লেখক: Muhammad Arif Hossain
পুরান ঢাকা থেইকা ছাত্রীর মা ফোন দিয়া কইলো:
- মাস্টর নি?
- জি আন্টি।
- এই আমি ছেপ ফেললাম। হুগানের আগে আমার বাছায় আইবা।
- কী আশ্চর্য।
কোন এক বৃষ্টির দিনে একজন ফোন দিয়া কইছিলো তোর জন্য একটা ভালো টিউশনি পাইছি।
আমি গেলাম। দেখলাম। পড়াইলাম। এভাবেই চলছিলো। আজ হঠাৎ জরুরি তলফ ক্যান! বুঝতেছি না। আমি বাইর হইলাম। উবারে কইরা রওনা দিলাম। ছেপ হুগাইয়া গেলে বিপদ!
পৌছায়া কলিং বেল চাপলাম। খট কইরা দরজা খুললো। মনে হইলো দরজায় দাঁড়ায়া ছিলো:
- স্লামালাইকুম আন্টি। ছেপ শুকিয়ে গেছে ?
- চুপ রাহো।
পুরাণ ঢাকার মানুষ কথার ফাঁকে-ফাঁকে হিন্দি বলে। আমার ছাত্রীও বলে। ওই দিন বলতেছিলো:
- স্যার আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে?
- কেন ?
- আরে ইয়ার ! বাতাও না !
- কিহ!
- সরি। বলেন না।
- নাই।
- থ্যাংক গড।
ছাত্রীর বডি ল্যাংগুয়েজ সেদিন থেকে বদলে গেল। ঠোঁটে লিপিস্টিকের কালার চেঞ্জ হইতে থাকলো। জামা কাপড় দিন দিন ট্রান্সপারেন্ট হইয়া গেল!
লক্ষন খারাপে দিকে দেখে কয়েকবার ভাবছিলাম টিউশনি ছাইড়া দিমু। কিন্তু পুরাণ ঢাকার বিরিয়ানির নেশা একবার যার হয়, তার ভুঁড়ি হয়ই হয়।
- আন্টি আজকে তো অফ ডে। হঠাৎ ডাকলেন যে ?
আন্টি চোখ রাঙাচ্ছেন। মনে হচ্ছে আমি কোন পাপ করেছি। তবে ভুল বসত একটা কিস করা ছাড়া আমি নির্দোষ। ওয়েদার ভালো ছিলো। আকাশে বজ্রপাত হচ্ছিলো। ছাত্রীও পাশে ছিলো। যাই হোক, সে অন্য প্রসঙ্গ।
- আন্টি...
- আব্বে হালা চুপ হো যা...।
- আ-ন-ন-ন-টি!!
- খবিশ !
- এঁ!
- তুই আমার মাইয়ার লগে কি করছস?
- কি করছি ?
- আমার মাইয়া বমি করবার লাগছে ক্যালা ?
- আমি কিভাবে বলবো!
- তুমি ক্যামতে কইবা? আমগো খানদানের ইজ্জ্বত মাইরা দিছো!
- আসতাগফিরুল্লাহ!
- আমার মাইয়া তো এহনো কলেজ পাসটা দিবার পারে নাইক্কা। আর তুমি ওরে পো...।
- ছি!
ঘটনা এত জট পাকলো কিভাবে বুঝতেছি না। জিজ্ঞেস করলাম:
- ডাক্তার দেখাইছেন ?
- চুপ।
ছাত্রী মাথা নিছু কইরা রুমে ঢুকলো। ওর হাব ভাব দেখলে মনে হয় ভুল করে তিন মাসের পোয়াতি হয়ে গেছে।
- এই সাদিয়া কি হইছে তোমার ?
- মেরা জিন্দেগি তো বরবাদ হো গিয়া।
- ও আল্লাহ!
- স্যার? আপ মুঝকো সাধি কার লো না !
- কিহ!
ছাত্রীর মা আমার দিকে তাকাইয়া আছে। চোখ ভর্তী আগুন। আমি উনার দিকে তাকাইয়া কইলাম:
- আন্টি আমি কিচ্ছু করি নাই।
- আমার মাইয়া আমার কাছে কিছু লুকায় না। সব কইছে আমারে।
- কি বলছে ?
- পড়ানোর ছময় টেবিলের নিচ দিয়া ঘষাঘসি করছো না ?
- আমি করি নাই। আপনার মেয়ে করছে।
- চুম্মা দিছো না ?
- এইটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ছি! মানুষের ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে কথা বলেন কেন?
- আব্বে হালায় কয় কি? আমার বংশের ইজ্জ্বত খাইয়া দিছো
আন্টিরে কেমনে কি বুঝাই। আমি ছাত্রীর দিকে তাকাইলাম। ছাত্রীর মুখ কেমন যেন সন্দেহজনক। সে কি কিছু লুকাচ্ছে!
- সাদিয়া...ঘটনা কি ?
- ছার ! মুই কেমতে কমু! বমি-বমি লাগে। মাথাডা ঘোরে। পেটে কি যেন লাত্থি মারে।
- পেটে লাথি মারে!
আন্টি আপনার মেয়ে যদি পোয়াতী হইয়া থাকে। তাহলে আমারে যে শাস্তি দিবেন। আমি মাথা পাইতা নিমু। তবে আগে ডাক্তার দেখাইতে হবে। ভালো ডাক্তার।
আন্টি রাজি হইলো। আমরা ডাক্তারের চেম্বারে বইসা আছি। ডাক্তার চশমার উপরে দিয়া কইলো :
- রোগী কে ?
- এই-যে, ও। আমি কইলাম
ডাক্তার সাদিয়ারে দেইখা ঘটাঘট কিছু টেস্ট লেইখা দিলো। এক্সরে, সিটি স্ক্যান, ব্লাড টেস্ট, আলট্রাসনো, আরো কয়েকটা টেস্ট।
১৬ হাজার টাকা গেল টেস্ট করাইয়া। ডাক্তারদের থেকে ভালো বিজনেস বুঝবে আর কে। রিপোর্ট দেইখা ডাক্তার মুছকি হাসি দিলো। আমি বল্লাম: কি ব্যাপার স্যার ?
- কনগ্রেটস।
- মানে ?
- ছেলে না মেয়ে ছার? সাদিয়ার প্রশ্ন।
- বিরিয়ানি, ডাক্তারের জবাব।
- এঁ!
আমি বললাম, স্যার ও যে কইলো বমি বমি লাগে। মাথা ঘুরে। পেটে লাত্থি মারে ?
ডাক্তার চশমা মুছতে মুছতে বললেন:
-এজন্যই সিটি স্ক্যান করাইতে দিয়েছিলাম। মাথায় সমস্যা আছে কিনা দেখার জন্য। কিন্তু অল ক্লিয়ার। এটা বয়সের দোষ। ছাত্রী আপনাকে পছন্দ করে। তাই মনে হয় ড্রামা করছে।
আমি ছাত্রীর মায়ের দিকে তাকাইলাম। তিনি একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললেন:
-মাস্টর সাব, মনে কিছু নিয়েন না। মাইয়া আমার ড্রামাবাজ। আমার অক্ষন মনে পড়ছে। ফ্রিজে বাসি বিরিয়ানি ছিলো। ও সেগুলা খাইয়া-ই এইসব করছে।
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ছাইড়া কইলাম:
সাদিয়ারা এমনই হয়...!
পুরান ঢাকা থেইকা ছাত্রীর মা ফোন দিয়া কইলো:
- মাস্টর নি?
- জি আন্টি।
- এই আমি ছেপ ফেললাম। হুগানের আগে আমার বাছায় আইবা।
- কী আশ্চর্য।
কোন এক বৃষ্টির দিনে একজন ফোন দিয়া কইছিলো তোর জন্য একটা ভালো টিউশনি পাইছি।
আমি গেলাম। দেখলাম। পড়াইলাম। এভাবেই চলছিলো। আজ হঠাৎ জরুরি তলফ ক্যান! বুঝতেছি না। আমি বাইর হইলাম। উবারে কইরা রওনা দিলাম। ছেপ হুগাইয়া গেলে বিপদ!
পৌছায়া কলিং বেল চাপলাম। খট কইরা দরজা খুললো। মনে হইলো দরজায় দাঁড়ায়া ছিলো:
- স্লামালাইকুম আন্টি। ছেপ শুকিয়ে গেছে ?
- চুপ রাহো।
পুরাণ ঢাকার মানুষ কথার ফাঁকে-ফাঁকে হিন্দি বলে। আমার ছাত্রীও বলে। ওই দিন বলতেছিলো:
- স্যার আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে?
- কেন ?
- আরে ইয়ার ! বাতাও না !
- কিহ!
- সরি। বলেন না।
- নাই।
- থ্যাংক গড।
ছাত্রীর বডি ল্যাংগুয়েজ সেদিন থেকে বদলে গেল। ঠোঁটে লিপিস্টিকের কালার চেঞ্জ হইতে থাকলো। জামা কাপড় দিন দিন ট্রান্সপারেন্ট হইয়া গেল!
লক্ষন খারাপে দিকে দেখে কয়েকবার ভাবছিলাম টিউশনি ছাইড়া দিমু। কিন্তু পুরাণ ঢাকার বিরিয়ানির নেশা একবার যার হয়, তার ভুঁড়ি হয়ই হয়।
- আন্টি আজকে তো অফ ডে। হঠাৎ ডাকলেন যে ?
আন্টি চোখ রাঙাচ্ছেন। মনে হচ্ছে আমি কোন পাপ করেছি। তবে ভুল বসত একটা কিস করা ছাড়া আমি নির্দোষ। ওয়েদার ভালো ছিলো। আকাশে বজ্রপাত হচ্ছিলো। ছাত্রীও পাশে ছিলো। যাই হোক, সে অন্য প্রসঙ্গ।
- আন্টি...
