Search

Friday, December 30, 2011

বার্তাকু ওরফে বেগুন!

­'নষ্ট শিক্ষক নষ্ট লেখক' [১] নামে একটা লেখা আছে আমার। ইমদাদুল হকের একটা লেখা নিয়ে প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়ে লেখাটা লিখেছিলাম। মিলনদের মত এই সব লেখকরা সম্ভবত এটা বিস্মৃত হয়ে যান, যে তিনি চটি লেখক না, একটা জাতীয় দৈনিকে মন্তব্য প্রতিবেদন লিখছেন। আবার ওই দৈনিকের সম্পাদকের দন্ডটাও যে ওঁর হাতেই! এও বিস্মৃত হন, আমরা পাঠকেরা ফ্লাওয়ার-ভাসে মস্তিষ্ক জমা রেখে এঁদের লেখা পড়তে বসি না! এই সব মানুষদের প্রতি আমার করুণা হয় যারা পাঠককে
নির্বোধ ভাবতে গিয়ে নিজেই নির্বোধ, এটা প্রমাণ দিয়ে বসেন। 

যাই হোক, বেশ পূর্বে একজন একটা মেইল করেছিলেন। সুন্দর করে সালাম-টালাম দিয়ে জানিয়েছিলেন, আপনার এই লেখাটা ভাল লেগেছে, লেখাটা ছড়িয়ে দিতে চাই । আমার পছন্দের একটা ব্লগে পোস্ট করেছি। বিনা অনুমতিতে লেখাটা প্রকাশ করার জন্য দুঃখিত। ইত্যাদি ইত্যাদি।

বিনা অনুমতিতে লেখাটা অন্য একটা সাইটে [২] ছাপিয়ে দেয়ায় আমার ভাল লাগেনি কিন্তু একজন ভুল স্বীকার করছেন, এটা ভেবে আমার রাগ পানি হয়ে গেল। আমার ধারণা ছিল আমার লেখা আমি নিজেই পড়ি। বেশ-বেশ, আরেকজন দেখি পাওয়া গেল। আনন্দিত না-হয়ে উপায় কী!

কিন্তু পরে আমি এই সাইটে লেখাটা দেখে প্রচন্ড ক্রদ্ধ হলাম। এই মানুষটা যে কেবল বিনা অনুমতিতে আমার লেখাটা ছাপিয়ে দিয়েছে এমনই না, আমার নাম বা আমার সাইটের কোন সূত্র উল্লেখ না-করে লিখেছে, নিচের লিখাটি সংগ্রহ করা মানে কী এর? আবার এ দেখি উৎকট মাতাব্বরিও করেছে!

সঙ্গে সঙ্গে এই মানুষটাকে কঠিন একটা মেইল করেছিলাম: 
"ওয়ালাইকুম আসসালাম। অনুমতি পাওয়ার পূর্বেই লেখা ছাপিয়ে দেয়াটা অন্যায়। তদুপরি আপনি মেইল করে এজন্যে দুঃখপ্রকাশ করেছেন বলে আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। কিন্তু...। কিছু বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করি। যেসব বিষয় আমার তীব্র বিরক্তির উদ্রেক করেছে, সেইসব বিষয়! যে সাইটে আপনি এই লেখাটা পোস্ট করেছেন সেখানে আপনি লিখেছেন:
'সম্মানিত ব্লগার ভাইযেরা! নিচের লিখাটি সংগ্রহ করা। পড়ে ভালো লেগেছে তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। কিছু কিছু শব্দ (নীল কালার করা) আমি পরিবর্তন করেছি, আসলে করতে বাধ্য হয়েছি……'
'...লেখাটা সংগ্রহ করা...'। বেশ! কিন্তু লেখাটা কার লেখা, কোত্থেকে সংগ্রহ করেছেন, এটা আপনি উল্লেখ করলেন না কেন? মানে কী এর! লেখক এবং তার সাইটের সূত্র এখানে দেয়াটা কি জরুরি ছিল না?
আপনি আরও লিখেছেন, 'কিছু কিছু শব্দ (নীল কালার করা) আমি পরিবর্তন করেছি, আসলে করতে বাধ্য হয়েছি...'।
এমনটা করতে কেন আপনি বাধ্য হলেন? যেসব লেখা আপনি পরিবর্তন করে দিলেন ওই লেখাগুলো কি অশ্লীল ছিল? আর এই শব্দগুলো আপনি পরিবর্তন করার কে? ...।
আমার লেখা আপনার ভাল লেগেছে এটা আমার জন্য আনন্দের এবং আপনি আমার লেখা ছাপিয়ে দিয়েছেন এটাও আমার জন্য সুখকর কিন্তু আপনার ভঙ্গি আমার পছন্দ হয়নি! যাই হোক, গোটা বিষয়টা আপনি করেছেন আমার লেখার প্রতি মমতার কারণে, প্রকারান্তরে এটা আমার প্রতি ভালবাসাও। ভালবাসার দাবী বড়ো দাবী। তাই গোটা বিষয়টা আমি ভুলে যাচ্ছি।"

আমি ক্রদ্ধ-বিরক্ত হলেও পরে মনে হয়েছিল, আহা-আহা, মানুষটার যে-কারণেই হোক আমার লেখা ভাল লেগেছে...। তদুপরি মানুষটাকে যথেষ্ঠ কঠিন কথাও বলা হয়েছে। সব ভুলে এটাও বলেছিলাম, লেখাটার জন্য আপনাকে অনুমতি দিলাম।

বিষয়টা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। সম্প্রতি অন্য একজন মেইল করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন, আমার কাছে জানতে চাইলেন, পূর্বে এই লেখাটা তিনি আমার সাইটে পড়েছিলেন। এখন অন্য এক সাইটে পড়েছেন, হুবহু একই লেখা, কপি-পেস্ট কিন্তু ওটায় আমার নাম নেই, ঘটনা কী? এই বিষয়ে আমার বক্তব্য কি ইত্যাদি...।

এই মেইল পাওয়ার পর ওই সাইটে গিয়ে আমি তো হাঁ! এখনও ওই বাক্য অটল, নিচের লিখাটি সংগ্রহ করা। মানে কী এর? সেই কবে মেইলে জানানোর পরও আজও এটা পরিবর্তন করা হয়নি।! তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম মূল লেখাটা এডিট করা যাচ্ছে না, বেশ। কিন্তু মন্তব্য আকারেও কি এই মাছিমারা কেরানি এই তকলীফ স্বীকার করতে পারলেন না?
শোনা কথা, বেগুনের নাকি কোনো গুণ নাই! জানি না। গুণের কথা জানি না তবে এটা জানি বেগুনে বড্ডো চুলকানি হয়। 

আবার ওখানে ওই পোস্টে কিছু মন্তব্য দেখে ধাক্কার মত খেলাম। একজন মন্তব্য করেছেন, "...আর সমস্ত মালু শিক্ষকরাই মূলতঃ ‘নষ্ট শিক্ষক’।"
অন্য আরেকজন মন্তব্য করেছেন, "মালুদের দ্বারা তারচেয়ে ভালকিছু আসাকরা যায়না!"

আমি হতভম্ব-হতবাক। আগে কখনও এই সাইটটা ভাল করে দেখা হয়নি। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কিছু লেখা পড়লাম। যতই দেখছি ততই শিখছি। একজন একটা পোস্ট দিয়েছেন:
প্রশ্ন: শীত নিবারণের জন্য সোয়েটার/ জ্যাকেট পরলে সেটা কি সুন্নতের খিলাফ হবে? শীত নিবারণের জন্য সুন্নতি পোশাক কি?
উত্তর: শীত নিবারণের জন্য সুন্নতি আবরণ হলো ‘চাদর’। জ্যাকেট বা সোয়েটার পরিধান করা মাকরুহ তথা অপছন্দনীয়।
শুভজিৎ ভৌমিক লিখেছেন নামের একজন জানতে চেয়েছেন: জনাব, কম্পিউটার ব্যবহার করলে সেটাও কি সুন্নতের খিলাফ হবে ? নি;সন্দেহে কম্পিউটার ইসলাম ধ্বংসের জন্য ইহুদি নাছারাদের বানানো এক নির্মম হাতিয়ার !
উত্তর: এই ব্লগটা মালুধর্মের বিরুদ্ধে একটি কঠিন হাতিয়ার!
 

অন্য একটা পোস্ট, "গরুর পশ্চাৎদেশ নিঃসৃত মল থেকে ভারতে তৈরী হচ্ছে টুথপেস্ট, কোমল পানীয় ও নানাবিধ খাদ্যসামগ্রী। আজই বয়কট করুন ভারতীয় সকল পণ্যসামগ্রী..."।
ইউনিলিভারের মত কোম্পানিগুলোও এই সব কর্মকান্ডে জড়িয়ে গেছে নাকি, কী সর্বনাশ! এতোটা সময় ধরে ব্লগিং-এর নামে কিসব হাবিজাবি লিখলাম। এখন পর্যন্ত সহীহ ব্লগিং কি এটাই দেখি জানি না! কেন যেন মনে হচ্ছে, এই ভিডিওটি দেখলে ধর্মের দন্ডটা আমরা কেমন করে ধরে রেখেছি এর খানিকটা আঁচ করা যাবে।
এই ভিডিওটি ইউটিউবে আপলোড করেছেন: email2habib, লিংক: http://www.youtube.com/watch?v=nRai8N8mIK4
এখানে খন্ডিত অংশ দেয়া হয়েছে। পুরো ভিডিও দেখার জন্য ইউটিউবের লিংক http://www.youtube.com/watch?v=nRai8N8mIK4 ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করি।

সহায়ক সূত্র:
১. নষ্ট শিক্ষক নষ্ট লেখক: http://www.ali-mahmed.com/2011/07/blog-post_09.html
২. সংগ্রহ করা লেখা...: http://www.sabujbanglablog.net/11167.html

No comments: