অনুবাদক 'এ্যাদুত্তোর এ্যাদিতর' মানেই বিশ্বাসঘাতক! যিনি অনুবাদ করেন তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে অনুবাদটা কেমন হবে! তিনি ইচ্ছা করলে অনেক খেলাই খেলতে পারেন। অতি বুদ্ধিমান হলে তাঁর চালবাজি ধরা প্রায় অসম্ভব।
এটা না-হয় মেনে নেয়া গেল কারণ একজন অন্যের সন্তানকে বড়ো করলে তার মধ্যে অনেকখানি নিজের ভাব মিশিয়ে দেবেন, মেনে না নিয়ে উপায় কী?
কিন্তু মূর্খ অনুবাদক নিয়ে বড়ো যন্ত্রণা। এখন দেশে এদের চাপে আমরা পাঠকদের প্রায় চ্যাপ্টা হওয়ার দশা। নাজিম উদ্দিন নামের একজন ড্যান ব্রাউনের "দি দ্য ভিঞ্চি কোড"-এ Hackler and Koch -কে অনুবাদ করেছেন 'হেকলার এবং কচ'! এই বেচারাকে কে বোঝাবে, 'থ্রি নট থ্রি' রাইফেলের এই অনুবাদ করা যায় না, 'থ্রি না থ্রি' রাইফেল!
এর সঙ্গে ভুল বানান যোগ হলে সোনায় সোহাগা। আর বইটা যদি হয় স্টিফেন কিং-এর তাহলে তো সর্বনাশ! হাসান খুরশীদ রুমী ইনি নাকি অনুবাদের ভুবনে ওস্তাদ মানুষ। তার সম্পাদনায় স্টিফেন কিং-এর গল্প: ২ নামের একটা বইয়ে ভুলের নমুনা দেখলে স্টিফেন কিং আত্মহত্যা করতেন। বইটা প্রকাশ করেছে ঐতিহ্য প্রকাশনী।
"...হল একটা ইঁদুরকে লক্ষ্য করে খুব জোড়ে একটা ক্যাল ছুড়ে মারল আর মুচকি হাসতে লাগল...।" (পৃষ্ঠা: ৯৫)।
হল বেচারা মুচকি হেসে সারা, বেশ! কিন্তু জোড়ের কথা না-হয় বাদ দিলাম কিন্তু এই 'ক্যাল' জিনিসটা কি? অনেক মাথা খাটিয়ে বের করতে হবে এটা ক্যাল না, ক্যান। চালু কথায় ডিব্বা।
"ওয়্যারউইক হলের কাঁধে কাপড় মেলে বলল, 'কেমন চলছে কলেজ বয়'?" (পৃষ্ঠা ৯৯)।
ওয়্যারউইক এমন বেকুব কেন? বারান্দায়, ছাদে কাপড় না মেলে হলের কাঁধে কাপড় মেলতে গেল কেন? অনেক ঘিলু খরচ করে বের করতে হয়, ওয়্যারউইক হলের কাঁধে চাপড় মেরে বলল, ...।
একে তো বিদেশি খটমটে নাম, বিদেশি লেখকদের শব্দ নিয়ে জাগলিং বুঝতেই কালঘাম বেরিয়ে যায়, তার উপর আমার মত সাধারণ পাঠক কি লাইন-বাই-লাইন গবেষণা করে বেড়াবে? সম্ভব?
সম্প্রতি হুমায়ূন আহমেদ 'ফাউনটেনপেন'-এ (শিলালিপি, ২৩.০৪.১০) খয়াল কানপুরির একটা লেখা ব্যবহার করেছেন: "জমিকে লালাউ গুল জিনহে খেয়াল নেহি, ও লোগ চান্দসিতারোঁ কি বাত করতে হ্যায়। ।"
হওয়া উচিৎ ছিল, "জমিঁ কে লালা-ও-গুল জিনহে খয়াল নেহি , ও লোগ চান্দ-সিতারোঁ কি বাত করতে হ্যায়ঁ [১]।"
হিন্দিতে লালাউ গুল বলতে কোন শব্দ আছে বলে আমার জানা নাই। এটা হবে 'লালা-ও-গুল'। হিন্দিতে 'লালা-ও-গুল' বহুল ব্যবহৃত শব্দালঙ্কার, লালা-ও-গুল এটা একই সঙ্গে ব্যবহার হবে।
এটা না-হয় মেনে নেয়া গেল কারণ একজন অন্যের সন্তানকে বড়ো করলে তার মধ্যে অনেকখানি নিজের ভাব মিশিয়ে দেবেন, মেনে না নিয়ে উপায় কী?
কিন্তু মূর্খ অনুবাদক নিয়ে বড়ো যন্ত্রণা। এখন দেশে এদের চাপে আমরা পাঠকদের প্রায় চ্যাপ্টা হওয়ার দশা। নাজিম উদ্দিন নামের একজন ড্যান ব্রাউনের "দি দ্য ভিঞ্চি কোড"-এ Hackler and Koch -কে অনুবাদ করেছেন 'হেকলার এবং কচ'! এই বেচারাকে কে বোঝাবে, 'থ্রি নট থ্রি' রাইফেলের এই অনুবাদ করা যায় না, 'থ্রি না থ্রি' রাইফেল!
এর সঙ্গে ভুল বানান যোগ হলে সোনায় সোহাগা। আর বইটা যদি হয় স্টিফেন কিং-এর তাহলে তো সর্বনাশ! হাসান খুরশীদ রুমী ইনি নাকি অনুবাদের ভুবনে ওস্তাদ মানুষ। তার সম্পাদনায় স্টিফেন কিং-এর গল্প: ২ নামের একটা বইয়ে ভুলের নমুনা দেখলে স্টিফেন কিং আত্মহত্যা করতেন। বইটা প্রকাশ করেছে ঐতিহ্য প্রকাশনী।
"...হল একটা ইঁদুরকে লক্ষ্য করে খুব জোড়ে একটা ক্যাল ছুড়ে মারল আর মুচকি হাসতে লাগল...।" (পৃষ্ঠা: ৯৫)।
হল বেচারা মুচকি হেসে সারা, বেশ! কিন্তু জোড়ের কথা না-হয় বাদ দিলাম কিন্তু এই 'ক্যাল' জিনিসটা কি? অনেক মাথা খাটিয়ে বের করতে হবে এটা ক্যাল না, ক্যান। চালু কথায় ডিব্বা।
"ওয়্যারউইক হলের কাঁধে কাপড় মেলে বলল, 'কেমন চলছে কলেজ বয়'?" (পৃষ্ঠা ৯৯)।
ওয়্যারউইক এমন বেকুব কেন? বারান্দায়, ছাদে কাপড় না মেলে হলের কাঁধে কাপড় মেলতে গেল কেন? অনেক ঘিলু খরচ করে বের করতে হয়, ওয়্যারউইক হলের কাঁধে চাপড় মেরে বলল, ...।
একে তো বিদেশি খটমটে নাম, বিদেশি লেখকদের শব্দ নিয়ে জাগলিং বুঝতেই কালঘাম বেরিয়ে যায়, তার উপর আমার মত সাধারণ পাঠক কি লাইন-বাই-লাইন গবেষণা করে বেড়াবে? সম্ভব?
সম্প্রতি হুমায়ূন আহমেদ 'ফাউনটেনপেন'-এ (শিলালিপি, ২৩.০৪.১০) খয়াল কানপুরির একটা লেখা ব্যবহার করেছেন: "জমিকে লালাউ গুল জিনহে খেয়াল নেহি, ও লোগ চান্দসিতারোঁ কি বাত করতে হ্যায়। ।"
হওয়া উচিৎ ছিল, "জমিঁ কে লালা-ও-গুল জিনহে খয়াল নেহি , ও লোগ চান্দ-সিতারোঁ কি বাত করতে হ্যায়ঁ [১]।"
হিন্দিতে লালাউ গুল বলতে কোন শব্দ আছে বলে আমার জানা নাই। এটা হবে 'লালা-ও-গুল'। হিন্দিতে 'লালা-ও-গুল' বহুল ব্যবহৃত শব্দালঙ্কার, লালা-ও-গুল এটা একই সঙ্গে ব্যবহার হবে।
এটা কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের দোষ না। তিনি যেখান থেকে এই লেখাটা নিয়েছেন, যিনি এটা অনুবাদ করেছেন তার দোষ। যেহেতু হুমায়ূন আহমেদের হিন্দিতে ন্যূনতম জ্ঞান নাই তাই তিনি যেটা পড়েছেন সেটাই লিখে দেয়েছেন। একজন হুমায়ূন আহমেদ হিন্দি না জানলে দোষ হয় না, সাবেক রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ বাংলা না জানলে দোষ নাই, এঁদের লাজ হয় না? কিন্তু ইংরাজি ভাষাটা খানিকটা কম জানলে আমাদের শুলে চড়তে হয় [২]!
তাঁর একটা উপন্যাস আছে, 'চাঁদের আলোয় কয়েকজন যুবক'। এই উপন্যাসে তিনি অজস্রবার ব্যবহার করেছেন, এই কথাটা, "বিল্লি মে কাট দিয়া"। অর্থাৎ বেড়াল কামড় দিয়েছে। মে হবে না, হবে নে। 'বিল্লি নে কাট দিয়া'- बिल्ली ने काट दिया।
এই ভুল নিয়ে তাঁর যেমন বিকার নাই তেমনি 'মাতাল হওয়ায়' মাওলানা ভাসানী সম্বন্ধেও [৩]! এখানেই একজন লেখকের সঙ্গে একজন ব্লগার নামের লেখকের পার্থক্য।
একজন অনুবাদক কেমন করে একজন নারীকে পুরুষ বানিয়ে দেন প্রথম আলোর [৪] অসাধারণ এই যাদু দেখার পর কপারফিল্ডের উপর থেকে আমার ভক্তি উঠে যায়!
বিশেষ কৃতজ্ঞতা, ১. মোসতাকিম রাহী: http://www.mustakimrahi.com/
সহায়ক লিংক:
২. যারা ইংরাজি জানেন না তারা শূলে চড়বেন।: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_9242.html
৩. হুমায়ূন আহমেদ: http://www.ali-mahmed.com/2010/03/blog-post_6179.html
2 comments:
মাহমেদ ভাই,
অনেক সময় টাইপের ভুলে এমন হয়। আমি একজন পেশাদার অনুবাদক তাই জানি। অনেক সময় আমাদের দিয়ে যাঁরা কাজ করিয়ে নেন, তারা আর দেখান না ছাপার সময়। সুতরাং এমন ভুল থেকে যায়। ভাল থাকুন।
আপনার সঙ্গে একমত। আমি মনে করি, এতে প্রকাশকের উদাসীনতাই অনেকাংশে দায়ী।
আপনিও ভাল থাকুন। @Anonymous
Post a Comment