হাইকের্টের নির্দেশ অনুযায়ী আসামির সঙ্গে পুলিশের আচরণ বিষয়ে ১২ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অসাধারণ একটা কাজ হয়েছে। আমি পূর্বেও লিখেছিলাম, এই দেশের সব কিছু যখন নষ্টদের দখলে চলে যায় তখন আমাদের আর দাঁড়াবার কোন জায়গা থাকে না। তখন হাইকোর্টই আমাদের শেষ ভরসাস্থল।
এই দেশে ক্ষমতায় যে যখন আসেন পুলিশকে তাদের নিজস্ব লোক হিসাবেই ব্যবহার করে থাকেন। ফল যা হওয়ার তাই হয়! যথারীতি পুলিশ সময়মতো পৌঁছতে পারে না- [১] অপরাধি চোখের সামনে ঘুরে বেড়ালেও তাকে দেখতে পায় না [২]! উপরওয়ালার নির্দেশ ব্যতীত এরা কিছু্ই করতে পারেন না [৩] [৪] [৫], এই খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে কেউ তো আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি [৫]। কী হাস্যকর!
তখন গায়ে সরকারি পোশাকে এই সব মানুষগুলো কতটা হিংস্র হয়ে উঠে এর উদাহরণ দিয়ে শেষ করা যাবে না। এরা তখন কাউকে তোয়াক্কা করেন না। খানিকটা আঁচ করা যাবে এই লেখায় [৬]।
এমনিতেও বেঙ্গল ওরফে পুলিশের বিপুল ক্ষমতা। আর্মি, বিডিআর, র্যাব যে কেউই কোন আসামি পাকড়াও করুক না কেন সোপর্দ করতে হবে পুলিশের কাছে। অন্য সংস্থার কেউ একজন প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে একজন অপরাধিকে পাকড়াও করলেও, পুলিশ লেনদেনের বিনিময়ে সেই আসামিকে ছেড়ে দিলে বা মামলা দুর্বল করে দিলে কারও কিচ্ছু বলার নেই! পুলিশ কারও কাছ থেকে টাকা না পেয়ে বা ফাঁসাতে না পেরে গুলি করে মেরে ফেললে কিচ্ছু হবে না। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হলে হয়তোবা পুলিশ লাইনে তাকে ক্লোজ করা হবে। কিছুটা সময় পার হলে তিনি আবারও টাকা-পয়সা লেনদেন করে নব-উদ্যোমে নতুন কোন একটা জায়গায় পোস্টিং নিয়ে নেবেন।
হাইকোর্ট এখন এদের থামাবার জন্য কিছু দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। আন্তরিক সাধুবাদ জানাই। কিন্তু মাননীয় হাইকোর্টের কাছে আমার কিছু প্রশ্ন ছিল। আমি জানি, আপনারা বলবেন, সব কিছু দেখার এখতিয়ার আমাদের নাই। তবুও আপনাদের সদয় অবগতির জন্য বলি:
এক: মাননীয় হাইকোর্ট, আপনারা কি সদয় অবগত আছেন, নিম্ন-কোর্ট বিশেষ করে সিএমএম আদালতের সার্বিক অবস্থা কেমন?
কখনও ওখানে গেলে দেখবেন লোকে গিজগিজ করছে। কোর্ট-রুমে একটা সুই ফেলারও জায়গা নেই। যখন যার খুশি ঢুকছে, বেরুচ্ছে, পাশের বারান্দায় বাদামওয়ালা বাদাম বিক্রি করছে, চা-ওয়ালা হেঁকে যাচ্ছে। এমন হইচই বাজারের মত অবস্থায় ন্যায় বিচার করাটা কতটা দুরূহ তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করাটা কঠিন। কোন আসামীর নাম ডাকা হলে সেই আসামি আদৌ সেই ব্যক্তিই কি না এটা জানার কোন উপায় থাকে না!
দুই: মাননীয় হাইকোর্ট, আপনারা কি অবগত আছেন, ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য একজন মানুষকে পদে পদে কত ধরনের অন্যায়ের মুখোমুখি হতে হয়। মামলাসংক্রান্ত একটা নকল-অনুলিপি উঠাবার জন্য কত জায়গায় টাকার লেনদেন হয়? সরকারি ফি ১০০ হলে কেউ ১০০০ নীচে আনতে পারলে আমি লেখালেখি ছেড়ে দেব।
তিন: মাননীয় হাইকোর্ট, আপনারা কি অবগত আছেন, একটা সমন এক বছরেও জারী করা যায় না, তদ্বীরের অভাবে। তদ্বির আর কিছু না, সমন জারী করার জন্যে মোটা অংকের টাকা দিয়ে আসা। একটা মামলা শেষ হতে যদি বছরের পর বছর লাগে সেই ন্যায়বিচার আর অবিচারের মধ্যে মোটা দাগের ফারাক কোথায়! কোথায় জাস্টিস [৭]?
পুলিশের প্রতি দিক-নির্দেশনা দেয়াটা অতি জরুরি ছিল কিন্তু মূল ধরে টান না দিলে বাস্তবায়িত হবে কেমন করে? মাননীয় হাইকোর্ট আপনারা কি জানেন, নির্বাচনের মত একটা অতি ঝুকিপূর্ণ এলাকায় দায়িত্ব থাকা এএসপি পদপর্যাদার একজন পুলিশ অফিসারের খাবারের খরচ দৈনিক ২৫ টাকা! কোন হোটেলে তিনবেলা ২৫ টাকায় খাওয়া যায় সেই হোটেলটার নাম আমরা জানতে চাই।
আপনারা কি অবগত আছেন, থানাহাজতে পুলিশের দায়িত্বে থাকা একজন হাজতির জন্য সরকার থেকে বরাদ্ধ দৈনিক ১০ টাকা! এই ১০ টাকা দিয়ে তো তিন বেলা বাদামও কিনে খাওয়া সম্ভব না।
পুলিশের কোন অর্জনকে কেন খাটো করা হয় [৮]- নায়ককে নায়ক বলতে সমস্যা কোথায়? আর এই দেশে সবাই দলবাজি করবে, পুলিশ করবে না কেন [৯]!
পুলিশের হাতে বিপুল ক্ষমতা, বেসুমার টাকার হাতছানি। এদের আর আট-দশটা পেশার সঙ্গে তুলনা করলে তো হবে না, বা অন্যদের সঙ্গে মিলিয়ে বেতন দিলে। আলাদা করে ভাবতে হবে।
এবং পেটমোটা সব পুলিশ স্যারদের বিদায় করে চৌকশ ছেলেপুলে ভর্তি করতে হবে। এদের এই নিশ্চয়তাও দিতে হবে দায়িত্ব পালনকালে কোন পুলিশের মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব সরকার নেবে। পুলিশদের নজরদারি করার জন্য আলাদা একটা বিভাগ থাকবে। ওই বিভাগ কেমন করে কাজ করবে এটা আমার শিখিয়ে দেয়ার কিছু নেই। হতে পারে মানুষটা একজন কনস্টেবল বা থানার সামনে বসে থাকা মুচি। যেখানে অভিযোগ পাওয়া যাবে সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত শুরু করতে হবে। প্রমাণিত হলে আমজনতার যে সাজা হয় এদেরও তাই হবে। যেটা অপরাধের উপর নির্ভর করবে, সেটা ১ মাসের জেল নাকি ফাঁসি সেটা এখানে আলোচ্য বিষয় না।
পুলিশকে ঢেলে না সাজালে যতই নির্দেশনা দেয়া হোক আখেরে খুব একটা ভালো ফল দেবে বলে আমি মনে করি না।
সহায়ক লিংক:
১. পুলিশ লিখবে কবিতা: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_09.html
২. হরেক রকম জামা...: http://www.ali-mahmed.com/2010/07/blog-post_09.html
৩. ফতোয়াবাজ: http://www.ali-mahmed.com/2010/06/blog-post_11.html
৪. দোররা: http://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_24.html
৫. একজন আমিনী: http://www.ali-mahmed.com/2010/03/blog-post_17.html
৬. পুলিশ জনগণের বন্ধু: http://www.ali-mahmed.com/2010/07/blog-post_08.html
৭. জাস্টিস: http://www.ali-mahmed.com/2010/02/blog-post_08.html
৮. নায়ক: http://www.ali-mahmed.com/2010/01/blog-post_25.html
৯. দলবাজ: http://www.ali-mahmed.com/2009/12/blog-post_19.html
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Monday, July 12, 2010
মাননীয় হাইকোর্ট, মুদ্রার অন্য পিঠও দেখুন, প্লিজ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment