Search

Friday, October 30, 2009

হনুমানজীকে খুঁজছি হন্যে হয়ে

হোজ্জা সাহেবকে আমি বড় ইজ্জত দেই। মানুষটা প্রচলিত স্রোতে গা ভাসিয়ে দিতেন না। ' জারা হাটকে '- একটু অন্য রকম! গাধার পিঠে নাকি উল্টো করে বসতেন। 
এটা শুনেছি, হোজ্জা সাহেবের  সঙ্গে দেখা হয়নি বিধায় পুরোপুরি নিশ্চিত না। এও শুনেছি, গাধা এবং হোজ্জা সাহেবের গতি নিয়ে প্রায়শ ঝামেলা হতো। গাধা উইথ হোজ্জা সাহেব রওয়ানা দিলেন মরমর কোন রোগি দেখতে। হোজ্জা সাহেব এই রোগির চল্লিশায় গিয়ে পৌঁছে শোনেন, গাধা নাকি এখানে ৪০ দিন ধরে দিব্যি লেজ নাড়াচ্ছিল! দেখো দিকি কান্ড!
 

হোজ্জার মত ডন কুইক্সোট মানুষটাকেও আমি ভাল পাই। ইনিও নাকি তার ঘোড়া রোজিন্যান্টকে নিয়ে দাবড়ে বেড়াতেন- ফুল স্পিড আ্যাহেড, কিন্তু গতি নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাতেন না।

ভূতের নাকি পা উল্টা থাকে, ডাঁহা মিথ্যা কথা; ভূত-সমাজ এটা স্বীকার যায় না। এমনিতে আমাদের পা উল্টা থাকে না কিন্তু হোজ্জার উল্টা বসা দেখে-দেখে আমরাও উল্টা হাঁটা রপ্ত করেছি। হোজ্জা-ডন কুইক্সোটদের দেখাদেখি আমরাও গতি নিয়ে মাথা ঘামানো বাদ দিয়েছি।

বিদ্যুৎ এবং জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, "শীতকালে ঘড়ির কাঁটা পেছানো হবে না। ...আমাদের দেশে শীত ও গ্রীষ্মে সময়ের খুব একটা তারতম্য হয় না। ...গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ কতটা সাশ্রয় হয়েছে তা অনেকটা তুলনামূলক।"
"গ্রীষ্মে বিদ্যু কতটা সাশ্রয় হয়েছে তা অনেকটা তুলনামূলক।" তাঁর কথা সবই বুঝলাম কিন্তু এটা মাথার উপর দিয়ে গেল, কার গায়ে লাগল তাতে আমার কী!

শীতে আমাদের এখানে সূর্য-বাবাজী সকাল ৭ ঘটিকায়ও তশরিফ আনেন বলে তো আমার মনে হয় না। এতেই নাকি সূর্য-বাবাজীর বড়ো তকলীফ হয়! এখন একই সময়ে ভোর ৬ ঘটিকায় সূর্য-বাবাজীকে 'হুকুম তামিল কিয়া যায়ে'- তশরিফ আনতে বলায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেছেন, হুশ-হুশ, ডিজিটাল ঘড়ি দূরের কথা আমি কোন ঘড়িই হাতে দেই না।

সামনাসামনি কথা বললে হয়তো রাজি করানোর একটা চেষ্টা করা যেত। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে সূর্য-বাবাজীর কাছে কেউ যেতে চাচ্ছে না।

আমি হন্যে হয়ে হনুমানজীকে খুঁজছি। দেখি তাঁকে বলে-কয়ে বাগে আনা যায় কিনা।
শীতে হনুমানজী ১ ঘন্টা ধরে বগলে সূর্য চেপে বসে পা নাচালেন, আমরা না-হয় তাঁর পা চেপে ধরে বসেই রইলুম। 
কী আর করা, সবই তাঁদের ইচ্ছা, এই-ই আমাদের কর্মফল! ভলতেয়ারের সেই কথাটাই আউড়াতে হয়, 'কোন দেশের নিয়তি নির্ভর করে সেই দেশের চালক কতটুকু পেটের পীড়াগ্রস্থ তার উপর'।
ভলতেয়ার সার সমস্যা তুলে ধরেছেন কিন্তু সমাধান বাতলে না-দিয়ে সটকে পড়েছেন। সার এসে পড়ার পূর্বেই দেশচালকদের জন্য বেলের শরবত... 'পেশ কিয়া যায়ে' বলে আমিও 'বাল্লে-বাল্লে' পগার পার হই।

No comments: