খুব ছোটবেলায় রাশিয়ান একটা গল্প পড়েছিলাম, লেখকের নাম আজ আর মনে নেই। এই গল্পটার খানিকটা অন্য একটা লেখায়ও ব্যবহার করেছিলাম। মূল গল্পটা এমন। তেমন কিছুই মনে নেই, নিজের মত করে বলি:
"কুয়োতলায় সব মা-রা বসে গল্পগুজব করছেন। প্রত্যেকের মা-র সন্তানরা পাশেই খেলা করছিল। এদের প্রত্যেকেরই নিজেদের সন্তানদের নিয়ে অহংকারের শেষ নেই। কারও সন্তান ডিগবাজি খাচ্ছে, কারও সন্তান বুক-ডন করে দিচ্ছে।
এদের মধ্যে একজন মা চুপ করে বসে ছিলেন। সবাই বলল, কি গো, তোমার সন্তান-ছাওয়ালরে ডাকলা না!
মা-টা বিমর্ষ মুখে বললেল, আমার বাবুটার তো বলার মত কোন গুণ নাই।
বলেই তিনি দু-হাতে দুটা বালতি উঠিয়ে হাঁটতে লাগলেন। কোত্থেকে যেন ওই মা-টার দুর্বল, কালো-লিকলিকে সন্তানটা ধুলো উড়াতে উড়াতে এলো। মার হাত থেকে ভারী বালতি ছিনিয়ে চোখ পাকিয়ে বলল, মা, তুই পাগল হইছস, তুই এইটা নিতে গিয়া হাত-পা ভাঙ্গবি। তুই আরেকদিন এমুন করলে আমার মরা মুখ দেখবি।"
আসলে এমন গল্প পড়ে আমার বুকের ভেতর থেকে হাহাকার বেরিয়ে আসে, আহা, এমন একটা গল্প যদি আমি লিখতে পারতাম! লিখতে না পারলেও চেষ্টা করতে দোষ কী?
একজন মা-দেশমা। এই মাটা বড্ডো দুখি, বড়ো অসহায়। গ্রাম্য এই মাটার শরীরটা শস্তা-খাটো কাপড়ে কী আর ঢাকে, কাপড় সামলাতে সামলাতেই বেচারির দিন যায়! তবুও মাটা কাউকে কিচ্ছু বলে না, কিচ্ছু জানতে দেয় না। কেবল ভেজা-বড়ো বড়ো চোখ করে তার সন্তানদের জন্য মমতার কলস উপুড় করে দেয়।
তাঁর সন্তানদের মধ্যে একটা সন্তান, ছোটটা- অপদার্থ, দুর্বল, কালো লিকলিকে। সবাই তাকে বড়ো তাচ্ছিল্য করে। সেই বোকাসোকাটার আবার নিরিবিলিতে থাকতেই বড়ো পছন্দ করে, গাছের নীচে বসে এটা-সেটা কতো কিছু ভাবে, ছাই! মার জন্য ওর ভারী মায়া কিন্তু বেচারা, কী করবে মার জন্য? ওর সেই সামর্থ্য কই?
অন্য ভাইরা ধাঁ ধাঁ করে তালগাছ হয়ে যাছে- কত্তো কত্তো জিনিস ওদের কাছে, অর্থ-সম্পদ-শিক্ষা-বুদ্ধি, কী নেই?
শয়তান এবং মানুষকে এই ছোট্ট গ্রহে নামিয়ে দিয়ে তিনি তাঁর অনন্ত ভ্রমনে আছেন। শয়তানেরর সুখের শেষ নেই, মানুষের পেছনে লেগে থাকাই তার কাজ। শয়তান তো শয়তানই, তার আকারের অভাব কি। একদিন সাধুর রূপ ধারণ করে সে ওই দুখি মাটার সন্তানদের কাছে এসে একেকজনের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলল, লোভ দেখাল।
শয়তান বড়ো সন্তানকে বলল, বর হিসাবে তোমার ঝুলিতে আমি আরও শিক্ষা দেব। কেবল তুমি আজীবন এটা বলে আসবে, তুমি জারজ সন্তান।
বড় সন্তান বলল, আমি নিজেকেই তো এটা বলব, সমস্যা কি!
শয়তার মধ্যম সন্তানের কাছে গিয়ে একই কথাটা অন্য রকম করে পাড়ল, তুমি নিজেকে জারজ সন্তান বলে স্বীকার করলে আমি তোমাকে অনেক সম্পদ দেব, রাজী?
মধ্যম সন্তান বলল, হুঁ, নিজেকেই তো বলব, এ আর কঠিন কী!
আফসোস, এরা কেউই ভেবে দেখল না, এটা বলা মানেই হচ্ছে প্রকারান্তরে নিজের মাকে বেশ্যা বলে স্বীকার করে নেয়া।
শয়তান গেল সেই ছোট সন্তানটা কাছে। শয়তানের সেই একই বক্তব্য।
সেই সন্তানটা সাধুরূপি শয়তানের চোখে চোখ রেখে বলল, কি বলছেন আপনি! এইটা বললে আমার মাকে গালি দেয়া হয়। সাধু মানুষ আপনি, প্রথমবার না বুঝে বলছেন, মাফ করে দিলাম। আরেকবার আমার মারে গালি দিলে আপনাকে আমি খুন করে ফেলব। ঈশ্বরও আপনাকে বাঁচাতে পারবেন না, স্রেফ খুন হয়ে যাবেন।
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Saturday, April 17, 2010
দেশমা এবং তাঁর খুনি সন্তানটা
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
6 comments:
চোর বলেছেন: এই পুরস্কারে খুশি হলে শুভ মাই অ্যাস! - এর বেশি কিছু বলার নাই। http://raselpervez.amarblog.com/posts/104032
আতিক,
আপনার লিংক দেখলাম। এই মন্তব্যটা পড়লাম।
যিনি এই মন্তব্যটা করেছেন, সঙ্গত কারণেই আমি ওনার নাম (নিকটা) এখানে লিখতে চাচ্ছি না কারণ এতে ওনার মা'র অসম্মান করা হয়; প্রকারান্তরে ওনার মা হবেন (নিক)...এর মা। এটা আমি করতে পারি না, যেমন পারি না বাংলাদেশ নামের দেশমার অসম্মান করার স্পর্ধা।
ওনার মন্তব্য নিয়ে আমার কোন বক্তব্য নাই, এটা একজন মানুষের স্বাধীনতা- কেউ ছুঁরি দিয়ে আপেল কেটে খায়, কেউ চোখ উপড়ে ফেলে! ছুঁরিটা কার হাতে সেটাই বিবেচ্য।
প্লিজ, এরপর থেকে কেউ এ ধরনের কোন লিংক আমার এখানে দেবেন না। আমার উপর চাপ পড়ে। যার যেখানে ভাল লাগে সেখানে বলুক না, আমার কী!
আমি এই সম্মানে আনন্দিত হবো, নাকি বিষাদগ্রস্ত এটা তো জনে জনে ব্যাখ্যা দেব না। আমার আনন্দ-বেদনার ছড়ি আমি কারও হাতে তুলে দিতে চাই না।
ডয়েচে ভেলে-জার্মানরা এই সম্মানটা দিচ্ছে, আমার এতো সময় কোথায়, হিটলারের বিচার করতে ঝাপিয়ে পড়ব?
প্রসঙ্গটা যখন চলে এলো তখন বলি, ডয়েচে ভেলে রেডিও থেকে আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আপনি কি কখনও ভেবেছেন, জার্মানি আসবেন?
আমার স্পষ্ট উত্তর ছিল, দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়াব এমন কোন ইচ্ছা আমার কখনই ছিল না। আমি জার্মানি গেলাম কি গেলাম না এটা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। আমি ঘরকুনো টাইপের মানুষ- আমার বাসায় যাওয়ার রাস্তাটা স্বর্গে যাওয়ার রাস্তা।
আমার এটাই বড়ো আনন্দ যে কোন ভাবেই হোক সাদা চামড়াদের কাছে বারবার বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ শব্দটা ঘুরেফিরে এসেছে। এই আনন্দটা আমার নিজের আনন্দকে ছাড়িয়ে যায়।
আফসোস, রেডিও সাক্ষাৎকারটা নেয়া হয়ে গেছে, খানিকটা সম্প্রচারও হয়ে গেছে নইলে এদের বলতাম, আগের বক্তব্য আমি পরিবর্তন করতে চাই, হিটলারের বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই পুরষ্কার আমি গ্রহন করতে পারি না।
আহা, এই সুযোগটা এখন আর নাই। এখন আমার কি হবে!
আপনি তো চমতকার করে লিখেন।
ধন্যবাদ। লেখার চেষ্টা করি @তারেক
Chor namer posota akta osusto prani, susantor poste aro kicho montobbo declam. Apni nised korechen bole link delam na.
দয়া করে এই সব মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন। আমার জটিলতা ভালো লাগছে না। একবার ইচ্ছা করছিল এই সাইটটা ব্লক করে দেই কিন্তু আমাকে যারা গভীর মমতায় ভোট দিয়েছেন তাঁদের কী দোষ, কেবল এই একটা কারণেই কাজটা করতে পারলাম না!
আবারও অনুরোধ করি, অন্যত্র কে কি বলছে তা আমার এখানে শেয়ার করার প্রয়োজন নাই। @Rohan
Post a Comment