Search

Friday, January 9, 2009

দানব বানাবার কারখানা!

"একটি পাখির বাসা আছে
একটি গরুর গোয়াল আছে
একটি ঘোড়ার আস্তাবল আছে
একটি খরগোসের গর্ত আছে
সবাই বলে মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব
আমরা ফিলিস্তানি, আমরা মানুষ(?)
আমাদের কোন আবাসভূমি নাই।"
(ফিনিস্তানি কবি মাহমুদ দারবিশ)


আসলেই কী ফিলিস্তানিরা কখনও তাদের নিজস্ব দেশ নামের ভূ-খন্ড পেয়েছে, বা ছিল? এই নিয়ে তর্ক-বিতর্ক-কুতর্ক চলেছে আর এদিকে জুইশরা কিন্তু ঠিকই কালে কালে একেকটা (link) দানব হয়ে উঠেছে!
২০০৬-এর জুন। ১৯ বছরের একজন ইসরাইলি কর্পোরাল জিলাদ শলিতকে মুক্ত করার নাম করে ইসরাইল প্যালাস্টাইনে অনুপ্রবেশ করে প্যালাস্টাইন সরকারের ৯জন মন্ত্রী, ২০ এম. পিকে চোখ বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে তুলে নিয়ে যায়। ইসরাইলের পক্ষেই সম্ভব একটি দেশের মন্ত্রী, এমপিদের অপহরণ করার মত হলিউডি ছবিকে হার মানানো।
ইসরাইল প্রতিষ্ঠার সময় ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫৬, ১৯৬৭, ১৯৭৩ সালে আরবদের সংগে যুদ্ধে আরবরা কিছুই করতে পারেনি বরং অনেক সময় নিজেদের জায়গা হারিয়েছে।
ইয়াসির আরাফাত ওরিয়ানা ফালাচির সঙ্গে সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, "বিশ্ব ভুলে গেছে ১৯২০ সালে আমাদের পিতারা ইহুদীদের সঙ্গে লড়াই করেছিল। তখন তারা কুলিয়ে উঠতে পারেনিনি। কিন্তু ১৯৬৫ থেকে আমরা সমানে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার শক্তি অর্জন করি। 'আল ফালাহ' ফিলিস্তানি যোদ্ধাদের ৯৭ ভাগ প্রতিনিধিত্ব করছে। ১৯৬৯-এর ফেব্রুয়ারিতে পপুলার ফ্রন্ট ৫ ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় এর মধ্যে ৪টি দলই 'আল ফালাহ'র সঙ্গে যোগ দেয়। অন্য একটি ফ্রন্টের নেতা জর্জ হাবাশ শিঘ্রি আমাদের সংগে যোগ দেবেন। আমরা এখন যে অবস্থায় কাটাচ্ছি তা যাযাবরের জীবন, অথচ শত-শত বছর ধরে আমরা এখানে বাস করে আসছি"। (ইন্টারভিউ উইথ হিস্ট্রি/ ওরিয়ানা ফালাচি)
এই ইসরাইলি বা ইহুদিদের ক্ষমতা কতটুকু এটা আঁচ করা মুশকিল। জুইশ (Jewish) কমিউনিটি বা ইহুদি সম্প্রদায়কে নিয়ে মাহাথির মোহাম্মদ বলেছিলেন, "পরোক্ষভাবে ইহুদিরাই বিশ্বকে শাসন করছে। আমেরিকা পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করে আর আমেরিকাকে নিয়ন্ত্রণ করে জুইশ কমিউনিটি। বিশ্বের অস্ত্র, মিডিয়া, ব্যাংক থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রেই জুইশ কমিউনিটির নিয়ন্ত্রণ রয়েছে পুরোপুরি। গত ৫০ বছরেও বেশি সময় ধরে প্যালেস্টাইনের উপর তারা যে অন্যায় করেছে তা Clash of Civilisation- এর মোড়কে বৈধ করে নিয়েছে পশ্চিমি সমাজ।বুশের প্রকাশ্যে সমর্থন ছিল ইহুদিদের প্রতি। আর কন্ডোলিনা রাইস তার প্রথম ইসরাইল সফরের পর বলেন, নিজের বাড়িতে ফিরে আসা"। 
