"বানিজ্যমন্ত্রী বলছেন, এতো কম দামে পৃথিবীর কোন দেশে পন্য বিক্রি হয় না। দেশে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে আছে দাবি করে তিনি বলেছেন, "দেশে কেউ না খেয়ে মরছে না, গ্রামে গঞ্জে কোনো হাহাকার নেই।" (বিডিনিউজ) [১]।
আমাদের মন্ত্রীবাহাদুররা সব জানেন তাই এই প্রশ্ন করব না, বানিজ্যমন্ত্রী মহোদয়, গতকাল পর্যন্ত এই পৃথিবী নামের গ্রহে কয়টা দেশ আছে, এটা কী আপনি জানেন? জানেন নিশ্চয়ই, না! কিন্তু আমার স্বল্প জ্ঞান ভান্ডারে খানিকটা জ্ঞান যোগ করার সু-ইচ্ছায় এটা অবশ্যই জানতে চাইব, মন্ত্রী মহোদয় কী নিশ্চিত এই গ্রহের মধ্যে সবচেয়ে কম মূল্যে আমাদের দেশেই পণ্য বিক্রি হয়? আমি জানতে চাই, এই তথ্য-উপাত্ত বানিজ্যমন্ত্রী কোথায় পেলেন? আমি এটাও জানতে চাইব, দ্বিতীয়স্থানে ঠিক কোন দেশটা আছে? এটাও আমার জানা প্রয়োজন দায়িত্বশীল কোন সংস্থা থেকে তিনি এই উপাত্ত নিয়েছেন?
মিডিয়ার মন্ত্রীর দেয়া তথ্যপ্রাপ্তির কোন নমুনা তো দেখতে পাচ্ছি না! আমাদের মিডিয়ার লোকজনরা বাদাম খাওয়ায় ব্যস্ত থাকেন বলে মন্ত্রী-শান্ত্রীদের কাছ থেকে এই সব কাজের কথা জেনে নিতে সময় পান না! বেচারা মিডিয়া!
"Nearly half of Bangladesh's 133 million people live below the national poverty level of $1 per day. "[২]।
"মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক গড়ে দৈনিক মাত্র ১ মার্কিন ডলার আয় করে (২০০৫)" [৩]।
আচ্ছা, বানিজ্যমন্ত্রী বলতে চান কী! যে দেশের লোকজনের মাথাপিছু আয় ১ ডলার সেই দেশে চাউলের কেজি ৪০/৪৫ টাকা, সয়াবিন তেল ১০০/১১০ টাকা! কেন? সব বাদ দিয়ে তাঁর এটা নিয়ে মাথা ঘামালে ভাল ছিল। ওয়েল, তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম, আমাদের দেশে পণ্য খুব শস্তা, তো? মন্ত্রীর কী ধারণা, উন্নত দেশগুলোর মত আমরা ঘন্টা হিসাবে পয়সা আয় করি, নাকি? এই দেশের অধিকাংশ মানুষদের গড়ে প্রতিদিন ১০০ টাকা আয় করতেই প্রাণান্তকর অবস্থা হয় আর এদিকে তিনি এসেছেন আমাদেরকে নসীহত করতে, কেমন শস্তায় আমরা জিনিসপত্র পাচ্ছি!
মন্ত্রী বাহাদুর আরও বলেছেন, "গ্রামে গঞ্জে কোনো হাহাকার নেই..."।
তাই বুঝি? আ-হ-হা, গ্রাম-গঞ্জ? আপনি গ্রাম-গঞ্জ চেনেন বলছেন? ভাল-ভাল! অপেক্ষায় আছি ধানগাছের লাকড়িগুলো দিয়ে যেদিন আমরা আসবাবপত্র বানানো শুরু করব সেদিন আর আমাদের দুঃখ থাকবে না।
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ যে টাকা আয় করে সেই টাকা দিয়ে ২ কেজি চাল কিনতেই দফারফা! এই চাউল রান্না না-করে চিবিয়ে খাওয়ার কোন উপায় যদি মন্ত্রী বাহাদুরেরা বাতলে দিলে আমরা খানিকটা আরামের শ্বাস ফেলতাম।
ভাগ্যিস, সরকার খোলাবাজারে ২৪/ ২৫ টাকায় চাল দিচ্ছে। একেকজন ডিলার প্রতিদিন পান ১ হাজার কেজি চাল। প্রতিজনকে ৫ কেজি করে দেয়ার নিয়ম, এই পরিমাণ চাল দিয়ে ২০০ মানুষকে অনায়াসে দেয়া সম্ভব কিন্তু অধিকাংশ চালই ডিলার সাহেবরা গাপ করে দেন। বাইরে মানে কালোবাজারে বিক্রি করে দেন। হায়, আমাদের ধার্মিক, নীতিবান লোকজনেরা!
ক্রমশ খোলাবাজারের এই চাল নেয়ার জন্য দীর্ঘ হচ্ছে মানুষের সারি। এই সব দোকানের পাশ দিয়ে হাঁটার সময় আমি চোখ নীচু করে রাখি কারণ এমন অনেককেই এই সারিতে দাঁড়ানো দেখি, যারা চান না আমি তাঁদের চোখে চোখ রাখি। মধ্যবিত্তের অনেক কষ্ট! একজন কৃষকের রেশনের দোকানে থলে হাতে দাঁড়াবার যে কষ্ট, এই কষ্ট স্পর্শ করার ক্ষমতা আমার কই!
এঁদের ক্ষুধা, একপেট আগুন নিয়ে ফট করে বলে দেয়া গ্রামে হাহাকার নেই এটা এক ধরনের রসিকতা, কুৎসিত রসিকতা! আহ, মন্ত্রীদের মত হতে পারলে বেশ হতো- লজ্জার মাথা খেয়ে এই দীর্ঘ সারিতে দাঁড়ানো এমন কারও চোখে চোখ পড়লেও সমস্যা ছিল না আর রঙিন চশমা চোখে যা খুশি তা বলে দেয়া যেত...।
সহায়ক সূত্র:
১. বানিজ্যমন্ত্রী, বিডিনিউজ: http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=4&id=149835&hb=2
২. usaid: http://www.usaid.gov/policy/budget/cbj2005/ane/bd.html
৩. bn.wikipedia: http://bn.wikipedia.org/wiki/Bangladesh
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Monday, February 14, 2011
ত্রিকালদর্শী মন্ত্রী বাহাদুরগণ!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
2 comments:
এই দেশে রাজনীতি এখন পুরোপুরি ব্যবসায়ীদের দখলে। ব্যবসায়ীরাই এখন রাজনীতিবিদ। সবকিছু এখন ব্যবসার স্বার্থেই নিয়ন্ত্রিত হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী তাদেরই একজন। সুতরাং এই ুদির ভাই তার ব্যবসা এবং তার ব্যবসায়ী ভাইদেরই স্বার্থ দেখবে।
সহমত :D @মুকুল
Post a Comment