(এই লেখাটা অসমাপ্ত। )
একবার লিখেছিলাম সম্ভবত জাফর ইকবালকে নিয়ে লেখা আমার জন্য শব্দের অপচয়! তারপরও শুরু করিলাম তারই নামে। কারণটা বলি। আমাদের দেশে খুব বড় একটা সমস্যা হচ্ছে এটা, আমাদের দেশে এমন মানুষের বড় অভাব যাদের দেখিয়ে আমরা আমাদের সন্তানদের বলতে পারি, ব্যাটা, ওই মানুষটার মত হবি। এই ভদ্রলোক আবার শিশু-কিশোরদের মাথা এলোমেলো-ঘাঁটাঘাঁটি করার সুযোগ নিয়ে এসেছিলেন। উপরওয়ালার দান- কিছু করার নেই!
"আমরা মুক্তযোদ্ধারা একদিন সবাই মরে যাবো। তখন ড. জাফর ইকবালের এই লেখার প্রতিবাদ করার কেউ থাকবে না। সেই সময় অনেকেই তার কথাকে বিশ্বাস করবে। আমি একজন জীবিত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে জানি, ১৯৭১ সালে ঢাকা শহর দখলের কোনো যুদ্ধ হয়নি। দুই নম্বর সেক্টরের ক্রাক প্লাটুনের মুক্তিযোদ্ধারা ঢাকা শহরে অপারেশন করত। তা ছিল একেবারেই চোরাগোপ্তা এ্যাকশন।
এই যে তিনি বলছেন কানের কাছে গোলাগুলির শব্দ, শেলিং-এর অসহ্য শব্দ যার হাত থেকে বাঁচতে তিনি কম্বল মুড়ি দিয়ে ট্রেঞ্চে আশ্রয় নিতেন এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ঢাকা শহর দখলের এমন কোনও যুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হয় নাই।"
জাফর ইকবালের মত একটা ধামড়া একটা মানুষ যুদ্ধের সময় যুদ্ধে না-গিয়ে কেবল গর্তেই লুকিয়েই থাকেননি, এন্তার মিথ্যাচার করেছেন। এই প্রজন্মকে মিথ্যায় ভাসিয়েছেন- এই প্রজন্মকে অনবরত মগজ ধোলাই করেছেন [২]। এখন আবার এই মানুষটা আসেন বাচ্চাদের শেখাতে! এদিকে মোস্ট ওবিডিয়েন্ট স্যারের ছাত্রদের আবেগ দেখে আমার এক চোখে জল অন্য চোখে পানি চলে এলো:
আরেক দল আছে জ্ঞানপাপি। এরা ভয়ংকর! কারণ এরা বিপুল জ্ঞানের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও জরুরি আলোচনার সময় ব্রেনটা চট করে পেছনে চলে যায়। নমুনা:
তিনি বিরাট এক কাহিনী ফেঁদে পরিশেষে বলছেন:"...বুঝলাম এই ছেলে প্রশিক্ষিত বাচ্চা শিবির। এরাই নেতৃত্বে। হাঁটা দিলাম।, আরও দু চারজন লোকের সাথে।"
পারিবারিক প্রসঙ্গ শেয়ার করতে আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। তবুও খানিকটা প্রাসঙ্গিক বিধায় বলি। বাবা হিসাবে আমি খুবই নীচু শ্রেণীর মানুষ। আমি থাকি মফস্বলে। পূর্বে আমার ছেলে শাহীন কলেছে পড়েছে। কোন দিন আমার যাওয়া হয়নি! তারপর একটা বিশ্ববিদ্যলয়ে পড়ছে আড়াই বছর হবে। প্যারেন্টস ডে-তে বা কোন অনুষ্ঠানেই যাওয়া হয়নি! সেরা ছাত্রের পুরষ্কার পেল, যাওয়া হয়নি! এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় অনুষ্ঠানে ম্যাজিক দেখায়, যাওয়া হয়নি!
ক-দিন আগে এক কাজে গিয়েছিলাম ওদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমার ছেলে খুব আগ্রহ করে ওদের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল। ব্রি. জেনারেল আনোয়ারুল ইসলাম নামের সদাশয় মানুষটাকে আমি বলেছিলাম, আপনাদের প্রতিষ্ঠানের সবই আপ-টু-দ্য-মার্ক কেবল একটা বিষয় ব্যতীত। ফুডকোর্টে যেখানে শিক্ষক-অভিভাবকরাও যান সেখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অল্প-কিছু ছেলে-মেয়েদের আচরণ ভারী দৃষ্টিকটু- অশালীন! পরে অনেকের এটা শুনে সে কী হা হা হাসি! প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি এসব ডালভাত। বটে রে, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি বলে কী মূল্যবোধ, নৈতিকতা অন্য গ্রহে হাঁটা দেয়!
তো, রেজিস্ট্রার ভদ্রলোককে যেটা বলেছিলাম, আমরা বাবারা যখন মাঠে-আপিসে থাকি তখন আপনারাই তো বাবার রোলটা প্লে করেন। আসলেই তো- এঁরা তো কেবল শিক্ষক নন, বাবা-মাও!
লিংক:
১. জাফর ইকবালের ট্রেঞ্চ: https://www.ali-mahmed.com/2020/05/blog-post.html
২. জাফর ইকবাল এক অসুরের নাম: https://www.ali-mahmed.com/2020/06/blog-post_27.html
৩. নিরাপদ সড়ক: https://www.ali-mahmed.com/2018/08/blog-post.html