Search

Sunday, September 7, 2014

একমেবাদ্বিতীয়ম!

আমাদের দেশে সাহিত্যের দন্ড এখন আনিসুল হক গংদের হাতে। এটা জানার জন্য আদৌ বিস্তর গবেষণার প্রয়োজন পড়ে না। ফি বছর বইমেলার সময় জোট ছাড়ে দুধের দুধ পানির পানি। গোটা দেশের খাল-বিল, নদী-নালা, সাগর সবই আনিসুল হক গংদের বইয়ের বিজ্ঞাপনে ভেসে যাবে। বানের জলে ভেসে যাবেন শওকত ওসমান, রশীদ করিম, সরদার ফজলুল করিম প্রমুখ।

আনিসুল হক যে কেবল বিখ্যাত লেখক এমনই না তিনি অসম্ভব নরোম মনের মানুষও একজন। পারতপক্ষে কাউকে ক্লেশ দিতে চান না, প্রকাশককেও। তাই তো তিনি নিজের ব্‌ইয়ের বিজ্ঞাপন নিজেই দেন [১]। তার মুদ্রিত বই প্রেস থেকে মেলায় যওয়ার যো নেই- রাজপথেই লোকজনেরা কিনে ফেলে! মুদ্রণের পর মুদ্রণ শ্যাষ এই জটিল আঁকটাও আনিসুল হক নিজেই কষে ফেলেন যেটা আমরা তার দেওয়া বিজ্ঞাপনেই দেখতে পাই। 

সম্প্রতি প্রথম আলোর ঈদসংখ্য্যায় আনিসুল হকের দুর্ধর্ষ প্রেমের উপন্যাস পড়ার বিরল সৌভাগ্য আমার হয়েছে। পত্রিকায় চাকরি করার সুবাদেিএখানে লেখা আপনাআপনি ছাপা হয়ে যায়। পাঠক বেচারার না-পড়ে উপায় আছে! আনিসুল হকের প্রেমের উপন্যাসটার নাম হচ্ছে, ‘বিক্ষোভের দিনগুলোতে প্রেম’।
সময়টা এরশাদের। ‘আবীর’ বুয়েটে পড়ে। ‘শানু’ নামের একটা মেয়ের সঙ্গে কঠিন পত্রমিতালি চালিয়ে যায়। এখনকার ছেলেপেলো অবশ্য পত্রমিতালি বিষয়টা খুব ভাল একটা বুঝবে না- এখন হচেছ এসএমএস-ফোন-ভিডিও কলের যুগ। এই শানু মেয়েটির সঙ্গে আবীরের অবশ্য হলের ল্যান্ডফোনে কথাও হয়।

শানু মেয়েটি একদিন দেখা করার জন্য আবীরের হলে চলে আসে। তাহাদের প্রথম সাক্ষাৎ। আমরা আনিসুল হকের মুখেই শুনি:
...ঈর্ষাম্বিত অনেকগুলো চোখের সামনে দিয়ে শানুকে নিয়ে আবীর অতিথিকক্ষে প্রবেশ করে। শহীদ স্মৃতি হলের অতিথিকক্ষটা ছোট।
... শানু বলে, ব্রেক ফাস্ট করেছ? 
(আবীর) না। ঘুম থেকে তো ডেকে তুলল। করিনি। 
...আবীর উঠে গেস্ট রুমের দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দেয়। শানু উঠে দাঁড়িয়েছে। আবীর তাকে আলিঙ্গনে বাঁধে। 
শানু বলে, নাও, তোমার ব্রেক ফাস্ট। খাও। 
শানু তার ঠোঁট বাড়িয়ে দেয়।...” 

প্রথম সাক্ষাতেই শানুর এহেন আচরণে অনেকে বিভ্রান্ত হবেন। আমার মত সাধারণ পাঠক বিড়বিড় করবে, ‘নিমফোম্যানিয়াক’! কিন্তু যারা আনিসুল হকের অন্যান্য অতুলনীয় সাহিত্য পাঠ করেছেন তারা গা দুলিয়ে বলবেন, এমনটা হতেই পারে, আলবত। যেমন ‘আমারও একটি প্রেমকাহিনি আছে' পুস্তকে আনিসুল হকের গল্পের মেয়েটির একটি ছেলেকে দেখে প্রতিক্রিয়া এমন: "আমার বুক কাঁপছে। পেটের ভেতরে গুড়গুড় করছে...।"
কেন মেয়েটির পেটের ভেতরে গুড়গুড় করছে এটা আমাকে জিজ্ঞেস করা অবান্তর। এটা ডাক্তার ভাল বলতে পারবেন অথবা আনিসুল হক।

যাই হোক, আমরা ফিরে যাই ‘বিক্ষোভের দিনগুলোতে প্রেম’ নামের লেখাটায়। আবীরের সঙ্গে শানুর দ্বিতীয় সাক্ষাৎ। আনিসুল হক লিখেছেন:
...শানুকে রুমে নিয়ে এল আবীর। পুরো হলে আর কেউ নেই। শুধু একটা বন্ধ কক্ষে শানু আর আবীর। 
 ...শানু তাকে (আবীর) জড়িয়ে ধরে বলল, আমাকে আদর করো, অ্যাবস। 
...আবীর বলল, জামাটা নষ্ট হচ্ছে। খুলে রাখো। 
শানু জামা খুলল। 
আবীর বলল, তোমার তলপেটে এটা কিসের দাগ? 
(শানু) সেলাইয়ের। সিজারিয়ান বেবি হয়েছে আমার। 
...আবীর কী করবে বুঝতে পারে না। 
শানু বলে, কাম অন ডারলিং...সে (শানু) নেতৃত্ব নিজের হাতে তুলে নেয়। "

এভাবেই শানু ‘ইয়ের’, নেতৃত্ব তুলে নেয় নিজের হাতে। যেমনটা এই দেশের সাহিত্যের নেতৃত্ব তুলে নেন আনিসুল হক নিজের হাতে।

১. আনিসুল হক: একজন আদর্শ সাহিত্যিক: http://www.ali-mahmed.com/2010/02/blog-post_07.html

No comments: