সোয়াইক গেল যুদ্ধে নাটকের একটি সংলাপ ছিল এমন: নাত্স-ই বাহিনীর অফিসার বলছে, 'হাগিস কেমন'?
সোয়াইক উত্তর দিয়েছিল, 'যেমন চাইবেন স্যার। শক্ত চাইলে শক্ত, পাতলা চাইলে পাতলা'।
এই আলাপে অশ্লীলতা খোঁজা বৃথা। তীব্র ভয়ে বাহ্যজ্ঞান যেমন লোপ পায় তেমনি লজিক। এখানে আমি সোয়াইকের তীব্র ভয়ে কাবু হওয়াটাই দেখছি- প্রাণের চেয়ে প্রিয় তো আর কিছু নাই!
এখনকার সময়ে বাহ্যজ্ঞান লোপ পেতে ভয়ের পাশাপাশি বেসুমার টংকাও (টাকা) দায়ি। সেলিব্রেটিরা যথেষ্ঠ টাকা পেলে যে-কোন বিজ্ঞাপন করে ফেলেন। শাহেদ নামের সেলিব্রেটি, সেল ফোনের একটা বিজ্ঞাপনে, বাবা-মাকে ছেড়ে আসা স্ত্রীর মন খারাপ দেখে বাসে জনসমক্ষে ললিপপ চুষতেও আপত্তি করেন না। বেকুবটা কী মনে করে এটা চুষছে সেই জানে!
আজিব, কোন চুতিয়ার মাথা থেকে বিজ্ঞাপনের এই আইডিয়া বেরিয়েছে কে জানে! চাবকাতে পারলে আরাম পাওয়া যেত।
কে জানে, আগামীতে দেখব, ইসুবগুলের ভূষির বিজ্ঞাপনে কোন সেলিব্রেটিকে কাস্ট করে জানতে চাওয়া হবে, আপনি কি হাগতে পারেন?
সেলিব্রেটি বিমলানন্দে মাথা নুইয়ে বলবেন, হুঁ, হাগা কোন বিষয় না। পেমেটন্টা ভাল দেন, দেখবেন, আচ্ছা করে হেগে দেখিয়ে দেব। শক্ত চাইলে শক্ত, পাতলা চাইলে পাতলা।
আমার ধারণা, শিশুদের সবচেয়ে পছন্দের অনুষ্ঠান কার্টুন এবং বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপন শিশুরা কেন এত আগ্রহ করে দেখে আমি জানি না, এটা মনোবিদরা ভাল বলতে পারবেন। এদের অবচেতন মনে এর প্রভাব অকল্পনীয়! ৪-৫ বছরের শিশু বিজ্ঞাপনের জিংগাল পুরোটাই মুখস্ত করে বসে থাকে। লোগো দেখে গড়গড় করে আউড়ে যায়। সেল কোম্পানির বিজ্ঞাপন শুরু হওয়া মাত্রই ছাদ ফাটিয়ে বলে, মা কান্না করে-মা কান্না করে।
কী বিপুল প্রভাব!
একটি দুধ কোম্পানির চালু একটা বিজ্ঞাপন। বাচ্চালোক এই দুধ কোম্পানির দুধ খেয়ে এমন ‘তানদুরস্ত’-বলশালী হয়, গাছের মগডাল থেকে ছাতা নিয়ে লাফিয়ে পড়ে। কেবল লাফিয়েই পড়ে না প্যারাসুটের মত ভেসে ভেসে নিচে নেমে আসে। এরপর গলা ফাটিয়ে বলে, আমরা করব জয়, এ- এ-এ।
অল্প বয়সের শিশুরা যা দেখে তাই শেখে- বাবা চাঁদ ধরব, বাবা তোপ খাব। এই বিজ্ঞাপন দেখে কোন শিশু ছাদ থেকে ছাতা নিয়ে লাফিয়ে পড়লে ওই শিশুর মৃত্যুর দায় কে নেবে? এই বঙ্গালদেশে কি এমন কেউ নাই যাকে এর জন্য দায়ি করা চলে?
নাকি এরিমধ্যে কোন শিশু লাফ দেয়ার চেষ্টা করেছে? গোটা দেশের খবর তো আর আমাদের নখদর্পনে নাই। প্রত্যক্ষদর্শী কেউ না থাকলে এটাই বা কি করে নিশ্চিত হওয়া যাবে শিশুটি ছাতা নিয়েই ছাদ থেকে লাফ দিয়েছিল নাকি এমনি এমনি? পোস্টমর্টেম করে তো আর এটা বের করার উপায় নেই।
আমাদের দেশে জাতীয় দৈনিকগুলোতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির ৯০০ কোটি টাকা দানের খবরই আসে না আর একটা শিশুর মৃত্যুর খবর নিয়ে স্যারদের গা করার স্পৃহা কই?
মুক্তচিন্তার পরতিকায়(!) আসলেও বড়জোর আসতে পারে ছাদ থেকে পড়ে একটি শিশুর অকাল মৃত্যু। ফলোআপ করার চল আমাদের দেশে খুব একটা নাই। এরপর আমরা আর কিছুই জানব না।
ব্যস। মামলা ডিসমিস।
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Monday, September 22, 2008
শিশু হত্যার মারণাস্ত্র, বিজ্ঞাপনরঙ্গ!
বিভাগ
চাবকানো প্রয়োজন
Saturday, September 13, 2008
ঈশ্বর হইতে সাবধান!

চাকুরি সংক্রান্ত বিষয়, ভাইয়ের জন্য ।একজন সদাশয় মানুষের রেফারেন্সে এখানে আসা। চাকুরিদাতার অপেক্ষা। বসে থাকা, অনেক ফানির্চারের সঙ্গে মিলেমিশে ফার্নিচার হয়ে।
গুলশান। গাড়ির শো-রুম। এখানে ঘুষখোর, দূর্নীতিবাজদের বখা ছেলে-মেয়েদের স্যার-ম্যাম বলে বলে মুখে ফেনা তুলে আলগোছে গছিয়ে দিতে হবে ঝাঁ চকচকে একখানা গাড়ি।
অবশেষে তিনি এলেন। তাঁর খাস কামরা। টুকটাক উত্তর দেয়ার পাশাপাশি প্রশস্ত কামরায় চোখ বুলানো। ভদ্রলোকের সামনে রাখা এলসিডি মনিটরে অসংখ্য চলমান ছবি। ভালই তো, ইনি তাহলে একই সঙ্গে অনেকগুলো চ্যানেল দেখেন।
অরি আল্লা, ঘটনা তো এটা না, এটা তো লুকানো অসংখ্য সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ করা ছবি! মাবুদ, মনের ভুলে কেউ গোপনাঙ্গ চুলকালে এটাও যে কেউ আয়েশ করে বসে বসে দেখবে আর হি-হি করে হেসে গড়িয়ে পড়বে?
বিষয়টা মেনে নেয়া কঠিন কিন্তু এই অসভ্য কান্ড এই দেশেই সম্ভব। এখানে কে এটা নিয়ে গলাবাজি করবে যে এটা অবশ্যই আগন্তককে সতর্ক করা আবশ্যক যে গোপন ক্যামেরা চালু আছে। এবং ক্যামেরা যে চালু আছে তার একটা চিহৃ প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে না-দেয়াটা কঠিন অন্যায়।
ভদ্রলোক দুপুরের খাবার খাওয়াচ্ছেন। শুকরিয়া। এবং এটাও স্মরণ করিয়ে দিতে ভুলছেন না, কার রিজিক কোথায় থাকে কে বলতে পারে, এই যেমন আমিই কী জানতাম আজ দুপুরের আমার রিজিক এখানে? হুম, তা বটে। আরেকটা বিষয় হতে পারে এটাও ইন্টারভিউ-এর একটা অংশ।
ভদ্রলাক একনাগাড়ে কথা বলেই যাচ্ছেন। সৌদি আরব নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত। আমি নিরীহ মুখে বললাম, ওখানে মুতওয়া (পুলিশ) ঘরে ঢুকে এক বাঙ্গালিকে ধরে নিয়ে গেছে, সে বারবার বলছে আমি পাক না, কে শোনে কার কথা। জোর করে থানায় নামায পড়িয়ে বন্ড সই রেখে তবে ছেড়েছে।
সবটা মনোযোগ দিয়ে শুনে কাজটা যথার্থ হয়েছে বলেই ভদ্রলোক সায় দিলেন এবার তিনি রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে এই দেশে মাতামাতি করায় খুবই উষ্মা প্রকাশ করলেন। ওঁর ধারণা, কবির মর্যাদা দিলে নজরুল ব্যতীত আর কাউকে দেয়া চলে না। দরাজ গলায় আবৃত্তি করলেন, 'কবর দিও আমায় মসজিদের পাশে...'।
আমি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম, কবি নজরুল ইসলাম যে সমস্ত লেখা লিখে গেছেন এখনকার সময়ে নজরুল এর দশ ভাগের এক ভাগ লেখাও লিখলে কবির বাবরি চুল বাতাসে উড়ত। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে বাবরি চুলের পেছনে কবির কল্লা থাকত [১]!
আমি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম, কবি নজরুল ইসলাম যে সমস্ত লেখা লিখে গেছেন এখনকার সময়ে নজরুল এর দশ ভাগের এক ভাগ লেখাও লিখলে কবির বাবরি চুল বাতাসে উড়ত। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে বাবরি চুলের পেছনে কবির কল্লা থাকত [১]!
তিনি বলেই যাচ্ছেন, এখানে কাজের সময় সকাল সাড়ে আটটা থেকে রাত সাড়ে আটটা। বেশ। মধ্যে খাওয়া, নামাযের ব্রেক। খাওয়ার ব্যবস্থা এখানেই। বেশ। এবার তিনি চেষ্টাকৃত গম্ভীর হলেন, এখানে নামায কিন্তু অবশ্যই পড়তে হবে, এই বিষয়ে কিন্তু কোন ছাড় নাই।
হায় আকাশ! সকাল থেকে রাত- এখানে পড়ে থাকলে আকাশ দেখার সুযোগ কই? আচ্ছা, না-হয় আকাশ হারিয়েই গেল। পেটে আগুন নিয়ে আকাশ তো আর চিবিয়ে খাওয়া যায় না। বাদ আকাশ! কিন্তু নামাজ পড়ার আদেশ? এটাও তাহলে চাকুরির একটা শর্ত-অংশ!
আমি কখনও ঈশ্বর দেখিনি, এত কাছ থেকে তো প্রশ্নাতীত- তাহলে ঈশ্বরের সান্নিধ্যে ঝলসে যাব যে!
আজকাল বাড়ির গেটে ‘বিষধর সাপ হইতে সাবধান’ সাইনবোর্ড লাগাবার চল শুরু হয়ে গেছে। কালে কালে দেখব 'রাজাকার হইতে সাবধান' এমন সাইনবোর্ডও চলে এসেছে! ‘ঈশ্বর হইতে সাবধান’ এমন সাইনবোর্ডও ঝুলিয়ে দেয়া জরুরী, তাইলে আমরা বেঁচে যাই...।
লিংক:
১. কাজী নজরুল ইসলাম: https://www.ali-mahmed.com/2015/05/blog-post_25.html
বিভাগ
চাবকানো প্রয়োজন
Tuesday, September 9, 2008
বীভত্স স্বপ্ন এবং আত্মার ফেরিওয়ালা!
শাহাদুজ্জামান 'বীভত্স মজা' নামে একটা লেখা লিখেছেন। লেখা না বলে এটাকে কি শব্দছন্দ বলা হবে নাকি ছন্দশব্দ এটা বলা মুশকিল! শব্দ নিয়ে এমন হেলাফেলায় জাগলিং সম্ভবত শাহাদুজ্জামানের মত দুঁদে লেখকের পক্ষেই সম্ভব! হায়, কেমন করে পারেন একজন মানুষ শব্দের এমন শব্দনাচ দেখাতে!
