Search

Tuesday, December 2, 2025

অজ্ঞ বাউল বনাম আমাদের বিজ্ঞজন...!

একজন বাউলের পালাগান-বিচারগান নিয়ে দেশ উত্তাল—কেউ পক্ষে, কেউ বিপক্ষে!

এখানে বাউল আবুল সরকারের একটা ক্লিপ দিচ্ছি। এখানে প্রসংগক্রমে 'সুরা নাসের' [*]কথা বলা হয়েছে:


এটা অনেকের ধর্মানুভূতিতে মারাত্মক আঘাত করেছে। এই ভিডিও ক্লিপটা খুব ভাল করে দেখা-শোনার পরও কারও যদি এমনটা মনে হয়ে থাকেও, এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করার খুব একটা ইচ্ছা আমার ছিল না:

কিন্তু..., এই ক্লিপটা দেখার পর মনে হচ্ছে খানিকটা বাতচিত করাটা জরুরি। এই মানুষটার নাম-বিস্তারিত জানি না এই কারণে গভীর দুঃখ প্রকাশ করি। কিন্তু মানুষটা পোশাক দেখে অনুমান করি 'ওটির চাপরাশি' টাইপের কেউ হবেন না, ডাক্তারই হবেন কারণ ইংরেজিতে খই  ফোটাচ্ছেন।

বেচারা! এপ্রোনটা খোলারও সময় পাননি! আশা করছি, অপারেশনটা শেষ করার পর-পরই 'শব্দের গোলা' দেগেছেন। 'খোদা-না-খাস্তা' অপারেশনটা অসমাপ্ত রেখে বা জোশের চোটে অক্সিজেনের পাইপে পা রেখে থাকলে রোগির তো 'রাম-নাম সাত্যা' হয়ে গেছে।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, এই পৃথিবীতে হাজারো বিষয় থাকতে ধর্মীয় বিষয় এড়িয়ে যাওয়াটাই সমীচীন কারণ আমাদের বাপ-দাদাদের চেয়ে আমরা এখন অনেক ধার্মিক হয়ে গেছি!

আমি এটা বলছি না, বাউল আবুল সরকার সমস্ত সমালোচনার বাইরে তাঁর সমালোচনা করেন, কোন সমস্যা নাই। প্রত্যেকের জন্যই এটা মানাটা জরুরি, আপনি কি বলছেন, কেন বলছেন, কোথায় বলছেন, কার সঙ্গে বলছেন, কোন সময় বলছেন!

তাঁর সহধর্মিণী এবং সহশিল্পী আলেয়া বেগম বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেছেন। কী অসাধারণ তাঁর বোঝাবার ভঙ্গি! আমি কান পেতে রই।


আজ যারা তাঁকে বা বাউলদের নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছেন এবং কী সগর্বেই না বলা হচ্ছে, 'আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, বাউলদেরকে গণধোলাই দেওয়া হচ্ছে...':

আচ্ছা, অন্যদের নিয়ে আপনাদের ধর্মানুভূতি কাজ করে না? আজ 'মুসলমানদের কবি' কাজী নজরুল ইসলাম বেঁচে থাকলে কতশত বার যে বাতাসে তার বাবরি চুল উড়ত, কল্লাসহ; তার ইয়াত্তা নাই। নমুনা []:


এখানে এসে আমাদের 'ধর্মানুভুতি কবিরা' এপ্রোন খুলে নিরব হয়ে যান!
বা ধরুন, তাঁর (কবি কাজী নজরুল ইসলাম)-এর এই সমস্ত অনুবাদ:


ভাগ্যিস, কাজী নজরুল ইসলাম যে 'রুবাইয়াত-ই-ওমর খৈয়াম' থেকে অনুবাদ করেছেন তার স্রষ্টা আজ আর বেঁচে নেই! ওমর খৈয়াম মরে বেঁচে গেছেন। এবং বঙ্গালদেশে জন্ম না-নিয়ে ইরানে জন্ম নিয়েছিলেন বলে দ্বিতীয় বার বেঁচে গেছেন। নইলে তাঁর লাশ কবর থেকে তুলে আগুন দেওয়া হতো।
আচ্ছা, আবুল সরকারের নাহয় ধর্মীয় জ্ঞান বা ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা নেই কিন্তু আমাদের ধর্মীয় শিক্ষকদের তো অগাধ জ্ঞান ধর্মের প্রতি আকাশসম শ্রদ্ধা। এই যে মাওলানা সাহেব বলছেন, "আল্লাহ চাঁদাবাজ...":

ইয়ে, ওই যে ডাক্তার সাহেব একেকটা আগুনের গোলা ছুড়ে দিলেন এটা শুনে কী তার 'ইয়েভূতি' আহত হয়নি?
বা, এই যে বিএনপি পন্থি লোকটা বললেন:
"জিয়াউর রহমান কোরান শরীফে বিসমিল্লাহ-হির-রাহমানির-রাহিম সংযুক্ত করেছিলেন":
এই মানুষটা কী এখনও মুক্ত ঘুরছেন?

আর আরেক ধর্মীয় শিক্ষক জামাতে ইসলামের এম. পি প্রার্থী আমির হামজা বলছেন,
"এখন যদি বলি, আল্লাহ 'কোরান-এ কারিমে' ফেসবুক কিভাবে চালাবেন, দিয়েছেন, বিশ্বাস করবেন?...সুরা আম্বিয়ার ৮৩ নম্বর আয়াত..." :
এমনকি, আমির হামজা আরও বলছেন, "লাইক-শেয়ার-কমেন্ট এই সমস্ত  কথাও আল্লাহ ১৫০০ বছর আগে কোরানে দিয়েছেন"।

কেউ কি এই মানুষটার ঘাড় ধরে জানতে চেয়েছে কোরানের কোথায় আছে এটা, দেখা? সুরা আম্বিয়ার ৮৩ নম্বর আয়াত এটা:

সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৮৩ ।  কোরানশরিফ, বঙ্গানুবাদ: মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান 

এই সমস্ত কারণে কি এই মানুষটাকে কী কেউ বাউলদের মত পানিতে চুবিয়েছে বা ফাঁসি দাবী করেছে?

মিজানুর রহমান আজহারির ওয়াজের নামে এই সমস্ত বক্তব্য'র জন্য 'তাওহাদি জনতা' কী কোন হইচই করেছে! আটকাতে-লটকাতে চেয়েছে?

ধর্মীয় শিক্ষক-ধর্মীয় বক্তাদের এমন অজস্র উদাহরণ দেওয়া যাবে... []

সূত্র:

১. দুখু মিয়া, সুখু মিয়াhttps://www.ali-mahmed.com/2015/05/blog-post_25.html?m=1

২. ওয়াজ সমগ্রhttps://www.ali-mahmed.com/2019/04/blog-post.html?m=1

* সুরা নাস (রুকু: ১, আয়াত: ৬) ১. বলো, আমি শরণ নিচ্ছি মানুষের প্রতিপালকের, ২. মানুষের অধীশ্বরের, ৩. মানুষের উপাস্যের, ৪. তার কুমন্ত্রণার অমঙ্গল হতে, ৫. যে সুযোগমত আসে ও সুযোগমত সরে পড়ে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, ৬. জিনের মধ্য থেকে বা মানুষের মধ্য থেকে। -কোরান শরীফ


Thursday, November 27, 2025

তবলার ঠুকঠাক—গুমের আগমনী বার্তা!

লেখক: মিজানুর রহমান সোহেল (লেখকের লিখিত অনুমতিক্রমে প্রকাশিত)

"আলহামদুলিল্লাহ! বিনা অপরাধে প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা ডিবি হেফাজতে থাকার পর তারা আমাকে স্বসম্মানে মাত্র বাসায় পৌঁছে দিয়েছে।

গত রাত ১২টার দিকে ডিবি প্রধান আমার সঙ্গে কথা বলবেন, এই অজুহাতে ৫/৬ জন ডিবি সদস্য জোর করে আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। ডিবিতে নিয়ে আসামীর খাতায় আমার নাম লেখা হয়। জুতা-বেল্ট খুলে রেখে গারদে আসামীদের সাথে আমাকে রাখা হয়। কিন্তু কেন আমাকে আটক করা হলো? তা আমি যেমন জানতাম না, তেমনি যারা আমাকে তুলে এনেছিলেন বা ডিবির উর্দ্ধতন কর্মকর্তারাও কিছু বলতে পারেননি!

দীর্ঘ সময় পর বুঝতে পারলাম, সরকারের একজন উপদেষ্টার ইশারায় মাত্র ৯ জন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে মনোপলি ব্যবসা করার সুযোগ দেয়ার জন্যই আমাকে আটক করা হয়েছিল। আমার সাথে সংগঠনের সেক্রেটারি আবু সাঈদ পিয়াসকেও আটক করা হয়। তিনি এখনও ডিবি কার্যালয়ে আছেন।

আজ (বুধবার) ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার (এনইআইআর) নিয়ে ডিআরইউতে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)-এর প্রেস কনফারেন্স করার কথা ছিল। আমি সেখানে ছিলাম মিডিয়া পরামর্শক। সেই প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করাই তাদের প্রধান টার্গেট ছিল। কিন্তু তাদের জন্য আফসোস, যে উদ্দেশ্যে তারা প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করতে চাইলো সেটা দেশের সবাই জেনে গেলো।

দেশের মুক্ত বাণিজ্য নীতির সঙ্গে এনইআইআর স্পষ্টতই সাংঘর্ষিক। প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে দেশে প্রতিযোগিতা কমিশনও রয়েছে। অথচ মাত্র ৯ জন ব্যবসায়ীকে সুবিধা দিতে সারাদেশে ২৫ হাজার মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীকে পথে বসানোর গভীর চক্রান্ত চলছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে গ্রামের সাধারণ মানুষ, প্রবাসীসহ অনেকেই বিপদে পড়বেন। একটা চেইন ভেঙ্গে পড়বে। অনেক ব্যবসায়ী পথে বসে যাবে। জেনে রাখা ভালো, এই ৯ জনের একজন ওই উপদেষ্টার স্কুল-বন্ধু।

একটা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বললে সরকার কেন ভয় পায়? শুধুমাত্র প্রেস কনফারেন্স বন্ধ করতেই কি আমাকে গভীর রাতে জোর করে তুলে নিতে হলো? যারা মুখে ‘বাকস্বাধীনতা’র বুলি আওড়ান, তারাই কি আমাকে বাকরুদ্ধ করতে এই আয়োজন করলেন? মগের মুল্লুকে এই কি তবে বাকস্বাধীনতার বাস্তব চিত্র?

