
খালেদা জিয়া বলেছেন, "এ সরকারের আমলে ২০ শতাংশ নারী নির্যাতনের শিকার।... সরকারদলীয় সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগ দ্বারাই বেশির ভাগ নারী নির্যাতিত।"
আমি গভীর ভাবনায় তলিয়ে গিয়েছিলাম, অংকে আমি বড়ো কাঁচা- আঁক কষতে না পারার কারণে মাস্টার মশাই আমার উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। পারলে ডাস্টার ছুঁড়ে মারেন!
ম্যাট্রিকে খালেদা জিয়া গণিতে ৫০ পেয়েছিলেন। তাই কি নিখুঁত ২০ শতাংশ বললেন? হিসাবটা কেন ১৯ শতাংশ না, কেনই বা ২১ শতাংশ না?
বিষয়টা অনেকটা এমন কেউ প্রতিদিন ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে যায়। ৫০০ টাকাই খরচ হয়; ৫০১ টাকা না, ৪৯৯-ও না!
আচ্ছা, ২০ শতাংশ হিসাবটা কি এমন? ১৯.৫১ হওয়ায় ২০ ধরা হয়েছে? বা ২০.৪৯ হওয়ায় ২০ না ধরে উপায় ছিল না?
সৈয়দ আশরাফ মানুষটার প্রতি আমার আলাদা সমীহ আছে। এই দলে যে অল্প ক-জন চমৎকার মানুষ আছেন, তিনি তাঁদের একজন। সৈয়দ আশরাফ এই প্রসঙ্গে পাল্টা উত্তরে বলেছেন, "২০ ভাগ নারী অর্থাৎ ১ কোটি ৬০ লাখ নির্যাতিতা নারীর নাম-ঠিকানা আমাদের জানান...।"
তাঁর এই বক্তব্যে আমি হাতে কিল মেরে বলি, কিস্তি মাত! সৈয়দ আশরাফ এই একটা চালেই দাবার ছক পাল্টে দিলেন। আমি অবাক হয়ে ভাবছিলাম, বাহ, এই মানুষটা দেখি আমাদের মতোই ভাবছেন!
খালেদা জিয়ার কথা মতে, ১ কোটি ৬০ লাখ নির্যাতিতা নারী, তাও ছাত্রলীগের দ্বারা? ভাবতেই গা দুলে উঠে; হাসার কারণে নাকি গা শিউরে উঠার কারণে কে জানে!
আমি অবাক হয়ে ভাবছিলাম, বাহ, সৈয়দ আশরাফ এই মানুষটা দেখি আমাদের মতোই ভাবছেন! কিন্তু তিনি অতি দ্রুতই আমাদের থেকে আলাদা হয়ে গেলেন। এরপর খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলা শুরু করলেন, আপনি মহিলা হাই-কমিশনারদের নিয়া চা টা খাবেন উল্টাপাল্টা যা খুশি বলে দেবেন। এটুকু বললে হয়তো সমস্যা ছিল না। এরপর তিনি লম্বা ফিরিস্তি দেয়া শুরু করলেন, খালেদা জিয়ার আমলে কতজন নারী, কোন কোন নারী নির্যাতিত হয়েছেন। আরও অনেক কথা।
আমি বুঝি না, যেখানে একটা চাল দিয়েই তিনি পাশার ছক পাল্টে দিলেন সেখানে অহেতুক-অনাবশ্যক কথার কী প্রয়োজন ছিল?
সাধারণ জনগণকে এঁরা মগজ খরচ করার সুযোগ দেন না, সব বলে ফেলেন। জনগণ, অব্যবহৃত মগজ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়! বেচারা জনগণ!
No comments:
Post a Comment