Search

Friday, June 11, 2010

আমাদের ফতোয়াবাজ


ফতোয়া নিষিদ্ধ করে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিলেন।

প্রায় ১০ বছর হতে চলল এর সুরাহা এখনও হয়নি! সুপ্রিম কোর্টির আপিল বিভাগে এখনও শুনানির অপেক্ষায় আছে! কবে শুনানি হবে, কবেই বা এর রায় হবে কেউ জানে না!

২০০০ সালে ফতোয়ার বিরুদ্ধে বিচারপতি গোলাম রব্বানী এবং বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার আদালত কেন ফতোয়া প্রদানকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না এই বিষয়ে সুয়োমোটো রুল জারি করেন।

এই প্রেক্ষিতে মুফতি (!) ফজলুল হক আমিনী [১]। ২০০১ সালে বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রব্বানীকে মুরতাদ ঘোষণা দিয়ে মৃত্যুদন্ড দিয়েছিলেন এবং ২০১০ সালেও এসেও এই মৃত্যুদন্ড আমিনী বহাল রেখেছেন। আমিনী বলেন, "রাব্বানী, তোমার বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়েছিলাম, সেটা এখনো বহাল আছে।" (প্রথম আলো ১৬.০৩.১০) 

একটা সভ্য দেশে একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে এমন হুমকি দেয়া যায়, বছরের পর বছর ধরে সেই মৃত্যুদন্ড বহালও রাখা যায় আবার এটা সেই বিচারপতিকে সদম্ভে মনেও করিয়ে দেয়া যায়! সেই দাম্ভিক মানুষটা আবার মুক্ত ঘুরেও বেড়ায়। 
এরপরও যদি বলা হয় সেই দেশে আইনের শাসন বহাল আছে, এটা বড়ো হাস্যকর শোনায়!

অন্য দেশের দেখাদেখি [২] এই দেশেও ফতোয়ার নামে বিভিন্ন সময়ে নারকীয় ঘটনা ঘটেছে; নারীদের দোররা মারা হয়েছে, জোর করে হিল্লা বিয়ে দেয়া হয়েছে। অসংখ্য উদাহরণ থেকে একটাই উল্লেখ করি, দাউদকান্দিতে এক মেয়েকে দোররা মারা হয়েছিল। 
এখানে আমাদের পুলিশ বাহিনীর মন্তব্যে আমি বড়ো বিচলিত হয়েছিলাম, দাউদকান্দি থানার ওসি সাহেব বলেছিলেন (ইনাদের নাকি এখন প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দেয়া হবে), "বিষয়টি পুলিশের জানা ছিল না। কেউ অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে"। (আব্দুর রহমার ঢালী, প্রথম আলো, ২৪.০৫.০৯) 

এই প্রসঙ্গে আমি লিখেছিলাম, "কেউ অভিযোগ করলে...। আমিও ভাবছি, কোন একটা অস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়ব। যাকে সামনে পাব তাকেই আল্লাহু আকবর। এবং আমি অবশ্য এও লক্ষ রাখব, অভিযোগ করার জন্য যেন সংশ্লিষ্ট কেউ বেঁচে না থাকে।"[৩] 

ধর্ম থাকুক না ধার্মিকদের মাঝে তীব্র শ্রদ্ধা-বিশ্বাস নিয়ে [৪], যার যার প্রভু থাকুন না তার মত করে [৫] মোল্লাদের সমস্যা কোথায়? 
২০০১ সালে ফতোয়ার বিরুদ্ধে রায়ের পরপরই ইসলামী দলগুলো এর বিপক্ষে শক্ত অবস্থান নেয়। যাদের মধ্যে আমিনী এবং জামায়েত অন্যতম।
চুরি-চামারীর বিষয়ে ইসলাম কি বলে এটা জানার খুব ইচ্ছা, আমাদের ধর্মের বাহকগণের কাছে। ৯১ সালে ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রপতি মহা-কবি [৬] এরশাদ সাহেবের বিরুদ্ধে কমিশন মোট ৫৩৪টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ চিহ্নিত করেছিল। প্রতিটি অভিযোগের বিরুদ্ধে আলাদা আলাদা মামলা দায়ের করা সম্ভব বলে অভিমতও প্রকাশ করেছিল। এবং অনেক মামলায় এরশাদ সাহেবের সাজাও হয়েছিল। এটাও আমি জানতে আগ্রহী কোন ধরনের চুরি করলে হাত কেটে ফেলার বিধান আছে।

বিচিত্র এই দেশ, ততোধিক বিচিত্র এই দেশের মানুষ! কত বিচিত্র শাসক [৭] আমাদের দেশ শাসন করে গেছেন! অন্ধকার ফিরে আসে বারবার [৮]

আর এই ছবিটিরই বা ব্যাখ্যা কি? আমাদের ধর্মবাজদের আবার খালেদা জিয়ার প্রতি অনেক অনেকখানি সমীহ আছে, ধর্মবাজরা আবার এও মনে করেন শেখ হাসিনা থাকলে ধর্মের পিলারটা নড়বড়ে হয়ে যাবে।

তো, ইসলাম ধর্মে এমন ছবির ভঙ্গির বিষয়ে কি বক্তব্য? আর যুগের পর যুগ ধরে এঁরা মহিলা শাসন কেবল মেনেই নিচ্ছেন না পুচ্ছও আন্দোলিত করছেন। এখানে ধর্ম রসাতলে যাচ্ছে না, না?

*ছবি সূত্র: প্রথম আলো

সহায়ক লিংক:
১. ফজলুল হক আমিনী: http://www.ali-mahmed.com/2010/03/blog-post_17.html 
২. পরম করুণাময় ভাজা ভাজা হন...: http://www.ali-mahmed.com/2009/04/blog-post_04.html 
৩. দোররা: http://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_24.html 
৪. ধর্মনিরেপেক্ষতা: http://www.ali-mahmed.com/2007/06/blog-post_6312.html 
৫. সন্তানরা যেন থাকে দুধে-ভাতে: http://www.ali-mahmed.com/2009/04/blog-post_06.html 
৬. মহা কবি: http://www.ali-mahmed.com/2009/03/blog-post_09.html 
৭. শাসক: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_3701.html 
৮. অন্ধকার ফিরে আসে বারবার: http://www.ali-mahmed.com/2009/07/blog-post_20.html

4 comments:

Taher said...

Tor moron ghonai se.

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

তাই নাকি!
আচ্ছা, পত্রিকায় যে একবার এসেছিল, একজন দাবী করেছিলেন, 'আল্লাহর ফোন নাম্বার তার কাছে আছে' আপনিই কি সেই ব্যক্তি?
আমার মৃত্যু ঘনিয়ে এসেছে এটা ফোন করে জেনে গেছেন বুঝি! বেশ-বেশ, আগাম জেনে ভাল লাগছে!

আপনার নাম তাহলে তাহের? অবশ্য নামে কী আসে যায়, বলুন? তাহের, টিটু, টাইটানিক- আমার কাছে আলাদা গুরুত্ব বহন করে না।
কে কয়টা নামের আকিকা দেবে এটা তার সমস্যা। আকিকার জন্য ছাগল কেনার টাকা যাবে তার পকেট থেকে। এমনিতে ছাগলও সহজলভ্য, দেশ-বিদেশে ছাগলের অভাব কী!

বাই দ্য ওয়ে, জামার্নীর আবহাওয়া এখন কেমন?

Unknown said...

ফজলুল হক আমিনি নামের এই ভাঁড়কে "মুফতি" বিশেষণ কে দিয়েছে? আমাদের অজ্ঞান পত্রিকাগুলোর মতো ব্লগারশ্রেষ্ঠ আলী মাহমেদও কেন তাকে "মুফতি" সম্বোধন করবেন?

আমিনির মতো নিজে নিজে মুফতি সাজা ফতোয়াবাজের সংখ্যা অনেক। আমরা যদি তাদের مفتي (মুফতি) হিসেবে মেনে নেই ,সম্বোধন করি, তাহলে তাদের ফতোয়া মেনে নিতে অসুবিধে কোথায়?

@তাহের ভাইজান, কথা শুনেই বোঝা যাচ্ছে আপনি কামেল মানু! দয়া করে আপনার ঠিকানাটা কি একটু জানাবেন? দেখা করে আমার নিজের তারিখটাও একটু জেনে নিতাম। আগেভাগে একটু প্রস্তুত হয়ে থাকা আর কি...

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

"...আলী মাহমেদও কেন তাকে "মুফতি" সম্বোধন করবেন?"
আপনার বকা হজম করলাম। ১ নাম্বার লিংকটা দেখবেন, ওখানে কেবল আমিনী বলা হয়েছে, 'সেকালের জিউস এবং একালের আমিনী'!
http://www.ali-mahmed.com/2010/03/blog-post_17.html

বিচিত্র এই দেশ! এখানে কার্টুন আঁকার জন্য একজনকে ধরে নিয়ে যায়, ফেসবুক বন্ধ করে দেয় অথচ একজন আমিনী বছরের পর বছর ধরে একজন জাজকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে সদর্পে ঘুড়ে বেড়ায়; কেউ তার কেশও স্পর্শ করতে পারে না!

আর পত্রিকাগুলো অজ্ঞান বলছেন? বলেন কী! এরাই তো আমাদেরকে সব কিছু শেখায়! কে লেখক, কে লেখক না এই সার্টিফিকেট থেকে শুরু করে, কাকে তালগাছে উঠাতে হবে আর কাকে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে সবই তো এরাই শেখায়।
আমরা ভাল হয়ে চলব এই শপথ থেকে শুরু করে একজন তার পছন্দের মানুষের সঙ্গে কেমন করে অন্তরঙ্গ সময় কাটাবে, কোনটা শেখাতে বাদ রাখে, বলেন?

এদের সম্বন্ধে আপনি এমন নীচু ধারণা পোষণ করলে জীবনেও বড়ো মাপের মানুষ দূরের কথা, মানুষই হতে পারবেন না। :) @মোসতাকিম রাহী