নাম পাল্টালে কী আসে যায়? রাজা মিয়া নামের মানুষকে দেখেছি ডাকপিয়নের কাজ করতে, ফকির চাঁদ নামের মানুষটা টাকার বস্তায় গড়াগড়ি খান। ধুতুরার নাম পাল্টালে কী গোলাপ হয়, হয় না? নিয়ম নাই!
মৃত্যুকে যে নামেই ডাকা হোক তা মৃত্যুই থেকে যায়, সে আপনি ক্রসফায়ার বলুন বা আত্মহত্যা কিংবা ফাঁসি (এরশাদ সাহেবের আমলে মিরপুরের ১২ বছরের বালককে ফাঁসির নামে খুন করা হয়েছিল, কর্নেল তাহেরকেও)। এই যে দেশে লাগাতার ক্রসফায়ার হচ্ছে কাহিনী কিন্তু একই, বুলেট পরস্পরকে ক্রস করার সময় বুক চিতিয়ে দেয়া মানুষটার না-মরে উপায় থাকছে না! বিডিআরদেরও দেখছি একই কাহিনী, ফট করে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বা দুম করে এরা আত্মহত্যা করে বসছেন। নিজেকে নিজেই মেরে ফেললে-আত্মহত্যা করলে কার কী বলার আছে? একটা কিন্তু থেকেই যায়।
বিডিআর সদস্যরা আদালতকে জানিয়েছেন, 'পিলখানার ভেতরে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাদের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। অনেকে মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন'।
গোল্ডা মায়ারের সেই বিখ্যাত উক্তিটা আবারও শেয়ার করি, 'নিজের হাতে হত্যা করা এবং হত্যার সিদ্ধান্ত দেয়ার মধ্যে কোন ফারাক নাই'। তেমনি কাউকে আত্মহত্যা করার জন্য প্ররোচিত করা, ঠেলে দেয়া আর খুন করার মধ্যে খুব একটা ফারাক আছে কী?
বিডিআর বিদ্রোহের পর এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে যাদের সম্বন্ধে বলা হচ্ছে হৃদরোগ, আত্মহত্যা ও নানা অসুস্থতাজনিত রোগ। কেবলমাত্র ২ বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হচ্ছে। ফরেনসিক রিপোর্টে এদের নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
আমরা এখনও সবটুকু জানি না হয়তো কখনও জানা হবে না, এই নারকীয় তান্ডব, ভয়াবহ-নৃশংস কান্ডটা কেন ঘটেছিল। এর পেছনে চেনা-অচেনা, কোন আকৃতির দানব, কেমন প্ররোচনা, কবেকার ক্ষোভ কাজ করেছে! বিডিআরের পোশাক পরা একজন মানুষ কেন দানবের ভূমিকায় অভিনয় করল?
আমি জানি না, এদেশের কোন মনোবিদ এদের মস্তিষ্কে উঁকি মেরে দেখেছেন কিনা- কোন নিতল থেকে এমন নৃশংসতা উঠে এলো, কেন এলো? অভাগা দেশ- আমাদের এতো সময় কোথায়! আমরা কখনও বিষবৃক্ষটার খোঁজ করি না, কয়টা ফল ধরল এই নিয়ে হইচই করে বিচি মাথায় তুলি।
সামান্য একটা ছবি কী নারকীয় তান্ডব ঘটাতে পারে এর খোঁজ রাখার সময় কোথায় আমাদের। ক-দিন পূর্বে জুইশ ওরফে ইসরাইল কর্তৃক যে শোডাউন করা হয়েছে এর যেসব ছবি আমরা দেখেছি আধুনিক মিডিয়ার কল্যাণে- এদের ধারণা মুসলমান মানেই টেররিস্ট! আমি নিশ্চিত পুতুপুতু টাইপের একটা বালকের হাতেও যদি ক্ষমতাটা দেয়া হয় সে কালবিলম্ব না-করে ইসরাইল নামের দেশটি পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে ফেলবে।
অথচ ১৯৯৪ সালে মাত্র কয়েক মাসে রোয়ান্ডায় ১০ লাখ মানুষকে অতি নৃশংসতায় হত্যা করা হয়েছে কিন্তু এ নিয়ে আমরা খুব একটা আবেড়তাড়িত হইনা কারণ বিভিন্ন কারণে ভয়াবহতার আঁচ আমাদের গায়ে লাগেনি।
*এই লিংকটা কেন দিলাম এটা আমি নিজেও জানি না। সম্ভবত মনের ভুলে...।
এরশাদ-খালেদা জিয়ার সময় যেভাবে লেখা গেছে, ক্যারিকেচার, কার্টুন আঁকা গেছে আওয়ামী শাসনামলে সেটা ছিল স্রেফ একটা স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন! একদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (!) শহিদুল আলমকে নগ্ন পায়ে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে গেল। কোথায় নিয়ে গেল সেটা আবার অনেক পরে জানা গেল। কোর্টে আবার 'মাই লর্ড' বিচারক পুলিশকে জিজ্ঞেস করছেন, পুলিশ আসামীর (শহিদুল আলমের) ফোনের পাসওয়ার্ড নিয়েছে কিনা, সেদিনই লেখালেখির কফিনে পেরেক ঠোকা হয়ে গেল...!
Tuesday, September 29, 2009
ধুতুরাকে যে নামেই ডাকা হোক...
বিভাগ
দু:স্বপ্নের ফেরিওয়ালা
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment