আজকের প্রথম আলোয় 'কম্পিউটার প্রতিদিন' বিভাগে বেস্ট অব ব্লগসে সেরা বাংলা ব্লগ নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।
প্রথম আলো লিখেছে, "...বাংলা ব্লগের জন্য সেরা ব্লগের পুরস্কার জিতেছেন ব্লগার আলী আহমেদ...।"
লেখাটা পড়ে আমার মাথায় হাত! হায়-হায়, তাহলে কী ডয়েচে ভেলে আমাকে বাদ দিয়ে আলী আহমেদ নামের ব্যাটাকে দিয়ে দিয়েছে? জানেন, আমার না বুক ভেঙ্গে আসছিল। কেন-কেন-কেন, এই অন্যায় এরা কেন করল?
ভাগ্যিস, পাশে ওয়েব সাইটটার নাম ছাপা হয়েছিল নইলে ডয়েচে ভেলের সঙ্গে আমার খুনাখুনি হয়ে যেত।
আমরা ছাপার অক্ষরে যা দেখি তাই বিশ্বাস করি। এই আমরার মধ্যে আমি নিজেই বা বাদ থাকি কেমন করে! বাংলাদেশ পুলিশের রিমান্ডে নেয়া ছাগলও যেমন স্বীকার করে সেই বোমাবাজ, তেমনি প্রথম আলোর কল্যাণে আমি আজ থেকে স্বীকার গেলুম আমার নাম আলী মাহমেদ না, আলী আহমেদ। এখন থেকে জপ করব আমার নাম আলী আহমেদ, আমার নাম আলী আহমেদ।
প্রথম আলো আরও লিখেছে, "...বাংলা ভাষার আলী আহমেদের ব্লগটি ব্যবহারকারীদের ভোটে মাধ্যমে নির্বাচিত তালিকায় বিজয়ী হয়েছে...।"
ভাল-ভাল! ওহে প্রথম আলো, বিচারকদের ভোটে কে গেল?
এদিকে ডয়েচে ভেলে যে বলছে, বিচারকদের ভোটেও আমাদের প্রথম আলোর 'তথাকথিত আলী আহমেদের ব্লগটি' বিজয়ী হয়েছে!
কাকে ছেড়ে কাকে রাখি- এখন আমি কার কথা বিশ্বাস করব? আমরা তো আবার ছাপার অক্ষরে যা দেখি তাই বিশ্বাস করি, প্রথম আলোকে বিশ্বাস না করে কোন গতি নাই! এ তো সবাই জানে, আমাদের মহান সংসদের একেকজন সংসদ সদস্য পত্রিকার খবর দেখিয়ে মৃদৃ স্বরে(!) কথা বলতে থাকেন। আপনারা কি কখনো দেখেছেন, কোন ওয়েব সাইটের কথা আলোচনা হতে? আমাদের মন্ত্রী বাহাদুররা সফটওয়্যার ওরফে নরমতারের (!) প্রতি আগ্রহ বোধ করেন না।
ডয়েচে ভেলে বললেই হল, এটা কি কোন পত্রিকা নাকি!
এই প্রতিবেদনে আরও কিছু চমক আছে। প্রথম আলো- এখন এদের নিয়ে কালি, হালের কী-বোর্ড চাপাচাপি করতে বড়ো ক্লান্তি লাগে।
আহ, প্রথম আলো, একটা চলমান জ্ঞানের ভান্ডার, কাত হলেই জ্ঞান গড়িয়ে পড়বে! এরা নিজেদের ব্যতীত গোটা দেশবাসীকে শপথ করান। এরা নিজেরা কখনও ভুল করেন না, করলেও স্বীকার করার চল নাই। এই সব এদের জানিয়েও লাভ নাই।
গত বছর প্রথম আলোর একটা লেখায় ভুল ধরিয়ে, তথ্য-প্রমাণসহ মেইল করেছিলাম। সেই মেইলের উত্তর আজো পাওয়া যায়নি। সময় পেরিয়ে যায়নি, এখনো আশায় আছি। অনেকে এদের মেইলের উত্তরের জন্য আমার অপেক্ষা দেখে বিস্তর হাসাহাসি করেন। মুখ ফুটে বলেই বসেন, বাপু রে, মিডিয়া ঈশ্বর এবং ঈশ্বরের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই- কেউই ভক্তদের প্রশ্নের উত্তর দিলে আগ্রহ বোধ করেন না।
আমি এদের কথা বিশ্বাস করি না। এরা হয়তো প্রাচীন পদ্ধতি ব্যবহার করেন, কবুতরের পায়ে বেঁধে মেইল পাঠান। হতে পারে না এমন রাস্তায় কেউ ধরে সেই কবুতরটা খেয়ে ফেলেছে। বেশ পারে! তাই বলে প্রথম আলোকে দায়ী করা চলে না।
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Tuesday, April 20, 2010
জয়তু প্রথম আলো, ক্ষণে ক্ষলে জ্ঞান ঢালো
বিভাগ
প্রথম আলো
দাউদ হায়দার, তোমাকে, আবারো...
