এই খবরটা আপাতত দৃষ্টিতে খুবই সাধারণ মনে হবে। কারণ এটা তো এখন হরহামেশা হচ্ছে। আওয়ামীলীগের লোকজনকে বিভিন্ন মামলা দেওয়া হচ্ছে। এমনিতে অনেক মামলা বা মামলার মেরিট নিয়ে আমরা বিরক্ত [১]!
কিন্তু, এই যে ডা. আবু সাইদকে আজ আমরা এই অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি অনেকে বলেন আন্দোলনের সময় ডা. সাঈদ আহতদের চিকিৎসা দেননি! কেবল এমন না, তিনি আপ্রাণ চেষ্টাও করেছেন আহতরা যেন অন্যত্রও চিকিৎসা নিতে না-পারে। এ সত্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডা. সাঈদের নিজের মেডিকেল কলেজ আছে বিধায় তিনি এখানকার মেডিকেল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে কঠিন ভাষায় নিবৃতও করেছেন যে ছাত্র-জনতা আন্দোলনে কেউ কোন প্রকার সম্পৃক্ত হলে তাকে এই মেডিকেল কলেজে পড়তে দেওয়া হবে না।
যাই হোক, এটা হালের কথা। এই সবই ডা. সাঈদের বর্তমান কর্মকান্ড। কালে-কালে তিনি মহিরুহ হয়ে উঠেছেন। একজন আবাসিক চিকিৎসক থেকে হয়েছিলেন সিভিল সার্জন। এরপর একটা মেডিকেল কলেজে গড়ে তুলেছেন। হাজার-হাজার ভাবী চিকিৎসকের মা-বাপ। চিকিৎসক সমিতির নেতা, ভূতপূর্ব রাজনৈতিক দলের পান্ডা। কিন্তু আমি ২০২৪ সালের কথা বলছি না, বলছি ২০০৪ সালের কথা। তখন ডা. সাঈদ এই ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেই একজন চিকিৎসক ছিলেন, আরএমও বা আবাসিক চিকিৎসক।
বাচ্চাটার নাম হাইড করে দেওয়া হলো। |
ওই ছোট্ট বাচ্চাটার বাবার চোখের জল মিশে গেল নর্দমায়-তিতাস নদীতে। এই কান্না চোখে দেখা যায় না, অসহ্য একটা দৃশ্য ছিল [২]। কিন্তু অক্ষমতা ব্যতীত তখন করার কিছুই ছিল না। আদালত কাগজ -ডকুমেন্ট খোঁজে। সেই কাগজই হয়ে গিয়েছিল কলাপাতা- আদালতে মামলা খারিজ!
ওই বাবাটা একটা বাচ্চার মত কাঁদতে-কাঁদতে বলছিলেন, 'আমি আল্লার কাছে বিচার দিলাম-আমি আল্লার কাছে বিচার দিলাম'। তখন যে কী অসহায়ই না লাগছিল। আমি যেন এক নগ্ন মানুষ! ২০ বছর পূর্বে এখনকার মত এতটা পচে যাইনি বলেই হয়তো তখন আমার মরে যেতে ইচ্ছা করছিল!
এই ডা. সাইদদের মত কিছু পশুর কারণে আইন চলে এঁকেবেঁকে। তো, এই করে করে ডা. সাঈদ তার সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। কী ক্ষমতার দবদবা! কিন্তু একটু চোখ বন্ধ করলে আমার কেবল মনে হতো যেন একটা বাচ্চার সতীত্বের উপর দাঁড়িয়ে আছে গোটা মেডিকেল কলেজটা!
অনেকে বলবেন আজ এটা লেখার কী মানে? আহা, প্রকৃতির শোধ বলে কথা, ফিরে আসে বারবার। চোখ ভরে দেখি কেবল! প্রকৃতি, সে তো আর আমাদের মত অধৈর্য না! এরিমধ্যে চলে গেছে ২০ বছর কিন্তু তাতে তার কী আসে যায়। তার অপেক্ষা করতে কোন ক্লান্তি নেই। ডা. সাঈদ নামের মানুষ-গাছটাকে বড় হয়ে একটা মহিরুহ হতে দিয়েছে, তারপর ...।
সহায়ক সূত্র:
No comments:
Post a Comment