
ছোটখাট শিশুর মত মানুষটা। ভারি সাদাসিধে জীবন-যাপন ছিল তাঁর। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে থেকেও দু'টা স্যুট পরে কাটিয়ে দিয়েছিলেন বছরের-পর-বছর। এই মানুষটার কাজ-কারবারের অল্প কিছু নমুনা:
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ, তাঁকে নিয়ে এক ভিত্তিহীন খবরের প্রতিবাদে মানহানীর মামলা করেছিলেন, ফৌজদারী-দেওয়ানী আদালতে না, প্রেস কাউন্সিলে।
ভাবা যায়, এমন চল যে আমাদের দেশে আর নাই!
দায়িত্বে থাকার সময় (বঙ্গভবনে) প্রবাসী পুত্রের সঙ্গে কথা বলার কারণে টেলিফোনের বিল আলাদা রাখার জন্য নির্দেশ দেন এবং এটা অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন তাঁর নিজ বেতন থেকে পরিশোধ করেন।
টেলিভিশনে প্রচারিত তাঁর ভাষণের অংশগুলো ক্যাসেটে রেকর্ড করিয়ে দেয়ার জন্য টিভি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। দেশের এক নম্বর ব্যক্তির কাছ থেকে এহেন অনুরোধ পেয়ে টিভি কর্তৃপক্ষ যখন উচ্ছ্বসিত তখন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন এ বাবত কি পরিমাণ খরচ হয়েছে এটা জানতে চান। এবং সেটার বিল পাঠাতে বলে তাদের উচ্ছ্বাসে পানি ঢেলে দেন। কর্তৃপক্ষ প্রথমে গা করেন না- খরচের এই যত্সামান্য বিল তাঁর নামে না-পাঠালে মহারাগ করেন। পরে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হন তাঁর নামে বিল পাঠাতে।
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে থাকাকালীন তিনি বারবার বলছিলেন, যথাসময়ে তিনি তাঁর দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন, কালবিলম্ব করবেন না। এই নিয়ে তখন দেশের পন্ডিতরা কষে ভদ্রস্থ গালি দিচ্ছিলেন, এটা বলার পেছনে নাকি তাঁর মনে কু আছে। কিন্তু ঠিকই তিনি বিন্দুমাত্র কালক্ষেপন করেননি! এ চলও আমাদের দেশে নেই!
প্রথমবার ক্ষমতার শীর্ষে থেকে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর সাংবাদিকরা তাঁর অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলেছিলেন:
'আহ, এবার অন্তত আরাম করে সিঙ্গারা খাওয়া যাবে'।শোনো কথা! মানুষটা সিঙ্গারা খুব পছন্দ করতেন কিন্তু ঘড়ির কাঁটা ধরে চলতে হয় বলে বঙ্গভবনের ডাক্তারের বারণ ছিল। এহেন পদে থেকে এটা উপেক্ষা করার উপায় নেই!
কিন্তু... প্রবল অনুরোধ উপেক্ষা করতে না-পেরে দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি ক্রমশ আওয়ামীলীগের খপ্পরে পড়ে যান। কালে-কালে তিনি একটা পুতুলে পরিণত হন। আফসোস, অদৃশ্য শ্যাওলা জড়িয়ে যায় এই ভাল মানুষটার গায়ে...!
1 comment:
কী বলছেন কীন্তূ দেশের মানূষ জানে না । এতটা ভালো ছিলেন ।হয়তোবা এজন্য প্রচারনার উপর উনার কোনো আকর্ষন ছিলোনা ।
Post a Comment