অ কবি, তোমাকে তুমি তুমি করে বলছি বলে আমাকে দুর্বিনীত ভাবছ না তো আবার? আহা, তুমি যে আমাদের লোক গো! তুমি কবি মানুষ, এটা বুঝবে না বুঝি?
তোমাকে নিয়ে যে শেষ লেখাটা লিখেছিলাম:
"কবি তুমি যেখানে থাকো ওখানে বাংলাদেশ হাই-কমিশনারের অফিস নেই? থাকলে, ওটার সামনে গিয়ে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দাও। কি, সাহসে কুলাচ্ছে না? যে হাত কবিতা লিখতে পারে সেই হাত বুঝি নিজের গলা চেপে ধরতে পারে না, না?"
ওই লেখাটার শেষের এই অংশটা পড়ে, দেখো আবার কোনো পাগলামী করে বসো না যেন! খবরদার কিন্তু খবরদার, কবি! তোমরা তো আবার কবি-মানুষ, অতি আবেগী, তোমাদের বিশ্বাস কী, বলো! একটা ভজকট করে ফেললে, তখন?
কবি, তোমাকে বেঁচে থাকতে হবে কচ্ছপের মত, বছরের পর বছর ধরে। ফিরতে হবে 'দেশমা'-র কাছে।
এই অংশটুকু রাগ করে লিখেছিলাম, বুঝলে কবি, রাগ হবে না বুঝি? আহা, তুমি আমাদের যে কী ক্ষতি করেছ, করছো... এটা যদি জানতে তুমি! তোমার কারণে আমরা ১৫ কোটি মানুষ যে নগ্ন হয়ে পড়ি, লুকিয়ে রাখা উদরের আবর্জনা-সব বেরিয়ে পড়ে! আমাদের একপেট আবর্জনা প্রকৃতি চামড়া দিয়ে মুড়িয়ে রাখে, আর খানিকটা আমরা রাখি চকচকে কাপড়ে। নইলে কি হতো ভাবো দিকি?
আমি তো শিউরে উঠি, ঈশশ, চোখ বন্ধ করে ফেলি! এ গ্রহের সবচেয়ে রূপবতী মানবীর সঙ্গে তখন কী আর তাড়কা রাক্ষসীর ফারাক থাকত? নাকি আমার মত ছলিমুল্লা-কলিমুল্লার সঙ্গে এ গ্রহের সবচেয়ে সুদর্শন যুবকের সঙ্গে?
তো, যেটা বলছিলাম, তোমার কারণে আমরা যে নগ্ন হয়ে পড়ি এটা কি একটা কাজের কাজ হলো, কবি? বুকে হাত দিয়ে বলো দিকি।
আর এই আমরাই আবার বলি গণতন্ত্রের কথা, বলি, বাকস্বাধীনতার কথা! বলি দেশে গণতন্ত্রে চারা পুইশাকের ন্যায় লকলক বেড়ে উঠছে!
আচ্ছা কবি, বাংলাদেশে ঝুম বৃষ্টি হলে তোমার বুঝি খুব মন খারাপ হয়, না? তোমার কি এখনো ইচ্ছা করে বর্ষার পানিতে কাগজের নৌকা ভাসাতে? আচ্ছা, জার্মানির চাঁদটা কি তোমার বাড়ির ছাদের চাঁদটার মতই, সত্যি বলছ তো? নাকি জার্মানির গির্জার ঘন্টার সঙ্গে তোমার শ্রবণযন্ত্রের সখ্যতা হয়ে গেছে?
না-না, এ আমি বিশ্বাস করি না, এতে আমার কী আসে যায়, ছাই!
আহা, তুমি যে এখনও ভুলতে পারোনি, না? তাই কি তুমি লেখো:
"...যদি কেউ গল্পচ্ছলে, আড্ডায়
হঠাৎ উচ্চারণ
করে ফেলে আসা স্বদেশের নাম
ভাবি, ছায়াঘেরা-শান্ত-নিবিড়
আরিফপুর-দোহারপাড়া গ্রাম
এখনো কি আগের মতোন?
ইছামতি নদীট কি বহমান
নাকি, ধুধু বালুচর...?"
কবি, আরিফপুর-দোহারপাড়া গ্রামের বাতাস পাঠাব কি তোমার জন্য? মনটা যখন বিষণ্ণ হবে জাস্ট ক্যানটা খুলে বুক ভরে শ্বাস নেবে। নাকি দেশ থেকে একটা কুয়াশার চাদর পাঠাব?
দেশের খানিকটা মাটি আছে তো তোমার কাছে, নাকি শেষ হয়ে গেছে? খানিকটা পানি ছিটিয়ে দিলেই তো মাটির সোঁদা গন্ধ ছড়িয়ে পড়বে ঘরময়। তখন অনায়াসে তুমি লিখতে থাকবে কবিতার পর কবিতা।
আরে বলো কী! কী বললে, তুমি কবিতা লিখবে না! হে-হে-হে, লিখবে না মানে, কবিতা তোমায় ঘাড় ধরিয়ে লেখাবে।
প্লেনে তোমার সেবায় নিয়োজিত লোকজনরা তোমাকে খাতিরের চুড়ান্ত করবে কিন্তু এরা মুখে কুলুপ এঁটে রাখবে। তুমি মাথা কুটে মরে গেলেও এরা কেউ তোমায় কিচ্ছু বলবে না।
যখন তুমি প্লেন থেকে বের হবে তখন তোমার চোখ ছানাবড়া। ওয়াল্লা, এটা দেখি ঢাকা বিমানবন্দর! তোমার এত ভাবাভাবির সময় কোথায়! তোমাকে নিয়ে গাড়ি ঝড়ের গতিতে ছুটছে, সামনে পেছনে প্যাঁ-পোঁ করে বাজছে নিরাপত্তা গাড়ির সাইরেন। আশেপাশের লোকজন হাঁ করে তাকিয়ে আছে, 'এইডারে তো 'বিআইবি'র লাহান লাগে না। আরে, ই মানুডা কেডা'!
গাড়ি থেকে তুমি নেমে আরও অবাক হবে, বিভ্রান্ত চোখে তাকিয়ে থাকবে। পুরোদস্তর সামরিক পোশাক পরা লোকজন অতি নম্র গলায় তোমায় বলবে, স্যার, মি. প্রেসিডেন্ট আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন।
তুমি যখন বঙ্গভবনের দরবার হলে ঢুকবে, এই দেশের সমস্ত রথী-মহারথী তোমার সম্মানে উঠে দাঁড়াবে। তোমার প্রতি ভয়াবহ অন্যায়ের জন্য সবার মাথা নীচু হয়ে থাকবে।
স্বয়ং প্রেসিডেন্ট তাঁর বক্তব্যে বলবেন, জনাব, দাউদ হায়দার, অতীতে আপনার প্রতি যে ভয়াবহ অন্যায় করা হয়েছে তা তো আর ফিরিয়ে দিতে পারব না কিন্তু এই জন্য, অতীতের এই অন্যায়ের জন্য আপনার কাছে গভীর পরিতাপ-দুঃখ প্রকাশ করি। দয়া করে আমাদের মার্জনা করুন।
আর কেউ বক্তব্য রাখার সুযোগ পাবে না কারণ এই অনুষ্ঠান যে দ্রুত শেষ করতে হবে কেন না কবি যে এবারের বইমেলা উদ্বোধন করবেন। কবি কেন?
আহা, "মানুষের বাচ্চা মানুষের দুধ খাবে, পশুর না- বইমেলা উদ্বোধন করবেন একজন লেখক, কোনো রাজনিতীবিদ না"।
তাই আগের নিয়ম পাল্টে এবার বইমেলা একজন লেখক উদ্বোধন করবেন। কে উদ্বোধন করবেন? কে আবার, তুমি! এ সত্য, এমন না যে তোমার চেয়ে বড় মাপের কোনো লেখক এই দেশে নাই কিন্তু ওদিন যে তোমার জন্মদিন। তোমার জন্য এরচেয়ে বড়ো উপহার আর কী হতে পারে? তাছাড়া তোমার প্রতি করা অতীতের অপরাধ খানিকটা লাঘবের চেষ্টা করতে হবে না বুঝি!
জানি-জানি কবি, তুমি আমার স্বপ্নের রাশ টেনে ধরতে চাইছ। কিন্তু এই সুযোগ আমি তোমাকে দেব না। তোমরা এমন কেন, আমাদেরকে স্বপ্নটাও আমাদের মত করে দেখতে দাও না? এই দেশে তাই কী স্বপ্নবাজের বড্ডো অভাব?
জানো কবি, এই দেশে ড. ইউনূস এবং ফজলে আবেদ এদের কাছে আছে ব্রক্ষ্ণাস্ত্র, কী ক্ষমতাই না এঁদের! তুমি ফট করে আবার বলে বসো না যেন, এঁরা একটু চেষ্টা করতেন যদি। তোমাকে বুঝতে হবে এঁরা ব্যবসায়ী।
আসো কবি, আমরা একটা খেলা খেলি। খেলবে? আমার কাছে এখন আছে সামান্য একটা গুলতি। কুশীলব কেবল মাত্র ৪ জন! বাংলাদেশ সরকার, ডয়েচে ভেলে, তুমি এবং আমি। প্রয়োজনে ডয়েচে ভেলেকে হাতেপায়ে ধরে, নতজানু হয়ে রাজি করাবো। কাতর হয়ে বলব, আপনাদের অপমান করছি না কেবল আমাদের দেশের এই অভাগা সন্তানকে তাঁর দেশমার কাছে ফিরতে দিন।
আচ্ছা কবি, আমি যদি আমার এই প্রাপ্তিটা ছেড়ে দেই বাংলাদেশ সরকার কি তোমাকে এই দেশে আসতে দেবে, থাকতে দেবে? সরকার রাজী হবে! হবে না, না?
হা হা হা, কবি, এটা পুরুষদের খেলা। ডুয়েলের মত কিছু মরনখেলা খেলতে হয় চোখের দিকে চোখ রেখে, সরকার নামের প্রশাসনযন্ত্রের এই ক্ষমতাটাই নাই!। আফসোস, সবাই এমন খেলাটা খেলতে রাজি হয় না, বড়ই আফসোস!
সরকারের এই অক্ষমতার জন্য নিরুপায় আমাদের দিনের পর দিন নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে, কিচ্ছু করার নেই।
সহায়ক সূত্র:
১. দাউদ হায়দার:: http://www.ali-mahmed.com/2010/03/blog-post_7633.html
২. দেশ-মা: http://www.ali-mahmed.com/2010/03/blog-post_9329.html
৩. বাতাস...: http://www.ali-mahmed.com/2009/06/blog-post.html
৪. মাটি...: http://www.ali-mahmed.com/2009/02/blog-post_15.html
৫. বইমেলা: http://www.ali-mahmed.com/2010/01/blog-post_30.html
৬. একুশে ফ্রেব্রুয়ারি: http://www.ali-mahmed.com/2009/02/blog-post_21.html
৭. ড. ইউনূস: http://www.ali-mahmed.com/2008/07/blog-post_3333.html
৮. ফজলে আবেদ: http://www.ali-mahmed.com/2010/01/blog-post_02.html
Subscribe to:
Posts (Atom)