বিজ্ঞাপন কতটা শক্তিশালী ? বারবার একটা মিথ্যা বললে সেটা নাকি সত্য হয়ে যায়। কেউ যদি কানের পাশে বারবার বলতে থাকেন, 'জুতার ফিতা খান, ভাতের উপর চাপ কমান'। একসময় পাবলিক জুতার ফিতা খাওয়া শুরু করবে।
বাচ্চাদের পছন্দের অনুষ্ঠান কার্টুন এবং বিজ্ঞাপন। শিশুদের নিয়ে যেসব বিজ্ঞাপন দেখায় এটার ভয়াবহতা বোঝার কোন লোক কি এই দেশে নাই?
বিজ্ঞাপনে শিশুদেরকে আমরা কি সুশিক্ষাই না দিচ্ছি, শিশু ভাব নিয়ে, গুরুজনের বেদম হেঁচকি থামাতে তার প্রতি গ্লাসের পানি ছুঁড়ে মারে। এরপর অন্য একটা চিকন গলা জানান দেয়, দাগ নেই তো শেখাও নেই। এই শিশু আগামীতে গু ছুঁড়ে মারলে লাস্যময়ী গলায় বলা হবে, হলুদ দাগ নেই তো শেখাও নেই।
ওয়ারিদ এক পা এগিয়ে। পূর্বে ওয়ারিদের যে জটিল বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছিল, দুই মুচুয়া-মুষ্টন্ডার(!) মোচের খেলা! এই মোচ বানাতে কত যন্ত্রণাই না করতে হয়েছে ফারুকী সাহেবকে, কত কেজি ইউরিয়া যে ঢালতে হয়েছে?
আচ্ছা, ওই সময় কারাগার থেকে যে কিছু কয়েদী পালিয়ে গিয়েছিল দেয়াল টপকে এরা কি দেয়ালে উঠেছিল এদের মোচ বেয়ে?
কাহিনি এমন: এই ভাঁড়ামিপনের ভাঁড়রা একসময় দোস্ত হয়ে যায় এদের ছানাপোনাদের জন্য। দুই মুচুয়ার এক লাড়কা আর এক লাড়কি। মুচুয়া বাপরা এদের মুখ বেঁধে দেয়, এইবার এরা ইশক-প্রেম লাড়াইবেন কেমন করিয়া? মুখ বাঁধা কিন্তু হাত তো খোলা আর খোলা ওয়ারিদের নেটের লাইন। তাই এরা বেদম চ্যাট করতে থাকে, থামায় কার বাপের সাধ্যি? আহা, এরা চ্যাট করতে পারে কিন্তু ফোন করতে পারে না কারন এদের মাথাই নাই, নাই এই বিজ্ঞাপনের নির্মাতারও!
নাপিতের বিজ্ঞাপনটা আমার কাছে এতটাই বিরক্তিকর মনে হয়েছে এমন স্থূল চিন্তা-ভাবনা যে কোম্পানীর সেই কোম্পানীর সংগে থাকতে কারও ইচ্ছা করবে বলে তো মনে হয় না। ওয়ারিদের এই বিজ্ঞাপনের টার্গেট কারা, নেট ব্যবহারকারীরা? যারা নেট ব্যবহার করে এদের কি এই কোম্পানী গাধা মনে করে? ফোন হাতে নিলেই নেটের লাইন চালু হয়ে যায়? ব্রাউজ করা যায়, হেয়ার স্টাইলের পেজ খুলে যায়?
সিনেমা স্টাইলেরও একটা সীমা আছে!
তারচেয়ে ওয়ারিদ যদি কোন ফোন ব্যবহারকারীকে দেখাত তাহলে এতটা সমস্যা ছিল না, ফোন করার জন্য খুব বেশি কিছু লাগে না আল্লার দেয়া একটা মুখ আর একটা হাত। শরীর দুলিয়ে কোন ভদ্দরমেয়ে গাইতে থাকত, 'বুকে বড় জ্বালা রে পাঞ্জাবীওয়ালা...'। নেপথ্যে ভেসে আসত মারজুক রাসেলের মত কোন সেলিব্রেটির গলা, ওয়ারিদ টেলিকম আছে বলেই না ইনি পাঞ্জাবীওয়ালার সাথে কথা বলে বুকের জ্বালা নেভাতে পারছেন। ফায়ার ব্রিগেড আসার প্রয়োজন নাই। সমস্যা ছিল না। কেবল একটাই ভয়, মারজুক রাসেলের মুর্দা-গলা শুনে মুর্দারা না কবর ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসে!
এখন ফারুকী সাহেব ওয়ারিদের নতুন একটা বিজ্ঞাপন প্রসব করেছেন, সিনেমার নায়িকা পপিকে নিয়ে। জু-লে-খা, তু-মি কু-তা-য়? আ-গু-ন নে-ভা-আ-আ...।
তিনি বাংলা সিনেমাকেও ছাড়িয়ে গেছেন। ওনার কথামতে, এমন বিজ্ঞাপন নাকি আরও প্রসব করবেন! আল্লা, তুমি কোথায়?
জনাব, ফারুকীকে দেখলাম কোন একটা চ্যানেলে খুব পোজ দিয়ে বলছেন, সিনেমার স্টাইলে আমি এই বিজ্ঞাপনটা বানিয়েছি দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য।
অন্য একটা অনুষ্ঠানে দেখেছিলাম, ইনি হাফ-প্যান্ট পরে ক্যামেরার পেছন থেকে সামনে চলে এসেছিলেন। চলে এসেছিলেন মানে, ইনি কেমন কেমন করে ক্যামেরার পেছনে থেকে আইডিয়া প্রসব করেন এটা আমজনতাকে দেখানো হচ্ছিল। দেখানো হচ্ছিল মানে তিনি নিজেই দেখাচ্ছিলেন। আচ্ছা, হাফ-প্যান্ট পরে আইডিয়া প্রসব করতে সুবিধা বুঝি? হাফ-প্যান্টের ফাঁক গলে আইডিয়া পড়ে গেলে এর দায় কে নেবে?
এইসব মারমার-কাটকাট বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্য যদি হয় দৃষ্টি আকর্ষন করা তাইলে দিগম্বর-নগ্ন হয়ে পোজ দেয়া হচ্ছে সবচেয়ে সহজ উপায়। অ্যালেন গীনসবার্গ, দালি সাহেবদের পদাঙ্ক অনুসরণ করলেই হয়। ফারুকী সাহেব যে হাফ-প্যান্ট পরে বিজ্ঞাপন বানাবার কসরত করেন এটাও খুলে ফেললে সমস্যা তো নাই।
মাভৈঃ...।
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Monday, January 11, 2010
মোস্তফা সরোওয়ার ফারুকীর হাফ-প্যান্টনামা!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment