গুলশান হামলায় হাসনাত রেজা করিম এবং তাহমিদ হাসিব খান জড়িত থাকলে তাদের অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি হউক এতে কোনও দ্বিমত নাই। তবে হাসনাত অপরাধী চিহ্নিত হলে আমার চেয়ে হতবাক আর কেউ হবে না কারণ অতি নিকৃষ্ট কোনও অপরাধীও এমন নির্বোধ, কল্পনাতীত আচরণ করবে না।
আমার মত বোকাসোকা মানুষের মাথায় এটা আসে না যে এমন একটা দক্ষযজ্ঞে, এমন একটা ভয়ংকর কর্মকান্ডে হাসনাতের সশরীরে উপস্থিত থাকার আদৌ প্রয়োজন কী! তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম তার উপস্থিতি ব্যতীত উপায় ছিল না। বেশ, কিন্তু এমন একটা স্থান, যেখানে পুলিশ-আর্মি-জঙ্গির ফসকে যাওয়া গুলিতে যে-কারও মারা যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল সেখানে প্রিয়মানুষকে, স্ত্রী-সন্তানকে রাখতে হবে কেন? এটা তো রগরগে কোনও থ্রিলারকেও হার মানায়।
এই সব গুছিয়ে যদি হাসনাত এই প্ল্যানটা করে থাকে তাহলে বলতে হবে হাসনাতের মত মানুষ কেবল এই দেশেই না এই গ্রহেও বিরল! এমন একটা মানুষের পদোদক, পা চুবনেো পানি না-খেয়ে সকালে ব্রেকফাস্ট করাটা সমীচীন হবে না।
এমন একটা দেশে বসবাস করি যেখানে নিজের উপরই আস্থা হারিয়ে ফেলি সেখানে কার কথায় বিশ্বাস করব সেটাই তো বুঝে উঠতে পারি না!
কী বিচিত্র এই দেশ! ৩২ দিন পর হাসনাত রেজা করিম এবং তাহমিদ হাসিব খানের খোঁজ পাওয়া গেল! কী খোঁজ, কেমনতরো খোঁজ? ৩২ দিন পর ফৌজদারি ৫৪ ধারায় পুলিশ তাদেরকে আটক করেছে। ৫৪ ধারা নামের কালো আইন নিয়ে এখানে আলোচনা করি না।
তা এই ৩২ দিন ধরে এই দু-জন মানুষ কোথায় ছিলেন? এই নিয়ে ইঁদুর-বেড়াল টাইপের একটা খেলা চলছিল। পুলিশ বলে আসছিল গুলশান হামলার পর এদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর-পরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল কিন্তু এদের পরিবারের লোকজন ক্রমাগত বলে আসছিলেন যে এরা তাদের কাছে নাই।
প্রকারান্তরে বলা এরা পুলিশের কাছে বা সরকারের হেফাজতে আছেন। আমার মত কমবুদ্ধির লোকজনরা পড়লাম গিয়ে বিপদে- সোজা গাড্ডায়। কার কথা বিশ্বাস করব?
আর সরকার তো এর দায় এড়াতে পারে না। এদের কার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল? কোনও আইনজীবী, খুব কাছের কোনও স্বজনের কাছে তাহলে তো আর তাদের পরিবারের এই নিয়ে উচ্চবাচ্য করার সুযোগ থাকত না আমরাও দু-কথা শুনিয়ে দিতে পারতাম না।
তা ৩২ দিন ধরে এই মানুষগুলো ছিলেন কোথায়? পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন? না আকাশ পাড়ি দিয়েছিলেন নাকি পাতালে সেঁধিয়ে গিয়েছিলেন? সরকার ব্যতীত এই সমস্ত তথ্যসেবা পাওয়ার তো কোনও যো নাই। আহা, সরকার বেচারা কী করবে, কত করবে- আমাদের স্বল্প করের টাকায় কত আর তথ্যসেবা দেবে?
এই তো সেদিন আমাদের অর্থমন্ত্রী মহোদয় বেসরকারি খাত প্রসঙ্গে বলছিলেন, “সরকারের সহায়তা পাওয়ার জন্য বেসরকারি খাতকে আরও রাজস্বের যোগান দিতে হবে, বর্তমান রাজস্ব দিয়ে হবে না।”
এ-ই এলো বলে, সরকারের তথ্যসেবা পাওয়ার জন্য সাধারণ জনগণকে আরও করের টাকার যোগান দিতে হবে, বর্তমান করের টাকায় হবে না…।
No comments:
Post a Comment