Search

Friday, July 10, 2020

অপরাধ- ছোট আর বড়!

ইনি দাবী করেছেন এই  স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল হক এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক আচরণ করছেন। ঘটনাটা বরিশালের। এই শিক্ষক যদি, আবারও বলি যদি নুরুল হক না-ও হয়ে থাকেন কিন্তু ঘটনাটা সত্য।

অকাট্য প্রমাণ হিসাবে ভিডিও আছে। ওই ভিডিওটা আবার জনে-জনে শেয়ার করছেন।
এরমধ্যে আবার হেভিওয়েটরাও আছেন।  এরা নিজেদেরকে, কী যেন একটা টার্ম আছে অনলাইন  'এ্যাক্টিভিস্টটিস্ফিটকিস্ট' বলে দাবী করে থাকেন। সোজা বাংলায়, অনলাইন যোদ্ধা। গ্রামের ভাষায় আগুনের গোলা। বিভিন্ন ইস্যুতে এদের সময় ভাগ করা আছে। সকালে নাশতার পর একটা প্রসঙ্গ, দুপুরে ভাতঘুমের পর আরেকটা রাতে বিছানায় পশ্চাদদেশ স্পর্শপূর্বক অন্য আরেকটা। অসম্ভব ব্যস্ত সময় কাটাতে হয় এই যোদ্ধাদের। সময়ের বড় অভাব।

তো, এরা করেছেন কী- ওই যে অনৈতিক ভিডিওটা ওটায় নির্যাতিত ওই মেয়েটির মুখ একেবারেই স্পষ্ট। তর্কের খাতিরে মেনে নিলুম বিষয়টা ভয়াবহতা বোঝাবার জন্য ওই ভিডিওটা শেয়ার করে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজন আছে। কিন্তু আগুনযোদ্ধারা ওই মেয়েটির মুখ অস্পষ্ট করে দিতে পারতেন। যার চালু নাম 'ব্লার' করে দেওয়া।
এটা এমন কঠিন কিছু না। যে বাচ্চার হাফপ্যান্টের ফাঁক দিয়ে ইয়ে দেখা যায় সেই বাচ্চাও পারে। কিন্তু, ওই যে আগে বললুম না, আমাদের এই আগুনমানুষদের সময় কোথায়, বাওয়া!
(শেয়ার করা ভিডিও-এর স্ক্রিণশট)
'এই বদমাশ শিক্ষককে খুঁজে বের করা জরুরি' জ্বী-জ্বী, সহমত ভাই। কিন্তু যারা এমন পাবলিক-প্লেসে মেয়েটির চেহারা দেখিয়ে দিল তাদেরও খুঁজে বের করাটা কী জরুরি না? 
  
(শেয়ার করা ভিডিও-এর স্ক্রিণশট)
আপনি মন্তব্যে জুড়ে দিয়েছেন, '... কিছুই তো বুঝতে পারছি না'। আহারে, আপনি তো দেখি একেবারেই অবোধ শিশু। শিশুদের এখানে কী কাজ- বাচ্চারা দূরে থাক...।
(শেয়ার করা ভিডিও-এর স্ক্রিণশট)
জ্বী, জান্নাতুল আফা, 'অনেক আদর করে যত্নসহকারে...'।  আচ্ছা-আচ্ছা, এই বিষয়ে আলোচনাটা এখন নাহয় মুলতবি থাকুক। তা এখানে দুম করে 'জয় বাংলা' নিয়ে এলেন কেন? মানে কী বোঝাতে চাচ্ছেন? জয় বাংলার লোকজনেরা এই মাস্টারকে বলে দিয়েছে: তুমি কিন্তু বাবা এই ভাবে পড়াবা। এটা কিন্তু জয় বাংলার পড়া...? নাকি?
আপনি বা এখানে যারা-যারা আছেন আপনারা ক-জন আইনের লোকজনের সহায়তা চেয়েছেন যেন এই বিষয়ে একটা কঠিন সুরাহা হয়- এই শিক্ষককে যেন আমরা আইনের থাবার মধ্যে ছটফট করতে দেখি।
কী বললেন, উঁচু মহলে কানেকশন-টানেকশন নাই! ওয়াল্লা, এমনিতে তো দেখি আপনাদের দবদবার শেষ নাই। এক দৌড়ে তেলতেলে মুখ নিয়ে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় হাজির হয়ে যান। আবার জাঁক করে বলেন, ১১টা ১২টা ১৩টায় আছি ওমুক ইলেকট্রনিক ছাতার নীচে।
(শেয়ার করা ভিডিও-এর স্ক্রিণশট)
আপনি তো মারাত্মক অবাক,  'এটা কী'! বাবু,  এটা বড়দের বিষয়...দূরে...।

(শেয়ার করা ভিডিও-এর স্ক্রিণশট)
ইনি লিখেছেন, 'সহী ইসলামী শিক্ষা...'! বুঝলাম না স্যার, এখানে সহী-অসহী পরের কথা- ইসলাম, ইসলাম শিক্ষা আসল কোত্থেকে? আমি তো যতটুকু জেনেছি এই শিক্ষক ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। আপনি এখানে ফট করে ইসলাম প্রসঙ্গ আনার কারণ কী! ইসলাম কী বলে দিয়েছে যে তোমরা ওস্তাদরা কিন্তু তোমাদের শাগরেদদের এই ভাবে পড়াবা?
নাকি এই মেয়েগুলো মাথায় কাপড় দেখে আপনি ধরে নিয়েছেন এখানে ইসলামী শিক্ষা চলছে। মাথায় কাপড় দিলে সমস্যা কোথায়? যার খুশি সে দিবে যে খুশি না সে দিবে না, এটা যার-যার ব্যক্তিগত বিষয়। নানরা যখন মাথা ঢেকে রাখে তখন সমস্যা হয় না!

কী অবাক, অনেকেই দেখি এই মাস্টারকে জুতাপেটা করার জন্য জুতায় নিজের ইয়ে লাগিয়ে ঘুরছেন অথচ কেমন করে এই মানুষটাকে আইনের আওতায় আনা যায় সেই চেষ্টা করাটা এখানে জরুরি ছিল। নিদেনপক্ষে এই শিক্ষককে হাইলাইট করা। অনেকে আবার মেয়েটা কেন হাসি-হাসি মুখ করে রেখেছে এই নিয়ে নিজের পশ্চাদদেশে নিজেই তিন চাপড় মারছেন। আচ্ছা, মেয়েটির 'পেরতিবাদের' কথা বলছেন? ওই মেয়েকে স্কুল থেকে বের করে দিলে আপনি দায়িত্ব নেবেন? এই মাস্টারের দবদবার নমুনা:
সম্ভবত এই ঘটনাটা পুরনো। এটা খোঁজ নিয়ে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লাগাটাই সমীচীন ছিল। কিন্তু ফাঁকতালে এই মেয়েটির প্রতি যে অনাচার করা হলো তা ভাষায় প্রকাশযোগ্য না। তার ভবিষ্যতটা কেমন হবে? মেয়েটি আত্মহননের পথ বেছে নিলে কে ঠেকাবে? 
আমার লেখালেখির শপথ- আমার মার শপথ, আমার জীবনে এমন ভয়ংকর দৃশ্য আমি খুব কম দেখেছি। এই দৃশ্যটা আমি সহ্য করতে পারি না। আসিফার [] ঘটনাটাও অবর্ণনীয় কিন্তু এই ছবিটার মধ্যে কিছু-একটা আছে। নির্যাতিত মেয়ের জন্য বাবার সংবাদ সম্মেলন! যতবার দেখি ততবার আমার হাউমাউ করে কান্না আসে। মেয়েটির স্কুলের পোশাক-বাবাকে জড়িয়ে ধরার ভঙ্গি-বাবার বুকে মুখ লুকানো-আমি জানি না- আমি জানি না!

কোন বাবাকে যদি এভাবে তার মেয়েকে নিয়ে দাঁড়াতে হয়...। হ্যাঁ, এই দৃশ্য দেখে তখন আপনি দেশের আইন-গাইনের যত সংস্থা আছে সবার মুন্ডুপাত করতে পারেন। একটা সভ্য দেশে এই দৃশ্য দেখার পর বাঁচার কোনও মানে হয় না। এমন একজন বাবার প্রশ্রাবে ভেসে যায় পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল তাবৎ উন্নয়ন। 
কী করবে এমন হতভাগা একটা  বাবা দেশের উন্নয়ন নিয়ে? জানি-জানি, অনেকে রে-রে করে তেড়ে আসবেন। ওই মিয়া, রাস্তা লাগবে না 'টেরেন' লাগবে না! এই বাবা কি মাইলের-পর-মাইল হাইট্যা...।
একটা মেয়ে যদি অসুস্থ বাবাকে নিয়ে ৭০০ মাইল পথ সাইকেলে করে পাড়ি দিতে পারে তাহলে একটা বাবা কি তার এমন একটা মেয়েকে বুকে নিয়ে ৭০ মাইল পাড়ি দিতে পারবে না...।


সহায়ক সূত্র:

2 comments:

Kukku said...

কেন কাদান :(
রায়হান

মারুফ said...

যে কয়েকটা উদাহরন দিয়েছেন এদের মধ্য ২টা দালাল এটা আমি যেম্ন জানি আপ্নিও জানেন। বমি শিয়াল আর জাবতাক।