আজ (০৯.০৪.১০) কালের কন্ঠের, শিলালিপির ফাউনটেনপেনে তিনি চ্যালেঞ্জার নামের দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত একজন অসুস্থ মানুষকে নিয়ে লিখেছেন। এই মানুষটা সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের আত্মার সম্পর্ক। কেমন? হুমায়ূন আহমেদের লেখা থেকে উল্লেখ করি:
"...উঠেছি হোটেল সায়মনে (কক্সবাজার)। খুব ভোরবেলা দরজায় নক হচ্ছে। দরজা খুললাম, অবাক হয়ে দেখি, এক কাপ গরম চা এবং খবরের কাগজ হাতে চ্যালেঞ্জার দাঁড়িয়ে আছে। সে আমাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য সারা রাত গাড়ি চালিয়ে ঢাকা থেকে চলে এসেছে..."।
আরেক জায়গায় তিনি লিখছেন,
"...শীলার মার সঙ্গে আমার ছাড়াছাড়ি হওয়ার কারণে ...সবাই আমাকে ত্যাগ করেছে। কেউ (আমার) ফ্ল্যাটে আসে না। আমার সেই দুঃসময়ের কাল বড়ো দীর্ঘ ছিল। তখন প্রতিদিন দুপুরে এবং রাতে চ্যালেঞ্জার এসে বসে থাকত। সে আমার সঙ্গে খাবে। তার একটাই যুক্তি, স্যার, আপনি একা খেতে পছন্দ করেন না। আমি কখনই আপনাকে একা খেতে দেব না..."।
এমন একজন মানুষ, যিনি হুমায়ূন আহমেদের অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। যখন তিনি দুরারোগ্য রোগে টাকা-পয়সার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না তখন হুমায়ূন আহমেদ শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখে আর্থিক সহযোগীতার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। বড়োই উত্তম কাজ। চিঠির প্রসঙ্গে পরে আসছি।
আজই যদি হুমায়ূন আহমেদ 'হিমুর পরনে হলুদ আন্ডারওয়্যার' নামে একটা বই লিখে বাজারে ছেড়ে দেন। আমি নিশ্চিত, দেদারসে বিক্রি হবে। হুমায়ূন আহমেদ একেকটা বইয়ের জন্য বিপুল অর্থ পান। তিনি এই অর্থটাই চ্যালেঞ্জারের জন্য দিয়ে দিলেন না কেন?
কেউ কেউ ভুরু জোড়া দিয়ে বলবেন, বাওয়া, তুমি জানলা ক্যামনে যে দেয় নাই। মানুষটা হুমায়ূন আহমেদের মত একজন নাটকবাজ বলেই অনুমান করি, তিনি ওপথ মাড়াননি। যে মানুষটা মুক্তিযুদ্ধের বইয়ের দাম রাখেন ডাকাতের মত ('জননী ও জ্যোৎস্নার গল্প' ৪০০, 'মাতাল হাওয়া' ৩৫০) সেই মানুষটার কাছ থেকে এহেন আচরণ আশা করাটা বোকামি!
তো, এই মানুষটা আসাদুজ্জামান নূরের মাধ্যমে শেখ হাসিনার কাছে চিঠি লিখে পাঠিয়েছেন। নূর ক্ষমতাশীন দলের একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী সংসদ সদস্য। এবং হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে গলায় গলায় ভাব। হুমায়ূন আহমেদ একটা ফোন করে দিলেই এই কাজটা হয়ে যাওয়ার কথা কিন্তু ওই যে বললাম, মানুষটা নাটকবাজ একজন মানুষ!
শেখ হাসিনার প্রতি হুমায়ূন আহমেদ লিখছেন, "...এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি আন্তরিক ধন্যবাদ দিতে চাই। ...তিনি সরকারি সাহায্যের ব্যবস্থা করেন। আল্লাহ তাঁর মঙ্গল করুন..."।
হায়রে, হুমায়ূন আহমেদ! আপনি এটা কবে শিখবেন? এই টাকাটা কেউ তাঁর পকেট থেকে দিচ্ছেন না। এটা এই দেশের করদাতাদের টাকা। এই দেশের করদাতাদের টাকায় যখন কেউ সাহায্য করেন, ব্রীজ-রাস্তা-কালভার্ট-হাসপাতাল করেন এটা আলাদা করে বলার কিছু নাই।
আহ, শেখ হাসিনার কাছে লেখা হুমায়ূন আহমেদের চিঠির কী নমুনা!
”মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
দেশরত্ম শেখ হাসিনা
শ্রদ্ধাভাজনেষু,
...আপনি প্রচুর বইপত্র পড়েন...”।
ইত্যাদি ইত্যাদি। চিঠির নমুনা দেখে আমি ভাবছিলাম, এটা সম্ভবত কোন তেলবাজ রাজনীতিবিদের চিঠির খসড়া। আর শেখ হাসিনা প্রচুর বই পড়েন এই তথ্য এখানে কেন?
হুমায়ূন আহমেদ, আপনি রাজনীতিতে নামলে ভালো করবেন এটা চোখ বুজে বলে দেয়া যায়। একজন আদর্শ তেলতেলে নাটকবাজ!
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Friday, April 9, 2010
হুমায়ূন আহমেদ: স্যার, নাটক কম করলে ভালো লাগে
বিভাগ
চুতিয়া
বাঁশে ভিউ মিরর!
এ দেশে কেমন কেমন করে একটা ধারণা জন্মে গেছে, যারা লেখালেখি করেন তারা কেবল বায়ু সেবনই পছন্দ করেন, চলমান বায়ুভুক! ভাগ্যবান কেউ-কেউ মতান্তরে 'বায়ুত্যাগি' বা বুদ্ধিজীবী হয়ে যান, অন্যরা স্রেফ বায়ুজীবী। দিনপাত-বায়ূপাত-বী...পাত! এই-ই জীবন!
তাই এ নিয়ে আমার অমায়িক অপছন্দ আছে, আমি কেবল বায়ুসেবন পসন্দ করি না, বায়ুসেবন করে দিনপাত করা চলে না। বায়ুসেবন ব্যতীত অন্য কিছু সেবনের অভিপ্রায়ে বিভিন্ন বানিজ্য করার বুদ্ধি করি। এর ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন ধান্ধাবাজি করার সবিরাম চেষ্টা।
একবার দেশের মাটি বেচার [১] বুদ্ধি আঁটলাম। শুরু করার পূর্বে ভয়ে ভয়ে ছিলাম। এমনিতে রাজনীতিবিদরা নাকি গোটা দেশটাই বিক্রি করে দেন এতে কোন সমস্যা নাই কিন্তু আমাদের মত ছা-পোষারা দেশের কয়েক মুঠো মাটি বেচতে গিয়ে না-আবার কোন ফ্যাসাদে পড়ি! গোয়েন্দা বিভাগ পেছনে লাগার আর সুযোগ হয়নি- সে ঝুটঝামেলা হওয়ার আর সুযোগ হলো কই! এর পূর্বেই এই ব্যবসাটাই মাটি হয়েছিল, ভেস্তে গিয়েছিল! কপালের ফের, যারা আমার ক্রেতা হবেন বলে ভেবেছিলাম, বৈদেশিগণ; এরা নাকি দেশ ছেড়ে যাওয়ার পূর্বে মুঠে-মুঠো দেশের মাটি নিয়ে যান।
পরে বাতাস বেচার [২], বোতল বেচার [৩] ব্যবসাতেও মার খেলাম। শুরু করার পূর্বেই আইডিয়া ছিনতাই হয়ে গেল। শ্লা, কপাল আর কী! এখন ভাবছি অন্য একটা ব্যবসায় হাত দেব। এটার পেটেন্টটা করিয়ে ফেলব কিনা ভাবছি।
বঙ্গালকে আমি বাঁশ চেনাবার দুঃসাহস করি না। কিন্তু আপনারা কি দেখেছেন, খুব বড়ো এবং ভারী 'শিল বরাক' বাঁশ কাউকে নিয়ে যেতে? আপাততদৃষ্টিতে খুব সহজ মনে হয়। সত্যি বলছি, এক সময় এমন একটা বাঁশ বহন করাটা আমার কাছে খুব কঠিন কোন কাজ মনে হতো না। একবার চেষ্টা করতে গিয়ে হাতেনাতে ফল পেয়েছিলাম। প্রায় মাসখানেক বিছানায় শয্যাশায়ী থেকে একেবারে লম্বা হয়ে গিয়েছিলাম। বিছানায় শুয়ে-শুয়ে 'একটুসখানি' লম্বায় বেড়েছিলাম কিনা তা আজ আর বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না।
তো, যিনি এটা বহন করেন তার ডানে-বাঁয়ে, পেছনে তাকাবার কোন সুযোগ থাকে না, সে চেষ্টা করা দুরাশা! খোদা-না-খাস্তা সে চেষ্টা কেউ করলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা নিশ্চিত। রেললাইনের উপর দিয়ে গেলে আরও সর্বনাশ, পেছন থেকে ট্রেন আসলে দেখার উপায় কি?
আমার আইডিয়াটা ছিল এমন , বাঁশের আগায় টেম্পরারী ভিউ মিরর লাগালে যিনি বহন করছেন তিনি পেছনটা দেখতে পারবেন, প্রয়োজন হলে বাঁশে একটা রিকশার ঘন্টাও লাগানো গেল।
একবার এমন একজন বাঁশ বহনকারীর সঙ্গে আমার এই আইডিয়া শেয়ার করেছিলাম। যার সঙ্গে এই আইডিয়াটা শেয়ার করছিলাম, প্রথমে বড়ই বিরক্ত হলেন। না-হওয়ার কোন কারণ ছিল না কারণ এমন-একটা দৈত্যের লাশ টাইপের জিনিস কাঁধে নিয়ে আনন্দিত থাকাটা দুরাশা মাত্র। অনেক অনুরোধ করায় অবশেষে শুনতে রাজি হলেন। ইনি তো আর এই সাইটের হৃদয়বান পাঠক না যে সহনশীলতার চুড়ান্ত দেখিয়ে অবলীলায় আমার প্রলাপ শোনার ভান করবেন। তিনি বিস্তারিত শুনে অনেকক্ষণ ঝিম মেরে রইলেন।
আমি ভারী উৎফুল্ল। ইয়া মাবুদ, তোমার কুদরতি পায়ে ...(এটা আমাদের ইমাম সাহেবরা হরদম বলে থাকেন)।
যাক, গিলেছে ব্যাটা, টোপটা গিলেছে! আমি সোলেয়মান সুখনের ন্যায় 'মটিভেশনাল স্পিকার' হালুম বটি (টাইপিং মিস্টেক, পড়বেন: 'মটিভেশনাল স্পিকার' হলাম বটে)!
যাক, গিলেছে ব্যাটা, টোপটা গিলেছে! আমি সোলেয়মান সুখনের ন্যায় 'মটিভেশনাল স্পিকার' হালুম বটি (টাইপিং মিস্টেক, পড়বেন: 'মটিভেশনাল স্পিকার' হলাম বটে)!
অবশেষে ওই মানুষটা মুখ খুললেন। হিস হিস করে শব্দের যে মিছিল বের হল তার সারমর্ম হচ্ছে, তিনি সানন্দে আমাকে এই বাঁশটা দিতে চান। বঙ্গালদের মধ্যে 'বাঁশ দেওয়া' এই বিষয়টা ব্যাপক চালু আছে। আমার আনন্দিত হওয়ার কথা কিন্তু বিশদ শুনে আমার মনটা বিষাদে ছেয়ে গেল! বাঁশটা তিনি আমাকে দিতে চান বিশেষ ব্যবস্থায়, বিশেষ ভঙ্গিতে। এই নিয়ে আলোচনা করাটা ভদ্র সমাজে শোভন না এমনকি হাফ-ভদ্র সমাজেও ...।
সহায়ক সূত্র:
১. মাটি বিক্রি: http://www.ali-mahmed.com/2009/02/blog-post_15.html
২. বাতাসের ব্যবসা: http://www.ali-mahmed.com/2009/06/blog-post.html
৩. বোতল ব্যবসা: http://www.ali-mahmed.com/2011/02/blog-post_15.html
সহায়ক সূত্র:
১. মাটি বিক্রি: http://www.ali-mahmed.com/2009/02/blog-post_15.html
২. বাতাসের ব্যবসা: http://www.ali-mahmed.com/2009/06/blog-post.html
৩. বোতল ব্যবসা: http://www.ali-mahmed.com/2011/02/blog-post_15.html
বিভাগ
শুভ'র ব্লগিং
Subscribe to:
Posts (Atom)