সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে আমাদের 'সো-কলড' জনতা বাসা থেকে কেবল টেনে-হিঁচড়ে নিয়েই আসেনি, গলায় জুতার মালা পরিয়েছে। গালে জুতা দিয়ে মেরেছে! তাও আবার পুুলিশের সামনে! এবং এদিকে আবার দেশে নাকি সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারে আছে!
এই কর্মকান্ডে আমরা যাকে খুব সোচ্চার দেখছি তার নাম নাকি 'ঢালি'। এই ঢালি এমন ক্ষমতাবান যে তার কেশ স্পর্শ করতে কাউকে এখনও দেখিনি!
ঢালি বা ওইখানে উপস্থিত পুলিশের হাতে গরুর রশি বান্ধা-ওয়ালা টাইপের ছবির বদলে আমরা পত্রিকার প্রথম পাতায় দেখছি:
তো, এখন এই ঢালিকে নিয়ে আমরা কী করিব? তাকে রাজনৈতিক বড় কোন পদ দেওয়া যায় বা আইজিপি বানিয়ে দিলেও দোষের হবে না! ঢালি স্যার এটা ডিসার্ভ করেন!
কিন্তু...! এখন দেশে যে নতুন একটা বন্দোবস্ত চালু হয়েছে, 'মব জাস্টিস'! এখানে কোন পুলিশ-বিচারক-আইন কর্মকর্তা-সাক্ষি-আইনের কিতাব কোন কিছুরই প্রয়োজন নেই। কয়েকজন মিলে চশমা-দাড়ি-গালি ঝুলিয়ে যে-কারও বাসায় ঢুকে পড়লেই হল।
আর আমাদের 'চুতিয়া মিডিয়া' এই মব জাস্টিসের নাম দিয়েছে, 'জনতা'। যেমন 'জনতা পিটিয়ে মেরে ফেলেছে' বা 'জনতা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে' অথবা 'জনতা ধরে পুলিশে দিল'।
ব্যস, এরপর আর কথা চলে না। ও, হ্যাঁ, এরপর একটা হালকা-পাতলা সরকারি বিবৃতি আসে, 'কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না'! অবিকল বাংলা সিনেমার ডায়লগ!
ছাত্র নামধারী এরা যেভাবে মব জাস্টিসকে উস্কে দেয়, হুমকি দেয় তা এক অনন্য দৃষ্টান্ত! একে আইনের আওতায় আনা খুবই জরুরি!
যেমনটা এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি, ভাস্কর রাশাকে একজন তুই-তুকারি করে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি দিচ্ছে। এই টোকাইয়ের কী ধারণা আছে ভাস্কর্য কাকে বলে, ভাস্কর কারা, রাশা কে?
অবশেষে এই টোকাই রাশাকে পেছন থেকে লাথি মারে।
আমাদের দেশ এখন যারা চালাচ্ছেন তারা ১০ মাস পরও এই মব-জাস্টিসের বিরুদ্ধে শক্ত কোন অবস্থান নিয়েছেন এমনটা আমরা দেখতে পাই না। বরং দেখতে পাই ব্যর্থতার কথা বললে হাত নেড়ে-নেড়ে বলতে:
আমি কাকে বলব, আমার নিজেরই তো দেশ চালাবার অভিজ্ঞতা নাই?
এই সব শিশুর আলাপ শুনতে ভাল লাগে কিন্তু বাসভর্তি মানুষ নিয়ে একজন চালক যদি বলেন, আমি তো চালাতে জানি না তাহলে সেটা আর শিশুর আলাপ, সুশীল আলাপ থাকে না! কারণ বাস কিন্তু থেমে নেই, ঝড়ের গতিতে চলছে!
বিষাদের সংগে বলি, যার হয় জুম্মা-জুম্মা ৭ দিনেই হয় আর না-হলে ১০ মাস কেন ১০ বছরেও হয় না!


No comments:
Post a Comment