ঘটনাটা এই গ্রহের। আরেকটু ছোট করে বললে বাংলাদেশের, গাজীপুরে! ঘটনাটা হচ্ছে এমন, একজন বউকে রাগের মাথায় (খুব সম্ভব যেটা) তালাক দিয়েছেন। এরপর যেটা হয় রাগ পড়ে গেলে সব অন্ধকার। স্বামী-স্ত্রী আবারও সংসার করতে চাচ্ছেন।
বিষয়টার সঙ্গে যেহেতু ধর্মীয় আচার জড়িত তাই তাঁরা আমাদের ধর্মীয় শিক্ষকের কাছে পরামর্শের জন্য গেছেন। ধর্মীয় শিক্ষকদের মধ্যে একজন মাদ্রাসার অন্যজন মসজিদের। তারা একটা সহজ সমাধান দিলেন। ধর্মীয় শিক্ষকের মতে, যেহেতু তালাক হয়ে গেছে আবারও ওই ভদ্র মহিলাকে বিয়ে দিতে হবে (হিল্লা বিয়ে) এবং দ্বিতীয় স্বামী আবারও ওই মহিলাকে তালাক দিলে প্রথম স্বামী পূর্বের ন্যায় তার সঙ্গে সংসার করতে পারবেন। এতে কোন দোষ হবে না।
এই বিষয়ে কোরানে বলা হচ্ছে:
যারা নিজেদের স্ত্রীর কাছে না যাওয়ার শপথ করে...তারপর ওই স্ত্রীকে যদি সে তালাক দেয় তবে যে-পর্যন্ত না ওই স্ত্রী অন্য স্বামীকে বিবাহ করছে তার পক্ষে সে বৈধ হবে না। তারপর যদি সে (দ্বিতীয় স্বামী) তাকে তালাক দেয় তবে তাদের আবার মিলনে কারও কোন দোষ নেই, যদি দু'জনে ভাবে যে তারা আল্লাহর নির্দেশ বজায় রেখে চলতে পারবে।...(আল কোরআন, সুরা বাকারা, ২২৬-২৩২)
ধর্মীয় শিক্ষক মাটির মানুষ। তিনি বোঝালেন অন্যত্র বিবাহ হলে ঝামেলা হতে পারে। বাই-এনি-চান্স, যদি সেই দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিল না তাহলে উপায় কী হবে! মাদ্রাসার দায়িত্বে আছেন যে ধর্মীয় শিক্ষক তিনি বিবাহ করতে রাজি হলেন। বাসররাত উদযাপন করার সময় তার সহযোগী মসজিদের ইমাম রইলেন পাহারায়।
ঝামেলাটা হয়েছে গিয়ে বাসর রাত তিনি করেছেন মসজিদের সিঁড়িতে। বাকীটা ইতিহাস...!...
এই ঘটনাটা হচ্ছে গ্রামের খুব সহজ-সরল এবং অতি দরিদ্র এক ভদ্রমহিলার গল্প। অধিকাংশ, বলতে গেলে প্রায় সব ক্ষেত্রেই তালাক দেয় পুরুষ কিন্তু পুরুষকে দোররা দূরের কথা একটা টোকাও দেওয়া হয় না। বরং সে তার আগের বউয়ের বাসর করার (হিল্লা বিয়ে) সময় পাহারায়ও থাকে...!
তো, সবটা ঝড় যায় মহিলার উপর দিয়ে। আপাতত দৃষ্টিতে সামান্য কিন্তু অসামান্য এই ভদ্রমহিলাকেও হিল্লা বিয়ের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল! কালে-কালে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। এমনকি নোবেল পুরষ্কারের জন্য মনোনীতও হয়েছিলেন...!
ভিডিও ঋণ: আর জে কিবরিয়া
No comments:
Post a Comment