর কি-ই বা আঁজলা ভরে নিয়ে আসে? যাক, সেটা এই ইউএনও সাহেব এবং লোকজনের সমস্যা।

সম্প্রতি ইনি যেটা করেছেন তাও পত্রিকায় এসেছে [২], "আখাউড়া নির্বাচনী প্রচারণায় খোদ ইউএনও। সাংবাদিক অবরুদ্ধ, ক্যামেরা ছিনতাই"। এ নিয়ে বিস্মিত হওয়ার কিছু নাই। যার এমন একটা ভিজিটিং কার্ড তাকে নিয়ে নতুন করে বিস্মিত হওয়ার কিছু থাকে না।
কেবল আফসোস, এই দেশের চালিকাশক্তি এদের হাতে...!      

সহায়ক সূত্র:
১. বৈদেশ পর্ব...: http://www.ali-mahmed.com/2010/10/blog-post_20.html
২. দৈনিক যুগান্তর: http://ejugantor.com/2010/12/30/index.php

একজন হাফ তস্কর এবং ফুল গবেট

'রামায়ন' নিয়ে একটা সিরিজ লেখা শুরু করেছিলাম। আদিকান্ড [১] এবং অযোধ্যাকান্ড [২] লেখার পর উৎসাহ হারিয়ে ফেললাম। দাদাদের যন্ত্রণায় আগ্রহ উবে গেল। কিন্তু আজ আমি বুকে হাত দিয়ে বলি, কোন বিশেষ ধর্মকে খাটো করার কোন গোপন ইচ্ছা আমার ছিল না।

বিষয়টা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। চাপা পড়ে থাকা শবটা সামনে চলে এলো! কাজটি করেছেন অর্নব আর্ক নামের একজন। তিনি নিজের পরিচয় দেন এভাবে: "...স্নাতক সম্মান অধ্যয়নকারী ও অবিনির্মানবাদী লেখক, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।"
লেখক কারা এই নিয়ে এখনও আমার ধন্ধ কাটেনি এরিমধ্যে আবার অবিনির্মানবাদী লেখক! চিন্তার কথা, অবিনির্মানবাদী লেখক কাদের বলে কে জানে! এরা টাইপ করার জন্য কি ব্যবহার করেন এটা নিয়েও কেউ ভাবনায় তলিয়ে গেলে কাউকে দোষ দেয়া যাবে না। এরা আট লাইন টাইপ করলেই দেড়শো লাইন হয়ে যায়, হতে পারে না এমনটা, বেশ পারে।
এই অবিনির্মানবাদী লেখক অর্নব একটি ওয়েব সাইটে লিখেছেন, "রামায়নের পাতা থেকে কিছু মজার কাহিনী(পর্ব এক)

:):):):)

" [৩]এই লেখায় তিনি বলছেন: "প্রত্নতত্ত্বের অধ্যয়নকারী হিসেবে আমাদের সিলেবাসের অংশ হিসেবে অনেক কিছুই শিখতে হয়। আমরা যাই পড়ি অন্তত একটি কথা বলতে পারি ধর্মীয় গোঁড়ামি ও সংকীর্ণতার দড়ি ছিড়তে গেলে যা করা দরকার তা একরকম জানতে হয়।...।ইত্যাদি ইত্যাদি।
কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি এভাবে,
"কৃতজ্ঞতা স্বীকার :
প্রফেসর ডঃ মোঃ মোজাম্মেল হক (আমার কোর্স শিক্ষক)
আলী মাহমেদ ( একজন ব্লগার যিনি পূর্বে এই বিষয়ে লিখেছেন)।"
 


আমার নামটা এখানে এসেছে, আনন্দিত হওয়ার কথা কিন্তু মনটা বিষাদে ছেয়ে গিয়েছিল কারণ এই সুবিশাল লেখার দাঁড়ি-কমা-মন্তব্য সমস্ত কিছুই আমার পোস্ট থেকে নেয়া, অবিকল [১] [২]। এই সুবিশাল লেখায় কেবল আট লাইন আমার না। বাধ্য হয়ে আমাকে ওখানে মন্তব্য আকারে লিখতে হয়: "ডিয়ার অর্ণব আর্ক, এই দীর্ঘ লেখায় উপরের আট লাইন এবং ইমোটিকন ব্যতীত একটা বাক্যও আপনার না। এই আট লাইনের মধ্যে কোনটা প্রফেসর ডঃ মোঃ মোজাম্মেল হক (আমার কোর্স শিক্ষক)-এর এবং কোনটা মোঃ আদনান আরিফ সালিম অর্ণব, স্নাতক সম্মান, অধ্যয়নকারী ও অবিনির্মানবাদী লেখক, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়-এর? দয়া করে যদি একটু জানাতেন তাহলে কৃতজ্ঞতা।" 

এর উত্তর পাওয়া যায়নি কিন্তু এটাও আমার জানা হয়ে উঠেনি, আমার বিনা অনুমতিতে আমার লেখা থেকে প্রায় দেড়শো লাইনের এই লেখায় উপরে কেবল আট লাইন জুড়ে দিয়ে কৃতজ্ঞতা স্বীকার কিনা উনার কোর্স শিক্ষক প্রফেসর ডঃ মোঃ মোজাম্মেল হক এবং উনি নিজে! আর প্রতিটা লাইন, প্রতিটা শব্দ আমার লেখা থেকে নিয়ে কেবল এটুকু লিখে দিলেই দায় শেষ হয়ে যায়? আমার সাইটে গোটা গোটা অক্ষরে লিখে  রেখেছি, "আমার বিনা অনুমতিতে কোন লেখা কোথাও প্রকাশ করা যাবে না"। তারপরও মানুষটা আমার নাম উল্লেখ করেছেন বলে অর্ণব আর্ক নামের মানুষটাকে তস্কর-চোর বলি কেমন করে? যে কোন প্রকারে আমার নামটা তো উল্লেখ করেছেন। আহা, কী একটা ধরন, "আলী মাহমেদ (একজন ব্লগার যিনি পূর্বে এই বিষয়ে লিখেছেন)"। উই মা, আমি ধন্য। জেনে ভাল লাগছে আমি এটা নিয়ে পূর্বে লিখেছি এবং আমি যে একজন ব্লগার, এই স্বীকৃতি পেয়ে।

কেবল এই লেখাটি হুবহু অন্য সাইটে পাবলিশ করা হয়েছে বলেই না, আমি ক্রুদ্ধ অন্য কারণেও। এই সুবিশাল লেখায় উপরের আট লাইন ব্যতীত অর্ণব নামের মানুষটার 'রসিকলাল' টাইপের হাসির ইমোটিকনের অযথা ব্যবহার। যে ধর্ম কোটি-কোটি মানুষের বিশ্বাস সেই ধর্ম নিয়ে এমন স্থূল রসিকতা আমার বিন্দুমাত্র পছন্দ হয়নি, তাও আমার অনিচ্ছায় আমার লেখা জড়িয়ে। আমার মনে হয় অধিকাংশ ধর্মের উপাদানই হাসির উদ্রেক করে সেখানে কেবল একটি ধর্মকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ বলেই আমি মনে করি।

বিষণ্নচিত্তে আপনাকে বলতেই হয়, ডিয়ার অর্ণব আর্ক, আপনার গবেটসুলভ আচরণ মেনে নিতে পারলাম না বলে দুঃখ প্রকাশ করি।

সহায়ক সূত্র:
১. আদিকান্ড: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_07.html 
২. অযোধ্যাকান্ড: http://www.ali-mahmed.com/2010/07/blog-post_31.html 
৩. অর্নবের লেখা: http://www.somewhereinblog.net/blog/Archaeologistaurnab/29291344

Sunday, December 26, 2010

ইউনূসনামা

ড. ইউনূসকে নিয়ে এখন কোন লেখা খানিকটা জটিলতার পর্যায়ে চলে যায়। অনেকের আবেগের গোপন জায়গাটি হচ্ছে, বেচারা আমাদের জন্য নোবেল পুরস্কার এনে দিয়েছেন। কথা সত্য। এই অভাগা দেশটিকে এই গ্রহে কে চেনে? চেনে হাভাতের দেশ হিসাবে, চেনে চোর-চোট্টার দেশ হিসাবে; সেখানে একজন ইউনূসের আমাদের একটা নোবেল এনে দেয়াটা তো চাট্টিখানি কথা না।
৭০০ কোটি টাকা স্থানান্তর করায় ড. ইউনূসকে নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে হইচই হওয়ার পর হৃদয়বান মানুষের পাল্লা ড. ইউনূসের প্রতি ভারী। আহা বেচারা, আহা-আহা। জনপ্রিয় এই গানটি থেকে খানিকটা ধার করে বলি, "...এক-টু সহানুভূতি-ই-ই কি ইউনূস-স-স, পেতে পারে না...
ও বন্ধু, আ-আ-আ"?
এমনিতে পূর্বেও ইউনূস সাহেবকে নিয়ে দেশে বিপুল হইচই হয়েছে কিন্তু কেউ গা করেননি কারণ এই বিপুল মানুষদের মধ্যে কোন সাদা চামড়ার মানুষ ছিলেন না, আফসোস। আমাদের তো আবার সাদা চামড়া ব্যতীত নড়াচড়া করতে ইচ্ছা করে না, কোন তথ্য বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না।

ওয়েল, এই সব হৃদয়বান মানুষদের বলি, একটা খুন করলেও ড. ইউনূস একজন নোবেল লরিয়েট বলে কি আমাদের বলতে হবে তিনি দায়ে পড়ে খুন করেছেন বা তাঁর করা গুলিটা সফট নোজের ছিল? নোবেল পেলেই কি তাঁর অপরাধ লঘু হয়ে যাবে?
আজকের আমার এই লেখার বিষয় এটা না কোন মিডিয়া (সেটা সাদা চামড়ার নাকি কালো চামড়ার সেটাও আমার আলোচ্য বিষয় না) ইউনূস সাহেবকে নিয়ে কি বলেছে, লিখেছে। টাকা নিয়ে তিনি কেমন জাগলিং খেলেছেন সেটাও না।
আমি এক লেখায় [১] জানতে চেয়েছিলাম, অবৈধ প্রসটিটিউশন-ড্রগস-আর্মস ব্যতীত কোন ব্যবসা আছে যেখানে ২১ পার্সেন্ট সুদ দিয়ে এবং ক্রমশ পুঁজি শূণ্য করেও বহাল তবিয়তে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব, আমি সেই ব্যবসার নাম জানতে চাই। এই প্রশ্নটা ছিল ব্র্যাক ব্যাংক নিয়ে। আর গ্রামীন ব্যাংক তো কয়েক পা এগিয়ে।

