Search

Sunday, July 13, 2025

যে বৃক্ষের যে ফল!

চাঁদপুরের এক ইমাম সাহেবকে এক মুসুল্লি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে, মসজিদের ভেতরে।

মুসুল্লির নাম বিল্লাল হোসেন। ইমামকে কোপাবার কারণ হিসাবে সে ২টা প্রসংগ নিয়ে এসেছে:

১. রোজার সময় কোন-এক প্রসংগে ইমাম সাহেব বলেছেন, কোরানে মিলাদের প্রসংগ নাই। কিন্তু বিল্লাল পেয়েছে, কোরানে মিলাদের উল্লেখ আছে।

২. পরের ঘটনা ইমাম সাহেব নবি-কে 'পিয়ন' বলেছেন! ব্যস, এরপর কোরবানির গরুর মত 'কোপা বিল্লাল'।

মিলাদের বিষয়ে বলতে গিয়ে বিল্লাল উল্লেখ করেছেন, এটা আছে সুরা আহজাব ৫৫ নাম্বার আয়াতের। কিন্তু এই আয়াতটির ভিন্ন প্রসংগ, পরদা নিয়ে।

(নবির স্ত্রীদের প্রতি) তাদের পিতা, ছেলে, ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে, পরিচারিকা ও তাদের অধিকারভুক্ত দাসদাসিদের ক্ষেত্রে এ (পরদা) না মানলে কোন দোষ নেই... । -আল কোরান ৩৩:৫৫

আমার জানা মতে, কোরানে মিলাদের প্রসংগ নাই!

আর ইমাম সাহেব যে নবিকে পিয়ন বলেছেন এই প্রসংগ এসেছে এভাবে, আল্লাহ অফিসার হলে নবি হচ্ছেন, পিয়ন। ইমাম সাহেব ম্যাসেঞ্জার, মিডিয়াম-মাধ্যম, প্রেরিত পুরুষ এর বদলে পিয়ন বলে ফেলেছেন। আমি নিশ্চিত, এতে ইমাম সাহেবের তাচ্ছিল্যের কোন উদ্দেশ্য ছিল না।

যেমন, মিজানুর রহমান আজহারি একবার নবি প্রসংগে বলে ফেলেছিলেন, নবির 'সিক্স প্যাক' ছিল! নবি সুঠামদেহি ছিলেন এটা বোঝাতে গিয়েই হয়তো এমনটা বলে ফেলেছিলেন।

আমাদের দেশে এখন উপচে পড়ছে ধার্মিক লোকজনে। আমাদের বাপ-দাদারাও ধর্ম পালন করে গেছেন কিন্তু আমরা সব ছাড়িয়ে গেছি। একেকজন বিরাট দরবেশ হয়ে গেছি- দা থেকে আছাড় বড় হয়ে গেছে এখন। এই দেশে এত-এত সহি মানুষ থাকার পরও চারপাশে এত দু-নম্বরি কেন এ এক অষ্টম আশ্চর্য! বিচিত্র এই দেশ, এই দেশে সংযমের মাস-রামাদানে সবচেয়ে বেশি দূর্নীতি হয়!

বিল্লাল হোসেন ইমামকে যে কুপিয়েছেন অসংখ্য মানুষ আবার এটাকে বাহবা-সাবাসি দিচ্ছে। নমুনা:

এই হচ্ছে, নমুনা!


অথচ দেওয়ানবাগি আল্লাহ নিয়ে, নবি নিয়ে যেসব ভয়াবহ, অকল্পনীয় কথা বলেছেন কিন্তু তার গোপন কেশও কেউ স্পর্শ করেছে বলে তো শুনিনি! বড়ই বিচিত্র এই দেশ!

আসলে আমাদের বাপ-দাদাদের সময়ে আমাদের দেশে ওয়াজের [] এমন ছড়াছড়ি ছিল না। ছিল না ভুলভাল ব্যাখ্যা। ছিল না গলিতে-গলিতে সীমাহীন মাদ্রাসাও! কিছু শিক্ষাও অতি বিচিত্র!

এখানে আমাদের ধর্মীয় শিক্ষক শেখাচ্ছেন, নামাজ চলাকালীন ইমাম সাহেবের কার্ডিয়াক এরেস্ট হোক বা মাইল্ড স্ট্রোক হোক, তাঁকে ভুলেও বাঁচাবার চেষ্টা করা যাবে না। পেছনের কাতার থেকে একজন ইমামের জায়গায় চলে আসবেন এবং বাকী নামাজ শেষ করবেন। যতক্ষণ নামায শেষ না- হবে ততক্ষণ তাঁকে ধরা যাবে না! এই সমস্ত শিক্ষার ফল যা হওয়ার তাই হচ্ছে...!  

অথচ এই কোরানেই আছে:

...আর কেউ কারও প্রাণরক্ষা করলে সে যেন তাতে পৃথিবীর সকল মানুষের প্রাণরক্ষা করল। 
-সুরা মায়িদা ০৫: ৩২

সূত্র:কতিপয় ওয়াজ...: https://www.ali-mahmed.com/2019/04/blog-post.html?m=1

No comments: