ছাপার অক্ষরের অনেক ক্ষমতা! মানুষ নাকি ছাপার অক্ষরের কথা অনায়াসে বিশ্বাস করে।
এটা অকাট্য সত্য! মুখে হাজারবার বললে যে ফল হয়, ওই কথাটাই ছাপার অক্ষরে দেখলে অবিশ্বাস করার যো থাকে না। ছাপার অক্ষরের মধ্যে 'পত্রিকা-অক্ষর' হচ্ছে বামুন শ্রেনীর। পত্রিকায় লিখেছে, ব্যস, মগজ ধোলাই হয়ে গেল।
দেশের প্রায় ১৫ কোটি মানুষের মগজ ধোলাই করছে গোটাকয়েক পত্রিকা! এঁরা সম্মিলিত ভাবে, বসে যদি ঠিক করেন আজ আমরা গোটা দেশকে গু (কারও গা গুলালে এর স্থলে আলকাতরা পড়ুন) খাওয়াব, আমরা সানন্দে খাব। এরাই ঠিক করেন কে সেলিব্রেটি, কে নন। কে লেখক, কে লেখক না? এরাই ঠিক করে দেন কে রাজনীতিবিদ, কে রাজনীতিবিদ নন! এরা যদি বলেন, মওলানা ভাসানী অনেক বড়ো নেতা তো অনেক বড়ো নেতা; এরা যদি বলেন, মওলানা ভাসানী এবং কলিমুল্লা-ছলিমুল্লার মধ্যে পার্থক্য নাই। ব্যস, নাই। এরপর আর কোন কথা চলে না।
আজ মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী। প্রথম আলো এ খবরটা ছাপিয়েছে ১৯ পৃষ্ঠায় সিঙ্গেল কলামে! তাও আবার বিজ্ঞপ্তি আকারে। বেশ-বেশ, পেটকাটা রমজান, গালকাটা জব্বরও ইচ্ছা করলে তাদের পোষা বেড়াল বাচ্চা দিতে গিয়ে মারা গেছে, বেড়ালের মৃত্যুবার্ষিকীটা মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীর পাশে ছাপতে পারবে! পারবে না?
এরা এই চুতিয়াগিরি আজই কেবল করেনি। পূর্বেও অনবরত করেছে, ইনশাল্লা, আগামিতেও করবে। ভাষাসৈনিক গাজীউল হক-এর মারা যাওয়ার খবরটা আসে পেছনের পাতায়, বীর প্রতীক লালুর মৃত্যু সংবাদ ছাপানো বিজ্ঞপ্তি আকারে। সর্বত্র প্রায় একই ঘটনা! এরা ব্যতীত যে-দিন বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের শপথ নেয়া শেষ হবে, সেদিনও এরা এইসব অসভ্য কান্ড করে যাবে! আমিন, সুম্মা আমিন!
নেটে কোথাও পড়ছিলাম, হেথায় খুব তর্ক-বিতর্ক-কুতর্ক হচ্ছিল, মওলানা ভাসানীর নাকি নেতাসুলভ ক্যারিশমা ছিল না। আহা, থাকবে কেমন করে? এমন কুলিন পত্রিকা যেমন করে এই প্রজন্মের মগজ-ধর্ষণ করে! গ্রে-মেটার এবং রেকটাম যে জড়াজড়ি হয়ে যায় না এই তো ঢের! এরা কেবল আমাদের শিখিয়েই যাচ্ছেন আর ক্ষণে ক্ষণে শপথ করাচ্ছেন।
... ... ...
মওলানা ভাসানী মানুষটা ছিলেন বড়ো সাদাসিদা। পোশাকে-কাজে-কথায়, একচুল বাড়তি বাহুল্য ছিল না। নামের কোন মোহ তাঁর মধ্যে প্রভাব ফেলত না। কিন্তু দেশের বেলায় কোন আপোস নাই- পাকিস্তান জান্তাদের থোড়াই কেয়ার করতেন। তখন একের পর এক আগুনের গোলা উগরে দিতেন। মানুষটা আবার রসিকও কম ছিলেন না।
১৯৭০ সাল। প্রলয়ংকরী জলোচ্ছ্বাসের পরে মার্কিন সৈন্যরা এই দেশে আসার জন্য এক পায়ে খাড়া। মওলানা ভাসানী প্রকাশ্যে বললেন, "ভাইজানেরা আসুক তাহাতে আপত্তি নাই কিন্তু যাইবার বেলায় তাহারা যে লাল-লাল ভাইগ্না রাখিয়া যাইবেন তাহাদের কি হইবে!"
"মওলানা ভাসানী আইউব সরকারের বিরুদ্ধে হাতিরদিয়ায় (ঢাকা), ১৪ জানুয়ারী ১৯৬৯-এ বলেন:
জনসাধারণের ভোটাধিকার, লাহোর প্রস্তাবে উল্লেখিত পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন ও অর্থনৈতিক অধিকার আদায়ের জন্য প্রয়োজন হইলে আমরা খাজনা, ট্যাক্স দেয়া বন্ধ করিব।
...।
...। কৃষকের হাতে বন্দুক নাই কিন্তু কৃষকের বিক্ষোভ প্রদর্শন ও হরতাল পালনের ক্ষমতা রহিয়াছে। তাহারা যদি হাটবাজারে তাহাদের পরিশ্রমের ফসল ও অন্যান্য জিনিসপত্র বিক্রয় বন্ধ দেন তাহা হইলে হাজার হাজার টাকা মাহিনার উজির আমলা হইতে শুরু করিয়া থানার দারোগা পর্যন্ত সকলকে কারেন্সি নোট চিবাইয়া খাইতে হইবে।”
(বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, দলিলপত্র: দ্বিতীয় খন্ড, ১৯৫৮-১৯৭১)
**ছবি-ঋণ: বাংলার মুক্তিসংগ্রাম, আফতাব আহমদ।
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Tuesday, November 17, 2009
এই চুতিয়ারা আমাদের মগজ ধোলাই করে!
বিভাগ
১৯৭১: প্রসব বেদনা
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
1 comment:
salute
Post a Comment