ভৈরব গেছি ভয়াবহ এক ঝামেলা নিয়ে। কপালের ফের! এই দেশের অতি বিখ্যাত এক রক্তচোষার খপ্পরে পড়ে গছি। অনেকে বলবেন, মিয়া তোমার মাথায় তো এক চামচ ব্রেন ছিল শুনছিলাম, তুমি ক্যামনে খপ্পরে পড়লা।
আহা, এই খপ্পরে পড়া শিখিয়েছেন আমাদের আদিপিতা। নইলে আজ স্বর্গে বসে স্বর্গীয় লেখালেখি করতাম, ছাতার এই গ্রহে কি আর লেখালেখির নামে ছাতাফাতা ব্লগিং করি!
কপাল আমার- ড্রেন কেমন কেমন করে যেন রাস্তার মধ্যখানে চলে আসে!
একজন ওদিন বলছিলেন, আপনার সমস্যা কী! আপনি তো যোদ্ধা না, যে কেবল যুদ্ধ করে যাবেন। আমি মনখারাপ করা শ্বাস ফেলে বলেছিলাম, এটা কেমন বিচার আমি জানি না, আমাকে পাঠানো হয়েছে গুলতি দিয়ে ডায়নোসরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে! ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার- এই নিধিরামকে আমি চিনি না কিন্তু ডন কুইক্সোটকে চিনি। ডন কুইক্সোটের মত মিছামিছির এক যোদ্ধা!
যে কথাটা তাকে বলা হয়নি, আমার প্রবল বিশ্বাস, আমি যেখানে শেষ করব সেখান থেকেই কেউ না কেউ শুরু করবে। আমার গলিত শব থেকে জন্ম নেবে সত্যিকারের যোদ্ধা- যাদের তলোয়ারে থাকবে সূর্যের ঝলসানো আলো। ছিন্নভিন্ন করে দেবে অন্ধকার সব।
তো, মন অসম্ভব খারাপ। মন অতিরিক্ত বিষণ্ণ হলে আমার যেটা প্রয়োজন, যথা সম্ভব দ্রুত বাসা নামের আমার ছোট্ট ঘরটাতে সেঁধিয়ে যাওয়া। আজ আবার ট্রেন কয়েক ঘন্টা লেট, শালার কপাল। প্ল্যাটফরমে কাঁহাতক হাঁটাহাঁটি করা যায়?
পারতপক্ষে ওয়েটিং-রুমে আমি বসি না। কিন্তু হাতে আবার ছফা বলেই হয়তো ওয়েটিং-রুম নিয়ে তাঁর লেখা মনে পড়ছে। ওয়েটিং রুম নিয়ে আহমদ ছফার চমৎকার কথা আছে, "তসলিমা নাসরিনকে দেখলেই আমার সুদৃশ্য ওয়েটিং-রুমের কথা মনে পড়ে।"
ছফা বলে কথা! আজকের জন্য ওয়েটিং রুমে খানিকক্ষণ বসা যেতে পারে।
ওয়াল্লা, এখানে দেখি বাজার জমে আছে। একজন যে শব্দে ফোনে কথা বলছেন, আমার ধারণা ফোন রেখে খালি গলায় বললেও ফোনের অপর পাশের মানুষটার শুনতে কোন সমস্যা হবে না। তিনি বলছিলেন, 'স্যার, হেরে আমি আপনের সামনে জুতা দিয়া পিটামু'। অথচ মানুষটার পায়ে স্পন্জের স্যান্ডেল, আমার মাথায় ঢুকছিল না এ পিটাবার জন্য কি জুতা ধার করবে? নাকি ব্যাগে একপাটি জুতা লুকিয়ে রেখেছে! পিটাবার সময় বের করেই ধাঁই-ধাঁই-ধাঁই...।
মন ভালো করার জন্য এই সব বিনোদন মন্দ না।
ওয়েটিং রুম নামের এই বাজারে আমার দমবন্ধ হয়ে আসে। এখান থেকে বেরিয়ে দূরে গিয়ে রেল লাইনের পাশে পা ছড়িয়ে বসি। পাশেই একজন মানুষ। চা খেতে খেতে মানুষটার সঙ্গে টুকটাক কথা হয়। মানুষটা জন্মান্ধ। হেঁচকি ওঠার মত একটু পর পর টুকরা-টাকরা গানের লাইন উঠে আসছে। আমি মানুষটাকে বলি, এসমাইল ভাই, আপনে কি গান গান নাকি?
মানুষটার লাজুক উত্তর, জ্বে।
এসমাইল ভাই, আমার মন আজ খুব খারাপ। একটা গান ধরেন দেখি।
মানুষটা বিব্রত, আমার খন্জরিডা না নস্ট, বুঝলেইন। খন্জরি ছাড়া গান গামু ক্যামনে?
আমি রেললাইন থেকে দুইটা পাথর কুড়িয়ে নিয়ে আসি। মানুষটার হাতে দিয়ে বলি, এই পাত্থর বাজাইয়া গান ধরেন।
এসমাইল মিয়ার দুখি গলা, আমি তো ভাইজান পাত্থর দিয়া গাইতাম পারি না।
আমি চকচকে চোখে বলি, পারবেন। শুরু করেন।
পেয়ে যাই কান্চন মিয়াকে। তাঁর দোতারা শুনে মনে হয়, আহা, আমিও যদি পারতাম এমন বাজাতে!
কান্চন মিয়ার কঠিন অনুরাগী!
*রক্তচোষা আর জোঁকের মধ্যে পার্থক্য কি এটা নিয়ে গবেষণা করা অর্থহীন!
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Wednesday, March 24, 2010
পথগাতক, আমি বড়ো একা হয়ে গেছি
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment