নিজের সাইটে প্রথমে লেখা শুরু করলাম ওয়ার্ডপ্রেসে। বাহ, দু-চারজন দেখলাম কষ্ট করে এসে পড়েও যান! বেশ অনেকটা সময় এখানে লেখা হলো। কে যেন বলেছিল ব্লগার-এ লিখে নাকি টাকা-পয়সা পাওয়া যায়।
তখন আমার টাকা-পয়সার বড় প্রয়োজন। যে বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে কাজ-কারবার করতাম তাদের সঙ্গে বিরাট ভেজাল হলো। যুদ্ধ ঘোষণা হয়ে গেল। একটা অসম যুদ্ধ! এদের কাছে লেজার গান, ব্লাস্টার, বেসুমার টাকা আর আমার কাছে গুলতি। তবুও আমি পিছ-পা হলাম না। নীতির প্রশ্ন, একজন মানুষের মর্যাদার প্রশ্ন। মর্যাদাহীন একজন মানুষের বেঁচে থাকার প্রয়োজন কী! নিজের লাশ নিজেই কাঁধে বয়ে বেড়ানো কোন কাজের কাজ না।
এই যুদ্ধ এখনও চলছে।
এই বহুজাতিক কোম্পানি এই দেশে অন্য কারও সংগে এমন অন্যায় করার আগে দ্বিতীয়বার ভাববে। অন্য দেশে, অন্যের ঘরে গিয়ে যে মাস্তানি চলে না এটা এদের বিলক্ষণ টের পাওয়ার কথা।
এমনিতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আমাদের মত হাভাতে দেশে এমন রসিয়ে রসিয়ে গলা কাটবে কেউ টেরটিও পাবে না বরং বিমলানন্দে গলাটা পেতে দেবে। ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানিকে মানুষ হুদাহুদি গালি দেয়- আজকালকার বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এদের বাপেরও বাপ!
যাই হোক, টাকা-পয়সার বিরাট সমস্যায় পড়ে গেলাম, একেবারে যাচ্ছেতাই অবস্থা। কখনও এমনও গেছে চুল কাটাবার পয়সা নাই। একবার তো চুল হয়ে গেল ইয়া বড়। অনেকদিন পর দেখা হল এমন একজন বলেছিলেন, 'এইবার তুমারে লেখকের মত দেখা যাইতাছে'। শ্লা, এই হয়েছে এক যন্ত্রণা। লেখক হওয়ার দেখি ভারী হ্যাপা। চুল থাকতে হয় বড় বড়, গালে হাত দিয়ে পোজ দিয়ে ছবি তুলতে হয় (তিনি যে কতবড় ভাবুক এটা প্রমাণ করতে হবে না!), ওড়নার মত একটা চাদর গলায় ঝুলিয়ে রখতে হয়। এই কারণে আমি আজীবন লেখার চেষ্টাই করে যাব কখনও লেখক হতে পারব না। আফসোস...!
কী করি-কী করি! মুশকিল হয়ে গেল যে বড়, আমি দু-কলম লেখার চেষ্টা ব্যতীত আর কিছুই তো শিখিনি, পারি না। বৈষয়িক বিষয়ে আমার উদ্যোগ উদাসিনতা গয়ংগচ্ছ-কুড়েঁমি টাইপ!
যাই হোক, ব্লগার-এ লিখলে গুগল টাকা-পয়সা দেয় যখন আমি ওয়ার্ডপ্রেস থেকে ব্লগারে লেখা শুরু করলাম। পরে জানা গেল বাংলা সাইটগুলো গুগলের দু-চোখের বিষ। এরা বড়জোর চার আনা পয়সা দিলেও দিতে পারে মুড়ি-কটকটি খাওয়ার জন্য। তবে ব্লগারের অনেক কিছুই আমার পছন্দ হল। মুড়ি খাওয়ার পয়সা না পাওয়া যাক, আমি মনের আনন্দে হাবিজাবি লিখতে খাকলাম। যখন লিখি তখন জাগতিক সব বেদনা তুচ্ছ মনে হয়। কোন সহৃদয় পাঠক পড়েন তখন মনে হয় এই মানুষটাকে যেন হাত বাড়ালেই ছুঁতে পারি। জনান্তিকে বলি, দেখ পাগলু, কেমন ছুঁয়ে দিলাম।
লেখার সুখ, তার সঙ্গে অন্য কিছুর তুলনা কী- চরম ভালবাসাবাসির আনন্দ কোন ছার?
ওইসময়। বড় সাধ, আকাশে উড়াই ফানুস! ইশশ, নিজের যদি একটা সাইট হত আলী মাহমেদ ডট কম। কিন্তু আমার যে কোন ক্রেডিট কার্ড নাই, কেমন কেমন করে একটা সাইট কিনতে হয় ছাতাফাতা এইসব জটিলতাও ভাল বুঝি না- থাকি ছাতার গ্রাম টাইপের একটা জায়গায়। অন্যদের সাইটগুলো দেখে লম্বা লম্বা শ্বাস ফেলি- বাতাসে মিলিয়ে যায় সেই বেদনার শ্বাস।
একদিন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মাহবুব সুমন একটা মেইল করলেন, আপনার জন্য গুগল থেকে আলী মাহমেদ ডট কমটা কিনতে চাই, ব্লগস্পটের লেখাগুলোও হুবহু অবিকল থাকবে। না করবেন না।
অরি আল্লা, মানুষটা বলে কী- মানুডা পাগলু নাকি!
তিনি ওখানে বসে বসে কি কি সব কলকাঠি নাড়লেন। একদা দেখি 'আলী মাহমেদ ব্লগস্পট' 'আলী মাহমেদ ডটকম' হয়ে গেছে। অজান্তেই আমার মুখ ফসকে বেরিয়ে পড়ে, শুকরিয়া।
কেউ আমাকে কিছু দিলে অনাবশ্যক বিব্রত হই কিন্তু তখন আমি মোটেও বিব্রত হলাম না। মমতায় মাখামাখি হাত ফিরিয়ে দেয় কোন বুরবাক!
এখন শুনতে পাই ইনি (মাহবুব সুমন) নাকি ২০১২ পর্যন্ত সাইটটা কিনে রেখেছেন! ২০১২ পর্যন্ত আমি বেঁচে থাকব কিনা জানি না কিন্তু আমার এইসব আবর্জনা থেকে যাবে- তারায় তারায় ঘুরপাক খেতে থাকবে। কেউ কোন একদিন কোন একটা লেখা পড়ে হুশ, দূর-দূর বলে পত্রপাঠ বিদায় হবে। বিচিত্র কারণে কারও হয়তো কোন একটা লাইন ভাল লেগেও যেতে পারে, তখন তাঁর মনটা অন্য রকম হবে। তখন আমি অন্য ভুবনে কোথায় থাকব এটা বলা মুশকিল- কে জানে, বাই এনি চান্স, সেই ভাল লাগার একটা অংশ হয়তো বা আমায় ছুঁয়ে যাবে।
*মাহবুব সুমন মেইল করে জানিয়েছেন, "আমার নাম উল্লেখ করা ঠিক হয় নাই"। তাই তো! যারা এই পোস্টটা পড়বেন তাঁরা মাহবুব সুমন নামটা বাদ দিয়ে পড়বেন । হা হা হা।
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Tuesday, September 8, 2009
শুকরিয়া ডট কম
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment