এমনিতে আমরা বড়ো বক্তা জাতি- কথায় অনভিভবনীয়। এমনিতেও অবশ্য অনলবর্ষী বক্তা তো হাটে-মাঠে মেলে, আমি অবশ্য এই সব বক্তাদের মুখ থেকে আগুন বেরুতে দেখিনি। অবশ্য বেশি জোশ চলে এলে থুথু বেরুতে দেখা গেছে। এমনিতে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বলে বলে আমরা মুখে ফেনা তুলে ফেলব।
এখন আবার একটা নতুন ধারা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বা মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করতে পারলে আর পায় কে!
প্রায়শ বড়ো হাস্যকর একটা কথা শুনি একজন মুক্তিযোদ্ধা কখনও অন্যায় করতে পারেন না। ভাল-ভাল, তাহলে টাঙ্গাইলে কাদের সিদ্দিকীর করা অর্ধ-সমাপ্ত সেতুগুলো কে সমাপ্ত করবে, যারা এই সব সংলাপগুলো আওড়ান, তাঁরা? তো, এই সব নিয়ে আলোচনার শেষ নেই...। ব্লগস্ফিয়ারে এই ঝড় সামাল দেয় এমন সাধ্যি কার!
আমাদের দেশে বীরশ্রেষ্ঠর সংখ্যা হাজার-হাজার না যে এদের নাম মনে রাখা দায় হয়ে পড়বে অন্তত লিখতে গিয়ে গুলিয়ে যাবে! 'বীর শ্রেস্ঠ মোঃ মোস্তফা'? সঙ্গে কামাল ছিল না? আর মোঃ কোত্থেকে আসল? নাকি আমিই ভুল করছি!
বাচ্চাদের আঁকাআঁকি নিয়ে একটা অনুষ্ঠান করা হয়েছিল [১] যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন একজন দুর্ধর্ষ নৌ-কমান্ডো [২] এবং বিশেষ অতিথি একজন 'ট্যাংক মানব' [৩]। ওই অনুষ্ঠানটা করার অনেকগুলো কারণের একটা ছিল শিশুদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেয়া। সব মিলিয়ে শিশুদের মধ্যে যে উদ্দীপনা দেখেছিলাম তা আমার স্মৃতিতে এখনও অম্লান। কিন্তু একটা বিষয় তখন আমাকে তীব্র হতাশ করেছিল, অধিকাংশ শিশুই মুখস্ত করা আঁক আঁকছে- এদের ভাবনার প্রসারতা নেই! এবার আমি খানিকটা চালবাজি করব বলে ঠিক করে রেখেছিলাম।
আমার পরের ইচ্ছাটা এমন, শিশুদের নিয়ে আঁকাআঁকির এইবারের অনুষ্ঠানের ভেন্যু থাকবে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামালের সমাধিস্থল। শিশুরা এটা দেখে দেখে আঁকবে। এতে অনেকগুলো কাজ হবে, প্রত্যেকটা শিশুকে এখানে আসতে হবে, আগাম প্রস্তুতি ব্যতীত আঁকতে হবে। কিন্তু এখানে এদের নিয়ে এলে এরা এখান থেকে শিখবেটা কী? বীর শ্রেস্ঠ মোঃ মোস্তফা?
এমন না এখানে কেউ আসেন না। বিশেষ বিশেষ দিনে এসি-ডিসি, মন্ত্রী-এমপি কেউই বাদ থাকেন না। এঁদের গাড়ির গ্লাসে সমস্যা সম্ভবত- টিনটিড গ্লাসের কারণে ভুলটা ভাল ঠাওর করতে পারেন না।
এখানে আছেন এই দেশের সমস্ত প্রিন্ট মিডিয়া, জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিক। আমার জানার বড়ো কৌতুহল, এঁরা কেউ লক্ষ করেননি? অদ্যাবধি এটা এঁদের কারও চোখে পড়েনি? নাকি নিউজটা পাঠিয়েছেন, আমাদের মহান প্রিন্ট মিডিয়া এই নিউজটা ধরেননি এটা ডিসেম্বর মাস না বলে? আমাদের মিডিয়ার আবার খানিক সমস্যা আছে, এরা বিশেষ মাস, বিশেষ আয়োজন ব্যতীত কান্নাকাটি করতে পারেন না; ডিসেম্বর হচ্ছে পছন্দের মাস। তখন পাবলিকও নাকি এই সমস্ত খবর খায় ভাল।
প্রথম আলোর 'ম্যা-ম্যা' শব্দ শুনে শুনে প্রাণ ওষ্ঠাগত। কি বললেন, ম্যা ম্যা হবে না, 'মা মা' হবে? আহা, এমন একটা ফলকে 'বীর শ্রস্ঠ' বানান লিখতে ভুল করলে আমি কেবল একটা য-ফলা ভুল লিখেছি এতে করে রে রে করে তেড়ে আসার কি আছে! ডিসেম্বর আসছে তখন আমরা দেখিয়ে দেব কেমন করে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে মুখ থেকে আগুনের হল্কা বের করা যায়। এরপরেই আসছে ফেব্রুয়ারি। গতবার তো মতি ভাইয়া দেখিয়ে দিয়েছিলেন কেমন করে ৩০ মিনিটি দেশ কাঁপানো যায় [৪]। এবার দেখাবেন ৩ মিনিটে দেশটা কেমন থরথর করে কাঁপে। গতবারের ৩০ মিনিটের ফল কি না জানি না ঢাকার বিল্ডিংগুলো হেলে পড়ছে, এবার ৩ মিনিটে কাঁপালে কী অবস্থা হবে এই নিয়ে বড়ো ভয়ে ভয়ে আছি।
সহায়ক লিংক:
১. বাচ্চাদের আঁকাআঁকি...: http://www.ali-mahmed.com/2010/06/blog-post_4596.html
২. নৌ-কমান্ডো: http://www.ali-mahmed.com/2009/04/blog-post_18.html
৩. ট্যাংক মানব: http://www.ali-mahmed.com/2010/03/blog-post_03.html
৪. দুনিয়া কাঁপানো ত্রিশ মনিট: http://www.ali-mahmed.com/2010/02/blog-post_19.html
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Friday, November 19, 2010
বীরশ্রেষ্ঠ, ভাগ্যিস, আপনি বেঁচে নেই....
বিভাগ
১৯৭১: প্রসব বেদনা
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment