Search

Wednesday, May 26, 2010

স্বপ্ন: বৃদ্ধাশ্রম


এই মানুষটার একদা স্বামী-সন্তান সবই ছিল। স্বামী খুব একটা স্বচ্ছল না হলেও অন্তত কারও কাছ থেকে চেয়ে-চিন্তে খেতে হয়নি। যতদিন বেঁচে ছিলেন মর্যাদার সঙ্গেই জীবন-যাপন করেছেন। স্বামী নামের মানুষটার মৃত্যুর পর সব এলোমেলো হয়ে যায়। দিনে দিনে এই মহিলা কষ্ট করে তাঁর সন্তানদের বড়ো করেন।

আজ তাঁর সন্তানরা তাঁকে খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করা দূরের কথা, বাড়িতে রাখতেও আগ্রহী না। তবুও এই মহিলা ছেলে নাতির টানে বারবার এদের কাছে ফিরে যান।
তাঁর ছেলের বউরা তাঁকে মারে, তাঁর নাতিরা তাঁকে মারে। এটা যখন আমার কাছে বর্ণনা করছিলেন, আমি খানিকটা অন্যমনস্ক হয়ে পড়ি।

আমি কেবল নিজের কথা ভাবি, আজ আমার যে সন্তানদের জন্য আমি যে ভারী ব্যাকুল; এরা ঠিক এমনটাই আমার সঙ্গে করলে আমি কোথায় যাব, কার কাছে যাব? কাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বুক হালকা করব?
আমার চোখে জল- এই মহিলার জন্য না, নিজের জন্য। আমি জলভরা চোখে অভিশাপ দেই, আমার সন্তানও যদি এই মহিলার সন্তানদের মত হয় তাহলে তাদের আর বড়ো হওয়ার প্রয়োজন নাই। আজই যেন তাদের মৃত্যু হয়।

আমি কেবল ভাবছিলাম, একজন মানুষ সীমাহীন দূর্নীতি করে বিপুল অর্থ রেখে যায়, কার জন্য, কেন? তার সন্তানদের জন্য? তার সন্তান ভোগ করল কিন্তু ওই মানুষটার কী লাভ?

এখন এই মানুষটার থাকার নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই। পথে পথে ঘুরে বেড়ান, ভিক্ষা করেন। এই মহিলার ছবি উঠাতে আমার কেন যেন ইচ্ছা করছিল না। ঘোলাটে তাঁর চোখ কিন্তু কী তীব্র সেই চোখের দৃষ্টি! এই চোখে চোখ রাখার ক্ষমতা কই আমার! আমি তো আর পেশাদার আলোকচিত্রি নই। তাঁর চোখ বাঁচিয়ে চুপিসারে ছবি তুলি।

কিছু অনাবশ্যক কাজে জড়িয়ে অনেকটা সময় নষ্ট হলো। আজ থেকে ভারমুক্ত। আমাকে কার প্রয়োজন তারচেয়ে জরুরী হলো এই মহিলাকে আমার প্রয়োজন। সমস্যা হচ্ছে, পছন্দসই বাসা খুঁজে পাওয়া যায়নি এখনও। 

স্বপ্নের কারখানায় [১] আমি উল্লেখ করেছিলাম, শিশু আশ্রম দাঁড় করাবার পর বৃদ্ধাশ্রম করব। আজ আমি আমার মত খানিকটা পরিবর্তন করি। করলে একসাথেই করব। একটা দাঁড় করিয়ে আরেকটা করার জন্য অপেক্ষা করার সময় কোথায়? কে দেখেছে নেক্সট সামার, কে দেখেছে নেক্সট উইন্টার...!

*স্বপ্ন: http://tinyurl.com/3y7bpz3 

সহায়ক লিংক: 
১. স্বপ্নের কারখানা: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_16.html 

 

2 comments:

Rabu said...

khub e kharap lagche shuvo bhai...


shorna

আলী মাহমেদ - ali mahmed said...

shorna,
আমার খারাপ লেগেছে আমার নিজের জন্য। আমার নিজের এমন একটা দিন দেখার চেয়ে আমি এই মুহূর্তে মৃত্যু কামনা করি।