মার্কিন ৭ম নৌ বহরের টাস্ক ফোর্স ইতিমধ্যে মালাক্কা প্রণালী অতিক্রম করে দ্রুত বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলো। মার্কিন এই বহরে ছিল পারমানবিক শক্তি চালিত বিশাল বিমান জাহাজ এন্টারপ্রাইজ এবং আরও ৬টি যুদ্ধজাহাজ! এ ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অজুহাত ছিলো: বাংলাদেশে মার্কিন নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার জন্যই ৭ম নৌ বহরকে এই এলাকায় (চট্টগ্রামে) আনা হচ্ছে। এই যুক্তি মার্কিন জনসাধারণের কাছেও গ্রহনযোগ্য ছিল না। কারণ আমাদের যৌথ কমান্ড ১১ ডিসেম্বর থেকে বিমান হামলা সাময়িকভাবে স্থগিত রেখে ঢাকা বিমানবন্দর মেরামত করার সুযোগ করে দেয়। কিন্তু মার্কিন নাগরিকদের এই সময় ঢাকা ত্যাগ করার কোন লণ দেখা যায়নি!
…নিয়াজী অবশ্য তখনো নিরাপদে ঢাকায় বসে হুংকার দিচ্ছিল: প্রতি ইঞ্চি জায়গার জন্য একটি প্রাণ বেঁচে থাকা পর্যন্ত আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবো।
…রাও ফরমান আলী কিন্তু ঠিকই বুঝেছিল, খেলা শেষ! অপারেশন জেনোসাইড এর অন্যতম কারিগর ঠিকই বুঝতে পেরেছিল, পরাজয় অবশ্যম্ভাবী! মুক্তিবাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাবার উদ্দেশ্যে ১১ ডিসেম্বর তিনি যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘ সদর দফতরে এক আবেদন জানান। ফরমান আলী এখানকার সকল পাকিস্তানীকে অপসারণের ব্যবস্তা করার অনুরোধও করেন।
…ইয়াহিয়ার তখনো আশা, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন তাঁকে উদ্ধার করতে নিশ্চয়ই এগিয়ে আসবে। নিয়াজীকে তিনি আরেকটু অপেক্ষা করার জন্য নির্দেশ দেন।
…চট্টগ্রাম সেক্টরে আমাদের (রফিক-উল-ইসলাম বীর উত্তম) সকল সৈন্য ৯ই ডিসেম্বর বিকেলের মধ্যে শুভপুর সেতু বরাবর ফেনী নদী পার হয়ে যায়। সামনে শত্রুরা কোথায় কি অবস্তায় আছে পর্যবেণের জন্য আমরা যথারীতি টহল দল আগেই পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। পাকিস্তানীরা মিরেশ্বরাই ছেড়ে যাচ্ছে বলে ১০ই ডিসেম্বর একজন গেরিলা বেস কমান্ডার আমাকে খবর দেন।
…আমি সাথে সাথেই মিরেশ্বরাই দখল করার জন্য একটি ব্যাটেলিয়ান পাঠিয়ে দেই।
…আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
…পথে এক বৃদ্ধা কাঁদতে কাঁদতে বললেন, তোমরা জানো না, কিছুদিন আগে ঈদের সময় চাঁটগায়ে একটা লোকাল ট্রেন থামিয়ে ওরা সকল বাঙ্গালী যাত্রীকে খুন করেছে। প্রায় এক হাজার হবে। আমার মেয়ে, নাতী, নাতনী ওরাও ছিল- আর বলতে পারবো না
…তোমরা এগিয়ে যাও, তাড়াতাড়ি এগিয়ে যাও।
…বঙ্গোপসাগরে ৭ম নৌবহরের অনুপ্রবেশে পরিস্তিতি বেশ জটিল হয়ে উঠেছে।
…তাই যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা চট্টগ্রাম মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেই। সেই উদ্দেশ্যে ভারতের ২৩ ডিভিশনের ৮৩ ব্রিগেড লাকসাম থেকে দ্রুত যাত্রা শুরু করে এবং কুমিরার কাছে আমাদের সাথে যোগ দেয়। অন্যদিকে ভারতের বিমান বাহিনী ও ইস্টার্ন ফিট পাকিস্তানি অবস্তানগুলোর উপর অবিরাম বোমা বর্ষন করে চলছিলো।
…পোর্ট অচল করে দেয়ার জন্যই এই আক্রমণ চলছিল। পোর্টের চ্যানের প্রায় পুরোপুরি বন্ধ!
…মুক্তিযোদ্ধারা খবর নিয়ে এলো যে প্রচুর পাকিস্তানী অফিসার ও সৈন্য কক্সবাজার হয়ে স্থলপথে বার্মায় পালাবার চেষ্টা করছে। কেউ কেউ আবার জাহাজে করে কেটে পড়বার চেষ্টা করছে। কয়েকটি পাকিস্তানী জাহাজেকে বিদেশী জাহাজের মতো রং লাগিয়ে এবং বিদেশী পতাকা উড়িয়ে ছদ্মবেশে পালাবার জন্য প্রস্তত রাখা হয়েছে।
…এই খবর মুক্তিযোদ্ধারা ভারতের ইস্টার্ন ফিটকে পাঠালে ইস্টার্ন ফিট সতর্ক হয়ে যায়। ছদ্মবেশে পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি পাকিস্তানী জাহাজ ভীক্রান্ত এর গোলায় তিগ্রস্ত হয়। পাকিস্তানীদের তখন মনে হচ্ছিল পালিয়ে যায়া ইদুরের মতো!
(সূত্র: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ/ দলিলপত্র: দশম খন্ড/ সশস্ত্র সংগ্রাম/ পৃষ্ঠা নং: ৪৮-৫১)
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Friday, June 29, 2007
আমাদের স্ক্রিপ্টের বড্ড অভাব
বিভাগ
১৯৭১: প্রসব বেদনা
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment