Search

Friday, May 21, 2010

বৈদেশ পর্ব, চার: This is my land...

(লেখাটা উৎসর্গ করছি, আমাদের দেশের সেই সব জাত-লেখকদের (!), যারা ইতিপূর্বে বৈদেশের আমন্ত্রণে অমর্যাদার সঙ্গে বৈদেশে গিয়েছেন।)

*এখানে একটা শব্দ (বি...) একজন মহিলা পাঠকের তীব্র আপত্তির কারণে, এবং আরও কিছু বিবেচনায় খানিকটা বদলে 'জাত-লেখক' করা হয়েছে। কেন? এর ব্যাখ্যা আমি এখানে দিয়েছি: http://www.facebook.com/?ref=home#!/tutul?ref=sgm
লিংক খুঁজে পেতে সমস্যা হলে, একবারে নীচে পোস্টের মন্তব্য আকারে খানিকটা ধারণা দেয়া চেষ্টা থাকল।
... আজ জার্মান এমব্যাসিতে সকাল ১০টায়, (আগে থেকেই যেটার এপয়ন্টমেন্ট নেওয়া ছিল) চালু ভাষায় ভিসার জন্য আমাকে দাঁড়াতে হবে। দাঁড়াবার কথাটা কেমন করে চালু হলো তার খানিক নমুনা আজ দেখলাম!
ঢাকা শহরে কোন মানুষের পক্ষেই কাঁটায়-কাঁটায় কোথাও যাওয়া সম্ভব না। ১০ টার আগেই আমি পৌঁছে গেলাম। সময় মেনে আমাকে ঢুকতে দেয়া হবে, বেশ। কিন্তু এই সময়টাতে আমি কোথায় অপেক্ষা করব? কেন, ফুটপাত আছে না!
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজনকে পরে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, বৃষ্টি হলে একটা মানুষের কী উপায় হবে? এর ভালো কোন সদুত্তর এরা আমাকে দিতে পারেননি। যাক, এরা অল্প শিক্ষিত লোকজন, এদেরকে মন্দ কথা বলে ফিযুল কী-বোর্ডকে কষ্ট দেই না।
সঙ্গে আমার ভাইও এসেছে কারণ আমার ভয়াবহ কুখ্যাত স্মৃতিশক্তির [১], জন্য বিখ্যাত! আমি লোকেশন মনে রাখতে পারি না, যেমনটা মনে রাখতে পারি না আমার প্রিয় মানুষদের বিশেষ দিনও [২]। আবার সাত দিন পরে এখানে এলে আমি জার্মান এমব্যাসি খুঁজে বের করতে পারব না! 
এখন এরা আমার ভাইকে ঢুকতে দেবে না, বসতে দেবে না। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজনকে আমি বললাম, আমি এখানে এসিতে বসে আছি কিন্তু আমার ভাই রৌদ্রে দাঁড়িয়ে আছে; এটা ভাবতেই আমি অসুস্থ বোধ করছি। এদের আমি ধন্যবাদ দেই, এরা আমার ভাইকে বসার জায়গা দিয়েছিলেন বলে। 

অনেকগুলো পর্ব শেষ করে, যে অফিসার আমার ভিসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলাপ করলেন তিনি একজন জার্মান ভদ্রমহিলা। আমার লেখার সুবিধার কারণে লিখছি, 'জর্মন মহতরমা'।
জার্মান এমব্যাসির ওয়েব সাইটের তথ্যমতে যা যা প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র সবগুলো আমি সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি। ডয়েচে ভেলের আমন্ত্রণপত্র, ২ কপি ছবি, পাসপোর্ট, ৩০ হাজার ইউরোর বিমা, জাতীয় সনদপত্র, গত তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ডয়েচে ভেলে থেকে পাঠানো গাইড-লাইন, সমস্ত কিছু।

জর্মন মহতরমা সঙ্গে নিয়ে যাওয়া আমার সমস্ত কাগজ-পত্র খুঁটিয়ে-খুঁটিয়ে দেখলেন। তিনি জানতে চাইলেন, 'আপনি কি আগে কখনো ইউরোপে গিয়েছেন'?
আমি বললাম, 'না'।
'আপনি জার্মানি কেন যেতে চাচ্ছেন'?
আমি ডয়েচে ভেলের আমন্ত্রণপত্রের কথা বললাম। কারণটাও বললাম। জর্মন মহতরমাকে বোঝাতে গিয়ে আমার কাল ঘাম বেরিয়ে যাচ্ছিল, কেন আমি যেতে চাচ্ছি!
আমি মহতরমাকে বিনীত ভঙ্গিতে বললাম, 'আপনি দয়া করে ডয়েচে ভেলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ওরা আপনাকে আমার যাওয়ার কারণটা বিস্তারিত বলতে পারবে'।
তিনি এতে আগ্রহ দেখালেন না।
এবার তিনি একজন বাঙালী সাহেবকে ডেকে নিয়ে আসলেন। আমার লেখার সুবিধার কারণে বাঙালী সাহেবের নাম দিলাম 'বাঙালীবাবু'।
অনেকে লেখার সময় লেখেন, 'সূর্যের চেয়ে বালির উত্তাপ বেশী', বা 'বারো হাত কাঁকুড়ের তেরো হাত বিচি'। অথবা 'দারোগার নায়ের (নৌকার) মাঝির শালা'। আমি, তিন টাকা দামের কলমবাজ লিখি, 'এক কাপ চায়ে দু-কাপ চিনি'! 
বাঙালীবাবুর অবস্থা হয়েছে তাই, জর্মনদের চেয়েও তিনি এক ধাপ এগিয়ে, সাহেব-টাহেবদের সঙ্গে যে তার উঠবস (দুষ্ট পাঠকরা[!] এটার আবার অন্য অর্থ করবেন না যেন)। আমি নিশ্চিত, ইনি হাঁটার সময় হাঁটেন পা যথেষ্ঠ ফাঁক করে।

ফ্রেঞ্চ-কাট দাঁড়িতে বাঙালীবাবুর খোলতাই চেহারা। তিনি আমার কাছে জানতে চাইলেন, 'আপনি কি করেন'?
আমি হাঁই তুলে বললাম, 'লেখালেখি করি'।
'লেখালেখির বাইরে কি করেন'?
আমি বললাম, 'লেখালেখির বাইরে আপাতত কিছু করছি না'।
'তাহলে আপনার সংসার চলে কেমন করে'?
এই প্রশ্নের সহজ উত্তর হয়, যেভাবেই চলুক অন্তত তোমার বা তোমার বাপের টাকায় চলছে না। এটা বলা হলো না কারণ আমি যাওয়ার আগে আমার সুহৃদরা পইপই করে বলে দিয়েছেন, আমি যেন মাথা গরম না করি। কেমন-কেমন করে যেন এঁদের একটা ধারণা জন্মেছে, আমার মাথা গরম! অথচ আমার কাছাকাছি লোকজনেরা আমাকে ভীতু মানুষ বলেই তাচ্ছিল্য করেন কারণ আমি একটা পিঁপড়াও মারতে পারি না! তো, এঁরা প্রবাস থেকে গাঁটের পয়সা খরচ করে আমাকে ফোনের-পর-ফোন করতে থাকেন, অঅমি যেন মাথা গরম না করি। আমার কারণে কোনো মতেই যেন বাংলা ভাষার অপমান না হয়... ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমি রাগ চেপে ঠান্ডা মাথায় বললাম, 'আমার ভিসার সঙ্গে এর কী সম্পর্ক'!
এই বক্তব্য থেকে তিনি সরে আসলেন- এই প্রসঙ্গে আর গেলেন না। এরপর বাঙালীবাবু বললেন, 'ওয়েল, আপনি যে ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিয়েছেন, এই টাকা কোত্থেকে আসলো'?