- আব্বে হালা চুপ হো যা...।
- আ-ন-ন-ন-টি!!
- খবিশ !
- এঁ!
- তুই আমার মাইয়ার লগে কি করছস?
- কি করছি ?
- আমার মাইয়া বমি করবার লাগছে ক্যালা ?
- আমি কিভাবে বলবো!
- তুমি ক্যামতে কইবা? আমগো খানদানের ইজ্জ্বত মাইরা দিছো!
- আসতাগফিরুল্লাহ!
- আমার মাইয়া তো এহনো কলেজ পাসটা দিবার পারে নাইক্কা। আর তুমি ওরে পো...।
- ছি!
ঘটনা এত জট পাকলো কিভাবে বুঝতেছি না। জিজ্ঞেস করলাম:
- ডাক্তার দেখাইছেন ?
- চুপ।
ছাত্রী মাথা নিছু কইরা রুমে ঢুকলো। ওর হাব ভাব দেখলে মনে হয় ভুল করে তিন মাসের পোয়াতি হয়ে গেছে।
- এই সাদিয়া কি হইছে তোমার ?
- মেরা জিন্দেগি তো বরবাদ হো গিয়া।
- ও আল্লাহ!
- স্যার? আপ মুঝকো সাধি কার লো না !
- কিহ!
ছাত্রীর মা আমার দিকে তাকাইয়া আছে। চোখ ভর্তী আগুন। আমি উনার দিকে তাকাইয়া কইলাম:
- আন্টি আমি কিচ্ছু করি নাই।
- আমার মাইয়া আমার কাছে কিছু লুকায় না। সব কইছে আমারে।
- কি বলছে ?
- পড়ানোর ছময় টেবিলের নিচ দিয়া ঘষাঘসি করছো না ?
- আমি করি নাই। আপনার মেয়ে করছে।
- চুম্মা দিছো না ?
- এইটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ছি! মানুষের ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে কথা বলেন কেন?
- আব্বে হালায় কয় কি? আমার বংশের ইজ্জ্বত খাইয়া দিছো
আন্টিরে কেমনে কি বুঝাই। আমি ছাত্রীর দিকে তাকাইলাম। ছাত্রীর মুখ কেমন যেন সন্দেহজনক। সে কি কিছু লুকাচ্ছে!
- সাদিয়া...ঘটনা কি ?
- ছার ! মুই কেমতে কমু! বমি-বমি লাগে। মাথাডা ঘোরে। পেটে কি যেন লাত্থি মারে।
- পেটে লাথি মারে!
আন্টি আপনার মেয়ে যদি পোয়াতী হইয়া থাকে। তাহলে আমারে যে শাস্তি দিবেন। আমি মাথা পাইতা নিমু। তবে আগে ডাক্তার দেখাইতে হবে। ভালো ডাক্তার।
আন্টি রাজি হইলো। আমরা ডাক্তারের চেম্বারে বইসা আছি। ডাক্তার চশমার উপরে দিয়া কইলো :
- রোগী কে ?
- এই-যে, ও। আমি কইলাম
ডাক্তার সাদিয়ারে দেইখা ঘটাঘট কিছু টেস্ট লেইখা দিলো। এক্সরে, সিটি স্ক্যান, ব্লাড টেস্ট, আলট্রাসনো, আরো কয়েকটা টেস্ট।
১৬ হাজার টাকা গেল টেস্ট করাইয়া। ডাক্তারদের থেকে ভালো বিজনেস বুঝবে আর কে। রিপোর্ট দেইখা ডাক্তার মুছকি হাসি দিলো। আমি বল্লাম: কি ব্যাপার স্যার ?
- কনগ্রেটস।
- মানে ?
- ছেলে না মেয়ে ছার? সাদিয়ার প্রশ্ন।
- বিরিয়ানি, ডাক্তারের জবাব।
- এঁ!
আমি বললাম, স্যার ও যে কইলো বমি বমি লাগে। মাথা ঘুরে। পেটে লাত্থি মারে ?
ডাক্তার চশমা মুছতে মুছতে বললেন:
-এজন্যই সিটি স্ক্যান করাইতে দিয়েছিলাম। মাথায় সমস্যা আছে কিনা দেখার জন্য। কিন্তু অল ক্লিয়ার। এটা বয়সের দোষ। ছাত্রী আপনাকে পছন্দ করে। তাই মনে হয় ড্রামা করছে।
আমি ছাত্রীর মায়ের দিকে তাকাইলাম। তিনি একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললেন:
-মাস্টর সাব, মনে কিছু নিয়েন না। মাইয়া আমার ড্রামাবাজ। আমার অক্ষন মনে পড়ছে। ফ্রিজে বাসি বিরিয়ানি ছিলো। ও সেগুলা খাইয়া-ই এইসব করছে।
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ছাইড়া কইলাম:
সাদিয়ারা এমনই হয়...!
No comments:
Post a Comment