হুমড়ি খেয়ে পড়ে থাকা কারও গায়ে ঢিল ছোঁড়ে কাপুরুষ। আজ কেবল আমাদের ক্রিকেট টিম না, ১৬ কোটি মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে আছে! এই দেশটার উপর দিয়ে কত ঝড়-সিডর বয়ে গেছে। আমাদেরকে শুইয়ে দিয়েছে, ঠিক-ঠিক আবার আমরা উঠে দাঁড়িয়েছি। আবারও আমরা উঠে দাঁড়াব। এটা কেবল অদেখা এক স্বপ্ন না, দাঁড়াবই আমরা।
গত শুক্রবারটা ছিল একটা দুঃস্বপ্ন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে যা হলো- ভাগ্যিস, কেউ এখানে কোন ধরনের নাশকতার গন্ধ পাননি! বা কোন মন্ত্রী ফট করে বলে বসেননি, আমরা বিদ্যুৎ বাঁচাবার জন্য (ফ্লাড লাইট না-জ্বালিয়ে) আগেভাগেই খেলা সমাপ্ত করেছি। আমাদের দেশে 'উপরের নির্দেশ' বলে বারমুদা ট্রাইঙ্গেল টাইপের একটা রহস্য চালু আছে। বিদ্যুৎ বাঁচাবার জন্য উপরের নির্দেশ থাকলে খেলা চালিয়ে যাবে ঘাড়ে মাথা কার কটা!
আমাদের দেশের এক মন্ত্রী বাহাদুর সত্যি সত্যি বলেছিলেন, 'মোবাইল ফোন চার্জ দিয়া সব বিদ্যুৎ শ্যাষ কইরা ফালাইতেছে'।
হালকা চালের কথাবার্তা থাকুক। বলা হয়ে থাকে, ক্রিকেট নাকি অনিশ্চয়তার খেলা কিন্তু আমার বক্তব্য খানিকটা অন্য রকম। ১৬ কোটি মানুষদের পতাকাটা যারা ধরে রেখেছেন তাঁদের বয়স অল্প। আমরা এই অল্প বয়সীদের মাথা কচকচ করে স্রেফ চিবিয়ে খাচ্ছি। আমাদের কাছে এখন এঁরা হচ্ছেন পণ্য, কতভাবে এঁদের বিক্রি করা যায় এই ধান্ধায় আমরা বড়ো ব্যস্ত!
মিডিয়া খেলোয়াড়দের মুখ দিয়ে বলিয়ে নিচ্ছে যা খুশী। যত প্রকারে সম্ভব এরা খেলোয়াড়দের বিভ্রান্ত করছে, মাথা বিগড়ে দিচ্ছে। পত্রিকাওয়ালা খেলোয়াড়দের দিয়ে লেখাচ্ছে কলাম! এটা কি খেলোয়াড়দের কাজ? এটা একটা ব্যাটল ফিল্ড, যেখানে যুদ্ধ চলছে সেখানে এঁরা কী ব্যাট ফেলে কলম তুলে নেবেন? রসিয়ে রসিয়ে পত্রিকাওয়ালাদের ভাষায় কথা বলবেন?
কোন পর্যায়ে এই সব কান্ড হলে একটি জাতীয় দৈনিক এটা লিখে নিজেরাই নিজেদের বিজ্ঞাপন দেয় [১], "আমরাই জিতব, কারণ...অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আমাদের বিশ্বকাপ লেখক টিমে। শুধু প্রথম আলোতেই নিয়মিত লিখছেন বিশ্বের এক নম্বর ওয়ানডে অলরাউন্ডার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান..."।
এই পত্রিকার নিজেদের এই বিজ্ঞাপন পড়ে আমি হাসব না কাঁদব এটা এখনও ঠিক করতে পারিনি! আমরাই জিতব, কারণ...' এই কথাটার মানে কী! সাকিব 'বাল্লেবাজি' বাদ দিয়ে প্রথম আলোতে লিখলেই আমরা খেলায় জিতে যাব?
ভাল কথা, সাকিব প্রথম আলোতে যেসব লেখা লিখে থাকেন তিনি কি ব্যবহার করেন? কলমের তো এখন চল নাই, চালু কীবোর্ডের বদলে কী ক্রিকেট ব্যাট ব্যবহার করেন! আচ্ছা, ব্যাটটা কি ছেঁচে আগের আমলের খগের কলমের মত বানিয়ে ফেলা হয়, নাকি?
আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে খেলায় কী এরই প্রতিফলন দেখলাম?
মিডিয়ার ফাজলামী সীমা ছাড়িয়ে যায়। বিটিভিতে দেখছিলাম, সাবেক অধিনায়ক আকরাম এবং আরেকজন ক্রিকেটার ছিলেন (নামটা এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না বলে ক্ষমা প্রার্থনা করি) এদের সঙ্গে ছিলেন মুনমুন নামের একজন উপস্থাপিকা। খানিকটা রূক্ষ, কাঠখোট্টা টাইপের, কাঠ-কাঠ গলার এই ভদ্রমহিলাকে দেখেছি লাক্স-ফাক্স টাইপের অনুষ্ঠান করতে। ইনি যে এতো বড়ো ক্রিকেটবোদ্ধা এটা আগে জানতুম না। আমাদের দেশের মন্ত্রী এবং মিডিয়ার লোকজনরা সব জানেন। এই সবজান্তা মহিলাকে দেখলাম, অর্ডার-অর্ডার, মিডল অর্ডার বলে লম্বা লম্বা বুলি কপচাচ্ছেন।
আর এই ক্রিকেটাররা কি মনে করে লাক্স সাবানের ফেনার সঙ্গে বাতচিত চালিয়ে গেলেন? মিডিয়ার বড়ো শক্তি! আমাদের দেশের তাবড় তাবড় মানুষদের শিরদাঁড়া হয়ে যায় কেচোর মত। কেবল ডাকলেই হয়, মানুষটা থাকেন ক্যামেরার সামনে, মগজ থাকে ক্যামেরার পেছনে।
হায় ক্যামেরা! আমার দেখা এই গ্রহের কুৎসিত দৃশ্য, সন্তানহারা মা গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছেন, ক্যামেরা বিভিন্ন এঙ্গেলে এটা ধরে রাখছে। যখন এই প্রশ্নটা করে, আপনার এখনকার অনুভূতি কি?
মার অনুভূতিটা আমি জানি না। আমার অনুভূতিটা বলি, ওই মানুষটাকে ঠাস করে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলতে হবে, এখন কষ্ট কিছুটা কমেছে।
যাই হোক, ফাজিলরা ফাজলামী করুক। সাধারণ আমার কেবল একটাই কথা, বাংলাদেশ টিম, তারপরও আছি তোমাদের পাশে। কেবল উঠে দাঁড়াও। যে দাঁড়াতে পারে সে দৌড়াতেও পারে...।
সহায়ক সূত্র:
১. আমরাই জিতব, কারণ...: http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=1&date=2011-03-04
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Sunday, March 6, 2011
ক্রিকেট, ব্যবসা, দেশ
বিভাগ
ইচ্ছা
Subscribe to:
Posts (Atom)