পূর্বেই ডয়চে ভেলে থেকে আমাকে বলা হয়েছিল, ব্যাংক স্টেটমেন্ট জাস্ট একটা নিয়ম। যেহেতু আমি ডয়েচে ভেলের আমন্ত্রণে যাচ্ছি, আমার সমস্ত খরচ ওরা বহন করবে তাই একাউন্টে টাকা থাকা, না-থাকার তেমন কোনো গুরুত্ব নাই।
কিন্তু ব্র্যাক ব্যাংকের পাওনা টাকা [৩] পরিশোধের কারণে আমার একাউন্টে টাকাটা ছিল। কারণ ব্র্যাক ব্যাংক চাওয়া-মাত্র টাকাটা আমাকে দিতে হবে।
আমি রাগ চেপে উত্তর দিলাম, 'আমার পরিবার কয়েক যুগ ধরে বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এই টাকা থাকাটা আমার জন্য বিচিত্র কিছু না'।
এরপর বাঙালীবাবু বললেন, 'ভাল কথা কিন্তু হঠাৎ করে তিন মাসের মধ্যে আপনার এই একাউন্টেই এই টাকা আসলো কেমন করে'?
আমি বললাম, 'আমার বিভিন্ন একাউন্ট থাকতেই পারে, এক একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করাও আমার জন্য অস্বাভাবিক কিছু না'।
বাঙালীবাবু, 'তা ঠিক আছে। কিন্তু ঠিক এই সময়টাতেই কেন আপনার টাকাটা আসলো'?
এবার আমার চোয়াল শক্ত হয়, 'হ্যাঁ, আসলো, সো? এটা দেখার দায়িত্ব ইনকাম ট্যাক্স বিভাগের, আপনাদের না। এবং ইনকাম ট্যাক্স বাবদ সরকার আমার কাছে কোনো টাকা পাওনা নাই। এর সনদপত্র লিখিত আকারে সরকার আমাকে দিয়েছে। চাইলে আমি এটা দেখাতে পারি'।

কিন্তু বাঙালীবাবু সেদিকে গেলেন না, এবার বললেন, 'ডয়েচে ভেলের এই আমন্ত্রণে গিয়ে আপনি কি করবেন'?
এবার আমার অজান্তেই গলায় খানিকটা কাঠিন্যতা এসে পড়ে, আমি চোখ-মুখ শক্ত করে বলি, 'ওখানে গিয়ে আমি কী করব, এটা ডয়েচে ভেলে ভালো বলতে পারবে'!
বাঙালীবাবু বললেন, 'আপনি যাচ্ছেন অথচ আপনি জানেন না'?
আমার গলার স্বর অপরিবর্তিত থাকে, 'যেটা জানি সেটা আমি আপনাদেরকে বারবার বলেছি, অন-লাইনে লেখালেখির কারণে ওদের ওখানে ২৩০ মিলিয়ন মানুষ যে ভাষায় কথা বলে সেই ভাষার পক্ষ থেকে আমার ওখানে থাকার কথা। কেন যাচ্ছি এটা তো আমন্ত্রণপত্রেই পরিষ্কার লেখা আছে'।
বাঙালীবাবু, 'ওখানে কেন থাকতে হবে আপনাকে'?
আমি বিরক্ত, 'এটা আমার জানার কথা না। এটা ডয়েচে ভেলে ভালো বলতে পারবে। তাদের জিজ্ঞেস করুন। ডয়েচে ভেলের আমন্ত্রণপত্রে ফোন নাম্বার, ফ্যাক্স, ই-মেইল সবই তো আছে'।
বাঙালীবাবু এবার অন্তর্ধান হন, তার ফ্রেঞ্চ-কাট দাঁড়িসহ মানে তিনি যাওয়ার সময়  ফ্রেঞ্চ-কাট দাঁড়িও নিয়ে যান। আমি অনুমান করি, তিনি দূরে কোথাও যাননি। শেষ পর্যায়ে ওনাকে আবারও দেখেছিলাম।

এবার আবারো জর্মন মহতরমার আগমন, তিনি ফিরে আসার পর আমি ওনাকে অভব্যতার সীমা না-ছাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম: আমার ব্যাংক একাউন্টে টাকা কোত্থেকে আসল এটা কেন আমার কাছে বারবার জানতে চাওয়া হলো? আমার ভিসার সঙ্গে এটার কী সম্পর্ক?
তিনি বিড়বিড় করে কিসব যেন বললেন, এটা ফর্মালিটিজ, হেনতেন বা...। 
এবার জর্মন মহতরমা আমার কাছে জানতে চান, 'আপনি যেজন্য যাচ্ছেন এটা কি ওরা আপনাকে জার্মানীতে না দিয়ে এই দেশে দিতে পারে না'? 
আমি মনে মনে উল্টা গুনছি, দশ, নয়, আট, সাত, ছয়, পাঁচ, চার...শূন্য। এতে নাকি মেজাজ ভালো থাকে, মন প্রসন্ন হয়। আমি গলায় মধু ঢেলে বললাম, 'ওহ, তাহলে তো দারুণ হয়। আপনি যদি একটু ডয়েচে ভেলেকে একটু বলে দিতেন, প্লিজ। এতে করে আমি বড়ই সুখি হতাম, বড়ই সুখি। কারণ তাহলে আমার আর কষ্ট করে জার্মান যাওয়া লাগে না। সবচেয়ে ভাল হয়, এটা আমার বাসায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করলে'।
 
এবার তিনি খসখস করে কাগজে লেখা শুরু করলেন। জানালেন, এই কাগজগুলো আমাকে দিতে হবে। সময় সাত দিন।
১. জার্মান এয়ারপোর্ট থেকে আমাকে নিয়ে যাবে এবং দোভাষীর ব্যবস্থা করবে এটা ডয়েচে ভেলের কাছ থেকে লিখিত আকারে আনতে হবে।
২. আমার ওয়েবসাইটের লেখালেখির প্রিন্ট আউট।
৩. আমার প্রকাশিত বই।
৪. আমার বিবাহের কাবিননামা।
৫. আমার বাচ্চাদের বার্থ সার্টফিকেট।

আমি জর্মন মহতরমাকে বোঝাবার চেষ্টা করি, এয়ারপোর্ট থেকে আমাকে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে, কোনো সমস্যা হবে না। এটা তাঁদের দায়িত্ব।
উত্তর নেগেটিভ। 
ওয়েব সাইটের লেখালেখির প্রসঙ্গে আমি বললাম, 'আমি সঙ্গে করে ল্যাপটপ নিয়ে এসেছি। আপনি চাইলে আমি এখনই ওয়েবসাইট ওপেন করে দেখাতে পারি। ওখানে আমার বইয়ের লিস্টও আছে'। 
উত্তর নেগেটিভ।
আচ্ছা..., ভাল কথা, আমার প্রকাশিত বইয়ের সঙ্গে ডয়েচে ভেলের আমন্ত্রণের কী সম্পর্ক, কি সম্পর্ক ভিসার সঙ্গে? 
অবশ্য এটা আমার জন্য অতি আনন্দের বিষয়। আমি গোপনে খোঁজ নিয়ে দেখেছি, আমার বই আমি ব্যতীত [৫] অন্য কেউ পড়ে না, সেখানে জার্মানিরা আমার বই চাচ্ছে এই আনন্দ কোথায় রাখি? এত দিনে এসে নিজেকে কেমন বিখ্যাত-বিখ্যাত মনে হচ্ছে। ঈশ্বর মুখ তুলে চেয়েছেন! বাঙালীরা আমার বইয়ের মর্ম বুঝল না, বুঝল গিয়ে জর্মনরা। তাও এই জর্মন মহিলা পড়বেন বলে পণ করেছেন! কী আনন্দ আজি আকাশে-বাতাসে...! কিন্তু এখন আমি খানিকটা ধন্ধে আছি, আমার বই তো বেশ কয়েকটা। কোনটা এই মহতরমাকে দেব, প্রেমের উপন্যাস দিয়ে না-আবার কোন বিপদে পড়ি। বাসায় জানলে বিপদ। কঠিন বিপদ। সমস্যা হয়ে গেল যে...!

আর আমার বিবাহের কাবিননামা এবং বাচ্চাদের বার্থ সার্টিফিকেট আমি নিয়ে যাইনি কারণ, জার্মান এমব্যাসির ওয়েবসাইটে বিস্তারিত লেখায় বলা আছে, marriage certificate, birth certificate of children (if applicable). "...if applicable"... যদি...। আমার যেটা মনে হয়েছিল, যেহেতু আমি একা যাচ্ছি এটার প্রয়োজন পড়ার কথা না। যদি এমনটা হতো সঙ্গে আমার বউ যাবে তাহলে এটার প্রয়োজন পড়তেই পারে কারণ বউয়ের নাম করে অন্য একটা মেয়ে জরিনাকে জার্মানিতে পাচার করে দিলুম। হতে পারে না এমন?
বা সঙ্গে শিশু থাকলে বার্থ সার্টিফিকেট অতি প্রয়োজন। না-হলে মনে হতে পারে আমি শিশু পাচারকারী। একটা বাচ্চা পাচার করে দিলুম। এমন ভাবনা কাজ করাটা অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। ওহো, জর্মন বাহে, এতে আমি দোষ দেখি না।
কিন্তু এখানে আমি তো একা যাচ্ছি, সঙ্গে তো এরা কেউ যাচ্ছে না! যাগ গে, কেউ শখ করে চাইলে কী আর করা!
কিন্তু এখানেও সমস্যা আছে। বাচ্চাদের বার্থ সার্টিফিকেট, এটা কে দেবে? বাচ্চার বিষয়ে তো বাচ্চার মা ব্যতীত অন্য কেউ বলতে পারবে না, আমিও না! মুশকিল-মুশকিল! মহা মুসিবত!

আমার বক্তব্য অন্যখানে। আমি তো বলি নাই, আমি জার্মান দেশে যাওয়ার জন্য ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখে-দেখে বড়ো হয়েছি। দেশটা না-দেখলে মারা যাওয়ার আগে আমার শেষ শ্বাস আটকে থাকবে। আর আমি তো এখানে অনাহুত কেউ না! আমি এখানে নিজ আগ্রহে আসি নাই। দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে, আমি এখানে এসেছি জার্মান মিডিয়ার আমন্ত্রণে। 
এখন এটা তো আমার দায়িত্ব না, 'ডয়েচে ভেলে' কি, এরা কি ধান চাষ করে নাকি পাট? 'ডয়েচে ভেলে' কি জার্মানিতে না প্যারিসে অবস্থিত, ঝাপিয়ে পড়ে এটা এদেরকে বোঝানো!

এরা যেটা করতে পারতেন, ডয়চে ভেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমার তথ্যগুলো যাচাই করে নেয়া। এই ব্যাংক স্টেটমেন্টটা ভূয়া কি না সেটা যাচাই করে দেখা।  আমার তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট নিয়ে এরা যে খেলাটা আমার সঙ্গে খেললেন, গোলটা কী হলো, ফলটা কী দাঁড়ালো? এর মানে হলো, তিন মাস আগে থেকেই ডয়চে ভেলের সঙ্গে যোগসাজসে, আঁতাত করে এই কান্ডটা আমি করেছি? এই পেপারগুলো তৈরি করেছি, ব্যাংকে হুট করে টাকা জমা দিয়েছি। প্রকারান্তরে এরা আমাকেই ছোট করলেন না, ছোট করলেন ডয়চে ভেলেকে, নিজের দেশকে। কেউ নিজের দেশকে নিজেই নগ্ন করলে আমার কী, বাপু! তবে গোটা একটা দেশকে নগ্ন দেখতে ভাল লাগে না।

এরা তবলার ঠুকঠাক না করে সরাসরি গান গাইলেই পারতেন। এটা বললেই পারতেন, মিয়া, তুমি যে জার্মানি গিয়ে ভেগে যাবে না এর নিশ্চয়তা কি? আমার চোখে চোখ রেখে এটা বলার সাহস হলো না, না?
এটা বললে এদের যে উত্তরটা আমি দিতাম সেটা এখানে বলে দেই: তোমার দেশে এমন কী আছে যা আমার দেশে নাই? আমি মানুষটা অতি সামান্য কিন্তু তোমার দেশের এই ক্ষমতাই নাই আমাকে আমার বিস্তৃত শেকড়সহ উপড়ে নিয়ে ওখানে আটকে রাখবে। নারকেল গাছের বাজার মূল্য নাই কিন্তু একে 'রি-পট' করা যায় না।
এটা আমার অহংকার না, এটা আমার দুর্বলতা। আমার বাড়ির দিকে যে সরু রাস্তাটা গেছে সেটা হচ্ছে আমার স্বর্গে যাওয়ার রাস্তা। তোমার কোন বা... রাস্তা স্বর্গে গেছে? নামটা বলো দিকি? বরং আমার দেশে যা আছে তা তোমাদের নাই! আমরা অন্তত কাউকে দাওয়াত দিয়ে ডেকে এনে এহেন অপমান করি না। একটা ফকিরকেও আর কিছু না থাকুক বসতে একটা পিঁড়ি দেই।
আর আমার সামনের মানুষটা লাট-সাহেবের মত বসে থাকবে আর আমি দাড়িয়ে থাকব, 'মে আই আস্ক হোয়াই'? আলোচনার নামে, জেরা পর্বের পুরোটা সময়, লিফটের মত ছোট্ট একটা কক্ষে প্রায় ৩৫ মিনিট আমাকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। কেন? 
প্লিজ, আমার সঙ্গে কেউ এই বুলি কপচাবার চেষ্টা করবেন না যে, এটাই নিয়ম। বা আমরা কী ব্যাংকে, গ্যাস বিল জমা দেয়ার জন্য দাড়িয়ে থাকি না? আর মানুষের জন্য নিয়ম নাকি নিয়মের জন্য মানুষ? কারা এই সব নিয়ম বানায়? একজন মানুষ কেন অন্য একজন মানুষের কাছ থেকে মানুষের ন্যায় আচরণ পাবে না? এটা কী খুব বড়ো একটা চাওয়া‍!

*আগাম সতর্কতা:
সুশীল মানুষদের জন্য পোস্টের এখানেই সমাপ্তি। হাতে সময় থাকলে আমার অন্য পোস্টগুলো পড়ুন। পরের অংশে আমি কিছু কঠিন কথা বলব। পুতুপুতু মানুষদের জন্য লেখার এই অংশটুুকু না! খোকা-বাচ্চারা দূরে, প্লিজ। এবার আমি খানিকটা কঠিন কথা বলব:
আমার সামনে যে মানুষটা বসে ছিলেন তিনি কি আমার প্রভু? আমি কি এই মানুষটার কাছে আমার মর্যাদা-আত্মা বন্ধক রেখেছি? ভিসা দেওয়ার নাম করে আমার কাছে আপনারা জানতে চান, 'আমার সংসার চলে কেমন করে'? হাউ ডেয়ার য়্যু! হোয়াই য়্যু আস্ক মি সাচ দিস কোশ্চেন য়্যু ব্লাডি ফাকিং গাই, শিট অভ দ্য মিউল।
ভিসা দেওয়ার নাম করে পৃথিবীর যেখানে-যেখানে এই নিয়মটা চালু আছে সেই দেশ কতটা উন্নত এটা জেনে আমার কাজ নাই। ওই দেশের কতগুলো মিসাইল আছে, সোনা-রুপার মজুত কত টন, সংবিধান কত পুরনো বা ক্ষণে-ক্ষণে মানবতার অর্ন্তবাস চড়ান বা বিছানায় অন্তরঙ্গ মুহূর্তে কয় কেজি মান্ডার তেল মেখে কতক্ষণ থাকতে পারেন এটা আমার কাছে জরুরি কিছু না!
যত চকচকে কাপড়ই এরা পরে থাকুক না কেন, এই সব মানুষকে আমার কাছে স্রেফ নগ্ন মনে হয়। ওদের ঢেকে রাখা একপেট আবর্জনা স্পষ্ট প্রতিয়মান হয়। তাদের দেশেরই বিখ্যাত লেখক গুন্টার গ্রাসের কথা ধার করে বলি, আপনারা আমার কাছে 'এক বস্তা গু'! সভ্যতার জন্য ইমিডিয়েট এই অসভ্য আচরণ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।

ঠিক-বেঠিক এই কুতর্ক আপাতত থাকুক, থাকুক যোগ্যতা-অযোগ্যতার প্রসঙ্গও কিন্তু এদের দেশের মিডিয়ার আমন্ত্রণে কোনো একটা বিষয়ে ২৩ কোটি মানুষ [৬] (গ্লোবাল ভয়েসেসের মতে) যে ভাষায় কথা বলে সেই ভাষার প্রতিনিধি হয়ে ওখানে যাওয়ার কথা আমার। এরা আমার সঙ্গে যদি এমন আচরণ করে থাকে; আমি ভাবতে শিউরে উঠি, অন্যদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হয়ে থাকে!

ওহে, আপনারা ইচ্ছা করলে আমাকে ভিসা না-দিতে পারেন, এটা আপনাদের অধিকার। এই বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নাই- কোনো সমস্যা নাই। আমি আপনাদেরকে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেসও করব না কেন ভিসা দিলেন না। কিন্তু আমারই দেশে আমাকে এভাবে দাঁড় করিয়ে রাখার কোনো অধিকার আপনাদের নাই। এই অধিকার আমি আপনাদেরকে দেই না। জার্মান এমব্যাসি নাকি আমেরিকান এমব্যাসি তাতে কিছুই যায় আসে না। আমাদের সরকার তার সীমাবদ্ধতার কারণে আপনাদের কাছে কতটা নতজানু এটা তাদের সমস্যা, আমার না।
আমার স্পষ্ট বক্তব্য, আপনাদের এমব্যাসি নামের এই দূর্গগুলো স্বাধীন বাংলাদেশেই অবস্থিত। এটা আমার দেশ, আমি এই দেশেরই একজন নাগরিক। "This is my land, no cowboy rides here"

বৈদেশ পর্ব, পাঁচ: http://www.ali-mahmed.com/2010/06/blog-post_04.html 

সহায়ক লিংক:
১. ছোট-ছোট সুখ: http://www.ali-mahmed.com/2009/10/blog-post.html
২. একটি খারাপ ভুল: http://www.ali-mahmed.com/2009/04/blog-post_146.html 
৩. ব্র্যাক ব্যাংক: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_23.html 
৪. বৈদেশ পর্ব, তিন: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_12.html 
৫. ওড়নাসমগ্র: http://www.ali-mahmed.com/2010/02/blog-post_18.html
৬. গ্লোবাল ভয়েসেস: http://globalvoicesonline.org/2010/04/11/bangladesh-bangla-blogs-at-the-bobs-meet-ali-mahmed/ 

39 comments:

মানিক said...

