Search

Friday, April 29, 2011

লেজার গান হাতে দুর্বল একজন মানুষ

­প্রফেসর ইউনূসকে নিয়ে এখন যা হচ্ছে তা স্রেফ ছোটলোকগিরি! এখানে যুক্তির ধার কেউ ধারছেন না। কিছু পত্রিকার নমুনা দেখে মনে হচ্ছে এরা এখনই আবিষ্কার করলেন ইউনূস একজন বিরাট চোর। অথচ নিজেদের মালিক যে দস্যু, খুনি এর খবর রাখার সময় কোথায় তাদের। আহা, মাস শেষে যে একগাদা কড়কড়ে নোট পাওয়া যাচ্ছে- এই দেশে ভাল টাকা পেলে আমরা করতে পারি না এহেন কোন কাজ নেই। পারলে মার কিডনি-লিভার-ফুসফুসও বিক্রি করে ফেলি।

ইউনূস সাহেব ধোয়া তুলসি পাতা এটা এই লেখার মূল সুর না। তাঁর ভুল থাকলে ভুল নিয়ে আলোচনা হবে, শাস্তি হবে সমস্যার তো কিছু নাই। যেমন আমার স্পষ্ট বক্তব্য, "...দারিদ্রবিমোচনের কথা বললে দরিদ্রকে ঋণ দিতে হবে সুদবিহীন..." । অবশ্য তারা ব্যবসার কথা বললে আমার কোন বক্তব্য নেই।
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের মানুষ এখন বাংলাদেশকে চেনে ইউনূসের সাহেবের কল্যাণে। ইউনূস সাহেব যে অভাবনীয় কান্ডটা করে ফেলেছেন সেটা আমরা সবাই জানি। তাঁর আইডিয়া এবং নোবেল প্রাপ্তি। তাঁর নোবেল প্রাপ্তি নিয়ে আলোচেনা-সমালোচনা সে অন্য বিষয়। বিতর্কিত গোল নিয়ে মারাদোনাকে নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে কিন্তু আর্জেন্টিনার বিজয় আটকানো যায়নি। সবাই উদিয়মান সূর্যকে নমস্কার করে, অস্তমান সূর্যকে না।

এখন যেটা করা হচ্ছে ইউনূস সাহেবকে অপদস্ত করতে গিয়ে তাঁর পরিবারের লোকজনকেও নগ্ন করা হচ্ছে। বাংলা ব্লগের পাইওনিয়ার, রাত খানিকটা গভীর হলেই একটা নামকরা কম্যুনিটি ব্লগে তাঁর মেয়ের আপত্তিকর ছবি ঘন্টার-পর-ঘন্টা ঝুলে থাকে। কেন, ওই ব্লগসাইটের চুতিয়া মডারেটররা তখন কি করে? গাঁজার কলকি ফাটায়! কেন এমনটা আমরা করছি? ইউনূস সাহেব অপরাধ করে থাকলে এই দেশের প্রচলতি আইনে এর বিচার হবে কিন্তু তাঁর পরিবারের লোকজনরা কী দোষ করেছেন!
একজন পাঠক আমার কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন, শেয়ার ব্যবসার ধসের সঙ্গে যারা জড়িত তারা কি ইউনূস সাহেবের চেয়ে বড়ো চোর? তাঁর এই প্রশ্নের উত্তর দেয়াটা আমার জন্য সহজ ছিল না।
গ্রামীন ব্যাংক ওরফে ইউনূস সাহেবকে সরকার প্রতিপক্ষ করে [১] এটা শুনে হাসব না কাঁদব এটা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি। কোন সরকার? প্রবাসী একজন পাঠক ক্ষোভে জানতে চেয়েছেন, যে সরকারের প্রেসিডেন্ট ৮২ বছরের, অর্থমন্ত্রীর বয়স ৭৭; সে সরকার হইচই করছে ইউনূস সাহেবের বয়স নিয়ে!

আমি গভীর বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করছিলাম, সরকারের গ্রামীন ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাবার সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে যেমন তোলপাড় হওয়ার কথা ছিল তেমনটি দেখা যায়নি। না-হলে কী আর করা! এই সব ক্ষেত্রে আমি মার্টিন সাহেবের কথা বিড়বিড় করি:
"...First they came for the jews. I was silent. I was not a jew. Then they came for the communists. I was silent. I was not a communist. Then they came for the trade unionists. I was silent. I was not a trade unionist. then they came for me. There was no one left to speak for me". (Martin Niemoller)
আমিও সবার মতই এটা ভেবে আরাম বোধ করব, যাক, ইউনূস সাহেব তো আমার কেউ না এবং তিনি ব্লগিও করেন না। আমার সমস্যা কোথায়!

হুমায়ূন আহমেদ গতকালের প্রথম আলোয় ইউনূস সাহেবকে নিয়ে লিখেছেন। সত্যি বলতে কি আমি অপেক্ষায় ছিলাম। হূমায়ূন আহমেদের লেখালেখির গভীরতা একদল মাপামাপি করতে থাকুক কিন্তু আমার এতে কোন সন্দেহ নাই এই মানুষটার যে কী বিপুল ক্ষমতা। মিডিয়ার ক্ষমতাও এর সঙ্গে যোগ হয়ে অটল এক অস্ত্রে পরিণত হয়।
সম্প্রতি তিনি লেখা শুরু করছেন প্রথম আলোয় 'আমরা কেউ বাসায় নেই' নামে একটি ধারাবাহিক উপন্যাস। আমি নিশ্চিত, তিনি ধারাবাহিক উপন্যাস 'আমরা কেউ বাসায় নেই' না- লিখে "টয়লেটে ফেলে আসা কিছু হলুদ ফুল" নামে ধারাবাহিক উপন্যাস চালু করলেও এই দেশের প্রথম শ্রেণীর দৈনিকগুলো লুফে নেবে। না-না, টয়লেটের হলুদ ফুল নামের জিনিসগুলো না, লেখাটা।
হুমায়ূন আহমেদ নাকি 'না' বলতে পারেন না। কথাটা মিথ্যা না। তবে কিন্তু আছে। ভাল দাম দিতে হয়। টাকা পেলে তিনি যে-কোথাও তার লেখা ঢেলে দিতে পারেন, সেটা পূর্ণিমা নাকি ইনকিলাব এটা তার কাছে বিবেচ্য-আলোচ্য বিষয় না। এখন পত্রিকাওয়ালা যদি তাকে বলেন আমাদেরকে একটা ধারাবাহিক লিখে দেন, "টয়লেটে ফেলে আসা কয়েক খাবলা হলুদ ফুল"। হুমায়ূন আহমেদ সানন্দে রাজি হবেন। আই বেট।

লেখার শক্তি ব্যতীত হুমায়ূন আহমেদ মানুষটা আমার বড়ো অপছন্দের। ভানবাজ এই মানুষটার লাজ-লজ্জা বলতে কিছু নেই- লেখায় হরহামেশা বউ, বাচ্চাকাচ্চার কথা চলে আসে। সাবেক স্ত্রী যখন সাবেক ছিলেন না তখন তাঁকে নিয়ে লিখতেন, আমার বউ পরীর মত সুন্দর- আমার বউ পরীর মত সুন্দর। এখন লেখায় চলে আসে, শাওন আমার সুটকেস গুছিয়ে দেয় তো কখনও শাওনের উপর কোন অশরীরী লোকজন (!) হুমড়ি খেয়ে থাকে ইত্যাদি।
গতকাল 'অধ্যাপক ইউনূস' নামের যে লেখাটা লিখেছেন ওখানেও আছে, ওনার সুপুত্র 'শেষ কাডাইল্যা' নিষাদ সাহেবের কথা। চ্যাংড়া নিষাদ সাহেব সাহসকে বলেন, 'সাগস'।
আমাদের দেশের আইনে এমন কোন কথা বলা নাই যে কোন লেখক তার বউ-বাচ্চার কথা বলে বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলতে পারবেন না। কিন্তু একজন লেখকের ঔচিত্য বোধ, মর্যাদা তখন পশুর কানের মত ঝুলে পড়ে। আমার ভাষায় বলি, 'লেজার গান হাতে দুর্বল একজন মানুষ'। ক্ষমতার অপচয়!

তারপরও হাঁই তুলে হুমায়ূন আহমেদের এই সব 'পাগসগিরি-ছাগসগিরি' বিস্মৃত হওয়ার চেষ্টা করি। ইউনূস সাহেব প্রসঙ্গে এই দেশের অধিকাংশ বুদ্ধির ঢেঁকিরা যখন গোল হয়ে দাঁড়িয়ে হাত গুটিয়ে তামাশা দেখছেন তখন হুমায়ূন আহমেদই সত্যের চোখে চোখ রেখে স্পষ্ট উচ্চারণ করেছেন, রাজা তুই ল্যাংটা...।

সহায়ক সূত্র:
১. গ্রামীন ব্যাংকই কেন...: http://www.ali-mahmed.com/2011/04/blog-post_26.html
২. প্রফেসর ইউনূস, হুমায়ূন আহমেদ: http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=1&date=2011-04-28  

Tuesday, April 26, 2011

গ্রামীন ব্যাংকই কেন, কেন ব্র্যাক-আশা নয়?

­আজকে আমার লেখার বিষয় এটা না, ইউনূস সাহেব ধোয়া তুলসি পাতা নাকি আধোয়া তুলসি পাতা। এখন আমি এই তর্কে যাব না তিনি অপরাধ করেছেন, কি করেননি! প্রমাণ হলে ইউনূস সাহেবের বিচার হোক সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ, বিচার্য বিষয়

"গ্রামীন ব্যাংকের বিরুদ্ধে সরকার প্রচারণার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন..." [১]। বিষয়টা আমার বোধগম্য হয়নি, এখনও। আমার বুদ্ধিসুদ্ধি নিয়ে নিজেরই সন্দেহের শেষ নেই- আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না এটা কেমন করে সম্ভব, এখনও বিষয়টা আমার কাছে পরিষ্কার না- পারলে সরকার কি হাতে হাতে লিফলেট বিলি করবে নাকি হেলিকপ্টার থেকে লিফলেট ছাড়বে! সরকার কেমন করে নিজেই নিজের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়! আমার জানায় ভুল না-থেকে থাকলে গ্রামীন ব্যাংকে সরকারের মালিকানা আছে। তারচেয়ে ভয়াবহ যে বিষয়টা হচ্ছে, গ্রামীন ব্যাংকের হিসাবে ৮৩ লাখ মানুষকে ক্ষুদ্র ঋণ দিয়েছে, এর আওতায় পাঁচ কোটি জনসংখ্যা সুবিধা পাচ্ছে। এই হিসাব অতিরঞ্জিত হতে পারে সে অন্য প্রসঙ্গ কিন্তু না-হয় তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম, এই দেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে এই ব্যাংকের সঙ্গে জড়িত।

জনগণের ইচ্ছায় নির্বাচিত সরকারের কি অধিকার আছে কোটি-কোটি মানুষকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দেয়া। একজন ইউনূসের জন্য কোটি-কোটি মানুষ কেন যন্ত্রণা ভোগ করবেন? জনগণ তাঁর ট্যাক্সের টাকা তো এই কারণে খরচ করছে না যে তাঁকে বিভ্রান্তির বেড়াজালে আটকে ফেলা হোক। এখন পুলিশের কাছে যেরকম ক্ষমতা হস্তান্তর করা হচ্ছে, মনে হচ্ছে অচিরেই চোর-পুলিশ খেলা শুরু হবে।
সরকার-ইউনূসের কি অধিকার আছে কোটি-কোটি মানুষকে নিয়ে অন্য রকম এক খেলা খেলার। আমি দিব্য চোখে দেখতে পাচ্ছি এই প্রতিষ্ঠানটা পলেস্তারা ক্রমশ খুলে পড়ছে। কেন এমনটা হবে? প্রয়োজনে সরকার এই প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহন করুক, খুবলে খুবলে ফেলে দেয়ার মানে কী!

আমার স্বল্প বুদ্ধিতে যেটা বুঝি এটা তো পুলিশের কাজ না। বাংলাদেশ ব্যাংক নামের যে প্রতিষ্ঠানটা আছে এটা কোন দিনের জন্য? কোন ব্যাংক অনিয়ম করে থাকলে সেটা দেখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ তো আছেই। হ্যাঁ, কারও মনে এই সন্দেহের বীজ রোপণ করা থাকলে, এই যেমন এই ব্যাংক পার্বত্য চট্টগ্রামে পপি চাষে অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে বা জঙ্গিদের ভয়ংকরসব অস্ত্র কেনার জন্য টাকা ধার দেয় তাহলে আলোচনার কিছু নাই!

প্রচলিত আইন ভঙ্গের বিষয়টি জনগণের কাছে তুলে ধরার যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এটা তো অন্য ব্যাংকগুলোও করছে। গ্রামীন ব্যাংক এর জায়গায় যদি বলা হত ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে সমস্ত ব্যাংকগুলো কোথায় কোথায় অনাচার করছে তা খতিয়ে দেখার জন্য তাহলে খানিকটা বুঝতে সুবিধে হত- আমরাও হাঁপ ছেড়ে বাঁচতাম।
অন্য ব্যাংকগুলো কী অনাচার করছে এটা কি সরকার অবগত নাই? কেবল ব্র্যাক ব্যাংকের কথাই বলি। এরা এসএমই লোনের কথা বলে ২১ পার্সেন্ট সুদ নিত। এদের অত্যাচারে কতশত মানুষ আত্মহত্যা করেছে সব খবর কী আর আমরা জেনে বসে আছি, পাগল! মিডিয়া পর্যন্ত এদের খবর ছাপে না! আহা, এরা যে লক্ষ-লক্ষ টাকা বিজ্ঞাপন দেন, এদের চটালে চলবে বুঝি!

পুর্বে আমি যে লেখাটা লিখেছিলাম, 'লাশ-পদক-বানিজ্য' [২] ওই লেখায় আমার একটা প্রশ্ন ছিল, "...স্যার ফজলে আবেদ, আপনি কি আমাকে দয়া করে বলবেন, এই দেশে নারী, আর্মস, ড্রাগস ব্যতীত এমন কোন বৈধ ব্যবসা আছে যেটা ২১ (২০.৪) পার্সেন্ট সুদ দিয়ে লাভ করা যায়? প্লিজ স্যার, জানালে আমি ওই ব্যবসাটাই করব..."।
এই প্রশ্নটা আবারও করি। ডিয়ার ফজলে আবেদ, একটা বৈধ ব্যবসার নাম বলেন, প্লিজ

ওখানে স্যারদের জন্য এটাও বলা হয়েছিল, "...আমি আশা করি, আপনারা আমাদের জন্য আরও সম্মান-পদক নিয়ে আসবেন। তার জন্য আরও কটা লাশ পড়ল তাতে কী আসে যায়। গুড লাক, স্যার"!
এই বক্তব্য এখনও আপনাদের জন্য উম্মুক্ত। সরকারকে আমরা বলব পুলিশ-আইনকে ঝিম মেরে বসিয়ে রাখতে, আপনারা আপনাদের কার্যক্রম চালিয়ে যান। এন্তার পদক নিয়ে আসুন। আমরা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখব।

তো, আমাদের সরকার বাহাদুরকে দেখছি ব্র্যাক-আশা এদের নিয়ে কোনও বিকার নেই, উদ্বিগ্ন দেখা যাচ্ছে কেবল গ্রামীন ব্যাংক ওরফে ইউনূসকে নিয়ে। সরকার কারও কথা গা করছেন না। আমেরিকার কথা ফেলে দেয়াটা বড়ো সহজ কিন্তু এর পরিণাম আখেরে ভাল হয় না এটা বোঝার জন্য রকেটবিজ্ঞানী হতে হয় না। কারণ এই ইয়াংকিরা অপমান কখনই ভোলে না। এটা সত্য এরা বাংলাদেশকে গ্রাস করে ফেলবে না কিন্তু এমন কিছু করবে যাতে করে এই দেশের লক্ষ-লক্ষ মানুষ নিরন্তর সমস্যায় পড়বে। এদের হাতে কতো তাস- কত উপায়ই না আছে, শুল্কের নির্দিষ্ট কোটা কমিয়ে প্রয়োজনে বন্ধ করে দেবে। তার দেশে পণ্য ঢোকার সমস্ত রাস্তা একে একে বন্ধ করবে।
কেন আমরা একজন ইউনূস, আমাদের নির্বাচিত সরকারের কারণে রাস্তায় বসব?

অনেকে বলবেন আরেক সুপার পাওয়ার ভারত থাকতে আমাদের চিন্তা কী! আহা, ভারত নামের দাদারা আমাদেরকে কোলে নিয়ে দুধভাত খাওয়াবে! বাংলাদেশে ফেনসিডিলের বন্যা বইয়ে দেয় এরা, মেয়াদ উত্তীর্ন দুধের দই খেয়ে বিয়েবাড়িতে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে গা এলিয়ে দেই আমরা। আরামে চোখ বন্ধ হয়ে আসে।
পাখি শিকার অমানবিক বলে দাদারা সীমান্তে আমাদেরকে শিকার করেন। আসলে দাদারা দাদা, আমরা হাঁদা [৩]

আমার সাফ কথা, ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে যারা বড়ো বড়ো কথা বলছেন দারিদ্র বিমোচন হেন-তেন তারা ঘোড়ার চিঁহিঁহিঁ রবটা থামালে ভাল লাগে। ২০ পার্সেন্ট সুদ দিয়ে আর যাই হোক দারিদ্র বিমোচন হয় না। এটা ফাজিলদের ফাজলামি! দরিদ্রকে সহায়তা দিতে চাইলে ঋণ দিতে হবে সুদবিহীন। সেই প্রতিষ্ঠানটাকে দাঁড় করিয়ে রাখার জন্য, আনুসাঙ্গিক খরচ উঠাবার জন্য সহযোগী অন্য লাভজনক প্রতিষ্ঠান পাশাপাশি কাজ করবে। এটা না-পারলে খবরদার মুখ খুলবেন না। ফজলে আবেদ সাহেব পত্রিকায় ঘটা করে বলুক কবিতা ওনাকে টানে নাকি উনি কবিতাকে টানেন; এই টানাটানি চলুক আমাদের আপত্তি নাই কেবল দারিদ্র বিমোচন এই সব নিয়ে মুখ হাঁ করবেন না, প্লিজ।

সহায়ক সূত্র:
১. গ্রামীন ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রচারণা: http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=1&date=2011-04-25 
২. লাশ-পদক-বানিজ্য: http://www.ali-mahmed.com/2010/04/blog-post_23.html
৩. দাদারা দাদা...: http://www.ali-mahmed.com/2011/01/blog-post_10.html

Sunday, April 24, 2011

শিক্ষক যখন প্রকৃতি এবং জাপান


জাপানে হয়ে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং সুনামির খবর পুরনো। লিখব লিখব করেও এই প্রসঙ্গ নিয়ে কেন যেন লেখা হয়ে উঠেনি! সবিরাম, মাথায় ঘুরপাক, প্রকৃতির কাছে আমরা কী অসহায়! ছবির মত সাজানো গোছানো একটা দেশ, জ্ঞান-বিজ্ঞানে সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া দেশটা কি কখনও ভেবেছে আজকের এই দিন দেখতে হবে! বুকে হাত দিয়ে বলুক।

কোন একটা লেখায় আমি বলেছিলাম, "জ্ঞান। কবেকার জ্ঞান? সময়টা বড়ো জরুরি।"
যেদিন আমরা আগুন জ্বালানো শিখলাম সেদিনও আমরা ভেবেছিলাম অভূতপূর্ব জ্ঞান এখন আমাদের মুঠোয়। এখন একটা বাচ্চারও আগুন জ্বালাবার জ্ঞান করায়ত্ত। আজ যে জ্ঞান নিয়ে আমরা অহংকারে ডুবে থাকি কিছু বছর পর ওই জ্ঞান বড়ো খেলো মনে হবে।
মানুষ যখন ভেবে বসে প্রকৃতির সমস্ত রহস্য তার জানা হয়ে গেছে, প্রকৃতির সঙ্গে তার লেনদেন শেষ হয়ে আসছে; প্রকৃতি নামের শিক্ষকের বেত ঝাঁ করে নেমে আসে। এই বেত কার পিঠে পড়ল এই নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় প্রকৃতির কই!

অসাধারণ এই ছবিটা দেখে আমরা কী কিছু শিখলাম? প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারও হাত নেই তবুও ওই দেশের বিদ্যুৎ বিভাগের শীর্ষস্থানীয় লোকজনেরা আশ্রয়কেন্দ্রের আশ্রয়ে থাকা লোকজনের সামনে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে যেটা আমরা কল্পনাও করতে পারি না! আমাদের দেশের বড়ো বড়ো আমলা-গামলা মহোদয়গণ এমনটা দূরের কথা অন্তত তাঁদের পশ্চাদদেশ উত্তোলনপূর্বক খানিকটা ক্লেশ স্বীকার করবেন, ভাবাই যায় না

এমন অসাধারণ একটা ছবি! ছবিটা ছাপা হয়েছে প্রথম আলোয়, 'জাপানি সহনশীলতার নমুনা' লেখায় [১] কিন্তু আমি বুঝে উঠতে পারছি না আসলে এই ছবিটা উঠিয়েছে কে? ওখানে কিছুই লেখা নেই, কারও নাম নেই! এটা কি প্রথম আলোর কোন 'ক্যামেরাবাজ' জাপানে গিয়ে ফটোটা পাকড়াও করেছেন নাকি মতিউর রহমান স্বয়ং স্যাটেলাইটের 'নরোমতারের' মাধ্যমে এই ছবিটা তুলেছেন?
এই ছবিটার সঙ্গে প্রতিবেদনটার নীচে লেখা 'বার্তা সংস্থা অবলম্বনে'। নাকি এই ছবিটা বার্তা সংস্থার? আচ্ছা, এই বার্তা সংস্থার ঘটনাটা কী! বার্তা সংস্থা নামে কি কোন বার্তা সংস্থা আছে? কি জানি, আমার জানার পরিধি খুব ছোট। 'খবরের কাগজ' নামে যদি সাপ্তাহিক পত্রিকা থাকতে পারে তাহলে বার্তা সংস্থা নামে বার্তা সংস্থা থাকলে দোষ কোথায়! নাকি এই বার্তা সংস্থার মা-বাপ নাই, এতিম!

এখন কাজের কথা হচ্ছে ছবিটা কার? জানাটা জরুরি কারণ ছবি নিয়ে ফাজিলিয়া খেলাধূলা করার জন্য প্রথম আলোর [১] কোন ক্লান্তি নেই। পূর্বের মত এমনটা হওয়াও বিচিত্র কিছু না! সবাই শেখে, শেখে না কেবল প্রথম আলো- এদের শেখা যে শেষ...

*ভিডিও ঋণ: ABCNews
*ছবি ঋণ: এটা মতিউর রহমান ভাল বলতে পারবেন। 

সহায়ক সুত্র:
১. জাপানি সহনশীলতা...: http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=35&date=2011-04-22
২. প্রথম আলো: http://www.ali-mahmed.com/2010/11/blog-post_07.html

Thursday, April 21, 2011

"সাম্বা-ধিক"

­কালের কন্ঠে (২০ এপ্রিল, ২০১১) ডয়চে ভেলের ববস প্রতিযোগিতা নিয়ে ছাপা হয়েছে 'বাঁধ ভেঙেছে বাংলা ব্লগে' [১]। লিখেছেন বিপ্লব রহমান
তিনি জানাচ্ছেন, "তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে যারা ওয়েকিবহাল, তাঁরা এরই মধ্যে জেনে গেছেন, জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন ভাষার ব্লগসাইটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছয়টি বিভাগে বাংলাদেশের ছয়জন ব্লগার বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন..."।

তিনি ক্লেশ স্বীকার করে এও জানাচ্ছেন, "...এরই পথ ধরে এ বছর বাংলা ব্লগ ছিনিয়ে এনেছে ডয়েচে ভেলের সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতায় ছয়-ছয়টি পুরস্কার। প্রতিযোগিতায় সেরা ব্লগ বিভাগে জয়ী হয়েছেন সাবরিনা সুলতানা..."।

তিনি কষ্ট করে আরও জানাচ্ছেন, "...ডয়েচে ভেলের ব্লগ প্রতিযোগিতায় তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে অভ্র সফটওয়্যারের প্রধান নির্মাতা মেহেদী হাসান খান এবং রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস বিভাগে আবু সুফিয়ান জয়ী হয়েছেন।
আমরা এই ছয় বিজয়ী ব্লগার সাবরিনা, সমর, পিয়াল, আরিফ, মেহেদী ও সুফিয়ানকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। জয় হোক মুক্তচিন্তার, জয় হোক বাংলা ব্লগের
"!


বটে! তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে আমি ওয়েকিবহাল না-হয়েও 'সাম্বা-ধিক' সাহেবের সঙ্গে একমত হতে পারলুম না বলে বড়ই যাতনা বোধ 'কচ্ছি'। ছয়টি বিভাগে বাংলাদেশের ছয়জন ব্লগার বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন, এই তথ্য মমতাজ মিয়ার তাবিজের মত স্বপ্নপ্রাপ্তি হলে আমার বলার কিছু নেই। কিন্তু সাম্বাধিক সাহেবের স্বপ্ন দেখা শেষ হলে, ঘুম থেকে উঠলে দেখতে পাবেন পাঠকের ভোটে Best Blog-এ সাবরিনা প্রথম হননি, পরাজিত হয়েছেন [২]। এই বিভাগে জয়ী হয়েছে পার্সিয়ান ভাষার একটি ব্লগ।

তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে অভ্র সফটওয়্যারের প্রধান নির্মাতা মেহেদী হাসান খানও পরাজিত হয়েছেন। Best Use of Technology for Social Good বিভাগে তিনি পরাজিত হয়েছেন একটি রাশিয়ান ভাষার ব্লগের কাছে [৩]। তেমনি Reporters Without Borders Award বিভাগে আবু সুফিয়ানও পরাজিত হয়েছেন আরেকটি রাশিয়ান ব্লগের কাছে [৪]
ডয়চে ভেলের সেরা ব্লগ অনুসন্ধান প্রতিযোগিতায় দুভাবে বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ভোটে এবং বিচারকদের ভোটে। খানিকটা তকলীফ করে 'সাম্বা-ধিক' সাহেব এটা কোথাও উল্লেখ করেননি বিচারকদের ভোটে বাংলা ভাষার কোন ব্লগই নির্বাচিত হয়নি।

জয় হোক 'সংঘাতপত্রের', জয় হোক সাম্বাধিকের! 

*প্রয়োজন মনে করায় এই পোস্টের শিরোনাম, 'জয় হোক হলুদ সাংবাদিকতা' বদলে দিলাম।  

সহায়ক সূত্র:
১. বাঁধ ভেঙেছে বাংলা ব্লগ: http://tinyurl.com/3qw7q84
২. Best Blog: http://thebobs.dw-world.de/en/nominations/?cat=1 
. Best Use of Technology for Social Good: http://thebobs.dw-world.de/en/nominations/?cat=8 
৪. Reporters Without Borders Award: http://thebobs.dw-world.de/en/nominations/?cat=10

Wednesday, April 20, 2011

bat: সব বেনিয়াদের একই ভঙ্গি!

bat: British American Tobacco. ­একটি বহুজাতিক কোম্পানি। বাংলাদেশেও এই কোম্পানি বছরের-পর-বছর ধরে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, দাপটের সঙ্গে। এরা চিঠিপত্র চালাচালি করে ইংরাজিতে, বাতচিতও। এদের যুক্তি হামলোগ মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি হ্যায়। হামলোগ 'বংলায়' চিট্টি লিখতে পারে না। 'কঝ উআ মেল্টিন্যাশনাল কেম্পেনি'।

ভাল। bat.com [১] এদের ওয়েব-সাইটে গিয়ে যে নমুনা পাওয়া গেল এখানে ইংরাজিতে বাতচিত। কিন্তু এদের Our global Sites [২]- এ গিয়ে দেখা গেল ওখানে ৩৮টি দেশের লিংক দেয়া আছে। কয়েকটি দেশের নমুনা:
রাশিয়ার জন্য [৩] রাশিয়ান ভাষায়:
"«Бритиш Американ Тобакко Россия» – это динамичная, быстро развивающаяся компания, которая строит свой бизнес на основе принципа социальной ответственности, считая его неотъемлемой составляющей любого коммерческого успеха. Для того чтобы узнать больше о компании, нажмите сюда." 
গুগলের সহায়তায় অনুবাদ করে পাওয়া গেল: Russian to English translation:
"British American Tobacco Russia "- a dynamic, rapidly growing company, which built its business based on thethe principle of of social responsibility , considering it an integral part of any commercial success.To learn more about us, click here."
 


Germany: [৪]
"Herzlich willkommen bei British American Tobacco Germany! Informieren Sie sich über British American Tobacco Germany und British American Tobacco weltweit, Tabak im Allgemeinen und unsere Produkte im Speziellen sowie über allgemeine Themen, die die deutsche Tabakbranche derzeit beschäftigen, und darüber, wie wir Verantwortung für unser Geschäft übernehmen." 

German to English translation:
"Welcome to British American Tobacco Germany!
Find out more than British American Tobacco and British American Tobacco, tobacco in general and our products in particular and on general issues of concern to the German tobacco industry currently, and how we take responsibility for our business."
 

France [৫]: 
"Bienvenue sur le site de British American Tobacco France. Nous avons conçu ce site pour vous permettre de mieux connaître notre métier, la conception que nous en avons et tous nos Principes Directeurs. Fumer est un comportement à risque et British American Tobacco France le reconnaît. C’est pourquoi nous estimons que fumer doit rester un choix d’adulte informé, et que la prévention du tabagisme chez les jeunes doit constituer une priorité." 

French to English translation:
Welcome to British American Tobacco France. We have designed this site to help you better understand our business, the design that we and all our Guiding Principles. Smoking is a risk behavior and British American Tobacco France recognizes that. We therefore believe that smoking should remain a choice for informed adults, and that prevention of smoking among youth must be a priority."


Turkey [৬]:
"British American Tobacco Türkiye'nin internet sitesine hoşgeldiniz.
Şirketimizi ve faaliyet gösterdiğimiz sektörü daha iyi tanıyabilmeniz için yapılandırdığımız sitemizden, ihtiyacınız olan bilgilere ulaşabilirsiniz." 


Turkish to English translation:
Welcome to the website of British American Tobacco. We operate our company and our industry yapılandırdığımız to better recognize, you need access to information.


Poland [৭]:
"British American Tobacco Polska jest częścią Grupy British American Tobacco – najbardziej międzynarodowej firmy tytoniowej, sprzedającej swoje produkty na ponad 180 rynkach całego świata." 

Polish to English translation:
"British American Tobacco Poland is a part of British American Tobacco - the most international tobacco company, selling its products in over 180 markets worldwide."
 

তো, দেখা যাচ্ছে এরা বিভিন্ন দেশে ওইসব দেশের ভাষায় বাতচিত করছে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য ইংরাজি ভাষায়! পাকিস্তানের জন্যও ইংরাজি কিন্তু এই বিষয়টা এখন আমার আলোচ্য না।
আমাদের দেশে এইসব লাল চামড়া আসলেই হাফ-প্যান্ট লাগিয়ে উদোম গায়ে ঘুরে বেড়ায়; গরম নাকি লাগে! সৌদিতে গেলে ঠিকই গায়ে কাপড় চড়ায়। তখন উত্তপ্ত বালু ঘষলেও বরফ-বরফ মনে হয়। শ্লা, এরা ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির আধুনিক সংস্করণ! অন্যত্র তাদের বোল বলবে কিন্তু আমাদের এখানে এসে তাদের বোল বলতে আমাদেরকে বাধ্য করবে! আমাদেরকে শেখাবে তাদের সহবত। দুর্বল জাতি হলে যা হওয়ার তাই হয়...

সহায়ক সূত্র:
১. bat.com: http://www.bat.com/
২. Our global sites: http://www.bat.com/global 
৩. russia: http://www.batrussia.ru/ 
৪. Germany: http://www.bat.de/
৫. France: http://www.batfrance.com/
৬. Turkey: http://www.bat.com.tr/
৭. Poland: http://www.bat.com.pl/    

Friday, April 15, 2011

নিতল অন্ধকার!

আনন্দলোক, জুন ২০০৬
­বেশ পূর্বে এই লেখাটা পড়ে আমার মাথায় সব জট পাকিয়ে গিয়েছিল। আমি মা-ছেলে এই দুজনের মনের ভাব মনশ্চক্ষুতে দেখার চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। এই মনহুসদের ভয়াবহ অনৈতিক এক সম্পর্ক! যে সম্পর্ক একটি সভ্যতাকে থামিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ঠ। কেন, সেই প্রসঙ্গে পরে আসছি।

অবশ্য আনন্দলোকের উত্তরও আমাকে যথেষ্ঠ হতাশ করেছিল!
তখন এই বিভাগটা কে দেখতেন মনে পড়ছে না! এই মোটামাথারা কী উত্তর দিয়েছে! দাদাদের কাছে কী এটা একটা ডালভাত হলো!

যাই হোক, সম্প্রতি একটা মেইলের সূত্র ধরে আবারও বিষয়টা সামনে চলে এলো। মানুষটা নগ্ন হবেন তাই বিশদে যাই না। এক অনৈতিক সম্পর্কে ওই মানুষটা জড়িয়ে  গেছেন এবং পুরোপুরি এলোমেলো হয়ে আছেন। তিনি আত্মহননের কথাও ভাবছেন। আজকের এই লেখাটা মূলত তার জন্য...।
ওই মানুষটার পাঠানো কিছু সূত্র ধরে দেখলাম মা-ছেলে, ভাই-বোন নিকট সম্পর্কের সঙ্গে ভয়ংকরসব জটিল সম্পর্ক! সব সত্যি হয়ে থাকলে এ এক ভয়ানক বিপর্যয়- সভ্যতার জন্য! অনেক সূত্র হয়তো বানিয়ে বানিয়ে লেখা কিন্তু যে লিখছে সে এমনটাই বা লিখবে কেন? তার চেতন-অবচেতন মন নিশ্চয়ই এই ভাবনা নিয়ে কাজ করে।
একজন মানুষকে অন্য গ্রহের কাউকে আঁকতে বললে সে এই গ্রহ পৃথিবীর মানুষের মতই আঁকবে, খানিকটা অন্যরকম করে। হয়তো কান বড়ো, হাতে আঙ্গুল ছয়টা, চোখ তিনটা ইত্যাদি। কারণ তার মস্তিষ্কে এর বাইরে কোন স্মৃতি নাই, কল্পনার দৌড় যদ্দুর...।

আমাদের দেশের বাংলা সূত্রগুলো, জটিলতার কারণে এখানে  ইচ্ছা করেই দিলাম না। উইকি থেকে ধার করে বলি। তারা এই উদ্বৃতি দিয়েছে গার্ডিয়ান থেকে:
"...I fell in love with my sister and I'm not ashamed ... I only feel sorry for my mom and dad, I wish they could be happy for us. We love each other..." [১] wikipedia 
এই যে মা-ছেলে, ভাই বোনের এইসব সম্পর্ক হলে সমস্যা কী? প্রচলিত সমস্ত ধর্মেই এর কঠিন নিষেধাজ্ঞা আছে। কোরানে বলা হয়েছে,
"তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে তোমাদের মা, মেয়ে, বোন, ফুফু, খালা, ভাইয়ের মেয়ে, ভগিনী, দুধমা, দুধবোন, শাশুড়ি ...পূর্বে যা হয়ে গেছে তা হয়ে গেছে...।" (৪ সুরা নিসা: ১৯-২৫)

তৌরাত শরীফ বলছে:
"...সে তোমার মা; তার সঙ্গে সহবাস করো না। তোমার বিমাতার ইজ্জত নষ্ট করো না।...তোমার সৎবোনের ইজ্জত নষ্ট করো না, সে তোমার পিতা থেকে জন্মেছে, সে তোমার বোন। তোমার ফুফুর সঙ্গে সহবাস করো না...তোমার খালার সঙ্গে সহবাস করো না...।" (তৌরাত শরীফ, তৃতীয় খন্ড: লেবীয় কিতাব ৮-১৩)।

ধর্ম কথার পাশাপাশি প্রচলিত আইনে এবং সামাজিক বিবেচনায়ও অতি নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে এমন সম্পর্কের জন্য কঠিন নিষেধ দেয়া আছে। কেন? সমস্যাটা কোথায়! কেন এমন কঠিন নিষেধ? আমাদের আধুনিক বিজ্ঞান কি বলছে?
"...Many reasons underlie the incest taboo: Biological explanations of the dangers of inbreeding support restrictions to avoid genetic disorders;..." [২] New World Encyclopedia 

"Marriage Between Close Relations Increases Risk Of Hermaphroditism: Marriage within close relations or within the same community may increase the risk of hermaphroditism as it helps preserve bad genetic factors responsible for this congenital disorder, doctors have warned..." [৩] healthyplace.com 

এখন আমাদের জেনেটিক কোড এলোমেলো হয়ে গেলে এর ফলে কী ধরনের বিপর্যয় নেমে আসবে এটা আমরা কেবল খানিকটা আঁচ করতে পারছি। কেবল জেনেটিক কোড এলোমেলো হয়ে যাওয়া, হিজড়াদের মত অপূর্ণ কিছু মানুষের উদ্ভব!
প্রকৃতি ব্যত্যয় পছন্দ করে না- তাঁর [৪] অনন্ত ভ্রমনে থামার কোন সুযোগ নাই। আমি আমার অল্প জ্ঞানে বুঝি, একটা সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রকৃতির নিজস্ব নিয়ম আছে সেই নিয়মের বাইরে গেলে সে আমাদেরকে নিয়ে কী খেলা খেলবে এটা আমরা জানি না। অন্তত আমার মত অল্প বুদ্ধির মানুষের কখনও জানা হবে না, আফসোস...।

* "Do you support sibling-marriage when two adult siblings love each other?" [৫] এই বিষয়ে লোকজনকে দেখছি ঘটা করে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে!

সহায়ক সূত্র: 
১. We love each other: http://en.wikipedia.org/wiki/Incest 
২. Genetic disorders: http://www.newworldencyclopedia.org/entry/Incest 
৩. Hermaphroditism: http://www.healthyplace.com/gender/inside-intersexuality/marriage-between-close-relations-increases-risk-of-hermaphroditism/menu-id-1926/ 
৪. তিনি: http://www.ali-mahmed.com/2009/09/blog-post_18.html 
৫.  Do you support...: http://answers.yahoo.com/question/index?qid=20090212132132AA8sxEA

Sunday, April 10, 2011

হর্ষ-বিষাদ: স্বাধীনতা দিবস

­এবারের স্বাধীনতা দিবসে স্কুল [০] নিয়ে অনুষ্ঠান করার আমার ইচ্ছা ছিল না এটা বলব না কিন্তু অন্য রকম  জটিলতা ছিল। আর্থিক! এই কার্যক্রমগুলোর জন্য যে পড়শী ফাউন্ডেশন থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়া যেত সেটার উৎস বন্ধ! এর দায় আমার উপরই বর্তায় কারণ আমার নিজস্ব ভাবনার কারণে আমি নিজেই এদের কাছ থেকে বিযুক্ত হয়ে গেছি- যুক্ত থাকতে চাইনি।

কিন্তু এবারের স্বাধীনতা দিবসে দুজন ডাক্তার যখন বিনে পয়সায় চিকিৎসাসেবা দেয়ার তীব্র ইচ্ছা ব্যক্ত করলেন তখন মনে হলো কোন অবস্থাতেই এই সুযোগ হাতছাড়া করা চলে না। দুজন ডাক্তারের মধ্যে একজনের আবার অহেতুক কিছু শর্ত ছিল যেমন তিনি কোন ক্লিনিক, প্যাথলজিতে বসে রোগী দেখবেন না। এখন বাইরে কোথায় রোগি দেখার ব্যবস্থা করি? বাধ্য হয়ে স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে অনুষ্ঠানটার আয়োজন করতেই হলো। আর্থিক সহায়তার জন্য অন্যত্র হাত বাড়াতে হলো। 'রূপালী মেডিকেল' নামের একটি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলো। অবশ্য আগেই এদেরকে এটা বলে নেয়া হয়েছিল এদের সহায়তা নেয়ার কারণে কোন ধরনের বাড়তি সুবিধা দেয়া যাবে না বরং মুক্তিযোদ্ধা এবং অসহায় রোগীর প্রয়োজন হলে এঁরা বিনে পয়সায় টেস্ট করে দেবেন। তাতে এঁরা আপত্তি করেননি। এদেঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা।

কাজে নেমে সে এক হ্যাপা! বাচ্চারা যেখানে বসে ছবি আঁকবে সেখানে ওইসময়ে গনগনে রোদ থাকার কথা। তো, লাগাও সামিয়ানা। বাচ্চাদের পরিবারের লোকজনরা আসবেন এদের জন্য বসার চেয়ার ডেকোরেটর থেকে নিতে হবে। বাড়ছে খরচ। আমার মুখ ক্রমশ অন্ধকার হচ্ছিল। একে তো ফান্ড নেই তার উপর একের-পর-এক খরচ বাড়ছিল।
এবার আবার বাচ্চাদের ছবি আঁকার সঙ্গে যোগ হয়েছিল 'বর্ণ লিখন'। এই আইডিয়াটা আমি পেয়েছিলাম 'কারক নাট্য সম্প্রদায়'[১]-এর কাছ থেকে। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
এবারের অতিথিদের মধ্যে নৌ-কমান্ডো ফজলুল হক ভূঁইয়া [২]-এর সঙ্গে রাখা হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা মুখলেছুর রহমান [৩]। যিনি বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। এই মানুষটাকে নিয়ে ডয়চে ভেলে থেকেও প্রতিবেদন এবং রেডিও সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছিল। অবশ্য অসুস্থতার কারণে তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি। মন খারাপ হয়েছিল। আহারে, বাচ্চারা তাঁর মুখ থেকে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা জানা থেকে বঞ্চিত হলো।


ছবি ঋণ: বাবু, মিশু, বাবলু



কোত্থেকে খবর পেয়ে জাতীয় দৈনিকগুলোর কয়েকজন স্থানীয় সংবাদদাতারাও চলে এসেছিলেন। এঁদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি কিন্তু ...আমি এঁদের দেখে হাসি গোপন করলাম। আমার হাসির অর্থ আর বলিনি তাহলে সত্য কথাটাই বলতে হতো। আপনারা যে এসেছেন, ভালো কিন্তু আপনাদের পাঠানো নিউজ তো পত্রিকায় ছাপা হবে না- কারণ এই সমস্ত খবর ছাপাবার সময় পত্রিকাওয়ালাদের কোথায়! আপনাদের আবেগ দেখে আগাম হেসে ফেলেছি, এজন্য দুঃখ প্রকাশ করি।

সমস্ত যন্ত্রণার কথা বাদ দিলেও আমার আনন্দের শেষ নেই কারণ আমাকে বলা হয়েছিল এরকম ফ্রি চিকিৎসাসেবায় লোকজনরা তেমন আসেন না। কিন্তু আমার খানিকটা আস্থা ছিল এই জন্য অন্তত স্কুলের বাচ্চাদের পরিবার-পরিজনদের চিকিৎসা করলেও তো একটা কাজের কাজ হয়ে যায়। বাস্তবে তাই হয়েছিল, ডাক্তাররা ৬১জন রোগি দেখেছেন। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে খাটো করি না...।
 

সহায়ক সূত্র:
০.  স্কুল...: http://tinyurl.com/39egrtn
১.  কারক নাট্য সম্প্রদায়: http://www.ali-mahmed.com/2011/03/blog-post_4936.html
২. নৌ-কমান্ডো ফজলুল হক ভূঁইয়া: http://www.ali-mahmed.com/2009/04/blog-post_22.html
৩. মুখলেছুর রহমান: http://www.ali-mahmed.com/2011/03/blog-post_843.html
৪. মুখলেছুর রহমান, ডয়চে ভেলে, প্রতিবেদন: http://www.dw-world.de/dw/article/0,,14898022,00.html
৫. মুখলেছুর রহমান, ডয়চে ভেলে, রেডিও সাক্ষাৎকার: http://bit.ly/fNl6UR

Wednesday, April 6, 2011

জমিনের ঈশ্বর!

ক্রসফায়ার নিয়ে আমার এক লেখায় [১] লিখেছিলাম, "...ক্রসফায়ার জটিল এক আবিষ্কার! অনেক আঁক কষতে হয়, জটিলসব সূত্র, অংকের ফল মেলাতে হয়। বাংলার ফল খেতে খেতে, অংকের ফল মিলিয়ে, ইংরাজিতে ফল হয়ে জনমের তরে মাটিতে শুয়ে যেতে হয়।"
সত্যিই এ এক যুগান্তকারী আবিষ্কার, এটা আজও বলি! অসংখ্যবার এমন নিখুঁত কান্ড এই গ্রহে আর কারও পক্ষে করা সম্ভব এটা আমি বিশ্বাস করি না। দুইটা গুলিকে একই বিন্দুতে ক্রস করানো কী আর চাট্টিখানি কথা!

বা অন্য আরেক লেখায় আমি যেটা লিখেছিলাম [২] র‌্যাবের দেখাদেখি পুলিশও ক্রসফায়ার নামের জটিল বিষয়টা আয়ত্ব করে ফেলেছে, "...২১ মে, ২০০৬। অসুস্থ টুন্ডাকে সুস্থ দাবী করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে রিমান্ডে আনা হয় ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায়। গভীর রাতে ক্রসফায়ারে তাঁর মৃত্যু হয়। ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থাতেই তার মরদেহ পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে। ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থাতেই তার ময়নাতদন্ত করা হয়...।"
যে তথ্যটা জানা সম্ভব হয়নি টুন্ডাকে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় সমাহিত করা হয়েছিল কি না। কে জানে, ওখান থেকেও যদি ভেগে যায়!

ছবি ঋণ: প্রথম আলো
আজকের পত্রিকায়ও [৩] আবারও বিচিত্র ক্রসফায়ারের খবর! লিমন হোসেন নামের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সঙ্গে র‌্যাবের গুলি বিনিময়ের সময় র‌্যাব লিমনের পায়ে গুলি করে নিজেদের প্রাণ বাঁচায়! র‌্যাবের এই 'প্রাণ বাঁচানিয়া' গুলি বিনিময়ের নাম ক্রসফায়ার!

লিমন যে সন্ত্রসী এটা থানাওয়ালারা জানে না, জানে না এলাকাবাসীও! এমনকি এলাকার লোকজন এই লিমনকে চাঁদা করে চিকিৎসা করাচ্ছেন। রিকশা চালান এমন একজন মানুষও এই লিমনকে বাঁচাবার জন্য কষ্টার্জিত টাকা দিচ্ছেন। রবিন হুডকে বাদ দিলে এমন জনপ্রিয় সন্ত্রাসী এই গ্রহে আর আছে বলে আমাদের জানা নাই।

মঙ্গলবার এই লিমনের এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সন্ত্রসী বলে র‌্যাব কেবল তাকে গুলি করেই ক্ষান্ত হয়নি দুই দুইটা মামলাও ঠুকে দিয়েছে। একটি অস্ত্র আইনে অন্যটি সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে। এই কথিত অভিযানে নেতৃত্ব দানকারী ডিএডি বলেন, "...সে (লিমন) র‌্যাবের উপর গুলি করেছে। ক্রসফায়ারে সে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আহত লিমনের কাছ থেকে পিস্তল পাওয়া গেছে"।

লিমনের নামে কখনও কোন অপরাধের কথা শোনা যায়নি, থানায় একটা জিডি নাই, এলাকার একটা মানুষও জানে না অথচ র‌্যাব জানে। আমাদের র‌্যাব সব জানে কারণ র‌্যাব হচ্ছে এই জমিনের ঈশ্বর! আমার হেল কমান্ডোর সেই বিখ্যাত সংলাপ মনে পড়ছে, "...রিমেম্বার, গড ইজ অলমাইটি ইন স্কাই লাইন, অ্যান্ড মাইটি সিনিয়রস ইন পি.এম.এ...।" এখানে সিনিয়রসের জায়গায় র‌্যাব এবং স্কাই লাইনের জায়গায় 'জমিন লাইন' বসিয়ে নিলেই হয়।

আহ, জমিনের ঈশ্বর! র‌্যাব যদি বলে সূর্য পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে আমরাও বলব সূর্য পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে। র‌্যাব যদি বলে সূর্য বাংলাদেশের সমান আমরাও বলব সূর্য বাংলাদেশের সমান। জমিনের ঈশ্বর বলে কথা...।

*র‌্যাব জমিনের ঈশ্বর না-হলে বলতাম, এটা একটি খুনের অপচেষ্টা। এবং কেন এই খুনের চেষ্টার বিচার হবে না?

 সহায়ক সূত্র:
১. ক্রসফায়ার, ...আবিষ্কার: http://www.ali-mahmed.com/2008/07/blog-post_29.html
২. ক্রসফায়ার: http://www.ali-mahmed.com/2009/10/blog-post_03.html
৩. লিমন হোসেন: http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=1&date=2011-04-06