আমাকে আটক করার ঘটনা জানাজানি হতেই বহু শুভাকাঙ্ক্ষী, ভাই, বন্ধু, সহকর্মী উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। অনেকেই খবর নিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দিয়েছেন, বিবৃতি দিয়েছেন, সংবাদ প্রকাশ করেছেন। তাদের এই সমর্থন ও আওয়াজের কারণেই আমি দ্রুত মুক্তি পেয়েছি বলে বিশ্বাস করি। যারা আমার পাশে ছিলেন তাদের সবার প্রতি আমার অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।

...

ডিবিতে আমার খাবার মেন্যুতে কী ছিল?


১৯ নভেম্বরের গভীর রাত। শীত ঠিক পুরোপুরি নামেনি, তবু বাতাসে একটা ঠান্ডা খচখচে ভাব। শহরটা যেন ঘুমের ভিতরেও ক্লান্ত নিঃশ্বাস ফেলছে। এমন সময় হঠাৎ আমার দরজায় অচেনা কড়া। প্রথমে ভাবলাম হয়ত ভুল দরজা। কিন্তু দ্বিতীয় কড়া আরো কঠিন, আরো স্পষ্ট। বুঝিয়ে দিল, এ রাতের ছন্দ বদলে গেছে। দরজা খুলতেই দেখি কয়েকজন অপরিচিত মুখ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ডিবি পরিচয়ে আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান সরকারের কঠোর নির্দেশ ও নিয়ম অনুযায়ী কাউকে আটক করতে হলে স্থানীয় থানাকে জানানো বা আইডি কার্ড প্রদর্শনের যে বিধান রয়েছে, তার কোনোটিই মানা হয়নি। উল্টো ডিবির প্রধান শফিকুল ইসলাম আমার সঙ্গে কথা বলবেন, এমন একটি প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঘড়ির কাঁটা এক জায়গায় আটকে থাকার মতো সময় যেন থমকে গেল। প্রশ্ন, নীরবতা, অপেক্ষা সবকিছু মিশে প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা ডিবি হেফাজতে স্তব্ধ থাকলাম।

এসব গল্প এখন পুরনো। তবে ডিবি থেকে বাসায় ফেরার পর একটি অদ্ভুত বিষয় খেয়াল করলাম। সবার মুখে একটাই কৌতূহলী প্রশ্ন, ‘ডিবিতে আপনার খাবার মেন্যুতে কী ছিল'? বিদেশি একটি গণমাধ্যম আমার সাক্ষাৎকার নেয়ার সময়ও এই প্রশ্ন করেছে। গতকাল একটি টেলিভিশনের টক-শোতেও দেখলাম আমার খাবার মেন্যু নিয়ে বিজ্ঞজনরা আলোকপাত করছেন!

এমনকি ফেসবুকের জনপ্রিয় পেজ ‘ইয়ার্কি’ পর্যন্ত রসিকতা করে লিখেছে ‘ভাতের হোটেল সার্ভিস বন্ধ, ডিবি এখন 'উঠাও' সার্ভিস চালু করেছে।’ আসলে আমরা বাঙালিরা বড্ড ভোজনরসিক। সুখে খাই, দুঃখে খাই, প্রেমে পড়লে খাই, ছ্যাঁকা খেলে খাই, কেউ জন্ম নিলে খাই, মারা গেলেও খাই... শুধু খাই আর খাই। হয়তো এই সাইকোলজি বুঝেই ডিবি হারুন ‘ভাতের হোটেল’ খুলেছিলেন। তাই আমার আটকের পর সবার আগ্রহ ছিল, হারুনের হোটেলের ঝাঁপ বন্ধ হওয়ার পর নতুন মেন্যুতে কী যোগ হলো?

মেন্যু আইটেম ১, পানি:

বাসা থেকে ডিবি কার্যালয়ের দূরত্ব খুব বেশি না, কিন্তু অনুভূতিতে সেটা যেন একটা যুগ। কারণ অন্ধকার রাতে অজানা যাত্রা সবসময় বুকের ভেতর একটা শূন্যতা তৈরি করে। আমাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর পরই ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। তড়িঘড়ি করে আসামির খাতায় নাম তুলে, বেল্ট-জুতা খুলে শরীর তল্লাশি করে আসামিদের গারদে ঢোকানো হয়। ডিবির লোকজনের রুক্ষ ব্যবহার আর ধমকে আমি তখন রীতিমতো চোখে সরষে ফুল দেখছি। গারদের ভেতরে অচেনা মুখ। কেউ একজন জিজ্ঞেস করল, ‘ভাই, কী মামলায় আইছেন?’ আমি তো জানিই না কেন এসেছি!

আমার অজ্ঞতা দেখে আরেক বন্দি রায় দিলেন, ‘তাইলে নিশ্চিত সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হবে আপনার নামে।’

ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ, কথা বের হচ্ছে না। আমি পানি চাইলাম। কেউ একজন পানির বোতল এগিয়ে দিলেন। ডিবিতে আমার প্রথম খাবার, এক চুমুক পানি।

কিছুক্ষণ পর ডিবির প্রধান এসে আমার সঙ্গে কথা বললেন। এরপর আবার আমাকে তার রুমে ডেকে পাঠালেন। দ্বিতীয়তলায় তার রুমে যাওয়ার পর আমাকে দাঁড় করিয়ে পরেরদিন প্রেস কনফারেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলেন। তখন আমি আসল কারণ জানতে পারলাম কেন আমাকে উঠিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। আমন্ত্রণপত্রে আমার নাম্বার নাকি ভুলভাবে দেয়া হয়েছে এ জন্য আমাকে ডেকেছেন।

ডিএমপি মিডিয়া সেল থেকে আরো একধাপ এগিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, আমার নাম্বার নাকি সংবেদনশীল জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছিল বলে আমাকে রাতের অন্ধকারে উঠিয়ে আনা হয়েছিল। যদিও আমি তাদের বলেছিলাম, ভুল করে আমার নাম্বার ব্যবহার হয়নি, আমি জেনে, বুঝে, সুস্থ মস্তিষ্কে এই নাম্বার আমন্ত্রণপত্রে দিয়েছিলাম, যাতে কোনো সাংবাদিক চাইলে প্রেস কনফারেন্স ইস্যুতে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এটা যে আমার পাবলিক রিলেশনস এজেন্সি টাইমস পিআর-এর ইনভাইটেশন সেটা আমন্ত্রণপত্রের উপরে আমার প্রতিষ্ঠানের লোগো থাকার পরেও হয়তো তারা বুঝতে পারেনি।  

মূলত তারা এই প্রেস কনফারেন্স করতে দিতে চান না। একটি সিন্ডিকেটকে মনোপলি ব্যবসা করার সুযোগ দেয়ার জন্য নীতিগত যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তাতে বিরাট সংখ্যক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পথে বসে যাবেন। যারা দেশের আইন মেনে, লাইসেন্স নিয়ে, সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে প্রকাশ্যে ব্যবসা করেন। এমনকি সরকারি ব্যাংক তাদের ব্যবসার বৈধতা যাচাই-বাছাই করে ঋণও দেয়। তারা ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার (এনইআইআর)-এর বিরুদ্ধে না। শুধু এনইআইআর বাস্তবায়নে অন্য বড় ব্যবসায়ীদের মতো নিজেদের ব্যবসা করার সমান সুযোগ চান।

এ বিষয়ে নিজেদের মতামত, প্রস্তাবনা ও দাবির কথা সাংবাদিকদের বলবেন, সেটা উপর মহল নিতে পারবেন না কেন? এ দেশের মানুষকে কথা বলার অধিকার তো সংবিধানই দিয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করে এই কথা বলার অধিকার হরণ করেছিল। সেটা এই সরকার বাতিল করেছে বলে দাবি করলেও একই কায়দায় কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা কার স্বার্থে করা হচ্ছে? শুধু মতামত দিবে বলে তাদের মুখ চেপে ধরতে হবে? তাদের কথা বলতে দেয়া যাবে না? এই যে ডিবির নতুন প্রধান বা যে বিশেষ সহকারীর দিকে অভিযোগের তীর যাচ্ছে, তারাও এসব পদে এসেছেন আগের সরকারের সময়ে কেউ কথা বলতে চাইলে তাদের মুখ চেপে ধরতো বলে। অথচ গদিতে বসেই তারা সব ভুলে গেলেন! 

ডিবির প্রধানের সঙ্গে আমার কথা বলা শেষ হওয়ার পর তিনি একজন ডিসিকে বললেন, ‘উনাকে ভাত-টাত খাওয়ায়ে ছেড়ে দিয়েন।’ এটা শুনে আমার মাথায় সঙ্গে সঙ্গে ডিবি হারুনের সেই ‘ভাতের হোটেল’ ভর করল। ডিবি হারুনের ভাতের হোটেল কি তাহলে এখনও খোলা? ভাতের হোটেলে মেন্যুতে কি কি আছে? এত রাতেও কি গরম ধোঁয়া ওঠা ভাত পাওয়া যাবে? এসব ভাবতে ভাবতে হেঁটে ডিসির রুমে পৌঁছে গেলাম। ডিসি আমার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করেছেন। কী খাবেন? জানতে চাইলেন তিনি। আমার গলা তখনও শুকনো। শুধু পানি চাইলাম। আরেক দফা পানি খেলাম। তবে আমি ডিনার করতে একদম আগ্রহ দেখালাম না। 

মেন্যু আইটেম ২, চীনা বাদাম:  

ডিসি আমাকে জানালেন তিনি অনেক ক্ষুধার্ত। একজনকে ডেকে ভাত আনতে বললেন। সে বললো, ‘স্যার এখন তো ভাত পাওয়া যাবে না। তবে মগবাজারে খিচুড়ি পাওয়া যাবে।’

ডিসি তাকে দুই প্যাকেট খিচুড়ি আনতে বললেন। আমার ক্ষুধা থাকলেও একদম খাওয়ার ইচ্ছা হচ্ছিল না বলে বিনয়ের সাথে আমার খাবার আনতে না করলাম। খাবার এলো। ডিসি ডিনার করলেন। অনেকটা সময় ধরে আমার সঙ্গে নানান বিষয়ে গল্প করলেন। তিনি আগের রাতেও নাকি ঘুমান নাই। খুবই ক্লান্ত, কিন্তু আমাকে সঙ্গ দেয়ার জন্য ভোর রাত পর্যন্ত আমার পাশে ছিলেন। রাত তিনটার দিকে একটা চীনা বাদামের কৌটা ধরিয়ে দিলেন। তিনি কয়েকবার বলার পর কিছুটা বাদাম নিলাম। 