"...প্রকৃতপক্ষে গ্রামীন ব্যাংকের সুদ হচ্ছে ৩৮ শতাংশ..."। (সূত্র: খোন্দকার ইব্রাহিম খালিদ, সাবেক ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক)
এখন আমি জানতে চাই ৩৮ শতাংশ সুদ দিয়েও কোন ব্যবসায় লাভ করা যায়? এটা যদি মেথরগিরিও হয় আমি সানন্দে করব, আমার লেখালেখির কসম। এটা আমি মহা সুদখোর ইউনূস সাহেবের কাছে জানতে চাই। তিনি আমাকে এই ভাগ্য বদলাবার দিকনির্দেশনা দিলে আমি এখুনি লেখালেখি ছেড়ে পুরোদস্তুর মেথর হয়ে যাব। ব্যবস্থাটা আজ রাতে হলে আজ রাতেই মেথরগিরি করতে বের হব। সয়্যার অন মাই ...। না-না, সয়্যার অন...ইউনূস সাহেবের...।
ইউনূস সাহেবের যে কেবল সুদের হার ৩৮ শতাংশ এমনই না, এখানে সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয়টি হচ্ছে, গ্রামীন ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার পর থেকেই প্রতি সপ্তাহে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হয়।
ন্যানো ক্রেডিটের [২] আওতায় কিছু কাজ করার সুবাদে এই নিয়ে খানিকটা ধারণা হয়েছে আমার। আমি এখান থেকে বিচিত্র বিষয় শিখছি। ন্যানো ক্রেডিট দেয়া হয়েছে এমন অনেককে নিয়ে লেখা হয়ে উঠেনি কিন্তু যাদেরকে এই ঋণ দেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশের পক্ষেই ঠিক পরের সপ্তাহ থেকে কিস্তি দেয়া সম্ভব না।
এখানে সরল উদাহরণ দেয়ার চেষ্টা করি। যেমন ধরা যাক, এই মহিলার কথা [৩]। ইনি যদি কিস্তি পরিশোধ করেনও তবুও তাঁর পক্ষে মাস শেষ হওয়া ব্যতীত টাকা দেয়া সম্ভব না। তাহলে? এখন আমি যদি খুব চাপাচাপি করি তাহলে যেটা হবে কিস্তি শোধ করার জন্য চড়া সুদে অন্য কারও কাছ থেকে তিনি টাকা নেবেন। যেটা ইউনূস সাহেব এবং তার শিষ্য, অন্য ব্যাংকের বেলায় হচ্ছে।
ইউনূস সাহেবের ঋণ নিয়ে যে ভদ্রমহিলা হাস-মুরগি-ছাগল কিনবেন সেই হাস-মুরগি পরের দিন থেকেই ডিম্ব প্রসব করবে আর ছাগল প্রসব করবে ছাগশিশু। ব্যস, ওই ছাগশিশু ঘন্টায় ঘন্টায় বাড়বে। বাড়তে হবে, ছাড়াছাড়ি নাই কারণ সপ্তাহ শেষ হওয়ার পূর্বেই এটাকে বাজারে বিক্রি করে টাকা ক্যাশ করতে হবে এবং গ্রামীন ব্যাংকের কিস্তি শোধ দিতে হবে। কী সোন্দর সিস্টেম!

এই কুতর্কে যেতে চাচ্ছি না, তাঁকে নোবেল দিতে গিয়ে কোন কূটচাল চালা হয়েছিল। ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে তিনি নাকি দেশময় শান্তি আনয়ন করেছেন। শান্তি প্রসঙ্গে পরে আসি। এই যে ক্ষুদ্রঋণের ভাবনা এটা কিন্তু একেবারে মৌলিক কোন ভাবনা না। তাঁর পূর্বেও অনেকে এই ভাবনা ভেবেছেন, এটা নিয়ে কাজ করেছেন। এটা সত্য, ইউনূস এটাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন মাত্র।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ইউনূসের গ্রামীন ব্যাংক এতো জনপ্রিয় হয়েছিল কেন? কারণ একটাই, বাইরে সুদের হার অসহনীয়! তো, এদের ভাষায় গ্রামীন ব্যাংক নাকি ৮০ লক্ষ মানুষকে ঋণ দিয়ে এদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। যাদের অধিকাংশই নারী! এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে, উপকৃত হয়েছে ৮০ লক্ষ পরিবার! নিম্নবিত্তদের আবার বাচ্চাকাচ্চা বেশি, এরা আবার মায়ায় বুড়াবুড়িকেও ফেলে দিতে পারে না, মানে একেকটা পরিবারে কমপক্ষে গড়ে ৬ জন ধরলেও প্রায় ৫ কোটি মানুষ। ওয়াল্লা, একা ইউনূস সাহেবই পাঁচ কোটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে ফেলেছেন! ইয়া রব, ব্র্যাক এবং তাঁর শিষ্য অন্য ব্যাংকগুলো ধরলে দেখা যাবে আমি ব্যতীত সবাই এদের দ্বারা উপকৃত হয়েছেন। ব্র্যাক থেকে একটা ঋণ আমিও নিয়েছিলুম বটে সেটার ফয়সালা আদালত পর্যন্তও গড়িয়েছিল বটে; এর গল্প অন্য কোন দিন। এখন দেখছি, সবাই 'চিনিহারাম' কেবল আমিই নিমকহারাম-লবনহারাম'! বেচারা আমি!
এখন এক দফা এক দাবী, ইউনূস সাহেবকে দেশের প্রেসিডেন্ট বানিয়ে আবেদ সাহেবকে প্রধানমন্ত্রী এবং সমমনা সুদখোরদেরকে যত দ্রুত সম্ভব মন্ত্রী বানানো হোক। আমি ভাবতেই পারছি না এঁরা না থাকলে দেশের কী হাল হতো!

ইউনূস সাহেব, বেচারা, সবাইকে জুতা পরাবার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন! আমি ড. ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা নামের লেখায় লিখেছিলাম [৪], আমি বড়ো আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছি ইউনূস আমাদের বাচ্চাদের জন্য এমন জুতা নিয়ে আসবেন যে জুতা পায়ে দিলে ক্ষিধা লাগবে না। তিনি এডিডাসকে নিয়ে যখন সামাজিক জুতা নিয়ে আসবেন এই জুতায় নিশ্চয়ই চমক একটা থাকবে, থাকবেই। কারণ তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "...আমাদের লক্ষ্য হলো, যারা জুতো পরে না তাদের জুতো পরার সুযোগ দেওয়া। ...গরিব মানুষ যদি সস্তা দামে আরো ভালো জিনিস পায় তাহলে ত সেটাকে স্বাগত জানানো দরকার..."।
বটে রে! ইউনূস সাহেবের কী ধারণা আছে, আমাদের দেশে জুতার দাম কত? একটা স্পঞ্জ স্যান্ডেল বিশ টাকায় পাওয়া যায়। আপুনি (!) ইউনূস সাহেব কি বিশ টাকার কম দামে সামাজিক জুতা দেবেন নাকি কেবল এই আইডিয়াটা আমাদেরকে খাওয়াবেন, আ মীন 'গরিবা জুতা' খাওয়াবেন?

আমার স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, ইউনূস সাহেব গরীবদের নিয়ে ন্যাকামোটা না-করলে তাঁকে নিয়ে বা তার বিপক্ষে আমি একটা বাক্য দূরের কথা একটা শব্দও ব্যয় করব না। কারণ তখন সেটা হবে শব্দের অপচয়! স্রেফ তিনি গরীবদের নিয়ে আহা-উহু করাটা বন্ধ করবেন, ব্যস, তাঁর কাছে আর কিচ্ছু চাই না। চোখে চোখ রেখে স্পষ্ট করে বলবেন, আমি ব্যবসা করতে এসেছি, ব্যবসা করব, কারও কোন সমস্যা? না, তখন আমরাও বলব, কোন সমস্যা নাই।
ইউনূস নামের মানুষটা কিন্তু সেই পথ মাড়াচ্ছেন না তিনি ২০১০ পর্যন্ত এক পয়সা কর দেননি [৫], এমনকি আগামীতেও গ্রামীন ব্যাংকের জন্য করমুক্তি চেয়েছেন। কারণ তিনি নাকি গরীবদের জন্য সব বিলিয়ে (!) দিচ্ছেন।
গ্রামীন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি এটার প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এই কারণে গ্রামীন ব্যাংক থেকে বেতন-ভাতা নেন- কত নেন এটা অবশ্য আমাদের জানা নেই। আচ্ছা, তিনি কি আমৃত্যু এটা থেকে বেতন-ভাতা নেবেন? যে মানুষটা গরীবের জন্য করে-করে, বলে-বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলছেন তাঁর কি লজ্জা করে না এই গরীবদের ব্যাংক থেকে বেতন-ভাতা নিতে? এই টাকা থেকে কেনা খাবার তাঁর মুখে রোচে কেমন করে, পেটুক পেটটা এই খাবার ধরে রাখে কেমন করে? ওয়াক, বমি আসে না বলছেন, আপনি ইউনূস।
এমন না তাঁর দিন আনি দিন খাই টাইপের অবস্থা। ভাল কথা, আপনি ক-দিন পরপর হিল্লি-দিল্লি বক্তৃতা দিয়ে বৈদেশিদের কাছ থেকে যে ইউরো-ডলার আয় করেন তা কি দান করে দেন?

