লেখক: দিপ্র হাসান (https://www.facebook.com/share/1AG3Shrf55/)
"এই মাওলানাকে চিনেন নিশ্চয়ই?
অথচ জুলাই বিপ্লবে রাজবন্দী হয়ে হারুনের ভাতের হোটেল কাঁপানো ছয় সমন্বয়কের সম্মিলিত অবদানের চেয়ে বেশি অবদান এই মাওলানার!
নিজের একজন স্ত্রী ছিল। একটা মাদ্রাসা ছিল। বিপ্লবের আগে ছিল সুখের জীবন। বিপ্লবের পর তাঁর মাদ্রাসা গেছে। দারিদ্র্যের পীড়নে স্ত্রীও গেছেন। থাকার আশ্রয়টাও গেছে।
এতদিন একটি মাদ্রাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। ওখান থেকেও চলে যেতে হচ্ছে তাঁকে। আফসোস, এই শহরে, একজন বিপ্লবীর, হাসিনাকে খেদানো একজন বীরের থাকার কোন জায়গা নাই। আমরা বিপদে পড়লে সাহসীদের ডাকি। বিপদমুক্ত হলে লাথি মেরে তাড়িয়ে দেই।
আমাদের ফয়েজ তৈয়ব তাকে একটা চাকরির আশ্বাস দিয়েও ঘুরিয়েছেন। কিন্তু চাকরি দেননি।
আমাদের এনসিপির নেতারা তাকে আশ্বাস দিয়েছেন অনেক। কিন্তু কিছুই করতে পারেনি।
শিবির বলেছে, ওঁর প্রতিষ্ঠান তারা চালু করে দিয়ে নিজেরা চালাবে। উনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠান আমাকে চালাতে দেন। আপনারা কিছু টাকা দিয়ে হেল্প করেন। 'আপ বাংলাদেশ'-ও চেয়েছে প্রতিষ্ঠান চালু করে দিয়ে নিজেরা চালাবে। শর্তে মিলেনি তাই সাহায্যও পাননি।
বিএনপির একজন নেতাও সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এখন বলছেন, নির্বাচন হোক।
মাওলানা সফিক চাইলে যে কোন দলে পদ বাগিয়ে নিতে পারতেন। চাঁদাবাজি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হতে পারতেন। বিশেষ কারো পক্ষ নিয়ে অন্যদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে টাকা কামাতে পারতেন। তিনি এসবের কিছুই করেননি। তিনি চেয়েছিলেন বিপ্লবের আগের সহজ সরল স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে।
'নৈমুদ্দি' গল্পটা পড়েছিলেন? শাপলার এক শহীদকে নিয়ে ছিল গল্পটা। মাওলানা সফিক যেন গল্পের নৈমুদ্দি কিংবা গল্পের নৈমুদ্দিই যেন মাওলানা সফিক।
এঁদের চাহিদা অতি সামান্য। সেই চাহিদাই আমরা পূরণ করতে পারি না। মাওলানা সফিক হয়ত এখন গল্পের নৈমুদ্দি না-হতে পারার আক্ষেপে বিপর্যস্ত। তিনি হয়ত ভাবছেন, নৈমুদ্দির মতই তিনিও যদি শহীদ হয়ে যেতেন তাহলে এই জিল্লতি- নিদারুণ আপমান তাঁর জীবনে আসত না।
কাউকে কিছু বলার নাই।
ইতিহাস সাক্ষী থাকল- ইতিহাসে এই ঘটনাটি জ্বলজ্বল হয়ে থাকবে। আমাদের ক্ষমতা মাতাল রাষ্ট্রকল্প একজন জুলাই যোদ্ধার সঙ্গে কী আচরণ করেছে! আমাদের জুলাইয়ের ক্রেডিট শিকারীরা একজন জুলাই যোদ্ধাকে কিভাবে সহায়তা করেছে, একজন ডানপন্থী বিপ্লবীর সঙ্গে অন্য বিপ্লবীরা কি আচরণ করেছে- ভবিষ্যতের ইতিহাস গবেষকরা নিশ্চয়ই তা খেয়াল করবেন... ।"
লেখক: দিপ্র হাসান
(https://www.facebook.com/share/1AG3Shrf55/)




No comments:
Post a Comment