হিটলারের বংশধর এরা. এদের কাছ থেকে হিটলারের আচরণ ছাড়া অন্য কিছু আশা করা যায় না।

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

উঁহু, কেবল জার্মানী এমব্যাসিকে একা দোষ দিয়ে লাভ নাই।

বোঝাবার সুবিধার কারণে ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ শেয়ার করি। আমার বড়ো বোন যাবেন জাপান। সেখানে তাঁর ছেলে থাকে। প্রথম নাতি হবে, সেই কারণেই তাঁর যাওয়া।
জাপান এমব্যাসিতে ৬০ বছর বয়সের এই মহিলাকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল।
হাবিজাবি অনেক প্রশ্ন, তুমি যে যাবা, যে ক-দিন থাকবা, তোমার ছেলে কি তোমাকে খাওয়াবে।
শ্লা, এরা কি বুঝবে, আমরা তোদের মতো শেকড়হীন গাছ না। আমাদের শেকড় নারকেল গাছের মতো। মা-বাবা, দাদা-দাদি...।

ওদিনই আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, কখনই কোন এমব্যাসির সামনে ভিসার জন্য দাঁড়াব না। আফসোস, নিয়তি...।

আমার মনে হয়, পৃথিবীর ক্ষমাবান-ধনী দেশের এমব্যাসিগুলো মিলে ঠিক করেছে, এরা আমাদের মতো মেরুদন্ডহীন সরকারের দেশগুলোর সঙ্গে এই সব অসভ্য আচরণ করেই যাবে।

এরা কেন এটা বুঝতে চায় না, প্রথমেই এরা এদের দেশকে এখানেই নগ্ন করে দিচ্ছে। এর পর কাউকে ফাইভস্টার হোটেলে রাখলেও সে ওখানে মুত্রত্যাগ করেও আরাম পাবে না কারণ তার শরীরে যে দগদগে ঘা। @মানিক

R s said...

Shuvo bhai, salam niben. Amar bou pregnant chilo, oke boste dai nai, jerar ak porjaye faint hoye gelo. Pore amake jokhon phone-a bolchelo, kanna korchelo tokhon nejer hat kamre rokto ber kore phele chilam, ai dag akhono ache, dese asle apnake dethabo

Mahbub said...

এই নতজানু হওয়া নিয়ে কথা বলতে চাই না :(

গরীবের বউ সবার ভাবি :(

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

Rs,
কিছু লেখা পড়তে গিয়ে আমার কম্পিউটারের স্ক্রীণে সমস্যা হয় কেন, ক্রমশ ঝাপসা হয়ে যায়...! আমাকে ভাবার সময় দিন, প্লিজ।
আমার আর বলার কিছু নাই। এই মুহূর্তে আমার মাথায় কিছুই আসছে না...শিট, বুল-শিট!

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

সুমন,
ভিসা না দিলে না দেবে, এই নিয়ে আমার কোন বিকার নাই। উদ্ভট,গর্দভ টাইপের সব প্রশ্নও বাদ দিলাম। কিন্তু আমাকে ডেকে নিয়ে আমারই দেশে আমাকে দাঁড় করিয়ে রাখার এই দুঃসাহস এরা পায় কোত্থেকে!

এরা কি আমার প্রভু? আমি কি বলেছি, আমার মর্যাদা-আত্মা বিক্রি করে তোমার দেশে যেতে চাচ্ছি! সেই কারণে নতজানু হয়ে তোমার সামনে মাথা নীচু করে দাড়িয়ে থাকব। আর তুমি বসে বসে ঠ্যাং নাচাবে।

জার্মান-জাপান, এরা না বলে অতি সভ্য জাতি। এরা গাদা-গাদা টাকা খরচ করে আমাদের কত কিছু শেখায়। নিজেদের শেখা শেষ, না?

মুকুল said...

এই রকম আচরণ যারা করে, ক্ষমতা থাকলে গদাম দিতাম। :-(

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

হায় ক্ষমতা!

আমাদের দেশে সাদা চামড়াদের গরম লাগে, খালি গায়ে এরা হাফ-প্যান্ট পরে ঘুরে বেড়ায়। সৌদিতে গেলে এদের আবার গরম লাগে না, ওখানে বেজায় ঠান্ডা কিনা। তেলতেলে তৈলাক্ত বরফের ছড়াছড়ি!@মুকুল

Rezwan said...

আপনি যথাযথ উত্তর দিয়েছেন। আমি নিজেও ভুক্তভোগী এবং জানি পশ্চিমা যে কোন দেশের ভিসার জন্যেই তারা এমন গরীব ঠেকাও ব্যবস্থা করে রেখেছে যে একমাত্র ধনী ছাড়া কারোরই ওই বৈতরণী পার হওয়া শক্ত। ইতালীর এম্বাসী তো ফোনই ধরে না। এসব দুতাবাসের কর্মীদের আচরণও অনেক ক্ষেত্রে অসভ্য (এক অবিবাহিত মহিলাকে জিজ্ঞেস করেছে আপনি বিবাহ করছেন না কেন)- অনুযোগ করলে তারা বলবে ফরমালিটিজ।

ডয়েশে ভেলে জার্মান সরকারের অর্থে চলে - তারা যখন আপনাকে আমন্ত্রণ করেছে - দুতাবাস ভিসা না দিয়ে পারবে না। আপনাকে শুধু শুধু হেনস্থা করছে। আপনি ডয়েশে ভেলেকে ইমেইলে জানিয়ে দিন যে আপনাকে হেনস্থা করা হচ্ছে (বৈবাহিক সার্টিফিকেট ইত্যাদি)- তারা যেন দুতাবাসের সাথে কথা বলে।

Anonymous said...
This comment has been removed by a blog administrator.
আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

রেজওয়ান,
ডয়েচে ভেলে আমাকে যথেষ্ঠ সহযোগীতা করছে। এবং এই কারণেই আমি এখনও ঝুলে আছি। নইলে আমাকে যে সব প্রশ্ন করা হয়েছে,এটার উত্তর আমি অন্য রকম দিতাম। যে আচরণ করা হয়েছে ওখানে দ্বিতীয়বার যেতে আমার তীব্র অনীহা আছে। এমনকি ওই বিল্ডিংটার দিকে মুখ করে আমি সিগারেটও ফুঁকতে চাই না।

আমি একা যাচ্ছি তারপরও বিয়ের সার্টিফিকেট, বাচ্চা হওয়ার সার্টিফিকেট এই সব চাওয়ার মানে হচ্ছে, এরা বোঝার চেষ্টা করছে, আমি ওদের দেশে গিয়ে পালিয়ে যাব না কারণ দেশে আমার বউ-বাচ্চা থেকে যাচ্ছে। এদের টানে ফিরে আমি আসব। এটা খুব পুরনো একটা ট্রিকস, বহুভোগ্যা পতিতার মতোই পরিত্যক্ত।

আমার ধারণা, ডয়েচে ভেলের প্রতি এরা যথেষ্ঠ সন্দিহান- আমি জানি না এটা কেন! এদের অনেক আচরণে আমার মনে হয়েছে, ডয়েচে ভেলের সঙ্গে আমার একটা গোপন আঁতাত আছে। এটা আমার ব্যাংক স্টেটমেন্ট নিয়ে এদের মন্তব্যেও বোঝা যায়। কারণ এটা তিন মাসের রিপোর্ট ছিল- এখন এদের কথায় বোঝা যায় হঠাৎ করে তিন মাসে আমার একাউন্টে টাকা কেন আসল! মানে, তিন মাস আগে থেকেই ডয়েচে ভেলের সঙ্গে ছল করে আমি যাওয়ার চেষ্টায় মাঠে নেমে পড়েছি।

আমার জানার খুব ইচ্ছা, আমাদের দেশের যে সব লেখকগণ ইতিপূর্বে বৈদেশে গেছেন এরা কি এমন অমর্যাদার সঙ্গেই গেছেন? আমি এখনই এই পোস্টটা এই সব লেখকদের নামে উৎসর্গ করছি। লেখার শিরোনামে এটা যোগ করে দিচ্ছি, "এই লেখাটা আমাদের দেশের সেই সব বিচিহীন লেখকদেরকে উৎসর্গ করছি"।

পাঠক যেহেতু আমাকে ভোট দিয়েছেন, আমার উপর আস্থা নিয়েই দিয়েছেন। কিন্তু এরা কখনই চাইবেন না, দেশকে ছোট করে আমি অমর্যাদার সঙ্গে আমি যাই।
আমারই দেশে, নিজেরা বসে বসে ঠ্যাং নাচাবে আর জেরাপর্বের নাম করে আমাকে এভাবে দাঁড় করিয়ে রাখার সাহস এদের হয় কেমন করে!

আমাকে ভাবতে হবে...।

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

...,
আমি দুঃখিত, আপনার মন্তব্যটা ডিলিট করে দিলাম। আপনি আমাকে গালি দিলে হয়তো ডিলিট করতাম না কিন্তু আপনি এদের গালি দিয়েছেন।

Anonymous said...

Shouvo bhai,

lekha ta pore ektu atke uthlam. amer kokhono boidesh jawa hoy nai tai erokom poristhitir mukhamukhi hoi ni. kintu sunechi onek er kach theke. e kemon achoron. bishesh kore bangali r chamchami ta sotti e dukhojonok. ar apni ja bolechen , amader desh kono vabei oder cheye kom na. ora ki asolei shovvo ? naki amra nijeder durbol /chamcha proman kori bole e ora eto spordha dekhate pare-

Shorna

Anonymous said...
This comment has been removed by a blog administrator.
সৈকত said...

আপনার লেখাটা ফেসবুক এ শেয়ার করলাম, তবে আমার মতামত হচ্ছে, আমাদের নিজেদের মেরুদন্ডহীনতা , এদের স্পর্ধা এতদূর নিয়ে গেছে!

Unknown said...

জ্ঞান হবার পর যে দেশের নামটি প্রথম শুনেছি সেটি জার্মান। জার্মান আবর দুই ভাগে বিভক্ত পূর্ব জার্মানী-পশ্চিম জার্মান। বিদেশী লোক দেখলেই মনে হত জার্মানী। একটি ভদ্র অর্থনেতিক উন্নত জাতি হিসাবে জার্মানীকে জানতাম। কিন্তু আপনার লেখাটি পড়ে খুবই হতাশ হলাম। আসলে ভদ্রতার আড়ালে এরা মানুষ নিয়ে মজা করে। হিটলারেরর আচরণ থেকে এরা এখনো বের হতে পারে নাই।

JonaronneNissonghoPothik said...

সেইম অভিজ্ঞতা। সূর্যের চাইতে বালির উত্তাপ বেশী। আমি যে কম্পানিতে কাজ করি, সেটা
জার্মান-ফিনিশ বহুজাতিক, তারপরেও যে দৌড়ানিটা দৌড়াইছে, তাতে আলী মাহামেদ এর অবস্থা / অন্যদের অবস্থা বুঝতেই পারি। পরে আমার প্রজেক্ট ম্যানেজার হেইঞ্জ শুনছিলাম এম্বাসিরে কইষ্যা ধমক দিছিলো, এক দিন পরে পৌছানিতে।

ইন্দোনেশিয়া এক্সময় আমাদের ইরাক / আফগানিস্তানের সাথে ব্ল্যাক লিস্টেড করে রকখছিলো, ওইখানের ভিসার জন্য ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিতে হইত (য্যান ওইখানে সবার শালা নাইলে ভায়রাভাই থাকে !)। একবার মাথা গরম কইরা ভিসার কাগজপাতি ছুইড়া দিয়া আসছিলাম (:)) ; পরে আমার ইন্দোনেশিয়ান কলিগরা গিয়া পাসপোর্ট উদ্ধার করে নিয়া আসছে, বিশাল কেলেঙ্কারি।

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

আমি সরি, আপনার মন্তব্যটা মুছে দিতে হলো। কারণ বলি, আশা করি বুঝতে পারবেন:
এই এমব্যাসিগুলো এবং আমাদের দেশের নতজানু সরকার ভুলে যায়, দুই দেশের, পরস্পরের উন্নয়নকল্পে এই এমব্যাসিগুলোকে অস্থায়ি ভাবে আমরা থাকতে দিয়েছি।
এই সূত্রে এরা আমাদের গেস্ট হয়। আমরা আর যাই করি অতিথীকে গালি দিতে পারি না।
এরা অসভ্য হোক, আমরা কেন এদের মত অসভ্য হবো? @Anonymous

Unknown said...

হুমম..বুঝতে পারতেছি আপনার অনুভুতি। কারন এর ভিতর দিয়ে আমাকে কয়েকবার যেতে হয়েছিলো। তবে আমি ওদের উপর রাগ করি না এইটা নিয়া। রাগ অন্য যায়গায় করি- যেখানে করা উচিত বলে আমি মনে করি।

একটু খোলাসা করি।
আমাদের দেশের শতকরা ৭০ভাগ লোক যদি জার্মানীতে যাওয়ার চান্স পায় তাইলে হাতে চাদ পাওয়া মনে কইরা লাফ দিবে। এই সত্যটা জার্মানী স হ সব উন্নত দেশ গুলা এখন জানে। আর বিদেশে বাংগালীরা কি করে বেড়ায় সেটা জানতে হলে নিজে আপনের এসে দেখতে হবে। জাতিগত ভাবে আমরা দুর্নীতি বাজ । দেশের শতকরা ৩-৪ জন লোক মনে হয় ঠিক মতো ট্যাক্স দেয়। একশজনে হয়ত ৩-৪ জন সরকারী আমলা ঘুষ খায় না। আর আমরা বিদেশে গিয়া নানা প্রকার দুইনাম্বারী কাজ আবিস্কার করে ফেলি। আসআইলাম নেই সম্পুর্ন মিথ্যা আইডেন্টি দিয়া (বার্মার নাগরিক বইলা দাবী করি)।
এইসব যখন একটা দেশের ব্যাকগ্রাউন্ড হয়, তখন তারে ভিসা দিতে একটু বিরক্ত হবে এটা দোষের না। এই সেম জার্মানীর এমব্যাসীতে যান কিন্তু বাংলাদেশের টা না, ধরেন হংকং কিংবা জাপান কিংবা মালয়শিয়াতে গিয়া জার্মান এমব্যাসি তে যান দেখবেন টোটাল চেন্জ। ওরা এতো ভালো বিহ্যাব করে যে অবাক হওয়া লাগে।

সো সমস্যাটা ওদের না। আগে নিজের ফল্ট গুলা দেখেন। আপনারা লেখক মানুষ - আপনাদের অনেক সুবিধা। ভাবধরা কথা বলতে পারেন অনেক।
হুমা্য়ুন আহমেদের একটা বইয়ে পড়েছিলাম, তিনি এক বিদেশীকে ধুয়ে ফেলেছিলেন বিরাট দেশপ্রেমিক কথা বার্তা দিয়া। "এমন দেশটি কোথাও খুজে.."।
আরে ভাই দেশের প্রান হইল দেশের মানুষ। এই দেশের ৮০% লোকের দিকে তাকান আগে, তারপরে বলেন, কয়জনে এই লাক্সারী আছে যে "বাড়ীর পাশের রাস্তা টাকে স্বর্গের রাস্তা বলে মনে করে?"।
আপনার মতন লেখক কয়জন আছে দেশে? আপনের মেন্টালিটি দিয়া তো পুরা দেশ যাচাই করা যায় না, তাই না?

যাদের দিয়া বিচার করার উচিত দেশকে, তাদের দিয়াই করা হয়, এবং ফলাফল জার্মান এমব্যাসীর ব্যবহার। এমব্যাসীর মাহতরমার তো আপনের চেহার দেখে বুঝার উপায় নাই যে আপনে আর ৯৮টা বাংগালীর থেকে আলাদা। আপনের বাসার পাশে স্বর্গে যাবার রাস্তা আছে। তাই আপনের সাথে অন্য আচরন করা লাগবে।

অনেক কথা বল্লাম , মনে কিছু নিয়েন না। আমার যাস্ট এইসব আবেগী মিথ্যা কথা পড়তে পড়তে বিরক্তি চলে আসছে। বালের একটা দুর্নিতীর আখড়া দেশ নিয়া আমরা এতো গর্ব করি দেইখাই আমাগো এই অবস্থা। ইন ফেক্ট কেউ দেশের উন্নতির জন্য কিছু করলেও একটা কথা ছিল। কিছুই করে না, যাস্ট ঘরে বইসা বইসা "সকল দেশের রানী আমার জন্মভুমি" বইলা চেচানী।

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

এরা স্পর্ধা দেখাবে না কেন?
আমাদের দেশের নেতারা কিছু হলেই ছুটে যান ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে। পারলে ভ্যাঁ করে কেঁদে দেন।

যেন নিজেদের ঝগড়া থামাবার জন্য এই দেশে আর কেউ নাই, দেশের হাইকোর্ট-সু্প্রিমকোর্টে তালা ঝুলছে! ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের লোকজনরা সব সমস্যার সমাধান করে দেবে!

ভয়ে ভয়ে আছি, কোন দিন না আমাদের নেতারা এদের কাছে বিচার দিয়ে বসেন, জানেন, আমার বউ না আমাকে বুড়া ভাম বলেছে, আমি এর বিচার চাই...। @Shorna

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

কোন দেশ যখন নিজের আভ্যন্তরীন বিষয়ে অন্যকে নাক গলাবার সুযোগ করে দেয় তখন স্পর্ধা আকাশ ছুঁতেই পারে। ধন্যবাদ আপনাকে।@সৈকত

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

একা কেবল জার্মানকে দোষ দিয়ে লাভ নাই।
জাপানের মত অতি বিনয়ী জাতিও কম যায় না। এরাও ষাট বছরের এক মহিলাকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল। পার্থক্য ছিল এতটুকুই, পুরোটা আলোচনার সময় এরাও দাঁড়িয়ে ছিল। এটাও অন্যায় কিন্তু খানিকটা সহনীয়। অন্তত এই ভদ্রতাটা দেখিয়েছে, একজন মানুষের সঙ্গে অন্য একজন মানুষের দাঁড়াবার ভঙ্গি।@kazi

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

তাই তো দেখছি- সব শেয়ালের এক রা :)@personalinvestmentbd

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

আমি আপনার অনুভূতি খানিকটা স্পর্শ করতে পারি।

আপনি খানিকটা ভুল করলেন, আমি কিন্তু নিজেকে কখনও লেখক বলে দাবী করি না, বলি লেখার রাজমিস্ত্রী। কারণ লেখকদের যে সমস্ত গুণ থাকতে হয় তার প্রায় কোনটাই আমার মধ্যে নাই।

হুমায়ূন আহমেদের ভানবাজির আকাশ স্পর্শ করার ক্ষমতা আমার নাই! এই বিষয়ে আমার কিছু পোস্ট-লেখা আছে। হুমায়ূন আহমেদের প্রসঙ্গ নিয়ে এখানে আমি বিস্তারিত বলি না।

আমার নিজের প্রসঙ্গে বলি, আমি পোস্টে যা লিখেছি, তা বিশ্বাস করি বলেই লিখেছি।

আমাদের দেশের লোকজনকে নিয়ে আপনি যেসব উদাহরণ দিলেন' ধরুন, তার সব মেনে নিলাম।
কিন্তু আমি তো জার্মানীদের বলি নাই আমাকে ভিসা দাও। এতো যন্ত্রণা সহ্য করে কোন এমব্যাসির সামনে ভিসার জন্য হাহাকার করা ভঙ্গি করে দাঁড়াবার কোন গোপন ইচ্ছা আমার কখনই ছিল না।

এরাই আমাকে ডেকে নিয়ে গেছে। আমি ডয়েচে ভেলের আমন্ত্রণে যাচ্ছি। আমি ভেগে যাব, কি যাব না এটা এরা ডয়েচে ভেলের কাছে জবাব চাইবে। আমার কাছে কেন?@Moim

Unknown said...

আপনার কথা ঠিক। আমি স্বীকার করি সেটা।

কিন্তু আপনি যাস্ট চিন্তা করেন, জার্মানী থেকে যারা বাংলাদেশে গিয়েছে এমবাসীতে যব নিয়ে, তারা বছরের পর বছর ধরে দেখছে দেশের দুর্নীতিগুলা- স্বচোখে। এরা বছরে অন্তত ৫০টা ভিসা কেস ফেস করে যেগুলা দুই নম্বর পাবলিকের ভিসা- মানে গিয়া আরে আসবে না এইরকম। তো ঐখানে আপনি চাকরী করলে আপনারো একটা সময় মেন্টালিটি এইরকম হয়ে যাবে। ওদের মনে আমাদের দেশে যে ইমেজটা আছে- সেটাই খারাপ। সো ওটাই ওদের বিহ্যাবে রিফ্লেক্ট করে।

আমি বললাম না, আপনি বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়া হংকং, মালয়শিয়া চীন এইসব দেশে জার্মান এমব্যাসীতে যান, ইউ উইল গেল আ ভেরি নাইস রেসেপশন। এটলিস্ট নাথিং দ্যাট হার্টস ইমোশনস। আমাদের দেশে বিষয়গুলা টোটালি ডিফারেন্ট। এইখানে একটা ভদ্রলোক কিছু দিন থাকলে ও বুঝে ফেলে যে দেশে লোকগুলা ভদ্রতা পছন্দ করে না। একটা রিক্সওয়ালা যদি দেখে বিদেশী কেউ রিক্সায় উঠছে সে ডাবল ভাড়া নেয়ার চেষ্টা করে। এই জিনিসটা যখন এমব্যাসিতে যেসব বাংগালী চাকরী করে ওরা বিদেশি দের কে বলে তখন বিদেশি লোকটার মনে দেশে লোকজন দের ব্যাপারে কি ছবি তৈরি হয় চিন্তা করেন।

আমবাসীর ব্যবহার আসলে সেটারি প্রতিফলন মাত্র।

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

"এরা বছরে অন্তত ৫০টা ভিসা কেস ফেস করে যেগুলা দুই নম্বর পাবলিকের ভিসা- মানে গিয়া আরে আসবে না এইরকম।"
এটা আমি আপনাকে আগের মন্তব্যেও বলেছি, আমার বিষয়টার সঙ্গে এটা গুলিয়ে ফেললে তো হবে না। আমি যাচ্ছিলাম ডয়েচে ভেলের আমন্ত্রণে, জার্মান সরকারের আমন্ত্রণে। এখন এটা তো আমার জানার বিষয় না, জার্মান সরকার ডয়েচে ভেলেকে কাউকে ডাকার ক্ষমতা আদৌ দিয়েছে, কি না?
এটা তাদের সমস্যা, আমার না। তবে এটা সত্য, আমি অনেকখানি বিভ্রান্ত হয়েছি, এরা যে ডয়েচে ভেলের এই আমন্ত্রণপত্রকে এতোটা খেলো-হালকা দৃষ্টিতে দেখবে এটা আমি আশা করিনি! এমন ধারণা আমার পূর্বে থাকলে ভিসার জন্য আমি আবেদন করতাম কি না এ নিয়ে আমার ঘোর সন্দেহ আছে।

আপনি লিখেছেন: "আমবাসীর ব্যবহার আসলে সেটারি প্রতিফলন মাত্র।"
বুঝলাম। কিন্তু আমি বুঝি না, এটা এরা কেন করে! ভিসা না দিলে না দেবে, অসভ্যতা কেন করবে?
এদের মাথায় কি এটা আসে না, প্রথমেই এরা তাদের দেশ সম্বন্ধে একটা বাজে ধারণা অন্য দেশের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে। জন্ম দিচ্ছে ঘৃণার বিষবৃক্ষ!
এর প্রভাব কী ভয়াবহ! এদের কারণে একজন মানুষ গোটা একটা দেশের লোকজন সম্বন্ধে তীব্র ঘৃণা বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়াবে।
একটা দেশের আপামর জনতা কী তাদের ট্যাক্সের টাকায় এদের বেতন দেয় এই জন্য যে এরা নিজ দেশের লোকজনকে অন্যদের কাছে নগ্ন করবে!

আগের মন্তব্যে হুমায়ূন আহমেদের ভানবাজির আকাশ আমি কেন স্পর্শ করতে পারব না বলেছিলাম, জানেন? কারণ এরা হচ্ছেন জাত লেখক। জাত লেখকেদের অনেক সীমাবদ্ধতা মেনে চলতে হয়।
কেমন করে শেখ হাসিনার কাছে একজন লেখক চিঠি লেখেন তার নমুনাটা এখানে দেখেন:
http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_2278.html

এই প্রশ্নটা না হয় করলাম না চ্যালেঞ্জারের মত একজন মানুষ রাতে গাড়ি চালিয়ে ঢাকা থেকে কক্সবাজার চলে গেছেন! আই বেট, তিনি নিশ্চয়ই ট্রাক চালিয়ে যাননি। রাতে আমাদের দেশে ড্রাইভ করা যে কী কঠিন এটা হুমায়ূন আহমেদ গল্প বানাবার সময় না জানতে পারেন, আমরা জানি। ট্রাকগুলো যখন হাই-বীম স্থির করে রাখে তখন কিচ্ছু দেখা যায় না। সেখানে চ্যালেঞ্জারে মত মানুষ হাসতে হাসতে ঢাকা থেকে কক্সবাজার চলে গেছেন!
হুমায়ূন আহমেদের এমন ভানবাজি নিয়ে অনেক পোস্টই আমাকে লিখতে হয়েছে...।

আমি আমাদের এই সব সুমহান লেখককের পাশে থাকার চেয়ে আরাম বোধ করি, ব্লগার নামের সহযোদ্ধাদের পাশে থাকতে পেরে। আপনাকে আগের মন্তব্যে লিখেছিলাম, আমি নিজেকে লেখক বলে স্বীকার করি না।
লেখক হওয়ার যে বড়ো হ্যাপা।
নির্মলেন্দু গুণের সামনে যখন তার দেশমাকে নগ্ন করা হয়, এই দেশের লোকজনের মৃত্যু নিয়ে হাসাহাসি হয় তখন তিনি চিঁ চিঁ করতে থাকেন। কারণ তাঁকে যে অনেক বড়ো লেখক হতে হবে, অনেক, অনেক বড়ো। সাহেবরা তাকে লেখক হওয়ার সার্টিফিকেট দেবেন।
লিংক দেখুন:
http://www.ali-mahmed.com/2009/12/blog-post_7854.html

আমার এই সব জটিলতা নাই- অনেক বড়ো দূরের কথা, লেখক হওয়ার স্বপ্নই আমার নাই। দু-কলম গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করি, কারও কারও ভাল লাগে, ব্যস, এই-ই।

হায়দার said...

