লেখক: Raju Norul (https://www.facebook.com/share/1GZkkQ93GD/ )
বিবিসির এক রিপোর্ট বলছে, আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লেখা প্রায় ১৪০টা বইয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও, আরও ৬৮০টা বইকে 'সমস্যাজনক' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলো 'শরিয়া নীতি বা তালিবান নীতি'-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে করা হয়েছে।
তালিবান ক্ষমতায় আসার পর, ষষ্ঠ শ্রেণীর পর মেয়েদের পড়ালেখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে মাত্র চার দশক আগেও যে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশা ছিল, একই ক্লাসে বসে পড়ালেখার সুযোগ ছিল, সেটা এখন কল্পনাতীত!
কয়েক দিন আগে আফগানিস্তানে ভূমিকম্প হল। উদ্ধার অভিযান চলার সময় নারী ও কিশোরীদেরকে উদ্ধার না করে ধ্বংস্তুপে ফেলে রাখা হয়। তাদের অপরাধ ছিল, তাদের সাথে কোনো মাহরাম ছিল না। অর্থাৎ পুরুষ উদ্ধারকারীরা দুর্যোগের সময়ও নারীদেরকে উদ্ধার করতে পারবেন না, যদি-না সেই নারীর সাথে তার নিকটাত্মীয় না থাকে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস এই খবরটা প্রচার করার পর সেটা নিয়ে আমি ছোট করে অন্য-একটা লেখা লিখে ছিলাম। সেই লেখায় আমার ব্যক্তিগত মতামতও ছিল না। কিন্তু আমি যে পরিমাণে বুলিংয়ের শিকার হয়েছিলাম, যত মানুষ আমাকে আক্রমণ করে ম্যাসেজ করেছে, সেটা অবিশ্বাস্য!
আজকের খবরটাই দেখুন না। কিছু-কিছু বাংলাদেশী মিডিয়া আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লেখা বই নিষিদ্ধ করার খবর ছাপিয়েছে। সেসব খবরের নিচে কমেন্ট পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন, ভেতরে-ভেতরে বাংলাদেশ কতখানি পাল্টে গেছে। অধিকাংশক্ষেত্রে, অন্তত এক-তৃতীয়াংশ মানুষ লাভ অথবা কেয়ার রিয়েক্ট দিয়েছে!
আগে ভাবতাম, এটা বুঝি পুরুষশাসিত সমাজে পরুষতান্ত্রিক মনস্তত্ত্ব, যেখানে পুরুষ স্বভাবতই নারীকে অধস্তন দেখতে পছন্দ করে, ঘরে আটকে রাখতে চায় কিংবা পোশাকে মুড়ে রাখতে চায়।
কিন্ত গোটা বিষয়টাকে এখন আর এরকম সরলীকরণ করা যাচ্ছে না। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগরের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন এমন একটা দলের প্রতিনিধিদেরকে দলে-দলে ভোট দিচ্ছে, যাদের উদ্দেশ্য হলো, আফগানিস্তানের আদলে একটা তালেবান দেশ তৈরি করা! এটা এখন আর মোটেও কোনো গোপন উদ্দেশ্য না; বরং তারা প্রকাশ্যেই সেটা বলছে! সেটা জানার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া মেয়েরা একচেটিয়া ভোট দিচ্ছে।
তাই এই মুহুর্তে মামুনুল হকসহ আরও সাত ইসলামিক নেতা যে আফগানিস্তান সফর করছেন, সেটা তো ঠিকই আছে! প্রস্তুতি পূর্ব থেকে নেয়াই ভাল! তাহলে কাজ খানিকটা এগিয়ে রাখা গেল! ভাল প্রস্তুতি কাজ অর্ধেক এগিয়ে নেওয়ার সামিল!
আফগানিস্তানের প্রভাবশালী দল হাক্কানি নেটওয়ার্কের সাবেক নেতা জালালুদ্দিন হাক্কানি। ওনার ছেলে সিরাজুদ্দিন হাক্কানি এখন তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জালালুদ্দিন হাক্কানি আন্তর্জাতিক মিডিয়াকে বলেছেন,
'তালেবান কিভাবে নারী অধিকার নিশ্চিত করছে, সেটা বোঝার জন্যই মামুনুল হকদের এই সফর'।
তাই শিবিরের মির্জা গালিবদের 'আফগানিস্তান স্টাইলে শরীয়াহভিত্তিক বাংলাদেশ গঠন', এই খবরের নিচে যে লাখ-লাখ লাইক পড়ে, সেটাকে আর বট ভেবে উপহাস করার সুযোগ নেই। আমার ধারণা বাংলাদেশ পাল্টে গেছে...।
এবং বাংলাদেশের সর্বনাশ হয়ে গেছে…!"
-লেখক: Raju Norul (https://www.facebook.com/share/1GZkkQ93GD/ )
* 'আইয়ামে জাহেলিয়া'-এর যুগে নবীর স্ত্রী প্রথম শ্রেণীর ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর ব্যবসার ক্ষেত্র মক্কা-মদিনা ছাড়িয়ে গিয়েছিল! আরেক স্ত্রী উটে চড়ে যুদ্ধ করেছেন।
আর এখন আমাদের দেশের মোল্লা সাহেবরা নারীদের কী পরিমাণ সম্মান দেন তা ওয়াজের এই ছোট্ট ক্লিপে বোঝা যাবে। স্ত্রীদের নাকি কিনে ফেলা হয়...
No comments:
Post a Comment