এই সময়ে আমি মনে করিয়ে দিলাম আমাকে ছাড়া হবে কখন? তিনি একবার বললেন, ‘মোবাইল ব্যবসায়ীদের একজনকে ধরতে পারলে আপনাকে ছেড়ে দিবো।’ কিছুক্ষণ পর স্মার্টফোন ও গ্যাজেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)-এর সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ পিয়াসকে ডিবি নিয়ে আসলো। আমি বললাম এবার আমাকে ছাড়ুন। তিনি বললেন, ‘সংগঠনের সভাপতি মো. আসলামকে পাওয়া যায়নি। উনি হলে আপনাকে ছাড়তে পারতাম।’

এর আধা ঘণ্টা পর তিনি আবার বললেন, ‘আপনাকে একটা মুচলেকায় স্বাক্ষর করিয়ে ছেড়ে দিবো। সেখানে লেখা থাকবে আপনাকে কোনো টর্চার করা হয়নি, ভুল বোঝাবুঝির কারণে আপনাকে নিয়ে আসা হয়েছিল।’

একজনকে ডেকে এই মুচলেকা লিখতে বললেন। আরো আধা ঘণ্টা পর মুচলেকা এলো। কিন্তু এবার ডিবির প্রধান ফোন ধরছেন না। ঘুমিয়ে গেছেন বলে এটা সম্ভব হচ্ছে না। এরপর তিনি আমাকে অন্য একজনের জিম্মায় দিয়ে ফজর আজানের পর বাড়ি গেলেন।

মেন্যু আইটেম ৩, কফি:

সারা রাত নানা নাটকীয়তা শেষে দিনের আলো ফুটে গেল। আশরাফুল নামের যে পুলিশ সদস্য আমাকে তুলে এনেছিলেন, তিনি বাসা থেকে ফ্রেশ হয়ে এখন ডিবি কার্যালয়ে আসলেন। ততক্ষণে অনেক গণমাধ্যমে আমাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। আশরাফুলের নামও এসেছে। তার মুখে অস্বস্তির ছাপ। তিনি বললেন, ‘আমি তো শুধু অর্ডার পালন করেছি, কিন্তু আমার নামও চলে এলো’, সে আমাকে জিজ্ঞেস করলো।

‘কিছু খাবেন কিনা? কফি খাওয়াই?’ ক্লান্ত লাগছিল, তাই আমি আর না করলাম না। সে নিজের হাতে ধোঁয়া-ওঠা কফি বানিয়ে আনলো। সে ভালো কফি বানাতে পারে এটা স্বীকার করতেই হবে। 

এরপর দেখলাম আশরাফুলের কাছে একের-পর-এক কল আসছে তার ঊর্ধ্বতন থেকে। আমাকে দ্রুত ছাড়ার তাগিদ দিচ্ছে। তবে সেটা ফর্মালিটি মেনে মুচলেকা লিখে আমার স্বাক্ষর করে এরপর ছাড়তে হবে। এই মুচলেকা রেডি করতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগলো। একবার মুচলেকায় একটা লাইন যোগ করতে বলে তো আবার পরের কলে সেটা ফেলে দিতে বলে। এভাবে অনেক সময় নিয়ে মুচলেকা রেডি করলো। আমাকে আটকের সময় কোনো স্থানীয় থানাকে জানানো বা আইডি কার্ড প্রদর্শনের যে বিধান রয়েছে, তার কোনোটিই মানা হয়নি। কিন্তু আমাকে ছাড়ার সময় ফর্মালিটি মানতে দুটি মুচলেকায় (একটি আমার, অন্যটি জিম্মাদারের) বাধ্যতামূলক স্বাক্ষর করতে হয়েছে। 

এবার গাড়ি দরকার। কিন্তু গাড়ি চাওয়ার পরেও আশরাফুল ঠিক মতো সাপোর্ট পাচ্ছে না। দেরিও হয়ে যাচ্ছে। পরে সে ডিবি প্রধানকে ফোন করে বললে তাৎক্ষণিক বিশেষ গাড়ির ব্যবস্থা হয়। এরপর দ্রুত কালো গ্লাসের গাড়ি রেডি হলো। আমি যদিও এখান থেকে নিজে থেকেই বাড়ি যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু বাইরে অনেক সাংবাদিক দাঁড়িয়েছিলেন বলে সেই রিস্ক তারা নিতে চায়নি। খুব তাড়াহুড়ো করে আমাকে গেট থেকে বের করা হয়। আমার বন্ধু তানভীর খন্দকার ও সাবেক সহকর্মী শুভ সারারাত গেটের বাইরে অপেক্ষা করছিল, তাদের সাথে নিয়ে বাসার দিকে রওনা হলাম।

সাড়ে ১০ ঘণ্টার এই রুদ্ধশ্বাস জার্নিতে আমার পেটে পড়েছিল শুধুই পানি, চীনা বাদাম আর এক কাপ কফি। বাকি গল্প না হয় আরেকদিন হবে। ডিবিতে ভাতের হোটেল বন্ধ হয়েছে কি না জানি না, তবে আমার কপালে জুটেছিল এটুকুই!

লেখক: মিজানুর রহমান সোহেল https://www.facebook.com/share/1AGVQikgYB/ (শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫)"

...

* ক্রমশ, শেখ হাসিনার ক্ষমতা পরির্বতনের পর কুশাসনের সমস্ত পর্বই ফিরে এসেছে! বাকী ছিল 'গুম-পর্ব'—কেবল এই একটা কারণে আমরা বড়ই আনন্দিত ছিলাম। কিন্তু তবলার ঠুকঠাক শুরু হয়ে গেছে, এবার গান গাওয়ার পালা! এটা হচ্ছে, গুমের প্রাথমিক পর্ব!

Monday, November 10, 2025

ডাক্তার নামের এক প্রতারক!

লেখক: ডা. মো: মারুফুর রহমান (লেখকের লিখিত অনুমতিক্রমে প্রকাশিত)

"এটি একজন সেলিব্রিটি ইনফ্লুয়েন্সার চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন। সবাই তাকে চেনেন, 'অর্গানিক জাহাঙ্গীর', 'কিটো জাহাঙ্গীর', 'জেকে', ইত্যাদি অনেক নামে। সেই চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের এই অবস্থা!

ন্যুনতম স্ট্যান্ডার্ডে প্রেসক্রিপশনে অবশ্যই সম্ভাব্য রোগের নাম, রোগীর সমস্যা, ভাইটাল সাইন, জেনারেল ফাইন্ডিং এগুলো থাকতে হয়। এই প্রেসক্রিপশন দেখে বোঝার উপায় নেই কি সমস্যায় এসব ওষুধ দেয়া হয়েছে। ফলে ওষুধগুলো আসলেই প্রয়োজনীয় কিনা তা যাচাই করার সুযোগ নেই।

তারচেয়ে বড় কথা এখানের ৭টি ওষুধের মাঝে ৭টিই নানা ধরনের ভিটামিন/ফুড সাপ্লিমেন্ট যা উপযুক্ত খাবারের মাধ্যমেই পুরণ করা সম্ভব। মুলত এই প্রেসক্রিপশনটি ফুড সাপ্লিমেন্ট-এর ব্যবসা বর্ধক ফর্মুলা ছাড়া কিছুই না এবং এ কারণেই ওষুধ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসারে চিকিৎসকদের ফুড সাপ্লিমেন্ট লেখা নিষেধ।

চলুন দেখি কি কি 'ওষুধ' লেখা হয়েছে।

১. প্রথমটি Cap Acteria, এটি একটি প্রোবায়োটিক। এতে মূলত কয়েক ধরণের উপকারী বাক্টেরিয়া থাকে যার অধিকাংশ ল্যাক্টোব্যাসিলাস গ্রুপের, যা প্রচুর পরিমাণে থাকে দইয়ে। এই ওষুধের প্রতি ক্যাপসুলে ৪ বিলিয়ন ব্যাটেরিয়া আছে।

যার প্রতিটার দাম ৪৫ টাকা, দিনে ২টা করে ৩ মাসে মোট খরচ ৮ হাজার টাকা। অন্যদিকে ১ চামচ দইয়ে গড়ে ১-১০ বিলিয়ন বাক্টেরিয়া থাকে। এবার হিসাব করুন এ চামচ দই এর দাম কত?

উল্লেখ্য কোন নির্দিষ্ট রোগ সারাতে এর সরাসরি ব্যবহার উপযোগীতা নেই বরং স্বাস্থ্যকর খাদ্যভ্যাস-এর অংশ হিসেবে নানাবিধ রোগের ঝুঁকি ও উপসর্গ কমাতে নিয়মিত এ ধরণের উপকারী ব্যাক্টেরিয়া খাবারের সংগে গ্রহন করা বেশি উপকারী।

২. ২য় ওষুধ 'ভিটামিন ডি'। সূর্যের আলোর ভিটামিন অর্থাৎ আমাদের চামড়ায় সূর্য্যের আলো পড়লে এই ভিটামিন শরীরে তৈরি হয়। এছাড়াও নানাবিধ খাবারে ভিটামিন ডি থাকে যেমন তৈলাক্ত মাছ, ডিমের কুসুম, কলিজা ইত্যাদি।

তবে বাংলাদেশে অধিকাংশ মানুষেরই শরীরে ভিটামিন ডি কম। তাই এই সাপ্লিমেন্ট এর অনেকের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় হতে পারে যদি খাবার ও সূর্যের আলোর মাধ্যমে পুরণ না হয়। দাম হিসাব করলে প্রতি  ক্যাপসুল ৩৫ টাকা, সপ্তাহে ১টা করে ৬ সপ্তাহে ২১০ টাকা।

৩. ৩য় ওষুধ Santogen A-Z, মাল্টিভিটামিন, ১১টাকা পিস, দিনে ১টা করে ৬ মাসে, প্রায় ২০০০ টাকা। মানুষের কোন রোগের জন্যই মাল্টিভিটামিন খাওয়ার কথা চিকিৎসা বিজ্ঞানের কোন বই বা গবেষণাপত্রে লেখা নেই। মানুষের শরীরে একই সাথে সব ভিটামিন এর অভাব কখনোই হয় না।

যেগুলোর অভাব নেই সেগুলো খেলে মল মুত্রের সাথে বেরিয়ে যায় (কিছু কিছু লিভারে জমা হয়)। ফলে এই ওষুধের বেশিরভাগ উপাদানই শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে। কারও যদি কোন একটি দুটি ভিটামিন বা মিনারেলের অভাব থেকেও থাকে তারও উপকার হবে না কেননা এই মাল্টিভিটামিন এর বড়িতে সব ভিটামিন এত কম মাত্রায় যা অভাবজনিত প্রয়োজনীয় ডোজ এর তুলনায় অনেক কম।

৪. ৪র্থ ওষুধ, Carniten, এটি মানবদেহে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়া একটি এমাইনো এসিড এবং প্রায় সব ধরনের প্রাণিজ খাবারে এটি পাওয়া যায়। যাদের লিভার বা কিডনি মারাত্নক ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা খিচুনী রোগের কারণে বিশেষ ওষুধ খাচ্ছেন বা রেয়ার কিছু জেনেটিক রোগ ব্যতীত এই জিনিসের অভাব মানবদেহে হয় না।

কিডনি ড্যামেজ হওয়া ডায়ালাইসিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি সাধারনত ব্যবহার হতে দেখা যায়। প্রেসক্রিপশনটি যে রোগি বা যার নামে করা হয়েছে তার এ ধরনের রোগ আছে কিনা তা জানা যায়নি। কারণ রোগের বিবরন লেখা নেই প্রেসক্রিপশনে। আর যদি কিডনি বা লিভার ড্যামেজ থাকে তাহলে অন্য যেসব ডিব্বা খাওয়ানো হচ্ছে সেগুলো তার জন্য আরও ক্ষতিকর হবে। প্রতি পিস ৫ টাকা করে ৩মাসে এর পেছনে খরচ ৯০০ টাকা। 

৫. পরের ওষুধ Algecal Dx, ক্যালসিয়াম (600g)+ভিটামিন ডি। অর্থাৎ উচ্চমাত্রার ভিটামিন ডি ক্যাপসুল আলাদা করে দেয়ার পরেও এই ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ডি আবারও দেয়া হচ্ছে। বড়ি প্রতি ১৬ টাকা করে ৬ মাসে খরচ ২৮৮০ টাকা। এই স্পেসিফিক ক্যালসিয়াম বড়ির বিশেষত্ব হলো এটি ক্যালসিয়াম কার্বোনেট যা সামুদ্রিক শেওলা থেকে বের করা।

ক্যালসিয়াম বড়ি কম খরচে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট রূপে পাওয়া যায় ৫০০ গ্রাম ৫ টাকায়। ওষুধ কোম্পানি কিছুদিন পর-পর নতুন নতুন ক্যালসিয়াম বড়ি নিয়ে আসে শেওলার ক্যালসিয়াম, ঝিনুকের ক্যালসিয়াম ইত্যাদি ইত্যাদি। দাবী করে এগুলো সাধারন ক্যালসিয়াম এর চেয়ে বেশি শোষণ হয় শরীরে অথচ এর পক্ষে শক্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই, যেটুকু আছে তাতে শোষনের পার্থক্য খুব বেশি নয়। সুতরাং ৫ টাকার স্থলে ১৬ টাকার বড়ির কোন মানে নেই। এছাড়ায় দুধ, ডিম, হাড়, গাঢ় সবুজ শাক, কলিজা, মাছ, মাংশ ইত্যাদিতেও ক্যালসিয়াম থাকে। বাংলাদেশের মানুষের শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব জনিত রোগের প্রকোপ বেশি, তাই এটি জরুরী। 

৬. ৬ নাম্বার ওষুধ, Ubi Q, এটি একটি এনজাইম CoQ10 এর একটি রূপ যা আমাদের শরীর নিজেই তৈরি করে। একবারে সুনির্দিষ্ট কিছু হৃদরোগ ছাড়া বাইরে থেকে এই সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের পক্ষে কোন শক্ত ক্লিনিক্যাল এভিডেন্স নেই। ওষুধ কোম্পানি এটাকে 'দুর্বলতা কমানো, 'বয়স ধরে রাখা', 'ইমিউনিটি বুস্টার' ইত্যাসি চটকদার উপায়ে প্রমোট করে।

এসবের পক্ষে শক্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। শরীর এটাকে নিজেই তৈরি করে। এই প্রেসক্রিপশনে ১০০ মিলিগ্রাম Ubi Q, ৪৫ টাকা পিস দরে, দিনে ২টা করে ৬ মাসে খরচ ১৬,২০০ টাকা! ওদিকে গরুর হার্টে প্রতি ১০০ গ্রামে ১০ মিলিগ্রাম, মাংসে ৩-৪ মিলিগ্রাম, মুরগিতে ২-৩ মিলিগ্রাম, তৈলাক্ত মাছে ৪-৮ মিলিগ্রাম, ডিমের কুসুমে ১-২ মিলিগ্রাম এই এনজাইম থাকে। 

৭. ফাইনালি, ৭ নাম্বার হলো ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ১০০০ মিলিগ্রাম। মাছের তেল ও ভেষজ তেল (সরিষা, সয়াবিন, চিয়া সিড, বাদাম)-এ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। ১০০ গ্রাম সরিষা তেলে ৫০০০ মিলিগ্রামের বেশি ওমেগা-৩ থাকে। ১০০ গ্রাম রুই মাছে ৬০০ মিগ্রা, ১০০ গ্রাম পাঙ্গাসে ১২০০ মিগ্রা ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। এই বড়িতে ১১ টাকা প্রতি পিসে ৩মাসে ৩৩০ টাকা খরচ।

এই সাপ্লিমেন্টও ওষুধ কোম্পানি ইমিউনিটি বুস্টার, বলকারক, প্রদাহ নিবারক, হৃদরোগ থেকে সুরক্ষা ইত্যাদি নানা দাবী করে বিক্রি করে। আপাত সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে এসব দাবীর পক্ষে কোন বৈজ্ঞানিক প্রমান নেই। সুনির্দিষ্ট কিছু রোগ যেমন উচ্চ মাত্রার ট্রাউগ্লিসারাইড কমাতে এই সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের পক্ষে কিছু প্রমাণ আছে। 

সুতরাং সব মিলিয়ে এই প্রেসক্রিপশনে খরচ ৩০ হাজার টাকার বেশি! অথচ কি রোগ, কি বৃত্তান্ত কিছুই লেখা নেই। সব ক'টি ওষুধই ফুড সাপ্লিমেন্ট যা নিয়মিত খাবারের মাধ্যমেই অনেক অনেক কম খরচে গ্রহন করা সম্ভব আরও অনেক বেশি পুষ্টি উপাদান সহ। ওষুধ প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পুরো প্রেসক্রিপশন ভরে শুধুমাত্র ফুড সাপ্লিমেন্ট লিখে যাচ্ছে এই লোক! একদিকে অন্যান্য চিকিৎসকদের নিয়মিত বিষোদগার করছে আবার নিজেই ৩০ হাজার টাকার সাপ্লিমেন্ট ধরিয়ে দিচ্ছে।

এই প্রতারণা নিয়ে অনেকে অনেকবার লিখেছেন কিন্তু তার সেলিব্রিটি স্ট্যাটাস তাকে ইমিউন করে রাখে আইনের হাত থেকে। সম্ভবত এই রোগীর কাছ থেকে তিনি কোন ভিজিট রাখেন নি, কোন টেস্ট দেননি, ৩০ হাজার টাকা ধোঁকাবাজি বড়ি বিক্রি করেছেন শুধু। তাতেই রোগি শতভাগ খুশি হয়ে এই প্রেসক্রিপশন শেয়ার করেছেন ফেসবুকে।

পাঠক, আপনাকে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে পারেন আপনি নিজেই। বাংলাদেশের কোন আইন আদালত এইসব সেলিব্রিটিদের কখনো স্পর্শ করে না। চটকদার প্রচারনায় বিভ্রান্ত না-হয়ে যাচাই করুন, প্রশ্ন করুন, উত্তর খুঁজুন উপযুক্ত বিশেষজ্ঞ, বা গবেষণাপত্র অথবা সহজ উপায়ে চ্যাটজিপিটি থেকেও। শতভাগ না হলেও অন্তত অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ ধরনের প্রতারণা ধরতে পারবেন ও সাবধান হতে পারবেন।"

লেখক: ডা. মো: মারুফুর রহমান

চিকিৎসক ও গবেষক 'দ্যা ইউনিভার্সিটি অফ শেফিল্ড', যুক্তরাজ্য। (সিনিয়র পারফর্মেন্স মিজারমেন্ট স্পেশালিস্ট, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সাস্কাচুয়ান, কানাডা)

Tuesday, October 28, 2025

'এক ভচকানো চেহারার মুখোশ, শাহনেওয়াজ আলতাফ!

যেটায় কারও হাত নাই, যেমন কারও শারীরিক অসংগতি, সেটা নিয়ে আলোচনা করাটা বেজায় ছোটলোকগিরি— যার চালু নাম, বডি শেমিং!

এই যে লোকটা, এর নাম আলতাফ শাহনেওয়াজ। কাজ করতেন দৈনিক প্রথম আলোয় সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে। এবং সাহিত্যিক। আমার ধারণা, প্রথম আলোর চাপরাশিও কালে-কালে একজন সাহিত্যিক হয়ে যান! মুভি বলতে যেমন বোঝায় হলিউড, বিশ্বসাহিত্য বলতে যেমন ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য তেমনি এই দেশে সাহিত্যিক মানে 'প্রথম আলো ঘরাণার সাহিত্যিক'!

যাই হোক, পরে আলতাফ শাহনেওয়াজ যোগ দেন 'Dhaka Stream'-এ। তারই এক সহকর্মী স্বর্ণময়ী বিশ্বাস, আত্মহত্যা করেছেন এমনটাই বলা হচ্ছে এবং এর পেছনে আলতাফের পরোক্ষ হাত নেই এমনটা বলা যাবে না। নমুনা:

এই মৌসুমী হচ্ছেন, একজন সংবাদকর্মী এবং স্বর্ণময়ীর আত্মীয়। আমি বিশ্বাস করি, মৌসুমীর প্রত্যেকটা কথা সত্য কারণ এই আলতাফের বিরুদ্ধে কেবল স্বর্ণময়ীই না ২৬ জন গণমাধ্যমকর্মী লিখিত অভিযোগ করেছিলেন:


কিন্তু, দ্য গ্রেট চুতিয়া, ঢাকা স্ট্রিমের প্রধান সম্পাদক গোলাম ইফতেখার মাহমুদ, অভিযুক্ত ব্যক্তি আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেননি। নিয়ম অনুযায়ী, এ ধরনের ঘটনায় অভিযুক্তকে অন্তত সাময়িক বরখাস্ত করার কথা।

আমি যেহেতু আলতাফের লেখা পূর্বে পড়ি নাই তাই তার লেখার মান নিয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত রইলাম। হতে পারে এই লোক বিরাট সাহিত্যক কিন্তু আমি বারবার যেটা বলি, একজন ভাল সাহিত্যিক, একজন ভাল চাকুরেজীবী হলেই সে ভাল মানুষ হবে এর কোন নিশ্চয়তা নেই!

আমি ব্যক্তিগত ভাবে কাউকে 'বডি শেমিং' করাটা অন্যায় মনে করি—অন্যকে এই অন্যায় করতে জোর নিষেধ করব। কিন্ত... কেউ-কেউ যেমন নিজেকে খুন করাটা ঠেকাতে পারেন না (যার চালু নাম আত্মহত্যা); তেমনি আমিও, আলতাফ শাহনেওয়াজের ভচকানো চেহারা, তার ভচকানো পা (এ খুড়িয়ে হাঁটে) এটা বলে এই অন্যায় না-করে পারছি না...।

Friday, October 17, 2025

নরক এবং একজন ব্যারিস্টার আরমান!

লেখক: Shubhajit Bhowmik (শুভজিৎ ভৌমিক) [https://www.facebook.com/share/1FxKc5AbJB/]

"(১) ব্যারিস্টার আরমানের গুম নিয়ে বানানো ডকুমেন্টারিটা, যে-কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে  সহ্য করতে পারার মতো না। অন্তত আমি পারি নাই!

এজন্য খুব একটা সংবেদনশীল মানুষ হওয়ার দরকার নাই। জাস্ট খুব সাধারণ 'মানুষ' হলেও, আরমানের গুমের বীভৎস এই বর্ণনা আপনাকে সহ্য করতে পারার ক্ষমতার শেষ পর্যায়ে  নিয়ে যাবে।   

(২) হাসিনার গুম সিন্ডিকেটের, সম্ভবত সবচেয়ে নির্মম এবং নৃশংসতম অত্যাচারের ভিকটিম হচ্ছেন, ব্যারিস্টার আরমান। 

ওঁকে 'আট বছর' র‍্যাবের Task Force for Interrogation cell (TFI)- এই জায়গাতে গুম করে রাখা হয়েছিলো। 

সবচেয়ে নির্মম কেন বলছি এইটাকে? কারণ, গুমের শিকার অন্যান্য মানুষকে হয় মেরে ফেলা হয়েছে। নাহয় টর্চার করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

কিন্তু, ব্যারিস্টার আরমানকে আট বছর, এমন একটা পরিস্থিতিতে রাখা হয়েছিলো, যেখানে মানুষ নিজেই নিজের মৃত্যু কামনা করে। বন্দী আরমান নিজে বহুবার অনুরোধ করেছেন, এতো যন্ত্রণা দেয়ার চেয়ে তাঁকে বরং মেরে ফেলতে।

আহারে-আহারে। একটা মানুষ কোন পর্যায়ে গেলে নিজের মৃত্যু কামনা করে! কিন্তু আরমানকে মেরেও ফেলা হয়নি!

(৩) আট বছর এই মানুষটার টয়লেটে যাওয়ার স্বাধীনতাও ছিলো না। দেয়ালে হ্যান্ডকাফ দিয়ে শব্দ করে টয়লেটে যাওয়ার আবেদন জানাতে হতো। বহুবার কেউ আসেনি তাঁকে টয়লেটে নিতে।

কাপড় নষ্ট হয়েছে। সেই ময়লা আবার তাঁকেই পরিষ্কার করতে দেয়া হয়েছে। বন্ধ রুমের গরমে, ঘাম প্রস্রাব ঝরে-ঝরে মেঝেতে পানি জমে যেতো। তাঁর মধ্যে ঘুমিয়েছেন আরমান।

হাতকড়া পরে থাকতে থাকতে-থাকতে আরমানের কবজিতে ফোসকা পড়ে গিয়েছিল। তখন সেই হাতকড়া খুলে তাঁর পায়ে পরিয়ে দেয়া হয়েছে। কোরবানির গরুকেও এই নৃশংস যন্ত্রণা দেয় না মানুষ। 

(৪) জীবনের শ্রেষ্ঠতম সময়। ৩২ বছর বয়সী ৩২ বছর বয়সের যুবক আরমানকে বাসা থেকে গুম করা হয়। যখন ফিরলেন, তখন তাঁর বয়স চল্লিশ। চোখে দেখেন না। হাঁটতে পারেন না। ভয় পায়, অহেতুক!

ছোট-ছোট দুইটা মেয়ে সন্তান। বাবাকে যখন ধরে নিয়ে যাচ্ছিলো খালি পায়ে, ছোট মেয়েটা বাবার দুইটা জুতা হাতে তুলে পেছনে-পেছনে যাচ্ছিলো, 'বাবা তোমার জুতা'। 

সহ্য করার মতো নারে, ভাই।

(৫) মেয়েগুলো এখন বড় হয়ে গেছে। বাবা বেঁচেই ছিলেন, কিন্তু নিজের চোখে বাচ্চাগুলোর বড় হওয়ার দৃশ্য দেখতে পারেননি। 

বাচ্চাদের সাথে বাবার ইমোশনাল বন্ডিং তৈরি হওয়ার সময়টাতেই বাবা ছিলেন না। বাচ্চাদের টেক-কেয়ার করার জন্য বাবার মায়াময় চোখ ছিলো না। 

আরমানের স্ত্রী জানতেন না, তাঁর স্বামী বেঁচে আছে, নাকি নাই। তিনি সধবা নাকি বিধবা। এ কোন আঁধার, রাতের চেয়েও অন্ধকার...!

আহারে আমার ভাই। আহারে।

(৬) অন্ধকারে চোখ বাঁধা থাকতে-থাকতে, আরমানের চোখে ছানি পড়ে গেছে। সবকিছু ঝাপসা দেখেন। 

লন্ডন থেকে ব্যারিস্টারি পড়ে আসা মানুষটার উজ্জ্বল ক্যারিয়ার সম্পূর্ণ শেষ। ফ্যামিলিটাও ফাইন্যান্সিয়ালি ধ্বংস হয়ে গেছে।

অপুষ্টিতে ভুগে স্বাস্থ্যবান লোকটা শুকিয়ে জীর্ণ হয়ে গেছেন। লোকটার সংগে কথা বলার কেউ ছিলো না! এক পর্যায়ে তিনি রুমের টিকটিকির সাথে, পিঁপড়ার সাথে কথা বলা শুরু করেন। 

টিকটিকির নাম ছিলো 'টুকটুকি'। তিনি বড় আবেগ নিউএ বলতেন, 'এই টুকটুকি, তোর কয়টা বাচ্চা? আমার না দুইটা মেয়ে আছে, ছোট...'!

(৭) দাঁতে দাঁত চেপে ব্যারিস্টার আরমানের গুমের এই ডকুমেন্টারি দেখেন। ১৫০০+ মানুষের ওপর এই মধ্যযুগীয় নির্যাতন চালিয়েছিল হাসিনা আর তার লোকজন। 

ক্লাসের পাঠ্যপুস্তকে এই গুমের কাহিনী লেখা হোক। এই জাতিকে বারবার মনে করিয়ে দিতে হবে আওয়ামী রেজিমের জুলুমের ইতিহাস। আয়নাঘরগুলোকে মিউজিয়াম বানিয়ে, সেখানে বাচ্চাদের শিক্ষা সফরে নিয়ে আসা হোক। 

আমরা যেন ভুলে না যাই, আওয়ামী জাহেলিয়াত কী জিনিস ছিলো। আমরা যেন মনে রাখি। 

(৭) ডকুমেন্টারির সবচেয়ে ভয়াবহ ক্লিপ হচ্ছে, আরমানের মুক্তি পাওয়ার দৃশ্যটা। 

আট বছর পর অচেনা রাস্তায় যেন একটা পশুকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সে জানে না এটা কোন জায়গা! কতো সাল? সে জানে না, সে কতো বছর বন্দী ছিলো! সে জানে না, হাসিনা পালিয়ে গেছে! সে রাস্তাঘাট কিচ্ছু চিনতে পারছে না।

সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে লুঙ্গি পরা একটা জীর্ণকায় লোক। দুই পায়ে টলতে-টলতে ইবনে সিনা হাসপাতালে ঢুকছে। আট বছর পরে কেউ তাঁকে চিনতে পারছে না।  ময়লা কাপড়ের জন্য কেউ তাকে বিশ্বাস করছে না।

(৮) মানুষটা ভয়ে গামছা দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছে। যদি তাকে চিনতে পেরে আবারও কেউ ধরে নিয়ে যায়। পরাধীন থাকতে-থাকতে, মানুষটা ভুলেই গেছে যে, স্বাধীনতা এসে গেছে। 'হি ইজ ফ্রি...'।

আহারে, মানুষটা! বাকী জীবন কীভাবে কাটাবে এই ট্রমা নিয়ে?

একজনের কাছ থেকে একটা মোবাইল ধার করে আরমান নিজের নাম লিখে গুগল করেন। গুগলে তার পুরাতন চেহারার ছবি বের হয়ে আসে। নিজের চেহারার পাশে সেই মোবাইলের ছবি ধরে ইবনে সিনার কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, 'দেখেন তো, এইবার চেনা যায়?

(৯) ওই প্রথমবার, আট বছর পর মুক্ত হয়, স্বাধীন হয় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ইতিহাসে (সম্ভবত) সর্বোচ্চ নির্যাতনের শিকার, মীর আহমাদ বিন কাশেম, আরমান। আমাদের ভাই। 

কী অসম্ভব প্রাণশক্তি থাকলে, লোকটা এখনও মানসিকভাবে সুস্থ আছেন, পাগল হয়ে যাননি, ভাবতে অবাক লাগে। নিঃস্ব হয়ে গেছেন মানুষটা। এই ডকুমেন্টারি হচ্ছে আরমানের সেই জীবনের গল্প, যে জীবনের চেয়ে মৃত্যুই হয়তো ভালো ছিলো। 

(১০) আপনারা দয়া করে ডকুমেন্টারিটা দেখেন। বোঝেন। উপলব্ধি করেন। আরমানের সাথে আরমানের আটটা বছর, বিশ মিনিটে কাটিয়ে আসেন। 

এই মহাপাপ, এই মহা অন্যায়ের বিচার দাবি করেন। চোখের জলে বুক ভাসান, যেভাবে আরমান ভাসিয়েছিলেন তাঁর শুয়ে থাকার মেঝেটা। 

বাংলাদেশ রাষ্ট্র যাতে আরমান সহ গুমের প্রত্যেক ভিকটিমের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেয়, সেই দাবিটা করেন রাষ্ট্রের কাছে। 

(১১) আমাদের দুর্ভাগ্য, এতো সবকিছুর পরেও কিছু অমানুষের বাচ্চা, আওয়ামী দলদাস মাদার... গুমের জলজ্যান্ত প্রমাণকে নাটক হিসাবে দাবি করে। দেড় হাজার মানুষের লাশ অস্বীকার করে। 

মানুষ হিসাবে আপনার নিজের ওপর ঘেন্না জন্মাবে, যে এইসব অমানুষের সাথে আপনাকে একই বাতাসে অক্সিজেন শেয়ার করতে হয়। একই মাটির স্পর্শ শেয়ার করতে হয়। একই সূর্যের আলো শেয়ার করতে হয়।

এইসব অমানুষের জাত, দলবাজ শুয়ারের বাচ্চার সাথে আপনাকে পাশাপাশি বেঁচে থাকতে হয়! আফসোস, আমাদের কিছুই করার নাই।  

(১২) জ্জা যদি এইটা না হয়, তাহলে লজ্জা কী কেবল দিগম্বর থাকা? 

বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম স্বৈরাচার, শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ঘৃণ্যতম পিশাচের নাম, শেখ হাসিনা। 

আর কেউ না জানুক, আরমান জানে। ভাই আমার, আপনার বাকী জীবনটা সহজ হোক। সুন্দর হোক। দুনিয়াতে এখনও সবাই দলবাজ, লীগ হয়ে যায়নি।

দুনিয়াতে এখনও কিছু 'মানুষ' আছে। যারা আপনার অন্য ভুবনের বেদনা ধারণ করার চেষ্টা করে...।"

-লেখক: Shubhajit Bhowmik (শুভজিৎ ভৌমিক) [https://www.facebook.com/share/1FxKc5AbJB/]


Monday, October 13, 2025

কারাগারময় বাংলাদেশ!

সামরিক বাহিনীর যাদের প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে এদের জন্য আলাদা জেলখানা স্থাপন করা হয়েছে। এ এক বিস্ময়!

এ সত্য, সরকার আইন কপচিয়ে এটা করেছে:

এখানে Prisions act 1894-এর ৩(বি) ধারার প্রয়োগ করা হয়েছে। ভাবা যায়, আমাদের দেশে এখনও ১৩১ বছর, প্রায় ১৫০ বছর পুরনো আইনে দেশ চলে! একটা স্বাধীন দেশে এখনও ব্রিটিশদের আইনের বাইরে আমরা যেতে পারিনি! ব্রিটিশদের দেখলে এখনও যে আমরা প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলি না আমাদের এও এক বিরাট সাহস! আমাদের বাপ-দাদাদের পিঠে পা রেখে সাহেবরা ঘোড়ায় উঠত আর এখনও সাহেবদের আইন আমাদের মাথায়-মগজে! 

যাই হোক, এই আইনে যেটা বলা হচ্ছে:


"(b) Any place specially appointed by the Government under section 541..."

এবং ঝড়ের গতিতে রাষ্টপতি  আদেশ দিয়েছেন!
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক-বেসামরিক মিলিয়ে ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর ক্যান্টনমেন্ট-এর ভেতর একটি স্থাপনাকে কারাগার ঘোষণা করা হয়েছে!
যে মামলা নিয়ে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা সেটা কিন্তু সাধারণ কোন মামলা না, ৩টির মধ্যে ২টিই গুম সংক্রান্ত। সোজা ভাষায় বললে, খুনের মামলা—ভয়ংকর এক মানবতা বিরোধি অপরাধ! গুম নিয়ে যারা হাসাহাসি করেন, হালকা চালে দেখেন তারা গুম কমিশনের এই ডক্যুমেন্টারিটা দেখে নিলে ভাল করবেন। এরপরও কারো যদি হাসি আসে তাহলে সে একটা 'বাই বোর্ন শুয়োর'!

আমার স্বল্প জ্ঞানে যেটা বুঝি, যে সামরিক লোকজনের জন্য আলাদা কারাগার করা হলো তাদের বিচার কি সামরিক আইনে হচ্ছে? না!
আমরা চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্য একটু শুনি:
যেহেতু এখানে কোর্ট-মার্শাল চলছে না—সরল প্রশ্ন, এই সামরিক লোকজনদেরকে কি আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে? জাজ কি বলেছেন যে জামিন হবে, কি হবে না? জাজ কি বলেছেন, এরা কারাগারে যাবেন, কি যাবেন না? জাজ কি বলেছেন, কারাগার কি এদেশে হবে, নাকি অন্য দেশে? নাকি জাজ নিজেই ক্যান্টনমেন্টে চলে যাবেন বিচারপর্ব পরিচালনা করার জন্য?
আর্মি আইনে অবশ্য বলা আছে:
"... If the accused is in custody, then the investigation must be started within 48 hours from the time of his arrest excluding public holidays..." -(Army Act, Section 74)
এখানে যেহেতু আর্মির এই আইন অচল তাই চিফ প্রসিকিউটর প্রচলিত আইন থেকে যেটা বলছেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে উপস্থাপন করতে হবে এটাই সঠিক। এর ব্যতয় হওয়ার তো কোন সুযোগ নাই। 
এখন সামরিক লোকজনদের জন্য যদি আলাদা কারাগার বানাবার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে সাবেক বিচারপতি, সাবেক সিইসি এদের জন্যও তো আলাদা কারাগারের আবশ্যকতা দেখা দেবে। তখন বিচারপতিদের জন্য হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে একটা কারাগার, মন্ত্রীদের জন্য মিন্টু রোডে একটা কারাগার আর 'কানকাটা রমজানের' জন্য কাশিমপুর কারাগার...।

কারাগারময় বাংলাদেশ! 

মোগলরা এখন জুস বিক্রি করে!

শায়েস্তা খান আমলের (১৬৭১) এই  ছোট কাটারা দেখতে গিয়ে মনটাই খারাপ হয়ে গেল!

Tuesday, October 7, 2025

বেচারা চোর সাহেব—বেচারা সরকার বাহাদুর!

এ সত্য, আগের হাসিনা সরকার সগর্বে বলত, তারা আমাদের বেডরুম পাহারা দিতে পারবে না। অনেকে এটা ভাল চোখে না-দেখলেও আমি আগের সরকার বাহাদুরের সংগে একমত। কারণ বেডরুম পাহারা দেওয়া কোনও কাজের কাজ না!

একজন অপূর্ব'র গল্প!

লেখক: Asif Bin Ali (https://www.facebook.com/share/17Jpx1YoG9/)

"লেখাটি এনএসইউ’র (NSU) ছাত্র অপূর্বকে নিয়ে। সাম্প্রতিক সময়ে সে কোরআন অবমাননার মতো একটি কাজ করেছে এবং ভিডিও করে নিজেই পোস্ট করেছে। বর্তমানে সে পুলিশ হেফাজতে আছে। তার এই কাজ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, এবং তাকে বিনা বিচারে হত্যার জন্য প্রচারও চলছে।

Monday, September 29, 2025

বিরাট এক মাওলানা!

আক্তার হোসেন নামের এই লোক বয়স্ক এই ভদ্রমহিলার বাড়ানো হাতটা ধরেননি! বিরাট মাওলানা যে...!

Sunday, September 21, 2025

আইয়ামে জাহেলিয়া বনাম 'বর্তমান জাহেলিয়া'!

লেখক: Raju Norul (https://www.facebook.com/share/1GZkkQ93GD/ )

বিবিসির এক রিপোর্ট বলছে, আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লেখা প্রায় ১৪০টা বইয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও, আরও ৬৮০টা বইকে 'সমস্যাজনক' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলো 'শরিয়া নীতি বা তালিবান নীতি'-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে করা হয়েছে।

Tuesday, September 2, 2025

এক যুদ্ধবাজ এবং দাসী সমাচার!!

আমাদের এই হুজুর মহোদয় বড় কষ্টে আছেন! কারণ ভিরু মুসলমান আজ আর অমুসলিমদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারছে না, ফলে বেচারারা যুদ্ধবন্দী হিসাবে দাসীও পাচ্ছে না! আফসোস!

Thursday, August 28, 2025

আমাদের এক সেরা সন্তান!

সাবেক মেজর মো. মোহসিনুল করিম, যিনি পিলখানায় আর্মি কিলিং-এর পর সেনাপ্রধানের মুখের উপর বলেছিলেন, 'গেট আউট ফ্রম হিয়ার'!

Friday, August 22, 2025

বিদায় বিভুদা, বিদায়!

আপনার শেষ লেখা পড়ে, আপনার শেষ বিদায় নেওয়ার ভঙ্গি দেখে মিনার মাহমুদের [] কথা মনে পড়ে গেল! কী অবলীলায়ই না এই প্রজন্ম মিনার মাহমুদের কথা বিস্মৃত হয়েছে!

মিনার মাহমুদের চিঠির মত আপনার চিঠি পড়াটাও বড় কষ্ট!

আমার ঢাকার জীবন এবং বিচিত্র এক মানুষ!

লেখক: Syed Saiful Alam Shovan (https://www.facebook.com/share/1GH823Ybmb/

"আমি এক ভদ্রলোককে ঢাকায় খুঁজে পেয়েছিলাম। উনার ব্যবসা ভাংগারির। তবে উনার অন্যতম প্রধান কাজ ছিল তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে সিটি করপোরেশনের ম্যানহোলের ঢাকনা আর সড়কের লোহার গ্রিল চুরি করানো।

Thursday, August 21, 2025

শিক্ষা, পারিবারিক শিক্ষা!

আমাদের প্রধান উপদেষ্টা যখন হাত নেড়ে-নেড়ে বলেন, 'আমার নিজেরই তো দেশ চালাবার অভিজ্ঞতা নেই অন্য উপদেষ্টাদের আর কী বলব...'! তখন আর কথা চলে না।

তাই স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কী যোগ্যতায় এই পদে আছেন সেই আলোচনায় যাওয়া বাতুলতা মাত্র!

Saturday, August 9, 2025

গরুর মুত-উটের মুত!

হিন্দু, সনাতন ধর্মে গরুর মুত ওরফে পেশাবকে কেবল অবলীলায় খাওয়াই হয় না খুবই সম্মানের চোখে দেখা হয়!

Monday, August 4, 2025

জুলাই-যোদ্ধা এক মাওলানা!

লেখক: দিপ্র হাসান (https://www.facebook.com/share/1AG3Shrf55/)

"এই মাওলানাকে চিনেন নিশ্চয়ই?


Saturday, August 2, 2025

মাওলানা শাহ কারামত আলী জৌনপুরী বনাম ২ কোটি মুসলমান!

এই ভিডিও ক্লিপে এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী সাফ-সাফ বলছেন, তার বংশের মুরুব্বি শাহ কারামাত আলী জৌনপুরির সময়ে অত্র এলাকায় মুলমান ছিল ৩০ ভাগ আর হিন্দু বা সনাতন ধর্মাবলম্বী ছিল ৭০ ভাগ। 

এ এক অন্য রকম মব, কটুক্তির আড়ালে!

"কোথা থেকে এলো দেশে আজব এ- জীব
জ্বলজ্বল জ্বলে যার লকলকে জিভ
পড়শির পাড়া খাক, ঘরদোর ছাই
দেশজোড়া হাহাকার পালাই পালাই।
...পশুকীট রাজ্যে এর নাই পরিচয়:
দাংগাবাজ-কুজন্মের নতুন বিস্ময়!"        -সানাউল হক

Monday, July 28, 2025

ছেলেরা যখন বড় হয়ে উঠল!

সাদিক মাহবুব ইসলাম, এই ভদ্রলোক চমৎকার করে গুছিয়ে বলেছেন:


এই ভিডিও কার্টেসি: Imtiyaz Mirza

আমি বারবার বলে আসছি, হাসিনা রেজিম পরিবর্তনের কোন বিকল্প ছিল না।

Sunday, July 27, 2025

শুট মি!

শাকিলা ফারজানা, একজন ব্যারিস্টার, একজন মহিলাকে হাসিনার শাসনামলে র‍্যাব কর্তৃক যে মানসিক শারিরীক অত্যাচার করা হয়েছিল তা কল্পনাতীত! এরমধ্যে তিনি র‍্যাব ৭-এর লে, কর্নেল মিফতাহ উদ্দিনকে আইডিন্টিফাই করতে পেরেছিলেন। 

Saturday, July 26, 2025

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং মুরগি চুরি!

সাবেক বিচারপতি এ বি এম খাইরুল হক সহ ৪৬৭ জন মিলে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আবদুল কাইয়ুম আহাদ নামের একজনকে হত্যা করেছিলেন। একজনকে হত্যা করার জন্য ৪৬৭ জন, সংখ্যাটা একটু বেশি হয়ে যায়! এটার উদাহরণ সম্ভবত এই গ্রহে নাই!

Wednesday, July 23, 2025

বাচ্চাদের ঝলসানো দেহ বনাম ১টা ম্যাচের কাঠি!

২২ জুলাই, ২০২৫। এই দিন শোক দিবস ছিল। এটা আমরা বলিনি, সরকার মহোদয় বলেছেন:


শোক দিবস কেন? ঘটনা সামান্য!

Sunday, July 20, 2025

এন্টার্কটিকায় একজন অভিযাত্রী!

লেখক: Eng. Naim Uddin

(ইঞ্জিনিয়ার নাঈম উদ্দিন, বাংলাদেশের অল্প মানুষদের মধ্যে একজন, যিনি এন্টার্কটিকা ঘুরে এসেছেন, বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা নিয়ে।)

Friday, July 18, 2025

কিছুই বদলায়নি, কিছুই বদলায় না!

হাসিনা রেজিমের পতনের আর কোন বিকল্প ছিল না এ পরম সত্য। সব বাদ দিলেও যে-কাউকে, গুম করা বা ক্রসফায়ারে মেরে ফেলাটা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু একেক করে সবই ফিরে আসছে।

Thursday, July 17, 2025

একজন বীর প্রতীক, একজন যোদ্ধা লে. ক. হাসিনুর রহমান!

এই মানুষটা কেবল একজন বীর প্রতীকই না দুর্ধর্ষ এক যোদ্ধাও। সম্ভবত তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি দুই দুইবার গুম হয়েছেন।

Monday, July 14, 2025

দেশ, তুই ল্যাংটা!

এই একটা ভিডিও ক্লিপের পর আর এক লাইন লেখাও অর্থহীন! ল্যাংটার আবার 'কীসের সমাজ, কীসের নমাজ'! 
কাছেই আনসারের ক্যাম্প ছিল, কেউ এগিয়ে আসেনি! না পুলিশ, না সেনাবাহিনী! এই যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন, কেউ নাইন-নাইন-নাইন ফোন দেয়নি! কেউ মানে, আমরা-জনগণ! 
এরা সবাই কিন্তু বেতনভুক্ত কর্মচারী-কর্মকর্তা!

Sunday, July 13, 2025

যে বৃক্ষের যে ফল!

চাঁদপুরের এক ইমাম সাহেবকে এক মুসুল্লি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে, মসজিদের ভেতরে।

মুসুল্লির নাম বিল্লাল হোসেন। ইমামকে কোপাবার কারণ হিসাবে সে ২টা প্রসংগ নিয়ে এসেছে:

Saturday, July 12, 2025

দ্বিতীয় জীবন!

লেখক:Tahiyat Chowdhury

(https://www.facebook.com/share/16vLiAFoCm/ )

(লেখকের লিখিত অনুমতক্রমে প্রকাশিত)

"সেদিন রাতে, দীর্ঘ ১৬ মাস গুম নির্যাতনের পরে আমাকে একটা কালো মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যাওয়া হয় বান্দরবানের 'টংগাবতী' নামক গহীন পাহাড়ে। যাওয়ার পূর্বে আলেপ উদ্দিন বলে:

'মুকুল রানার নাম শুনছোস...'? আমি বললাম, 'হ্যাঁ, টিভিতে শুনছি'। সে উত্তরে বললো, 'আজকে রাতে দেখা হবে, চিন্তার কিছু নাই, জান্নাতে একসাথে গল্প করবি'।

Friday, July 11, 2025

শাসন, অনুশাসন।


এই ভিডিও ক্লিপে আমরা যে মেয়েটির বক্তব্য শুনছি সে তার বাবা-মার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। জন্মের পর থেকেই নাকি তার বাবা-মা তাকে মানুষ হিসাবে মনে করেননি, নিজেদের সম্পত্তি ভাবতেন। সোজা কথা, কুকুর-বেড়াল টাইপ মনে করেতেন।

Thursday, July 10, 2025

একটি অডিও ক্লিপের আত্মকাহিনী!

লেখক: Muquit Mohammad

বিবিসির এই অডিও ক্লিপ সম্পর্কে দেখলাম সজীব জয় দাবী করেছে:

Saturday, July 5, 2025

আস্কারা এবং এর অকল্পনীয় ফল!

লেখক: Kamrul Hassan Mamun

(https://www.facebook.com/share/16jaJmFZ4f/) [লেখকের লিখিত অনুমতিক্রমে প্রকাশিত]

"চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পদোন্নতির জন্য সাক্ষাৎকার দিতে আসা শিক্ষককে বরখাস্তের দাবিতে একদল শিক্ষার্থী ভিসির রুমে ঢুকে যায় এবং সেখানে যেভাবে হট্টগোল করেছে তা অকল্পনীয়!

Wednesday, July 2, 2025

এক যোদ্ধা: ক্যামেরার পেছনের কুশীলব!

লেখক: শাফকাত রাব্বী অনীক (https://www.facebook.com/share/1D28Vv2eDL/) [লেখকের লিখিত অনুমতিক্রমে প্রকাশিত]

"ছবিটি হচ্ছে শেখ হাসিনার পালানোর দিন, আগস্ট ৫, ২০২৪ সালের গণভবনের দুপুরের পূর্বে অপ্রকাশিত স্যাটেলাইট ইমেজ।

Sunday, June 29, 2025

এক অন্য রকম লড়াই!

লেখক: Ahmed Noor

(https://www.facebook.com/share/15jxDnKNtW/ ) [ ফেসবুক থেকে লেখকের অনুমতিক্রমে প্রকাশিত] 

" 'দৈনিক কালের কণ্ঠ’র প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সাড়ে ১২ বছর সিলেট ব্যুরো প্রধান ছিলাম।

নিজের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ দিতে কখনও কার্পণ‍্য  করিনি। সিলেট বসে যুক্তরাজ্যের দু দুটো নির্বাচন কভার করেছি। যখন অন্য পত্রিকাগুলো যুক্তরাজ্যে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে।

Thursday, June 26, 2025

এটিম-এতিম-ইয়াতিম!

শেষ অবধি শেখ হাসিনাকে এটিমের আলোচনায় আলোচনা করতে হলো? ভাল-ভাল!

আশা করছি, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।

Tuesday, June 24, 2025

সমস্ত বধ্যভূমিতে মিশে আছেন একজন জহির উদ্দিন!

 লেখা ও ছবিঃ প্রথম আলো।

ময়মনসিংহের ভালুকায় মহাসড়কের পাশে দৃষ্টিনন্দন একটি বাড়ি।


বাড়িটির একটি অংশের দোতলায় যাওয়ার সিঁড়ির মুখে শিল্পীর আঁকা একটি ছবি। 

Monday, June 23, 2025

মব জাস্টিস- 'ঢালি' ওরফে দুর্ভেদ্য ঢাল!

সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে আমাদের 'সো-কলড' জনতা বাসা থেকে কেবল টেনে-হিঁচড়ে নিয়েই আসেনি, গলায় জুতার মালা পরিয়েছে। গালে জুতা দিয়ে মেরেছে! তাও আবার পুুলিশের সামনে! এবং এদিকে আবার দেশে নাকি সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারে আছে!

Thursday, June 19, 2025

এক লড়াকু যোদ্ধা!

(https://www.facebook.com/share/1BkzeStupG/) [লেখকের লিখিত অনুমতিক্রমে প্রকাশিত]

"আমার নাম নীলা ইস্রাফিল। আমি এনসিপির সদস্যা হই বা না-হই, আমি একজন যোদ্ধা।
আমি আমার শ্বশুরবাড়িতে লেক্সাসে চড়তাম। ২৬ জন কাজের লোক ছিল। আরাম-আয়েশের কোনো অভাব ছিল না। কিন্তু খারাপ প্রস্তাব পাওয়ার পর আমার শ্বশুর  প্রয়াত  উপদেষ্টা  সুফি চেহারার আড়ালে বিভৎস এক দানব হাসান আরিফকেও আমি ছাড় দেই নাই!

আহ, প্যালেস্টাইন! তিনি ঘুমান, বিশ্বও!

তাঁর কেবলই ঘুম পায়!

ইসরাইলিদের কাছে সব হামাস, শিশুও!

Sunday, June 15, 2025

এক 'মহিলা ইতর'!

প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, এটা আমার জ্ঞানের স্বল্পতা! ইতর শব্দটার স্ত্রী লিঙ্গ কি হয় এটা আমার জানা নাই বিধায় আপাতত 'মহিলা ইতর' দিয়ে কাজ চালাচ্ছি। কাউকে নিয়ে 'বডি শেমিং' করাটা অন্যায় কারণ প্রকৃতিগত ভাবে কারও শরীরের কোন বিচ্যুতি নিয়ে সমালোচনা চলে না।

Saturday, June 14, 2025

আমাদের একজন 'বাবর আলী!