আপনার বিয়ের সার্টিফিকেট বাচ্চার সার্টিফিকেট লাগবে কেন? আপনি এদের নিয়ে যাচ্ছেন না? আজিব, আপনার বইয়ের সাথে ভিসার কি সম্পর্ক? আপনাকে আরেকটা পুরুষ্কার দিবে নাকি? ডয়েচে ভেলের বালের আমন্ত্রের দেখি বেইল নাই।

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

এরা হয়তো ভাবছে ওখানে গিয়ে আমি ফিরে আসব না। এখন দেশে আমার বউ-বাচ্চা থাকলে আমি ভেগে যাওয়ার আগে চৌদ্দবার চিন্তা করব।

আমাকে বেদনার সঙ্গে বলতে হয়, ডয়েচে ভেলের আমন্ত্রণপত্র যে এতোটা ঠুনকো এটা আমার কল্পনাতেও ছিল না!

আমার প্রকাশিত বই এমব্যাসিতে নিয়ে যাওয়ার কোন ইচ্ছাই আমার নাই। কারণ এদের কাছ থেকে লেখক হওয়ার সার্টিফিকেট নেয়ার কোন গোপন ইচ্ছা আমর নাই। এটার প্রয়োজন হলে আমি বাংলা একাডেমীর কাছে যাব। ১৯৯৩ সালে বাংলা একাডেমী আমার উপন্যাস ছাপিয়ে ওই দায়টা সেরেছে।

আমার বই সচরাচর ৪ ফর্মার হয়, ওজনে ৫০০ গ্রামও হবে না। কিন্তু জার্মান এমব্যাসিতে নিয়ে যাওয়ার সময় এর ওজন হবে কয়েক টন।
আমার পক্ষে বই নিয়ে যাওয়া সম্ভব না কারণ এটা লেখক হিসাবে আমার জন্য অমর্যাদাকর। @হায়দার

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

হায়দার,
এমব্যাসির বিষয়টা একটু বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করি, এগুলো দেয়া কিন্তু কোন সমস্যা না, সমস্যা অন্যখানে। বিষয়টা একজন লেখকের জন্য বেদনার, তার প্রকাশিত বই নিয়ে গিয়ে প্রমাণ দেয়া যে আমি লেখক।

এই বিষয়ে আমি আমার নিজস্ব কিছু নিয়ম মেনে চলি। এখন পর্যন্ত আমার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৩ কিন্তু কখনো আমি আমার কোন বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করিনি। আমার কাছে এটাও দেখতে কুৎসিত লাগে একজন লেখক তার বই পেটের কাছে ধরে ছবি তোলার পোজ দিচ্ছেন।

এখন এরা বই চাচ্ছে, পরে বলবে তোমার যে খৎনা হয়েছে এর একটা সার্টিফিকেট নিয়ে আসো।
এটা তো আমার জন্য সমস্যা কারণ আমার খৎনা তো কোন ডাক্তার করেননি, করেছেন হাজাম। ওই হাজাম ব্যাটা সেই কবেই মরে ভূত হয়ে গেছেন। এখন তারে পাব কোথায়? ভূত সমাজের কাউকে তো আমি চিনি না, যে গিয়ে বলব, ভূত ভাইয়া,...হাম্বল রিকোয়েস্ট, আমার খৎনা করার একটা সার্টিফিকেট চাচ্ছি।

Unknown said...
This comment has been removed by the author.
simanto said...

একটা সাইটে পড়লাম এই পোষ্টের কারণে হুমকি দেয়া হয়েছে এটা অনুবাদ করে জার্মান এম্বাসীতে পাঠাবে। আপনার কোন ক্ষতি হয়ে যাব না নাতো?

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

simanto,
হা হা হা, প্লিজ আমাকে একটু হেসে নিতে দিন।

মন্তব্যটা আমিও দেখেছি। পড়ে বেদম হাসি পাচ্ছিল। এই সব তাদের জন্য, যাদের ক্যারিয়ার নিয়ে ভয় থাকে। আমার তো ক্যারিয়ারের জন্য গোপন কোন অভিলাষ নাই, আমি তো হাতে টিফিন-ক্যারিয়ার নিয়ে ঘুরে বেড়াই!

বিশ্বাস করুন, আমি এই লেখাটা ইংরাজিতে অনুবাদ করে দেয়ার জন্য লোক খুঁজছিলাম। চমৎকার অনুবাদ করেন এমন প্রবাসী একজনকে ইতিমধ্যে আমি যথেষ্ঠ বিরক্ত করেছি। তিনি আমার বেশ কিছু লেখা ইংরাজিতে অনুবাদ করে দিয়েছেন।
অন্য একজন বিয়ের এক দাওয়াতে ১০/১৫ দিনের জন্য দেশের বাইরে আছেন। আফসোস, কাউকে পাইনি! নইলে এখানে বাংলাটার সঙ্গে ইংরাজিটাও দিয়ে দিতাম।
জার্মান অনুবাদক পেলে আরও ভাল হতো, ওটাও এখানে দিতাম।

ওই মানুষটা জার্মান এমব্যাসির জন্য এই লেখাটা ইংরাজিতে অনুবাদ করলে আমাকেও অনুবাদের একটা কপি দিতে বলবেন। এখানে জুড়ে দেব। তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।

asad abdullah said...

আলি ভাই, রাগে আমার গা জলে জাচ্ছে। আমাদের দেশে বসে আমাদের সাথেই এমন? আমি australian embassy তে এই একিরকম অভিজ্ঞতার সম্যুখিন হয়েছি। কিন্তু তখন মনে করেছিলাম এটা শুধু আমার সাথেই হয়েছে, কিন্তু এখন দেখি আপনার সাথেও একই জিনিস হয়েছে। আসলে আমাদের সরকারের নতজানু মনোভাবের কারনে আমরা তার কূ-ফল ভোগ করছি।

www.asadabdullah.info

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

এমব্যাসিগুলো মিলে ঠিক করেছে, এরা প্রথমেই অন্য দেশের লোকজনের কাছে নিজ নিজ দেশের বস্ত্রহরণ করবে। কেউ নগ্ন হতে চাইলে কে আটকাবে! :)@asad abdullah

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

এটা নেয়া হয়েছে টুটুলের ফেইসবুক থেকে। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা।

Poonam Khan "When a writer using the word " BICHIHIN'' then here comes a question about his quality.Its like ''angur fol tok'...."

Ali Mahmed said:
ডিয়ার Poonam Khan...,
আমি আপনার কেবল এই অনুভূতিটা বুঝতে পারি, শব্দটা আপনাকে তীব্র আহত করেছে। যার ফলে আপনি এখানে আর ভালো কিছু খুঁজে পাননি!
শব্দটার জন্য আমি দুঃখিত।

আমি এটাও বুঝি, আমি এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, এখান থেকে এই শব্দের প্রয়োগ করাটা সমীচীন না। তারপরও এটা কেন লিখলাম? একটু বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করি। আমার পূর্বেও এই দেশের প্রচুর লেখক বিভিন্ন আমন্ত্রণে বিদেশ গেছেন। আমার জানার খুব ইচ্ছা, এরা কী এই সব অমর্যাদা মাথায় নিয়েই গেছেন? কেন? এরা তো লেখক- আমাদের বিবেক। এরা কেবল তাঁদের কলমের কাছে দায়বদ্ধ, আর কারও কাছে না।
এই দেশ থেকে যখন একজন ক্ষিধার জ্বলায়, উচ্চশিক্ষার জন্য, চাকরির জন্য, ব্যবসার জন্য বাইরে যান, তাঁদের কোন উপায় থাকে না। তারা অসহায়ের মত সমস্ত অপমান মেনে নেন।

কিন্তু একজন হুমায়ূন আহমেদের মত মানুষ যখন প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন চিঠি লিখেন:
”মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
দেশরত্ম শেখ হাসিনা
শ্রদ্ধাভাজনেষু,
...আপনি প্রচুর বইপত্র পড়েন...”।
http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_2278.html
তখন আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে, হুমায়ূন আহমেদের মত অসম্ভব শক্তিশালী লেখকও কি এমন অমর্যাদার সঙ্গে গেছেন? গেলে কেন? তাঁর মত মানুষ কেন একবারও ভিসার কাগজ ছুঁড়ে দিয়ে বলতে পারলেন না, যাহ, তোর দেশে সর্দি ফেলার জন্যও যাব না।

আপনি আমার পোস্টে লক্ষ করে দেখবেন, আমি কিছু মন্তব্য ডিলিট করেছি। এমব্যাসিকে উদ্দেশ্য করে কিছু ভয়াবহ গালি দেয়া হয়েছিল। পারতপক্ষে আমি মন্তব্য ডিলিট করি না, এমন কি আমাকে গালি দিলেও। এটা করেছি এবং এর ব্যাখ্যাও দিয়েছি, এই এমব্যাসিগুলোকে অস্থায়ি ভাবে আমরা থাকতে দিয়েছি। প্রকারান্তরে এরা আমাদের গেস্ট। গেস্টের সঙ্গে আমরা অসভ্য আচরণ করতে পারি না।

আপনি লিখেছেন, ৩৫ মিনিট সামান্য ব্যাপার...।
এখানে আপনি খানিকটা গুলিয়ে ফেললেন। বিষয়টা তো এটা না! আমি যাচ্ছিলাম জার্মান সরকারের আমন্ত্রণে। আপনি একজনকে দাওয়াত দিয়ে এনে তাকে এভাবে দাঁড় করিয়ে রাখতে পারেন না, একজন ফকিরকেও না। হ্যাঁ, যদি এমনটা হতো, আমার সামনের মানুষটাও দাঁড়িয়ে আছেন তাহলে না-হয় খানিকটা মেনে নেয়া যেত। কিন্তু তিনি তো আয়েশ করে বসে আছেন।
আমি যতটুকু জানি, বিদেশে কোর্টে একজন আসামীকেও বসতে দেয়া হয়। আর আমি তো আসামী না, এখানে তো আমার কোন বিচার চলছে না। সামনে বসা মানুষটা আমার প্রভু না!

এটা কেবল এই এমব্যাসীতেই না, অন্যরাও এই অসভ্যতাটা করে। জাপান এমব্যাসি ৬০ বছরের একজন ভদ্রমহিলাকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল। সব বাদ দিলাম, একজন বয়স্ক ভদ্রমহিলাকে এভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা এটা কোথাকার সভ্যতা?
এরা না বলে অতি সভ্য। সেমিনার করে করে আমাদের সভ্যতা শেখায়।

আমাকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তোমার সংসার চলে কেমন করে? তখনো আমি মাথা ঠান্ডা রেখেছি। আমাকে যখন জিজ্ঞেস করেছিল, তোমার ব্যাংক একাউন্টে এই টাকা আসল কোত্থেকে তখনও আমি মাথা ঠান্ডা রেখেছি।

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

কিন্তু একজন পাঠক যখন আমার এখানে এসে এই মন্তব্যটা করেন তখন আমার দু-চোখ ভরে আসে, একটা বাচ্চার মত চিৎকার করে আমার কাঁদতে ইচ্ছা করে। এখানে এসে আমি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। মন্তব্যটা পড়ে দেখুন:
"R s said...
Shuvo bhai, salam niben. Amar bou pregnant chilo, oke boste dai nai, jerar ak porjaye faint hoye gelo. Pore amake jokhon phone-a bolchelo, kanna korchelo tokhon nejer hat kamre rokto ber kore phele chilam, ai dag akhono ache, dese asle apnake dethabo"
শব্দটা কিন্তু আমি পরে পোস্টে যোগ করেছি।
আপনি আমাকে বলেন, ডয়েচে ভেলে আমন্ত্রণটা পাঠিয়েছে কেবল আমাকে। কেন আমাকে ম্যারেজ সার্টিফিকেট, বাচ্চাদের বার্থ সার্টিফিকেট দিতে হবে? এরা তো আমার সঙ্গে যাচ্ছে না। আমি তো এর কোন অর্থ খুজেঁ পাই না।

আপনি বলবেন, এটার হয়তো প্রয়োজন আছে। বেশ। এবার আপনি আমাকে বলেন, আমার প্রকাশিত বই এদের কাছে কেন নিয়ে যেতে হবে? আমার ভিসার সঙ্গে এটার কি সম্পর্ক? ডয়েচে ভেলে বললে আমি আমার সমস্ত বই কাঁধে করে নিয়ে যাব, এতে আমার কোন আপত্তি নাই। কিন্তু এমব্যাসিতে কেন? আমার কি এদের কাছ থেকে লেখক হওয়ার সার্টিফিকেট নিতে হবে? এমনটা হলে আমি বাংলা একাডেমীর কাছে যাব, এদের কাছে কেন?

এদের যে সন্দেহ, আমি ভেগে যাব, কি যাব না- এটা জবাব এরা আমার কাছে না চেয়ে ডয়েচে ভেলের কাছে চাইবে। এটা তো আমার দায়িত্ব না এদেরেকে বোঝানো, ডয়েচে ভেলে কি ধান চাষ করে, না পাট? এটা কি জার্মানীতে অবস্থিত, নাকি প্যারিসে?

আর আমার এই লড়াইটা আমার নিজের জন্য না, এটা কেউ বিশ্বাস করুক আর না করুক তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। আর যাকেই হোক, অন্তত আপনাকে এটা বিশ্বাস করাবার জন্য আমার গোপন কোন ইচ্ছাই নাই। কারণ আপনার গোটা মন্তব্যে আমার প্রতি আছে সীমাহীন তাচ্ছিল্য। এতো তাচ্ছিল্য-ঘৃণা নিয়ে আর যাই হোক একজন মানুসের মত বদলাবার চেষ্টা করা যায় না!
আমি কেবল আমার এই শব্দ প্রয়োগ নিয়ে আলোচনার জন্যই এত কথা লিখলাম।

আমি ক্ষুদ্ধ ছিলাম আমাদের দেশের লেখকদের প্রতি। এদের সামনে যখন বাংলাদেশকে ছোট করা হয় তখন এরা তামাশা দেখেন:
"আমেরিকান কবি করসো, নির্মলেন্দু গুণের সামনে যখন বাংলাদেশকে-দেশমাকে নগ্ন করেন, আমাদের দেশের লোকজনের মৃত্যু নিয়ে হাসাহাসি করেন তখন গুণদাদা চিঁ চিঁ করতে থাকেন। কারণ তাঁকে যে অনেক বড়ো লেখক হতে হবে, অনেক, অনেক বড়ো। সাহেবরা তাকে লেখক হওয়ার সার্টিফিকেট দেবেন।"
লিংক দেখুন:
http://www.ali-mahmed.com/2009/12/blog-post_7854.html

একজন পাঠক (একবার পাঠ করার জন্য পাঠক, তাতে কী!) হিসাবে আপনার শব্দটার প্রতি আপত্তি আছে, এটা আমি খানিকটা বদলে দিচ্ছি। এটা এই কারণে না যে আপনার মত বদলে যাক। আপনার কথায় খানিকটা যুক্তি আছে এবং আমি এখন যে জায়গায় দাঁড়িয়ে সেই জায়গাটারও প্রতি সম্মান দেখিয়ে।
বদলে দিচ্ছি এই কারণেও, লেখালেখির প্রাণ হচ্ছেন পাঠক। যারা জাত-লেখক তারা নাকি নিজেদের জন্য লেখেন। আমি লিখি পাঠকের জন্য। এবং এটাও আন্তরিক ভাবে বিশ্বাস করি, একটা লেখা নামের প্রাণহীন বাড়ি ঝলমলে প্রাসাদ হয়ে উঠে যখন একজন পাঠক এটা ছুঁয়ে দেন।
আমি নিজে বিশ্বাস করি, পাঠক হচ্ছেন একেকটা চলমান ক্ষুর। পাঠক কোন ভাবেই একজন লেখক থেকে খাটো নন। ফারাকটা হচ্ছে, এঁরা গুছিয়ে লিখতে আলস্য বোধ করেন।

ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার মন্তব্যর জন্য।

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

Poonam Khan said:

I always honour writers.Maybe Mr. Ali Mahmed u were right.Because when i started reading and saw that kind of words for every writers, i was also angry.I lost my respect and I didnt get any possitive feelings in ur writing.


In some place u were right and some place they were right.Lots of bd people living there illigaly , its our folt.and they ... See morehave to inquary like a polish.so they treat everybody same.
Maybe u r a good man so u didnt use that kind of words for me.But not for me or not for a bangladeshi people, be like that for everyone in the world.that will make u diffrent from those people.
Some place we will get honour and some place dishonour.this is life.U get honour from Jarmany and u get dishonour from jarmay so dont remember only the dishonour.

U told u r writing for all . i m also a 'pathok' of ur wrtings.so leaving those words write for everybody.I also want to read.
Sorry for 'Tassillo'. Thanks for all...


Ali Mahmed said:
এখানে আপনার সঙ্গে অমত পোষণ করি। কারণ লেখাটা ছিল এমন, সেই সব ...লেখকদের। সব লেখক না কিন্তু। এমনও হতে পারে "সেই সব" লেখকদের মধ্যে কেউই নাই, এমনও হতে পারে অনেকেই আছেন। যারা আছেন তাদের জন্যই এটা প্রযোজ্য।
কারণ, আমাদের বিবেক- একজন লেখক যদি এমনটা করে থাকেন, নতজানু হন; তখন আমাদের আর দাঁড়াবার জায়গা থাকে না। আমরা তাহলে কার কাছে যাব, কোথায় যাব?

যাই হোক...এই প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে ভালো লাগছে না।

"Sorry for 'Tassillo'."
আবারও ধন্যবাদ, আপনার সহৃদয় মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকুন।

Unknown said...

Please continue it.

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

ধন্যবাদ। ১১ পর্ব পর্যন্ত তো লিখে ফেলেছি :) @sairas