এটা আমার নিজস্ব মত। আমি মনে করি, ড. ইউনূস নামের এই মানুষটার মধ্যে গোলমাল লুকিয়ে আছে, এঁর পেটভরা ঝামেলা! সততার খোলসে অসৎ একজন মানুষ। এমন মানুষ নোবেল পেলেই তাঁকে নিয়ে কোলে করে ঘুরতে হবে এমনটা অন্তত আমি মনে করি না।
আমার স্পষ্ট বক্তব্য, মুখে গরীব-গরীব করলে ঋণ দিতে হবে বিনা সুদে (আমাদের এই কুৎসিত সময়ে [৬] বিনা সুদেই একজনের দারিদ্র হটানো অসম্ভব সেখানে ৩৭ পার্সেন্ট সুদ!) নইলে ভানবাজি, লম্বা-লম্বা বাতচিত বন্ধ। আপনি ইউনূস হোন বা ফজলে আবেদ ঠোঁট একেবারে সেলাই করে রাখুন। খবরদার, ভুলেও দারিদ্র বিমোচন, এই সব বাছাল উচ্চারণ করবেন না। বললে আমরাও:
সাদাকে সাদা বলিব, কালো না
ইউনূস-আবেদকে সুদখোর বলিব, ভাল না...।

*লেখাটা যখন শুরু করেছিলাম এরিমধ্যে এক কান্ড হয়েছে। আমাদের ইশকুল, তিন [৭] এটা যেখানে অবস্থিত এই বিল্ডিংটা রেলওয়ের হলেও মূলত উদীচীর অফিস।

যখন এই স্কুলটা শুরু করি তখন কোন জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না বলে উদীচীর লোকজনকে ধরাধরি করে এই জায়গাটা নিতে হয়েছিল। এরা আমাদেরকে বিনে ভাড়ায় স্কুল চালাবার জন্য বিল্ডিংটা দিয়েছিলেন। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। কিন্তু...।
আজ দেখছি এই বিল্ডিং-এর গায়ে এই পোস্টার সাঁটানো। ছোট-ছোট বাচ্চারা বানান করে করে পড়ছে।
অনুমান করি, এমন হাজার-হাজার পোস্টার ছাপিয়ে দিয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, বিনে পয়সায়। কেমন করে এই সব দানবরা সমস্ত কিছু গ্রাস করে ফেলে তার নমুনা দেখে আমি শিউরে উঠি।

সহায়ক সূত্র:
১. পদক...: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_23.html
২. ন্যানো ক্রেডিট: http://tinyurl.com/39dkbhh 
৩. আনোয়ারা বেগম: http://www.ali-mahmed.com/2010/12/blog-post_9184.html  
৪. আসে মহাপুরুষ: http://www.ali-mahmed.com/2010/11/blog-post_04.html 
৫. মামা বাড়ির আবদার: http://www.ali-mahmed.com/2010/11/blog-post_12.html 
৬. কুৎসিত সময়: http://www.ali-mahmed.com/2010/11/blog-post_06.html
৭. আমাদের ইশকুল, তিন: http://tinyurl.com/327aky3      

Thursday, December 23, 2010

একজন আনোয়ারা বেগম...

এই মানুষটার নাম আনোয়ারা বেগম। এই মহিলাকে দেখতাম একটা এনামেল ফ্যাক্টরিতে উদয়াস্ত পরিশ্রম করতে। দূর থেকে দেখে কেবল মনে হতো, যাক, মহিলা মানুষ একটা কাজ-টাজ করে খাচ্ছে, ভালই তো। এমনিতে হাসিখুশি একজন মানুষ! কখনও কারও প্রতি অভিযোগ জানাতে দেখিনি। এই মানুষটার এই হাসি-হাসি মুখের পেছনের বেদনাটুকু টের পেতে অনেক সময় লাগল।

একটা ফার্মেসির মালিকের কাছ থেকে যেটা জানা গেল, যে কারখানায় তিনি কাজ করেন এখানে বেতন হলো এক হাজার টাকা। একজনের কাছ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা সুদে নিয়েছেন। প্রতি মাসে সুদ দিতে হয় পাঁচ শ টাকা। সাড়ে তিন হাজার টাকায় পাঁচ শ! ইউনূস সাহেবরা কেন এতো সফল এটা এখন বুঝতে পারি।
আমি অবাক হই, এই এক হাজার টাকা থেকে পাঁচ শ টাকা দিয়ে দিলে ইনার চলে কেমন করে? ইনি নাকি সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি করে কায়ক্লেশে জীবন-যাপন করেন।

আমি আনোয়ারা বেগমের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, আপনি এতো চড়া সুদে টাকা ধার নিয়েছিলেন কেন? নিমিষেই মানুষটার মুখের হাসি উধাও হয়। মাথার যন্ত্রণার জন্য পুরো টাকাটাই গেছে চিকিৎসার পেছনে। এর জন্য আমরাই দায়ী। একটা উপজেলা হাসপাতালে কী চিকিৎসা হয়! ছাতাফাতা ঘোড়ার ডিম! বিশেষজ্ঞ কোন ডাক্তার দূরের কথা প্রয়োজনীয় ডাক্তারেরই বালাই নাই। না আছে এক্স রে মেশিন, না আছে প্যাথলজি- আছে কেবল কিছু মানুষদের সীমাহীন লোভ এবং তাঁদের চেলা চামুন্ডাদের লকলকে জীব।

যাগ গে, এর বেশি জেনে আমার কাজ নেই। আমার এখন যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে, ন্যানো ক্রেডিটের [১] আওতায় সাড়ে তিন হাজার টাকা দিয়ে এই মানুষটাকে সুদখোরের হাত থেকে রক্ষা করা। একজন মানুষকে হন্যে হয়ে খুঁজছিলাম যিনি এই টাকাটা আনোয়ারা বেগমকে ধার দেবেন। আনোয়ারা বেগম তাঁর সাধ্যমত মাসে মাসে টাকাটা পরিশোধ করবেন।

সহায়ক সূত্র:
১. ন্যানো ক্রেডিট:
http://tinyurl.com/39dkbhh 

Wednesday, December 22, 2010

ঘরের ছাওয়াল ঘরে ফিরে গেছে

নামহীন। অজ্ঞাত। হাত-পা ছড়িয়ে থাকা একে যখন আমি পাই [১], এই মানুষটাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল 'অজ্ঞাত' নামেই। হাসপাতালের মেমোতে নামের জায়গায় লেখা ছিল, অজ্ঞাত।
কী কান্ড! আজ যখন এ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছে অজ্ঞাতের জায়গায় লেখা আছে 'ফরিদ'। বাহ, কী অনায়াসেই না একজন অজ্ঞাত থেকে ফরিদ হয়ে যায়!
ফরিদ যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিল একে যতবার দেখতে গেছি ততবারই হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে থাকা এই ভদ্রমহিলাকে আমি অনুরোধ করে এসেছিলাম, ফরিদের প্রতি খেয়াল রাখার জন্য। হাসপাতাল থেকে ফরিদকে যখন নিয়ে আসছিলাম তখন এই মানুষটা ফরিদের জন্য অহেতুক চোখের জল ফেলছিলেন। তাঁর নাকি মায়া পড়ে গেছে। হায় মায়া!
কালই হাসপাতালের লোকজন চাচ্ছিল ফরিদকে ছেড়ে দিতে কিন্তু আমি রাজি হইনি। আমার মনে হচ্ছিল এর অন্তত আরও একটা দিন পর্যবেক্ষণে থাকা প্রয়োজন। আপাতত ফরিদের চিকিৎসা করার কিছু নেই কিন্তু অনুমান করি, তার এই ঘোর কাটতে বেশ কিছু দিন সময় লাগবে। এখনও এর চোখের দৃষ্টি ভাবলেশহীন! বাসায় কারা কারা আছে জানতে চাইলে ফরিদের কাছ থেকে জানা যায়, বাবা নেই, মা আছেন, তিন ভাই চার বোন।
এর বাড়ি নেত্রকোনা এখন থাকে টঙ্গি, যাচ্ছিল সিলেট। রাস্তায় মুড়ি খাওয়ার পর থেকেই অজ্ঞান। সেই জ্ঞান ফিরেছে ঝাড়া ৪৮ ঘন্টা পর! এর যে শরীর সিলেটে পাঠানোর প্রশ্নই উঠে না, একে টঙ্গি ফিরে যেতে বলি। যে ট্রেনে একে তুলে দিচ্ছি সেই ট্রেনে পরিচিত একজন যাচ্ছেন বলে সাথে যাওয়ার হ্যাপা থাকছে না বলে আমার চেপে রাখা শ্বাসটা ফেলতে খানিকটা সুবিধা হয়।
ট্রেনে ফরিদকে তুলে দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি। যাক বাবা, বাঁচা গেল। অবশ্যই এটা মনে মনে বলি, লোকজন শুনে ফেললে সর্বনাশ! কে চায় তার মুখোশ আলগা করতে!
হাসপাতালের লোকজনরা পারলে কালই একে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। ফরিদের জন্য এদের সঙ্গে আমার দুবার কথা কাটাকাটি হয়েছে। বেচারা ফরিদ, নিজের পক্ষে লোকজন টানতে পারেনি, আসলে এই সব আমাদের গা সওয়া হয়ে গেছে! এর বাইরেও আমার নির্বুদ্ধিতা নিয়ে জনে জনে জবাবদিহি করতে হয়েছে। ভাল লাগছে না এই প্রসঙ্গ নিয়ে বিশদ কথা বলতে।

ফরিদকে আমার ফোন নাম্বার দিয়ে বলে দিয়েছিলাম, পৌঁছে আমাকে যেন একটা ফোন করে জানিয়ে দেয়। দুপুরে যখন ফোনটা এলো, 'আমি বাড়িত পৌছা গেছি'। নিমিষেই আমার চশমার কাঁচ ঝাপসা হয়ে যায়...

সহায়ক লিংক:
১. ফরিদ...: http://www.ali-mahmed.com/2010/12/blog-post_20.html 

Tuesday, December 21, 2010

মুক্তিযোদ্ধাদের খিচুড়িও যখন একটি বিক্রয়যোগ্য পণ্য!

অনেক আগে একটা লেখা লিখেছিলাম, 'মুক্তিযুদ্ধের আবেগও একটি বিক্রয়যোগ্য পণ্য' [১], ওই লেখাটার মূল সুর অনেকে ধরতে পারেননি। বিশেষ করে নব্য মুক্তিযোদ্ধাদের আহত হওয়ার কথা। নব্য মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সমস্যার অন্ত নেই- 'ম' শব্দটা পর্যন্ত এরা নিজেদের পকেটে ভরে রেখেছেন।

যাই হোক, ক-দিন আগে টিভি অন করতেই চ্যানেল আইয়ের রান্নার অনুষ্ঠান। যথারীতি এই গ্রহের দুর্ধর্ষ রান্না বিশারদ কেকা ফেরদৌসি রান্না করে দেখাচ্ছিলেন। ইনি কবি নজরুলের কোন এক বার্ষিকীতে 'শাহী কাজী মাটন' রেসিপি নামিয়ে ফেলেন। ইনি 'স্বাস্থ্য সচেতন রান্না'-এর বই লিখে Gourmand world cook book-এ নাম লেখান। স্বাস্থ্য সচেতন? এটা অবশ্য এই ভদ্রমহিলাকে দেখলেই আঁচ করা যায়!
আগেও দেখেছি এই ভদ্রমহিলা হর্সমাউথ, অনবরত বকে যান; কাউকে বলার সুযোগ দেন না।
এতে অবশ্য কোন সমস্যা দেখি না কারণ এই পারিবারিক চ্যানেলে এক ভাই হাস্কি ভয়েসে গাঁক গাঁক করবেন। বোনের রান্নার অনুষ্ঠান লন্ডন প্যারিসে নিয়ে গিয়ে দেখানো হবে এ নিয়ে আমরা বলার কে! মার মুক্তিযুদ্ধের নাটক দেখানো হবে, যেটায় থাকবে আরোপিত কিছু সংলাপ। কৃষকের ছোট্ট মেয়ে বলছে, 'বাজান আসার সময় বাজার থিক্যা ইন্দুর মারার বিষ নিয়া আইসো। পাকিস্তানি আইলে জান দিমু কিন্তু ইজ্জত দিমু না'।
কোথাও কোন সমস্যা নেই কিন্তু যখন দেখলাম কেকা ফেরদৌসি বলছেন, আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, আমার স্বামীও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তখন আমি খানিকটা নড়েচড়ে বসি, ঘটনা কী!
ঘটনা কি তা আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হয়।

কেকা ফেরদৌসি এদিন খিচুড়ি রান্না করছিলেন। খিচুড়ি ভাল জিনিস, বর্ষা নেই বলে শীতে খিচুড়ি খাওয়া যাবে না এমন কোন দিব্যি কেউ দেয়নি। তবে এই খিচুড়িটা খানিকটা অন্য রকম, খিচুড়ির সঙ্গে এখানে ব্যবসা মিশিয়ে দেয়া হচ্ছে। অনুষ্ঠানটা হচ্ছে 'সজীব খিচুড়ি' নিয়ে। সজীব নামের একটা কোম্পানির 'সজীব রেডি মিক্স ঝটপট রান্না'।
হর্স মাউথের চিঁহি হি রব থেমে নেই! কেকা ফেরদৌসি এবার গোপন তাসটা বের করলেন। তিনি বলে যাচ্ছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা খিচুড়ি খেতেন, মুক্তিযোদ্ধারা কেমন করে খিচুড়ি খেতেন, কি কি ধরনের খিচুড়ি খেতেন। পাতলা, না ঘন? এই নিয়ে অনবরত বকে যাচ্ছেন। পাশাপাশি চলছে সজীব খিচুড়ি নিয়ে খুন্তি নাড়াচাড়া। যথারীতি কেকা ফেরদৌসির মুখ নাড়ানাড়ি।

এখন আমি অপেক্ষায় আছি। মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সাগর সাহেবরা অচিরেই আরও নতুন নতুন খেলা আবিষ্কার করবেন। কে জানে একদিন দেখব ফাইভ স্টার কোন এক হোটেলে (এটা এঁদের জন্য কোন বিষয় না [২], মতিউর রহমান চৌধুরীরা এমন অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য যে মুখিয়ে থাকেন) লালমুখো বাঁদরদের সম্মানে কাঠের ডামি বন্দুক হাতে কোন একজন মুক্তিযোদ্ধাকে এনে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা দেখাবেন। 'লালুয়ারা' শিষ বাজিয়ে বলবে, "ওয়াও, হোয়াড আ মাক্টিডুড্ডা"!

সহায়ক সূত্র:
১. পণ্য...: http://www.ali-mahmed.com/2009/10/blog-post_07.html
২. পুরস্কার...: http://202.79.16.19/index.php?option=com_content&task=view&id=14782&Itemid=39               

Monday, December 20, 2010

মাস্টার শিশু এবং মিস্টার পশু!

আমি আগেও কোথাও লিখেছিলাম, আমাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকে, পাশাপাশি, একটা শিশু এবং একটা পশু; এদের মধ্যে মারামারি লেগেই আছে, হরদম। কখন কে জেতে এটা আগাম বলা মুশকিল'।
এরা যে কেবল লুকিয়ে থাকে, সবিরাম মারামারি চালিয়ে যায় এমন না; পাশাপাশি বসবাস করলেও একজনের আছে অন্যজনের প্রতি সীমাহীন ঘৃণা! যুদ্ধটা অসম। মাস্টার শিশুর হাতে গুলতি, মিস্টার পশুর আছে মারণাস্ত্র লেজার গান। তবুও মাস্টার শিশুর লড়াই চালিয়ে যেতে অনীহা নেই।

এই মানুষটাকে সকালে স্টেশনে হাত-পা ছড়িয়ে পড়ে থাকতে দেখে পাশ কাটিয়ে চলে যাই এই আশায় কেউ-না-কেউ এর সমস্যাটা দেখবে নিশ্চয়ই। আহা, আমার ভেতরের মিস্টার পশু তার অস্ত্রটা ঠিক তাক করে রেখেছে যে!
আমি যখন ফিরে আসছি তখনও এই মানুষটাকে দেখি একই ভঙ্গিতে, নিশ্চল। আজকাল তেমন অবাক হই না তবুও একটা ধাক্কার মত খেলাম, একটা মানুষ পড়ে আছে শত-শত মানুষ এখান দিয়ে যাচ্ছে, এই নিয়ে কারও কোন বিকার নেই। স্টেশন কর্তৃপক্ষ এমনকি মিডিয়ার লোকজনেরও। এটা কি পত্রিকায় আসার মত কোন খবর না? এই মানুষটার জন্য অপেক্ষায় আছে এমন কোন মানুষ এই গ্রহে নাই? আমাদের দেশে একজন মানুষের হারিয়ে যাওয়া কত্তো সোজা। মরে গেলে অজ্ঞাত হিসাবে [১] মাটি চাপা দিয়ে দিলেই ল্যাঠা চুকে গেল।
আশেপাশের লোকজনকে জিজ্ঞেস করেও কোন সুরাহা হলো না, এ কখন থেকে এখানে পড়ে আছে এটাও কেউ জানে না। এদের ঠোঁট উল্টানো সাফ জবাব, 'নেশা-টেশা কইরা পইড়া আছে'। কিন্তু কাছ থেকে দেখে আমার মনে হলো সমস্যা অন্যত্র। এর শরীরের বেশ কিছু স্থানে চামড়া ছড়ে গেছে, রক্ত জমাট বেঁধে আছে। অনুমান করি, কেউ কিছু খাইয়ে টাকা-পয়সা সব লুটে নিয়েছে।

মনে মনে আমি নিজের উপর অনেকখানি বিরক্ত, কী যন্ত্রণা! আমার যে এখন হাবিজাবি দুনিয়ার কাজ, একে নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় কোথায়? লম্বা লম্বা পা ফেলে এখান থেকে চলে গেলে বেশ হয়। অন্যরা যেমন গোল হয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে, দেখা শেষ হলে সটকে পড়ছে এমনটা করলে আমাকে আটকায় কোন শালা!
ওদিকে তুমুল মারপিট। মাস্টার শিশুটা কি কি করেছে, কোন প্যাচ খেলেছে আমি জানি না কিন্তু মিস্টার পশু উবু হয়ে মাটি পড়ে আছে। অবশ্য এটা ক্ষণিকের জন্য। মিস্টার পশু অবিলম্বে উঠে দাঁড়াবে এতে কোন সন্দেহ নেই। দাঁড়াবার আগেই কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। আমি একজনের সঙ্গে কথা বললে ওই মানুষটা ভাল একটা বুদ্ধি দেন, 'অন্য কেউ হাত দেবে না। এটা জিআরপি কেস। এক কাজ করেন, একজন জিআরপিকে সঙ্গে নিয়ে যান। ও দেখুক, সমস্যাটা কি'।

হাঁটতে হাঁটতে জিআরপি নামের মানুষটাকে আমি পটাতে থাকি, 'একটু দেখেন না কি করা যায়। এমন অবস্থা তো আপনার আমারও হতে পারে, পারে না? আপনার এই পোশাক খুলে ফেললে আপনাকে কে চিনবে। ধরেন, আপনি নোয়াখালি স্টেশনে পড়ে আছেন জিআরপি অফিসের সাথেই...হতে পারে না এমন'? জিআরপি মানুষটা মাথা ঝাঁকান, 'আলবত, হতে পারে'।
হাত-পা ছড়িয়ে পড়ে থাকা মানুষটাকে তিনি দেখে নিশ্চিত হন, একে কেউ কিছু খাইয়ে দিয়েছে। দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো আবশ্যক। 
এরিমধ্যে তিনি দুঃখের কাহিনীও বলেন। 'দেখেন, আমরা কাজ কিভাবে করব। এই যে হাসপাতালে পাঠাব, পাঠাতে যে খরচ এটা তো আর সরকার দেবে না। আপনিই বলেন'।
আমি হড়বড় করে বলি, 'আপনি হাসপাতালে পাঠাবার ব্যবস্থা করেন। যা খরচ লাগে... আমি এর ব্যবস্থা করে দিচ্ছি'।

যাই হোক, এই ব্যবস্থা করে আমি হাঁপ ছেড়ে বাঁচি। পরে এই খোঁজও পাই একটা ভ্যান দিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এই সময়টা পশুদের, পশুরাজত্ব। আমিও তো এই সময়ের একটা অংশ। আমার ভেতরের পশুটা বসে থাকবে বুঝি! হাসপাতালে গিয়ে আর খোঁজ নেয়া হয় না। এদিকে সারাটা দিনের কাজে-অকাজে আমার সূর্যটা উধাও।
অনেকে সূর্য ডুবলে বোতল-টোতল নিয়ে বসে যান, আবোল-তাবোল বকেন। আমিও বোতল টাইপের একটা জিনিস নিয়ে বসে যাই। চোখের সামনে নয় ইঞ্চি মনিটর- আবোল তাবোল লিখে যাই। এই সময়ে কেউ ফোন করলে পারতপক্ষে আমি ধরি না, এমনকি খেতে ডাকলেও আমি বিরক্ত হই। ছাতাফাতা লেখালেখি নামের আমার হাবিজাবি কর্মকান্ডের সুর কেটে যায় যে!
আজও একই রুটিন। কিন্তু মাস্টার শিশু কি চাল দেয় আমি জানি না, বিস্মিত আমি নিজেকে আবিষ্কার করি হাসপাতালে। মানুষটার এখনও জ্ঞান ফেরেনি। হাসপাতালের চিকিৎসা চলছে। অন্যভাবে খোঁজ নিয়ে যেটা জেনেছি, যথার্থ ওষুধপত্রও দেয়া হয়েছে। পুরোপুরি জ্ঞান ফিরতে সম্ভবত দু-দিন লাগবে। আপাতত আমার কিছু করার নাই।