শাহাদুজ্জামান আপনি টলটলে পানিঘষা চোখ দিয়ে কী অবলীলায়ই না ফালাফালা করেছেন ঢাকা নগরকে। ঢাকা, যেন লাশকাটা টেবিলে শুয়ে থাকা অপরূপ এক মানব। কিন্তু ব্যবচ্ছেদের পর, একপেট আবর্জনা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো অতি সুদর্শন একজন আর গলিত শবে পার্থক্য কী?
আহা, লুই কান নামের পরিকল্পনাবিদের পরিকল্পনা থেকে আপনি এখনো বেরুতে পারেননি বুঝি! বিদেশি না হলে বুঝি কিছুই আমাদের পাতে দেয়া যায় না? আপনার আর দোষ কী বলুন, যে দেশে আইডিয়া বিক্রি হয় কেজি দরে।
এই হতভাগা দেশে স্বপ্নপুরি কোথায়? কে স্বপ্ন বিক্রি করে, কে স্বপ্ন কেনে? কেই বা স্বপ্ন দেখে, কেই-বা স্বপ্ন দেখায়! কোথায় সেইসব স্বপ্নবাজ, যাদের চোখে উপচে পড়ত স্বপ্ন, যাদের হাড় ক্ষয়ে ক্ষয়ে বেড়ে উঠত স্বপ্নের শেকড়? এরা যে আজ নিজেকেই বিক্রি করতে হন্যে হয়ে ঘুরছে। একটা চাকরির জন্য একে-ওকে ধরছে। কেউ হ্যা হ্যা করে হাসছে, যেন ভারী মজার একটা কিছু শুনল যা হোক। কেউবা অন্য দিকে তাকিয়ে থাকার ভান করে।
এই অভাগা দেশে স্বপ্নবাজদের আদৌ প্রয়োজনই বা কী? স্বপ্নের ফেরিওয়ালারা এখন থেকে স্বপ্নের বদলে নিজের আত্মা ফেরি করবে অন্ধকারের পশুর কাছে!
শাহাদুজ্জামান আপনি টলটলে পানিঘষা চোখ দিয়ে কী অবলীলায়ই না ফালাফালা করেছেন ঢাকা নগরকে। ঢাকা, যেন লাশকাটা টেবিলে শুয়ে থাকা অপরূপ এক মানব। কিন্তু ব্যবচ্ছেদের পর, একপেট আবর্জনা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো অতি সুদর্শন একজন আর গলিত শবে পার্থক্য কী?
আহা, লুই কান নামের পরিকল্পনাবিদের পরিকল্পনা থেকে আপনি এখনো বেরুতে পারেননি বুঝি! বিদেশি না হলে বুঝি কিছুই আমাদের পাতে দেয়া যায় না? আপনার আর দোষ কী বলুন, যে দেশে আইডিয়া বিক্রি হয় কেজি দরে।
এই হতভাগা দেশে স্বপ্নপুরি কোথায়? কে স্বপ্ন বিক্রি করে, কে স্বপ্ন কেনে? কেই বা স্বপ্ন দেখে, কেই-বা স্বপ্ন দেখায়! কোথায় সেইসব স্বপ্নবাজ, যাদের চোখে উপচে পড়ত স্বপ্ন, যাদের হাড় ক্ষয়ে ক্ষয়ে বেড়ে উঠত স্বপ্নের শেকড়? এরা যে আজ নিজেকেই বিক্রি করতে হন্যে হয়ে ঘুরছে। একটা চাকরির জন্য একে-ওকে ধরছে। কেউ হ্যা হ্যা করে হাসছে, যেন ভারী মজার একটা কিছু শুনল যা হোক। কেউবা অন্য দিকে তাকিয়ে থাকার ভান করে।
এই অভাগা দেশে স্বপ্নবাজদের আদৌ প্রয়োজনই বা কী? স্বপ্নের ফেরিওয়ালারা এখন থেকে স্বপ্নের বদলে নিজের আত্মা ফেরি করবে অন্ধকারের পশুর কাছে!
বিভাগ
স্বপ্নের ফেরিওয়ালারা
Subscribe to:
Posts (Atom)