বুশ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর যেমন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার, পেন্টাগন অ্যাডভাইজার, চিফ পলিসি ডিরেক্টর, পলিটিকাল মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স কর্মকর্তা, বাজেট ম্যানেজমেন্ট কর্মকর্তা, ফরেন সার্ভিস ডিরেক্টর, হোয়াইট হাউজের স্পিচ রাইটার, নাসার অ্যাডমিস্ট্রেটরসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিল জুইশরা। কর্পোরেট হাইসগুলোর অধিকাংশ কোম্পানীর মালিক, সিও, প্রধান নির্বাহী জুইশরা। এটা মাইক্রোসফট হোক আর জাপানি কোম্পানি সনি।
মিডিয়ায়ও এদের দাপটের শেষ নাই। টাইম ওয়ার্নার-ওয়ার্নার ব্রাদার্স, এদের সহযোগি প্রতিষ্ঠান AOL, HBO, সিনেমেক্স, পলিগ্রাম এদের নাম কে না জানে? ওয়ার্নার ব্রাদার্সের মূল প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ইহুদি, চিফ এক্সিকিউটিভ বা সি,ও জেরাল্ড লেভিন ছিলেন ইহুদি। টেড টার্নারের সি, এন, এন হাল ছেড়ে দেয় ওয়ার্নার ব্রাদার্সের কাছে। ছড়ি ঘোরাত ওয়ার্নার ব্রাদার্স। এরা কেমন করে লোকজনকে প্রভাবিত করে এর একটা উদাহরণ দেয়াটা সমীচীন হবে।
নাইন ইলাভেন। টুইন টাওয়ার ধ্বংশ হওয়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের ফুটেজ দেখানো হচ্ছিল। একটা ফুটেজ সাধারণ মানুষকে হতভম্ব করেছিল সেটা হচ্ছে, এই ধ্বংশের পর প্যালাস্টাইনরা আকাশে শূণ্যে গুলি ছুঁড়ে আনন্দ প্রকাশ করছে। এই দৃশ্য দেখে যেকোন সচেতন মানুষ আহত হবেন এতে সন্দেহ কী!
কিছুদিন পর সিএনএন খুবই অবহেলার সংগে টেলপে লিখে জানায়, ফুটেজটি ছিল পুরনো এবং এটা ভুলবশত দেখানো হয়েছে।
'টাইম' ম্যাগাজিনসহ বিশ্বের নন্দিত অন্তত ৫০টি পত্রিকা ওয়ার্নার গ্রুপের। ওয়াল্ট ডিজনির সিও মাইকেল আইসনার ছিলেন ইহুদি। মিডিয়া টাইকুন রুপার্ট মারডকের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে আছে জুইশদের সমর্থন, প্রভাব। বলা হয়ে থাকে মারডকের মা ছিলেন ইহুদি। এমন অজস্র উদাহরণ আছে।
জুইশ কমিউনিটি থেকে এসেছেন স্ট্যানলি কুবরিক, রোমান পোলানস্কি, উডি অ্যালান, এলিজাবেথ টেইলর, ডাস্টিন হফম্যান, হ্যারিসন ফোর্ড, ডগলাস, বব ডিলান, ডেভিড কপারফিল্ড, আসিমভ, আইনস্টাইন, হুডিনি, কাফকা- এই তালিকা অনেক লম্বা। 
জুইশদের পক্ষে জনমত গঠনে যেসব দুর্দান্ত মুভি হয়েছে এগুলো আমাদেরও কম প্রভাবিত, কম আবেগতাড়িত করে না! কারণ 'শিল্ডলার্স লিস্ট', 'মিউনিখ' বানিয়েছেন স্পিলবার্গ, এসেছেন জুইশ কমিউনিটি থেকে। এরা যে যেখানেই থাকেন কিন্তু তাদের স্বপ্নভূমিকে কখনও বিস্মৃত হননি। এদের জোরটা কতটা নিতল এটা কেবল অনুমানই করাই সম্ভব।
প্রকারান্তরে এই গ্রহ শাসন করছে মোটা দাগে আমেরিকা, সূক্ষ দাগে জুইশ কমিউনিটি। এ গ্রহের প্রয়েজনীয় সমস্ত কিছু নিজেদের আয়ত্বে নিয়ে আসতে হবে। সব কিছুর মূলে ব্যবসা। অস্ত্র খুব লাভজনক ব্যবসা। হিউজ ইনভেস্ট, এই যে এতসব হাইটেক মারণাস্ত্র বানানো হচ্ছে মহড়া দেয়ার তো উপায় নাই। তো, যুদ্ধ লাগাও। আগের ক্লাস্টার বোমায় একশ প্রাণ নষ্ট হতো এখনকার ক্লাস্টার  বোমায় পাঁচশ মানুষ ঘায়েল হচ্ছে। আরাম করে যুদ্ধের ভিজ্যুয়াল দেখো, শ্যাম্পেনে চুমুক দাও। দরদাম করো, অর্ডার দাও। ডিল।

তেল নামের জ্বালানীটা খুব প্রয়োজন। প্রকৃতি এটা আবার উপুড় করে দিয়েছে কিছু মরুভূমির দেশগুলোকে। খুব বেশি বছর হয়নি ইরানিরা আমাদের দেশে এসে হকারি করত, ছুঁরি-চাকু ধার দিত।
প্রথমে ঠিক করতে হবে কোন-কোন দেশ তেলে ভাসছে। কুয়েতকে শুইয়ে ফেলতে হবে অতএব ইরাককে উস্কে দাও। সৌদি একটা স্পর্শকাতর দেশ, মুসলমানদের তীর্থভূমি। এখানে খানিকটা রয়েসয়ে। কিন্তু ইরাক কুয়েত দখল করে নিচ্ছে, সৌদির সুড়সুড় করে লাইনে না এসে উপায় কী! এই বদুরা ওরফে বর্বরদের এখন আবার বন্দুকের চেয়ে চামড়ার বন্দুক চালাবার আগ্রহই বেশি!  
ইরাককে কুর্দি দিয়ে কাবু করতে হবে, কুর্দিদের মেরে ফেলার জন্য এরাই রাসায়নিক অস্ত্র বিক্রি করবে। বেয়াদবী করলে রাসায়নিক অস্ত্র আছে এই দোহাই দিয়ে ইরাককে ঝুলিয়ে ফেলতে হবে।
কুর্দিদের এরা কী পর্যায়ে অত্যাচার করেছে এর একটা নমুনা এমন: একজন ইরাকি কুর্দি আরি বলেন, "I know i am recist but i can't help it. আরবদের আমি ঘৃণা করি, এমনকি মুসলমানদেরও। আমি কোরআন পড়ি না, কেন না এটা আরবিতে লেখা। আমি ইসলাম মানি না কেননা এটা আরবদের মাধ্যমে এসেছে।"
সবই খেলা, একটা গেমের অংশ। আমরা আকাশপানে তাকিয়ে থাকি। জুম্মাবারে মুসলিম উম্মার জন্য দোয়াপর্ব কয়েক মিনিট দীর্ঘ হয়...। ক্রমশ গোটা পৃথিবী মোমিন মুসলমানে ভরে যাচ্ছে। খেলা কিন্তু বন্ধ নেই, খেলা চলছে...!
প্রথমে আসলে ইহুদিদের উপর বিভিন্ন সময় যে অত্যাচার হয়েছে এই স্মৃতিগুলো অহরহ এখনও এদের তাড়া করে, ফলশ্রুতিতে একেকজন গড়ে উঠছে একেকটা চলমান দানব হয়ে। এরা তাদের শিশুদেরকে মস্তিষ্ক নিয়ে খেলা করছে, এদের সাব-কনশান মাইন্ডেও ঢুকিয়ে দিচ্ছে তীব্র ঘৃণা! বানাচ্ছে আগামি একেকটা দিনের দানব। তাই এদের শিশুরা মিসাইলে গায়ে ফানি-মজার মজার কথা লেখে (সেই মিসাইলেই আহত হয়, প্রাণ হারায় ফিনিস্তানি শিশু) কারণ এদেরকে শেখানো হচ্ছে, মিসাইল, শিশু-মৃত্যু এসব হচ্ছে খেলার একটা অংশ। মজার- খুব মজার, শৈশবের একটা খেলা।

ছবিঋণ: sabbah.biz মতান্তরে এএফপি 
আংশিক ঋণ: মোহাম্মদ মাহামুদুজ্জামান

সহায়ক সূত্র:
১. জুইশদের দানব হয়ে উঠা: http://www.ali-mahmed.com/2009/01/blog-post_10.html
২. গ্রহ অধিপতি...: http://www.ali-mahmed.com/2011/05/blog-post_18.html

1 comment:

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

Mashroof Hossain অন্যত্র এই লেখা প্রসঙ্গে আমার সঙ্গে অমত পোষণ করেছেন: "I do not agree with this. This is too generalized."

তাঁর এই অমতে আমার মত আছে।
এর অর্থ আমি সম্ভবত তাঁর অমতের জায়গাটা খানিকটা বুঝতে পেরেছি। এই লেখাটার শিরোনাম ছিল, "জুইশ-শিশুরা: আগামী কালের একেকজন দানব।"
শিরোনাম এবং লেখার কিছু অংশ পরিবর্তন করে দিলাম। কারণ এটা কেবল আমার ভুল না, অন্যায়। এই অন্যায়ের ফল সুদূরবর্তী। এই করে-করেই আমরা শিখি, সিলেটের লোক এই তো পাবনার লোক ওই। হায়, এক পাবনাই জন্ম দেয় লিভিং ইগল সাইফুল আজমের! পাবনার আর কিছু লাগে...!