(লেখকের লিখিত অনুমতিক্রমে প্রকাশিত)
"অনন্য এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন আমাদের বাবর আলী! ভ্রমণে মূল ঝামেলা থেকেই বাঁচিয়ে দিয়েছে বাবর আলী। আমার কাছে সাধারণত অপরিচিত লোকজনেরা প্রথমেই জানতে চান ঘোরাঘুরির টাকা ম্যানেজ করা যায় কী করে? আমি চট করে হাতের কাছে থাকা বাবর আলীর উদাহরণটা দিয়ে দিই!
অনেকে বলে থাকেন, 'টাকা জমাতে পারছি না বলে দেশ ঘুরতে বের হতে পারছি না'।
ইয়ে,‌আপনার পকেটে কি পাঁচ হাজার টাকা আছে? কিংবা পাঁচ হাজার টাকা কি আগামী কয়েক মাসে জমানো সম্ভব?

Saturday, May 24, 2025

নরক!

ফতোয়ার জন্য "ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী"-কে অত্যন্ত গুরুত্বের সংগে গ্রহণ করা হয়। এটা তো সবার জানা বাদশাহ আলমগীরের নামানুসারে 'ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী" নামকরণ করা হয়েছিল। এই কিতাবের ভূমিকায় বাদশাহ আলমগীরের প্রসংগে  বলা হয়েছে এভাবে:

আমিরুল মু'মেনীন, রঈসুল মুসলিমীন, ইমামুল মুজাহিদীন মহান রাষ্ট্রনায়ক আবূ মুজাফফার মুহীউদ্দিন বাহাদুর ওরফে বাদশাহ আওরংগজেব আলমগীর গাযী ওরফে বাদশা আলমগীর (র)। অতঃপর আল্লাহতা'য়ালা বাদশাহ আলমগীর  (র) হৃদয়ে এমন একটা সংকলনের বিষয় ইলহাম করেন...। 

যাই হোক, "ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী", ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে ১০ খন্ডে প্রকাশিত। আমি ২য় খন্ড থেকে কেবল একটা ফতোয়া (২য় খন্ড, পৃ: ৩৯-৪০) এখানে উল্লেখ করতে চাই। এটা টাইপ করার সাহস আমার নাই বিধায় আগাম ক্ষমা  প্রার্থনা!

Friday, May 23, 2025

জ্ঞানের (গা...) নৌকা পাহাড়ে উঠে...!


শতবর্ষী একটা গাছ কেটে ফেলেছেন আমাদের আলেম সাহেবরা। অভিযোগ গুরুতর- জালেমরা এই গাছে জালেমগিরি করে!

Monday, May 12, 2025

একটি জুতা এবং এক টাকার পানি!

লেখক: সাইফুল বাতেন টিটো (https://saifulbaten.blogspot.com/?m=1), https://www.facebook.com/share/1LJjnqmFwJ/

"সম্ভবত ২০১৪ সালের কথা। চ্যানেল আই আমাকে দিয়ে দ্বিতীয় নাটক বানাবে এই জন্য আমি ইবনে হাসান খানের সঙ্গে মিটিং শেষ করে কবি নির্মলেন্দু গুণদা'র মেয়ে প্রডিউসার মৃত্তিকা গুণের সামনে বাজেট নিয়ে কথা বলছি আর চা খাচ্ছি। সঙ্গে সম্ভবত Hassan Shantonu ছিলেন। কবিকন্যা  মৃত্তিকা বললেন:

Friday, May 9, 2025

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর বনাম নিশান-ই-হায়দার মিনহাজ: কে আসল বীর?

লেখক: আরিফ রহমান (https://www.facebook.com/share/1DVEKhbT4h/)

"আমাদের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের মৃত্যু দিন আর পাকিস্তানের সর্বোচ্চ বীর রশিদ মিনহাজের মৃত্যু দিন কিন্তু একই দিন। কারণ দুজনের মৃত্যু একই ঘটনায় ঘটে। এই ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসের গভীর এক হেঁয়ালির জন্ম দেয়। একই ঘটনায় নিহত দুই পক্ষের দুইজন মানুষ দুটি দেশের সর্বোচ্চ বীরের খেতাব পেয়েছেন!

Thursday, May 8, 2025

গুমঘরের যত কথা!

লেখক: Nabila Idris (https://www.facebook.com/share/1BgAt6pGE8/)

যিনি গুম কমিশনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন, আছেন। তাঁর লেখার মাধ্যমে আমাদের বিভিন্ন ধরনের গুম সংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়...:

" ১. আমরা রেগুলারলি ভিক্টিমদের থেকে গোপন ডিটেনশন সেলে ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনা শুনি। এসব নির্যাতন প্রায়ই এতটা নিষ্ঠুর হয় যে তাদের শরীর ও মনে স্থায়ী ক্ষত রেখে যায়। কিন্তু মাঝে-মাঝে কিছু ভিক্টিম এমন ঘটনার বর্ণনাও দেন যেখানে আচমকা এক ধরনের অস্বাভাবিক মানবতার ঝলক দেখা যায়!

Monday, May 5, 2025

BSF: আদি অকৃত্রিম এক হায়েনা!

পূর্বের এই লেখায় [] আমি উল্লেখ করেছিলাম, সীমান্তবর্তী একটা এলাকায় স্কুল চালাবার সূত্রে ওখানকার লোকজনের মুখ থেকে শুনতাম বিএসএফ কেমন করে আমাদের লোকজনকে আমাদের এলাকা থেকে ধরে নিয়ে যায়।

ধরে নিয়ে যাওয়ার পর খুব কম মানুষই ফেরত আসত। আর যারা ফেরত আসত তাদের বর্ণনা ছিল ভয়াবহ-রোমহর্ষক!  বিএসএফ যে কেবল ভয়ংকর নির্যাতন করত এমনই না শরীরের নাকি পেট্রল পুশ করে দিত। অনেকের হাত-পায়ের রগ কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিত!

Sunday, May 4, 2025

এক কাপ চায়ে দু-কাপ চিনির সঙ্গে আরেক চামচ...!

এক কাপ চায়ে দু-কাপ চিনি দেওয়ার পর সেই চা যেমন কোন মানুষের খাওয়ার যোগ্য থাকে না তেমনি আমিনুল ইসলাম নামের মানুষটাকে নিয়ে এহেন মন্তব্য করার পর,  তাকে নিয়ে আবারও লেখা চলে না []। কিন্তু, ওই যে একটা কিন্তু থেকে যায়...! কিছু মানুষ থাকেন যারা মানুষের(অ) ঊর্ধ্বে!

Sunday, April 27, 2025

'দেখা হবে...', দাউদ ভাই!

 

দাউদ হায়দার। তাঁর সঙ্গে আমার বেশ কিছু ছবি কিন্তু তখন তাঁর নিরাপত্তার কারণে তাঁর ছবি ছাপাবার বিষয়ে সমস্যা ছিল। আহা, আজ আর সেই সমস্যা নেই। এখন তিনি সমস্ত নিরাপত্তার ঊর্ধ্বে চলে গেছেন!

Wednesday, March 26, 2025

পতাকা ছিনতাই!

কপালের ফের! যাপিত জীবন পেছনে ফেলে মাস ছয়েক হলো ইট পাথর-কংক্রিটের বস্তিতে, যার চালু নাম 'ঢাকা শহর'! তাও নিজের বাড়ি ফেলে এখন ভাড়া বাড়িতে!

ঢাকা, এ বড় বিচিত্র এক নগর! এর বিচিত্রতা নিয়ে অন্য কোন এক দিন আলাপ করা যাবে!

আজ ২৬ শে মার্চ, আমাদের স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতা কেমন এ নিয়ে তাবড়-তাবড় মানুষদের বড়-বড় আলাপ আছে। আমার আলাপ খুব ছোট। স্বাধীনতা কি এটা আপনাকে জানতে হবে একজন প্যালেস্টাইন নাগরিকের কাছ থেকে। নিদেনপক্ষে আমার কাছ থেকে যে নিজের বাড়ি এবং ভাড়া বাড়ির মধ্যে তফাতটা কেমন!

Thursday, March 20, 2025

বিচারপতি সাহাবুদ্দিন: এ দেশে এক অভূতপূর্ব, বিরল...!

লেখক: Shariful Hasan: (https://www.facebook.com/share/1BPXYjYD18/)

"অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি পদে নিয়োগ পেলেও কোনো রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বা প্রয়োজন ছাড়া তিনি রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে আসেননি! রাষ্ট্রপতির জন্য নির্ধারিত কোনো কিছু তিনি গ্রহণ করেননি। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকালে বিদেশি অতিথিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত উপহার তিনি সরকারি তোষাখানায় জমা দিয়েছেন। সাধারণ পোশাক-পরিচ্ছদই তাঁর সবসময় পছন্দ ছিল। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর অনেকেই তাঁকে নতুন কিছু জামাকাপড় বা স্যুট তৈরির কথা বলেছিলেন। সেসব কথাকে তিনি আমল দেননি।

Saturday, March 15, 2025

গুম: যে জীবন ঘাসফড়িঙের!

লেখক: রাজীব হোসেন
"গাজীপুর জেলা কারাগারে আমাকে যেদিন ট্রান্সফার করে, সেদিনই রেজা স্যারকে সেখান থেকে কাশিমপুর জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়। আমাদের পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল। কাশিমপুরে আমি আর সুবায়েল (ক্যাপ্টেন সুবায়েল বিন রফিক) সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য পাশাপাশি সেলে ছিলাম। এখন আমি অন্য কারাগারে চলে এলাম। গাজীপুর জেলে সংক্ষিপ্ত কিন্তু ঘটনাবহুল সময় কেটেছে। প্রায় এক বছরের মতো সময় ছিলাম। 

Thursday, March 6, 2025

গুম: একজন আদর্শ বাবা, আদর্শ স্বামী মহিউদ্দিন ফারুকী

লেখক: Enamul Haque Mony. লেখক তখন দ. কোরিয়ার কিয়ংপুক ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করছিলেন।

"র‍্যাব-২, বসিলা, মোহাম্মাদপুরে আমাকে যে রুমে গুম করে রাখা হয়েছিলো, টয়লেট সাইজ একটা ছোট্ট রুমের মধ্যেই টয়লেট করার জায়গা। বাকী ফাঁকা জায়গায় একটা স্বাভাবিক মানুষ পা মেলে দিয়ে শুয়ে থাকতে পারে না। অসম্ভব!