দায়িত্বে থাকা লোকজনকে আমার ফোন নাম্বার দিয়েছে, এ সুস্থ হলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্যে কারণ এর বাড়িতে ফেরার সময় টাকা-পয়সার প্রয়োজন হবে।
এটা বোঝার জন্য রকেটবিজ্ঞানী হওয়ার  প্রয়োজন নেই, এই মানুষটার নিশ্চয়ই একটা ছাদ আছে, সেই ছাদের নীচে পরিবার নামের কিছু লোকজন এর অপেক্ষায় আছেন। কে জানে, হয়তো এই মানুষটাই ওই পরিবার নামের বেশ কিছু লোকজনের একমাত্র ভরসাস্থল। বিস্তারিত মানুষটার জ্ঞান ফিরলে, সুস্থ হলে জানা যাবে।

এই যে ফোন নাম্বার দেয়া হলো আমার সঙ্গে পরে যোগাযোগ করার জন্য, এর মানে হচ্ছে বাড়তি ঝামেলা। ফোন করলে আমাকে এই নিয়ে..। আসলে হাসপাতালে ফোন নাম্বার আমি দেইনি। এটা মাস্টার শিশুর কাজ। এই হারামজাদা বড়ো বিরক্ত করে। রাস্কেলটাকে খুঁজছি, পেলে এক থাপ্পড়ে এর কানপট্টি ফাটিয়ে ফেলব। শ্লা, বড়ো যন্ত্রণা করে...।

সহায়ক সূত্র:
১. অজ্ঞাত...: http://www.ali-mahmed.com/2010/11/blog-post_22.html        

Saturday, December 18, 2010

পার্থক্য কেবল একটা হ্রস্ব উ-কারের

গরু এবং গুরুর মধ্যে পার্থক্য কি এর উত্তর দেয়াটা আমার পক্ষে অনেকখানি কঠিন। কিন্তু যদি জিজ্ঞেস করা হতো গরু এবং মানুষের মধ্যে পার্থক্য কি তাহলে ধার করা কথা চট করে বলতে পারতাম, মানুষ তার অর্জিত জ্ঞান পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে পারে, গরু পারে না।
এমনিতে গরু এবং গুরুর মধ্যে পাথর্ক্য কেবল একটা হ্রস্ব উ-কারের। কিন্তু গুরু যখন গরু হতে আগ্রহ প্রকাশ করে তখন মনটা বিষণ্ণতায় ছেয়ে যায়।

Get this widget | Track details | eSnips Social DNA
মহীনের ঘোড়াগুলি ব্যান্ডের এটা অসাধারণ একটা গান, পৃথিবী। এই ব্যান্ডের মূল চালিকাশক্তি গৌতম চট্টোপাধ্যায় ১৯৯৯ সালে মারা যান। এমনিতে এই ব্যান্ডের নাম নেয়া হয়েছিল জীবনানন্দ দাসের 'মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জ্যোৎস্না প্রান্তরে', এখান থেকে। অবশ্য প্রথমে এই ব্যান্ডের নাম ছিল সপ্তর্ষি পরে তীরন্দাজ ...একেবারে শেষে মহীনের ঘোড়াগুলি।


মহীনের ঘোড়াগুলির 'পৃথিবী' গানটা জেমস গেয়েছেন বলিউডের হিন্দি একটা মুভিতে। অবিকল একই সুরে। হাওয়ায় যেমন মেঘ ভেসে আসে তেমনি কাটা কাটা এমন কথাও ভেসে আসে, প্রীতম এই গানটার জন্য অনুমতি নিয়েছিলেন। হাওয়ায় যেমন মেঘ ভেসে যায় তেমনি এর পক্ষে কঠিন প্রমাণের অভাবে এই বক্তব্যও উড়ে যায়।
গৌতম মরে গেছেন, তাঁর লোকজনরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে; কে এই অনুমতি দিয়েছে সেটা আলোচনার বিষয়। তাছাড়া এই গানের জন্য যথার্থ টাকা, স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে কিনা সেটাও পরিষ্কার জানা নেই। কোন একটা সৃষ্টির জন্য কেবল টাকা শোধ করাটাই জরুরি না, তারচেয়েও জরুরি হচ্ছে সম্মান-স্বীকৃতি দেয়া। প্রমাণ-অপ্রমাণ আপাতত থাকুক এটা এই লেখার মূল উপজীব্য না। বোম্বাইয়াদের উপর তেমন দাবীর জোর নাই কিন্তু আমাদের জেমস?

জেমসের তো জানার কথা এই গানটার পুরো কৃতিত্ব মহীনের ঘোড়াগুলি ব্যান্ডের। আমার জানামতে জেমস কোন অনুষ্ঠানে এই অবদানের কথা ফলাও করে তুলে ধরা দূরের কথা স্বীকৃতি দেয়ার ক্লেশও স্বীকার করেননি! অথচ গুরু জেমস এই গানটি আমাদের দেশে স্টেজ শোতে গাওয়ার জন্য আলাদা টাকা দাবী করেন। বোম্বাইয়ারা না জানুক গুরু জেমসের তো না-জানার কথা না এই গানের কথা, সুর সমস্ত কিছুই মহীনের ঘোড়াগুলি ব্যান্ডের। গুরুর চিন্তার এই সংকোচ কেন? কি হতো তিনি এই গানের দিকপালকে আমাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলে।

এখন লোকজন কি বলে? 'পৃথিবী' গানটা শুনে ফট করে বলে বসে, আরে, এটা অমুক হিন্দি গানের নকল না? কী অন্যায়‍! হিন্দির আগ্রাসন এখন এতোটাই প্রবল আমাদের ভাবনা-টাবনা সব কিছু ছেয়ে ফেলছে। শাহরুখ খানরা আমাদের শিখিয়ে যান [১] বদলে দেন আমাদের মিডিয়ার ভাষাও। সেখানে কোন বাংলা গান থেকে ধার হিন্দি গান হবে এটা মেনে নেয়ার জন্য আমাদের দুর্বল মস্তিষ্ক প্রস্তুত না। বাংলায় কথা বলা একজন হিসাবে জেমসের উচিত ছিল কোথাও সুযোগ পেলেই এটা ফলাও করে বলা। আমার এই লেখার মূল সুর জেমসের এই গানটা গাওয়া নিয়ে আপত্তি না; জেমস আমাদেরকে এটা জানাননি, জানাবার তেমন চেষ্টা করেননি এটা নিয়ে।

গলায় গামছা ঝুলিয়ে দেশ উদ্ধারে অতি ব্যস্ততার কারণে জেমস বিষয়টার গুরুত্ব অনুধাবন করার প্রয়োজন বোধ করেননি নাকি চোখ বন্ধ ছিল বলে গুরু এবং গরুর পার্থক্যটা আলাদা করার সুযোগ হয়নি? আহা, পার্থক্যটা যে কেবল একটা হ্রস্ব উ-কারের!

সহায়ক সূত্র:
১. শাহরুখ: http://www.ali-mahmed.com/2010/12/blog-post_11.html

Thursday, December 16, 2010

আমার এক অন্য রকম বিজয় দিবস।

এবারের বিজয় দিবসটা আমার জন্য অনেক অনেকখানি অন্য রকম! গতবার [১] যখন 'আখাউড়া মুক্ত দিবস' নিয়ে অনুষ্ঠানটা করি তখন খানিকটা মন খারাপ ছিল কারণ তিনটা স্কুলের [২] মধ্যে একটা স্কুল বাদ পড়েছিল। এবার আগে থেকেই মন স্থির করে রেখেছিলাম বিজয় দিবস উপলক্ষে ওই স্কুলটাকেও এখানে নিয়ে আসা হবে।
এর মধ্যে একজন দিলেন আবার আরেক পোকা মাথায় ঢুকিয়ে, বাচ্চাদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকদেরও নিয়ে আসার জন্য। এই প্রস্তাবটা আমার মনে ধরল। এটা একটা চমৎকার কাজ হবে কারণ আমি নিশ্চিত এই বাচ্চারা যেমন এমন অনুষ্ঠানে পূর্বে কখনও যায়নি তেমনি এদের অভিভাবকরাও।

সকাল ১০টায় যথা সময়ে শুরু হয়ে গেল অনুষ্ঠান। ঠিক সময়ে চলে এসেছেন প্রধান অতিথি নৌ কমান্ডো ফজলুল হক ভূঁইয়া [৩]। আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এই কারণে তিনি অন্য আমন্ত্রণ ফেলে এখানে চলে এসেছেন, এই অনুষ্ঠানে।

এবারও আঁকার বিষয় ছিল বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের সমাধিস্তম্ভের ছবিটা। আমি বারবার এটা বলে যেটা এদের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি সেটা হচ্ছে, সাতজন বীরশ্রেষ্ঠর একজন এখানে। এরা যেন গর্বের সঙ্গে এটা বলতে পারে। আজ যোগ দিয়েছে এদের সঙ্গে এদের কিছু অভিভাবক। অবশ্য অভিভাবকের উপস্থিতি বাচ্চাদের তুলনায় অনেক কম। এতে আমি খুব একটা অবাক হইনি কারণ এই সব খেটে খাওয়া মানুষদের কাছে অনেক কিছুই অর্থহীন মনে হয়।

কিন্তু আমি এটাও নিশ্চিত, যারা আসেননি তাঁরা খানিকটা আফসোস করবেন। কেন?

হা হা হা, বাচ্চাদের বিভিন্ন পুরস্কারের পাশাপাশি
অভিবাবকদের জন্যও বেশ কিছু উপহার ছিল, তাছাড়া বাচ্চাদের পাশাপাশি অভিভাবকদের উল্লাসেরও কমতি ছিল না। অনুষ্ঠানে দেখলাম এরা বাচ্চাদের চেয়ে কম উপভোগ করেননি। বুকে হাত দিয়ে বলি, সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছি আমি নিজে।
যাই হোক, পরবর্তীতে এটা আশা করতে দোষ কি অভিভাবকদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়বে...।
সহায়ক সূত্র:
১. মুক্ত দিবস...: http://www.ali-mahmed.com/2010/12/blog-post_06.html
২. আমাদের ইশকুল...: http://www.ali-mahmed.com/2010/10/blog-post_07.html
৩. নৌ কমান্ডো...: http://www.ali-mahmed.com/2009/04/blog-post_22.html     

Tuesday, December 14, 2010

নিধন: আনোয়ার পাশা, রাশীদুল হাসান

একসাথে আজীবন থাকতে চেয়েছিলেন। দু'জনই পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় একসাথেই চলেও এসেছিলেন। একজন চাকুরি নিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে, অপরজন ইংরাজি বিভাগে। তাঁরা হলেন অধ্যাপক আনোয়ার পাশা এবং অধ্যাপক রাশীদুল পাশা।
যুদ্ধের সময় রাশীদুল হাসান নিজের বাসা ছেড়ে বন্ধু আনোয়ার পাশার বাসায় চলে আসেন। দু'বন্ধু এক সাথে থাকলে বুকে আশা থাকে, সাহস থাকে।

১৪ ডিসেম্বর। সকাল সাতটায় আনোয়ার পাশার ঘুম ভেঙ্গেছে। গড়িমসি করে বিছানা ছেড়েছেন আরও পরে। তারপর দু'বন্ধু মিলে ন'টার দিকে নাস্তা করেছেন, রেডিও শুনেছেন। নটার খানিক পরে আনোয়ার পাশার স্ত্রী পেছনের বারান্দা দিয়ে দেখলেন একটি লাল গাড়ি এসে থামল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার চত্ত্বরে। কয়েকজন রাজাকার নামল।
আনোয়ার পাশা এরই মধ্যে স্ত্রীর সাথে দু'একটা খুচরো সাংসারিক আলাপ সেরেছেন। রাশীদুল হাসানের সাথে গল্পে বসার আগে হাসতে হাসতে স্ত্রীকে বললেন, 'কাসুটা উঠুক, তারপর তোমার জন্য ভাল করে বাজার-টাজার করে দেব'।
রাশীদুল হাসানের স্ত্রী তখন সংসারের অন্যান্য কাজে ব্যস্ত।

কিছুক্ষণ পর দরজায় শব্দ। দরজা খুললেন আনোয়ার পাশার ছোট ভাই। তারা দরজার মুখে দাঁড়িয়ে। আনোয়ার পাশা এবং রাশীদুল হাসান তখন ড্রইংরুমে। একজন আনোয়ার পাশাকে দেখে জিজ্ঞেস করল, 'আপনার নাম আনোয়ার পাশা'?
'হ্যাঁ'।
'আপনি বাইরে আসুন'।
এমন সময় তাদের চোখ পড়ল রাশীদুল হাসানের দিকে। তারা জিজ্ঞেস করল, 'আপনার নাম'?
'রাশীদুল হাসান'।
'আপনিও চলুন'।
সেই সময় রাশীদুল হাসানের স্ত্রী এসে দরজার মুখে দাঁড়ালেন। এ দৃশ্য দেখে তিনি পাথর হয়ে গেলেন। আনোয়ার পাশা এবং রাশীদুল হাসান তাকিয়ে আছেন। চোখ ভেজা। ...একসময় আলবদরদের সঙ্গে পা বাড়ালেন। আনোয়ার পাশার স্ত্রী জানালা দিয়ে শুধু দেখলেন তাঁদের গায়ের চাদরে তাঁদের চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
(সেই শেষ যাওয়া। এই দু-জন মানুষ একসাথে আজীবন থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু একসাথে মৃত্যুও চেয়েছিলেন কিনা এটা কখনও জানা হবে না...।)

*১৪ ডিসেম্বর '৭১-এ আল-বদরদের হাতে নিহত বুদ্ধিজীবীদের স্ত্রীদের সাক্ষাত্কারের ভিক্তিতে রচিত।
ঋণ: বিচিত্রা, ১৯৭৩/ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, অষ্টম খন্ড 

সহায়ক সূত্র:
১. নিধন: http://tinyurl.com/37urdrg 

Sunday, December 12, 2010

তথাকথিত পাগলের ডাক্তার

এই স্বাস্থ্য পত্রিকাটি দেখে আমি যারপর নাই মুগ্ধ! দেখেই মুগ্ধ, আপাতত পড়তে চাচ্ছি না। সমস্যা অন্যখানে, মুগ্ধতা চুইয়ে দেশে অকাল বন্য হয়ে যেতে পারে এই ভয়ে আপাতত পড়ার আগ্রহ দমিয়ে রেখেছি।
এদের বক্তব্য হচ্ছে, এটা নাকি বাংলা ভাষায় প্রথম মানসিক স্বাস্থ্য পত্রিকা! ভাল! এই বিষয়ে যারা দ্বিতীয় তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছেন তারা আমার চেয়ে ভাল বলতে পারবেন।
পত্রিকার প্রচ্ছদে যে রোগীর ছবি ছাপা হয়েছে তিনি কি দন্ত রোগী নাকি মৃগীরোগী? চর্মরোগী বা আলঝেইমারসের রোগীও হতে পারেন। ওনার কি এনজিওগ্রাম করা হবে নাকি আনপ্ল্যান্ড প্রেগনেন্সির কোন চক্কর আছে? এই পত্রিকার সম্পাদক 'পরফেসর' ফিরোজ সাহেব এটা ভাল বলতে পারবেন কোন রোগে আক্রান্ত এই রোগীর মুখাবয়ব এখানে?

ওহো, বলতে ভুলে গেছি এই স্বাস্থ্য পত্রিকাটির সম্পাদক হচ্ছেন অধ্যাপক ডা. এ এইচ মোহাম্মদ ফিরোজ। পত্রিকাটির তথ্য মতে, বাংলাদেশ সরকার নাকি এই 'পরফেসর' সাহেবকে এই পত্রিকার সম্পাদক হিসাবে অনুমোদন দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার যে 'মনোজগত' নামের এমন একটা পত্রিকা চালায় আবার সরকার সেই পত্রিকার সম্পাদককে মনোয়নও দেয় এটাই কী আর আমি জানতাম ছাই! বয়স বাড়ছে, মেঘে মেঘে বেলা বয়ে যায়। বুকের গহীন থেকে হাহাকার বেরিয়ে আসে, কত অজানা রে...। পরফেসর ফিরোজ সাহেবদের মত কর্মবীরদের কথা না-জেনে মরে যাওয়াটা কোন কাজের কাজ না। 
এই সংখ্যায় প্রচ্ছদ রচনার নামে একটি লেখা লিখেছেন একজন। তিনি হচ্ছেন, মানসিক রোগ শিক্ষা, গবেষণা, চিকিৎসা ও জনসচেতনতায় পথিকৃৎ বাংলাদেশের বিশিষ্ট মনোশিক্ষাবিদ, মনোবিজ্ঞানী, মনোসাহিত্যিক ও মনোচিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ এইচ মোহাম্মদ ফিরোজ। আবার তিনি এই পত্রিকার সম্পাদকও! নিজের সম্পাদিত পত্রিকায় নিজেই লিখছেন, টাইটেলের ভারে সোজা হয়ে আপ্রাণ চেষ্টায় ঢোলটা পেটাতে পেটাতে ফাটিয়েও ফেলছেন, ভদ্রলোকের কত্তো-কত্তো কাজ!
এই কর্মবীরের জন্য গোটা জাতি গর্ভিত! (আমার লিখতে গিয়ে বানান ভুল হয় সেজন্য আগেভাগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। প্রবল আশা, অন্তত ৩ টাকা দামের কলমবাজ মনে করে মার্জনা করবেন।)

 'মনোজগত সেন্টার' নামের এই বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা কেন্দ্রও কি সরকার চালান? বেশ-বেশ! ভাল কথা, 'পরফেসর' ফিরোজ সাহেব কি মনোজগত সেন্টারে সরকারের বেতনভুক্ত কর্মচারী? তা ডাক্তার সাহেবের ফি ৮০০ টাকা কেন? সরকারী চিকিৎসালয়ের ফি এত হবে কেন?
ওয়াল্লা, এখানে লেখা আছে দেখছি, 'পরফেসর' ফিরোজ সাহেব "তথাকথিত পাগল"-এর চিকিৎসা করেন? তথাকথিত পাগল? এটা কী জিনিস আবার? আর 'পরফেসর' ফিরোজ সাহেব কি তথাকথিত পাগলের ডাক্তার? নিজেই পাগলের চিকিৎসা করেন, নাকি নিজেই...?   

Saturday, December 11, 2010

'বাত্তামিজ' শাহরুখ, শালা না, বলো চুতিয়া

ছবি ঋণ: ফিরোজ চৌধুরী/ কালের কন্ঠ
আজ শাহরুখ খান অনুষ্ঠান করে গেলেন। বৈশাখী টিভির সাংবাদিক মহোদয়গণ যখন ধারা বর্ণনা দিচ্ছিলেন তখন তাদের উচ্ছ্বাস দেখে মনে হচ্ছিল, এদের অজান্তেই খানিকটা 'পিসাব' বেরিয়ে গেছে।

কিছু সুশীল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলার চেষ্টা করছিলেন সংস্কৃতি, সংস্কৃতি বিনিময় ইত্যাদি। চু-ভাইরা এটা কবে বুঝবে দাদারা কেবল নেবে, দেবে না।

অন্তর শোবিজের চেয়ারম্যান স্বপন চৌধুরী স্টেজে নিয়ে এসেছিলেন স্ত্রীকে, কোন এক ফাঁকে শালীকে স্টেজে নিয়ে এসেছিলেন কিনা এটা বলতে পারি না।
স্বপন সাহেবের কাছ থেকিই আমরা জানলাম, অন্তর শোবিজের অন্তর নামটা তার ছেলের নাম। ছেলে এবং এই প্রতিষ্ঠান তারা একই সঙ্গে প্রসব (!) করেছিলেন।

দেবাশীষ বিশ্বাস যেটা উপহার দিলেন, কারও পক্ষে ইয়াবা সেবন করেও এমন জিনিস প্রসব করা সুকঠিন। তিনি আমাদেরকে জানালেন, পৃথিবীতে সাতটা ধর্ম। আজ আরেকটা ধর্ম যোগ হলো। সেটা হলো, শাহরুখইজম!
দেবাশীষকে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় দেখা গেছে পা তুলে অসভ্যের মত বসার ভঙ্গি করতে। কিছু দর্শক অনুষ্ঠান প্রযোজককে আপত্তি জানিয়ে দেবাশীষের এই প্রিয় ভঙ্গি বদলাতে সহায়তা করতেন। এমন উম্মাদ, বেয়াদবকে আদব শেখাবার গোপন ইচ্ছা ওই সব সহৃদয় দর্শকের মত অন্তত আমার নাই।

শাহরুখ বেচারাকে দোষ দেই না, এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা শাহরুখ খানকে বলে দেয়ার তকলীফ করেননি যে আমরা এখনও ভারতের কালচারে অভ্যস্ত হয়ে উঠিনি। হিন্দির আগ্রাসন কাকে বলে তা আজ ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কল্যাণে সচক্ষে দেখলাম।
শাহরুখ খান বাংলায় গালি শিখতে চেয়েছেন। ভাগ্যিস, চু...পোলা শিখেননি, শাহরুখ 'শালা' শিখেছেন, বলাটাও রপ্ত করেছেন। আমি আরেকটা গালি শিখিয়ে দিতে চাই। আর্মি স্টেডিয়ামে যে হাজার-হাজার মানুষ চল্লিশ হাজার টাকা পর্যন্ত টিকেট কেটে এসেছিলেন তাদের জন্য কেবল একটা কথাই বলা চলে, চু-তি-য়া...।

*শাহরুখ খানকে নিয়ে দেখলাম কিছু মানুষের অন্য রকম আগ্রহ হচ্ছে। তাঁদের আশা, তিনি আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য শিক্ষণীয় কিছু দিয়ে যাবেন। বটে! জনসমক্ষে সিগারেট হাতে নিয়ে শাহরুখ ভালই শেখালেন। শেখো বঙ্গাল, শেখো। সযতনে বাঁশ দিয়ে গেলেন এখন আমাদের কাজ হচ্ছে বাঁশটা যত্ন করে রাখা এবং প্রয়োজনে এতে ভিউ মিরর লাগানো [১]

**বৈশাখী টিভিতে সংস্কৃতি বিনিময় নিয়ে লম্বা লম্বা কথা শুনছিলাম এদের মধ্যে একজনকে দেখলাম এর কেডসের তলা দেখা যাচ্ছে। এ তো এখনও ভদ্র সমাজে বসার ভঙ্গিটাই রপ্ত করতে পারেনি! এর হাতে যদি থাকে আমাদের সংস্কৃতি রক্ষার দায়িত্ব... ভয়ে আমি চোখ বন্ধ করে ফেলি।
এখানে এক প্রসঙ্গে আমি লিখেছিলাম, দাদারা কেবল নিতেই জানেন, দিতে জানেন না। ছোট্ট কিছু উদাহরণ: ভারত ১০০ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে। ঋণ দিবি, সুদ নিবি, সমস্যা কোথায়? না, দাদাদের আবদার, ১০০ কোটি ডলারের মধ্যে ৮৫ ভাগ টাকার পণ্য কিনতে হবে দাদাদের কাছ থেকে এবং বাকী ১৫ ভাগে টাকার পণ্য তাদের পরামর্শ অনুযায়ী।
এমনিতে বাংলাদেশের বাজারে ভারত দুই হাজার ৮৬টি পণ্য রপ্তানি করতে পারে, পাশাপাশি বাংলাদেশ রপ্তানি করতে পারে কেবল মাত্র ১৬৮টি পণ্য!
এই হচ্ছে বাস্তবতা!

***শাহরুখ কেমন করে আমাদেরকে কৃষ্টি-সংস্কৃতি শিখিয়ে গেলেন তার নমুনা হচ্ছে দেশ-মা-মা, ম্যা-ম্যা করে গলার গামছা ভিজিয়ে ফেলা প্রথম আলো শিরোনামে লিখেছে, "...মউজ মাস্তিতে মাতিয়ে দিলেন শাহরুখ"। 'মইজ-মাস্তি'? হা হা হা, কেমন করে একটি জাতীয় দৈনিকের ভাষা পরিবর্তন হয়ে যায়! আমি অপেক্ষায় আছি কালে কালে এই পত্রিকাটির নাম হবে 'পাহেলি রোশনি'। পাকিরা নাই [২], তাতে কী, দাদারা আছে না...। আগামিতে মতি ভাইয়া কলাম লিখবেন, মেরি মায় বাপ...।

ওয়েল-ওয়েল-ওয়েল, এখন জায়গার সমস্যা হয় না কিন্তু আমাদের সেক্টর কমান্ডার মীর শওকত আলীর মৃত্যুর খবর প্রথম পাতায় ছাপতে ইয়ে ফেটে যায়, না?
এমনিতেও আমাদের দেশে হিন্দির আগ্রাসন দেখে আমি আশা করছি, আগামীতে হিন্দি হবে আমাদের দ্বিতীয় ভাষা...।

সহায়ক সূত্র:
১: বাঁশ...: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_09.html
২. মতি ভাইয়ার দরখাস্ত: http://www.ali-mahmed.com/2009/06/blog-post_18.html  

Friday, December 10, 2010

অ্যাসাঞ্জ, একটি চাবুকের নাম

ছবি ঋণ: গুগল
অ্যাসাঞ্জ। একটি নাম। একটি চাবুকের নাম! যে চাবুক দিয়ে শুয়োরের পালকে বাগে রাখা যায়। অনেকে বলবেন মানুষটা নৈতিকতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছেন। নৈতিকতা? যেখানে 'ন'-ও নেই সেখানে নৈতিকতা আসছে কোত্থেকে?

এই গ্রহে যত অমানবিকতা, কদর্যতা, নিষ্ঠুরতা ঘটেছে তার পেছনে কোন-না-কোন প্রকারে আমেরিকা নামের শুয়োরটার গায়ের বোটকা গন্ধ আছে। থাকবে, থাকবেই। জারজদের পিতার হদিস নেই কিন্তু পিতৃভূমি রক্ষার নামে কয় লক্ষ মানুষ নামের সংখ্যা হারিয়ে যাবে এর হিসাব রাখতে এদের বয়েই গেছে। এরা তেলের সঙ্গে রক্ত মিশিয়ে নতুন একটা জ্বালানী [১] আবিষ্কার করবে আর আমরা সভ্য-সভ্য একটা ভাব ধরে এদের কাছ থেকে সভ্যতা শেখব [২]। এরা আমাদের দেশে সেমিনার করে সভ্যতা শেখাবে। আমরা সেমিনারে এদের লম্বা-লম্বা লেকচার শুনব আর এরা সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি করবে। ছয় হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি!

এক আফগানিস্তানেই এক বছরে বিনস্ট হয়েছে ৩ লাখ ঘরবাড়ি। ইরাক যুদ্ধে মারা গেছে প্রায় এক লক্ষ মানুষ! এরা মুখে নাৎসিদের নিয়ে ঘৃণা ছড়াবে কিন্তু বাস্তবে এর চিত্র অন্য রকম। ১৯৫৪ সালে আইখম্যানের অন্যতম সহকারী অটো ভন বোলশেভিককে কেবল আমেরিকায় ঢুকতেই দেয়া হয়নি জামাই আদরে রাখা হয়োছিল।
৪০ দশকে আমেরিকা গুয়েতেমালায় মানসিক রোগী এবং কয়েদীদের উপর ভয়াবহ এক গবেষণা চালিয়ে গেছে। শত-শত মানুষের শরীরে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে সিফিলিস, গনোরিয়ার জীবাণু ছড়িয়ে দেয়া হয়। এমন কত ঘটনা ঘটে গেছে এর কটার খবর আমরা জানি? 

যেমন কলম্বাস ১৪৯২ সালের ১২ই অক্টোবর আমেরিকা আবিষ্কার করেন। তাকে বীর পুজা করা হয়। এই শুয়োর ওখানকার আদিবাসিদের নিয়ে তার লগ-বুকে লেখেন, 'আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, এরা দাস হিসাবে চমৎকার হবে...'।
কলম্বাসকে নিয়ে আমেরিকার এক শিক্ষক বিল বিগলো গুছিয়ে বলেন, 'কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কারক নন, বরং স্রেফ একজন লুটেরা ছিলেন'।
কলম্বাস নামের এই শুয়োর অসংখ্য উত্তরসূরি রেখে যান। বিচিত্র এই দেশটা, ততোধিক বিচিত্র এর জনগণ! একটা মিথ্যার কারণে ক্লিনটনের গদি যায়-যায় অথচ বুশ নামের এক উম্মাদের কিছুই হয় না।

তো, কালে কালে এই শুয়োরটার গায়ের বোটকা গন্ধ আরও তীব্র হয়। এটা আমরা বিস্মৃত হই। শুয়োরদের উল্লাসে যোগ দেন টনির [৩] মত কিছু পোষা সারমেয়। আমরা গোল হয়ে দাঁড়িয়ে এদের দেখানো তামাশা দেখি। আমেরিকা অ্যাপাচি হেলিকপ্টার [৪] থেকে গুলি করে রক্তমাংসের মানুষ মারবে, শিশুদের আহত করবে এই খেলায় অ্যাসাঞ্জ বাধা দেবেন এটা কোন দেশের সভ্যতা!
আসলে অ্যাসাঞ্জের [৫] মত মানুষরা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেন, ওখানে নৈতিকতার কথা বলা বৃথা। জঙ্গলে চলে জঙ্গলের আইন সেখানে নৈতিকতার কথা বলা এও এক অশ্লীলতা...। অ্যাসাঞ্জ নিজ থেকেই ধরা দিয়ে অসম্ভব বুদ্ধিমানের কাজ করেছেন। নইলে হয়তো কোন গুপ্ত ঘাতক তাঁকে মেরেই ফেলত। কোন সভ্য দেশে সবচেয়ে নিরাপদ স্থান হচ্ছে সরকারের কাস্টডিতে থাকা। অবশ্য আমাদের দেশের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য না কারণ এখানে জেলখানায় ঢুকে ফট করে কাউকে মেরে ফেলা যায় [৬], বছরের পর বছর ধরেও এই খুনের কোন বিচার হয় না! এই দেশে সবই সম্ভব, সব সম্ভবের দেশ! এখানে সমস্ত খুনের বিচার চাওয়া [৭], না-চাওয়া সমান। 

সহায়ক সূত্র
১. রক্ত+তেল=...: http://www.ali-mahmed.com/2009/12/blog-post_25.html
২. সভ্যতা: http://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_493.html
৩. কুকুরের জন্য হাড়: http://www.ali-mahmed.com/2010/09/blog-post_9265.html 
৪. ভিডিও গেম: http://www.collateralmurder.com/
৫. অ্যাসাঞ্জ, উইকিলিকস: http://wikileaks.ch/
৬. খুন: http://www.ali-mahmed.com/2009/11/blog-post_03.html
৭. সমস্ত খুনের বিচার...: http://www.ali-mahmed.com/2010/07/blog-post_19.html   

Wednesday, December 8, 2010

আজ তোমার গায়ে হলুদ, মেয়ে

শাহানা বেগমকে আমার কাছে নিয়ে এসেছিলেন অন্য একজন মানুষ। অনুরোধটাও ছিল ওই মানুষটারই।

শাহানা বেগমের মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। বিয়েতে আর্থিক জটিলতা দেখা দিয়েছে। বিয়েতে সহায়তা দেয়ার মত কোন সুযোগ আপাতত আমার নাই এটা প্রথমেই জানিয়ে দেই। কেউ নিরাশ হলে আমার কীই-বা করার আছে?

কিন্তু শাহানা বেগমের জীবন-যুদ্ধের গল্প শুনে মনটা বিষণ্ন হয়। স্বামীর মৃত্যু হয়েছে অনেক কটা বছর। বাজারে তিনি সব্জী বিক্রি করেন। তাঁর দুই মেয়ে, বড়ো মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোটটা কলেজে পড়ত। সব্জী-টব্জী বিক্রি করে করে, মেয়েটাকে অনেক দূরের কলেজে ভর্তি করিয়ে পড়াশোনা করিয়েছেন। এখন ভাল একটা ছেলে পেয়েছেন, বিয়ের ঝামেলাটা চুকিয়ে ফেলতে চান।
আলাপে জানা গেল এই ছেলে প্রায় অশিক্ষিত। একজন অশিক্ষিত ছেলের কাছে কেন মেয়েকে বিয়ে দিচ্ছেন এটা জানতে চাইলে তিনি বিমর্ষ হয়ে জানালেন, তাঁর মত দরিদ্র মানুষের কাছে শিক্ষিত ছেলে তো আর আসবে না, উপায় কী! আশেপাশের সবাই এটাই সমীচীন মনে করছে এই ছেলেটার কাছে বিয়ে দিতে। ছেলের বংশ ভাল, ট্রাক্টর চালায় ইত্যাদি।

এই প্রসঙ্গে যখন কথা হচ্ছে তখন আমার সঙ্গের মানুষটা রাগে চিড়বিড় করে বললেন, না-না-না, এটা হতে পারে না। অশিক্ষিত একটা ছেলের কাছে আপনার মেয়েকে বিয়ে দেয়ার জন্যই কি আপনি এতো কষ্ট করে মেয়েকে কলেজে ভর্তি করিয়েছিলেন!
আমি চোখ দিয়ে ইশারা করে মানুষটাকে থামতে বললাম। জীবনটা সিনামা না। এখানে রক্ত চাই-রক্ত চাই টাইপের সংলাপ আউড়ানো চলে না। মেয়েটার এই বিয়ে থামিয়ে দেয়া চাট্টিখানি কথা না। এখানে এমন ছেলে খুঁজে পাওয়া যাবে না যে উঁচু স্বরে হাততালি দেয়ার মত সংলাপ বলবে, এই বিয়ে না-হলে এই মেয়েকে আমি বিয়ে করব।

যাই হোক, কথা প্রসঙ্গে এটাও জানা গেল শাহানা বেগম সব্জী ব্যবসা করার জন্য এক হাজার টাকা সুদে নিয়েছেন। এবার আমি খানিকটা নড়েচড়ে বসি। কারণ ন্যানো ক্রেডিটের [১] আওতায় এই টাকাটা দেয়া সম্ভব। একজন এই টাকাটা আমাকে দিয়েছিলেন এই শর্তে যেন কাউকে এই টাকাটা ব্যবসার জন্য দেয়া হয় এবং একজনকে দিলে ভাল হয়।
শাহানা বেগম আনন্দের শেষ নাই কিন্তু আমার মনে ঘোর সন্দেহ। আমি বলেই ফেললাম, আপনি এই টাকাটা আবার বিয়েতে খরচ করে ফেলবেন না তো?
শাহানা বেগম 'আইতাছি' বলে উধাও হলেন। ফিরে এলেন সুদখোর মানুষটা নিয়ে। সুদখোর মানুষটা টাকা বুঝে নিয়ে গেলেন। ঈশ্বর, এই মানুষটাকে তো আমি নিয়মিত মসজিদে যেতে দেখি!

আমার কাজ থেকে অকাজ বেশি। শাহানা বেগমের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। পূ্র্বেও উল্লেখ করেছি অহেতুক হাঁটাহাঁটির বাজে অভ্যাস আছে আমার।
আজ হাঁটতে গিয়ে শাহানা বেগমকে পেয়ে যাই। আরও দু্-একজন মহিলার সঙ্গে সব্জী বিক্রি করতে। আমি হাঁ করে তাকিয়ে থাকি। কেন? এমন তো আমার জানা নেই তিনি সব্জী বিক্রি করেন, তাহলে কেন? কিছু কিছু দৃশ্য আছে দেখতে ভাল লাগে, মনটা অন্য রকম হয়!
ফিরে এসে শাহানা বেগমকে যিনি আমার কাছে নিয়ে এসেছিলেন তাঁর সঙ্গে কথা হয়। তাঁর কাছে জানা গেল, আজ শাহানা বেগমের মেয়ের গায়ে হলুদ। অথচ এই মাটা সব ফেলে ঠিকই দোকানের পশরা সাজিয়ে বসেছেন।

বিয়ের আয়োজনের কি অবস্থা এটা জানতে চাইলে তিনি জানালেন, আত্মীয়-স্বজনরা সবাই কিছু কিছু করে সহায়তা করে অনেকটা এগিয়ে ফেলেছেন। লেপ-তোষক-বালিশে এসে এখন এই মহিলা আটকে আছেন। সব মিলিয়ে ২২০০ টাকার মামলা। পরের অংশটুকু শোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। আহারে-আহারে, এই মাটা জগদ্দল পাথর বুকে নিয়ে ক্রেতার সঙ্গে কথা বলছেন, ঠিক ঠিক পয়সা গুণে নিচ্ছেন! মেয়েটা হয়তো গাল ফুলিয়ে বসে আছে, আম্মাটা যে কি, আজও বাজারে যেতে হবে কেন!

আমি খানিকটা অন্যমনস্ক হয়ে পড়ি হয়তো কিন্তু মস্তিষ্ক কাজ করছে ঝড়ের গতিতে। অতি দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে এমন কাউকে যিনি এই টাকার সহায়তা দিতে পারবেন। অবশ্য না-পাওয়া নিয়ে আমার অস্থিরতা নাই। কাউকে-না-কাউকে পাওয়া যাবে এতে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই...।

সহায়ক লিংক:
১. ন্যানো ক্রেডিট: http://tinyurl.com/39dkbhh 

Tuesday, December 7, 2010

স্বপ্নের বীজ!

পূর্বের লেখায় উল্লেখ করেছিলাম [১] তাড়াহুড়োয় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। একটা স্কুলের বাচ্চাদের এই অনুষ্ঠানে আনা সম্ভব হয়নি। আমার মনে হয়েছিল দমে না-গিয়ে দুইটা স্কুল নিয়েই অনুষ্ঠানটা করে ফেলি। প্রধান অতিথির সঙ্গেও তখনও যোগাযোগ হয়নি। তিনি কি এতো স্বল্প সময়ে থাকার জন্য রাজি হবেন? মানুষটাকে ভয়ে ভয়ে দাবী নিয়ে বলি। মানুষটা সহৃদয়। আগের একটা অনুষ্ঠানেও [২] হাতে অল্প সময় নিয়ে বলেছিলাম। তখনও না করেননি, এখনও না!
আঁকার বিষয়বস্তু খানিকটা কঠিন ছিল এদের জন্য। বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের সমাধিস্থলের ছবি। কিন্তু...। আমার ইচ্ছা ছিল আঁকার জায়গাটা হবে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের সমাধিস্থলে। ঠিক ওখানে বসে আমাদের ইশকুলের [৩] বাচ্চারা সমাধিস্থল দেখে দেখে আঁকার চেষ্টা করবে। কিন্তু সেটা আপাতত সম্ভব হচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে রেলস্টেশনের স্কুলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ছবি ঋণ: দুলার ঘোষ
ছবি ঋণ: দুলাল ঘোষ
ছবি ঋণ: দুলাল ঘোষ
দুই স্কুল মিলিয়ে পঞ্চাশের উপর বাচ্চারা প্রথম এমন কোন একটা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করল। এই প্রথম আঁকার চেষ্টা করল। সব বীজ থেকে যেমন বৃক্ষ হয় না তেমনি সব বীজই নষ্ট হয়ে যায় এটাও ঠিক না। এখানের বাচ্চারা কেউ-না-কেউ অদেখা স্বপ্ন লালন করবে। এই স্বপ্ন তাকে কেমন করে চালিত করবে এটা সময়ই ঠিক করে দেবে।

সহায়ক লিংক:
১. আখাউড়া মুক্ত দিবস: http://www.ali-mahmed.com/2010/12/blog-post_06.html
২. দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধা, স্যালুট ম্যান: http://www.ali-mahmed.com/2010/06/blog-post_4596.html

৩. আমাদের ইশকুল: http://www.ali-mahmed.com/2010/10/blog-post_07.html