পিলখানার বিডিয়ার বিদ্রোহের পেছনে সাত কারণ চিহ্নিত করেছে সেনাবাহিনীর তদন্ত আদালত। এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি না। ভাগ্যিস, সেনাবাহিনীর একটা আলাদা তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। নইলে আবার যে কোন আষাঢ়ে গল্প শুনতে হতো কে জানে! আমাদের দেশে গল্পের গরু গাছে উঠে না, গল্পের গাছ গরুর উপর উঠে।
আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে যেটা, বিদ্রোহ হয়েছে ঠিক আছে। ক্ষোভ আছে ঠিকাছে। এরা একজন অফিসার নামের মানুষকে গুলি করেছে। অফিসারদের রাগের চোটে মেরে ফেলেছে, তর্কের খাতিরে মেনে নিলাম। মেরে ফেলার পর দিশামিশা না পেয়ে গর্ত খুড়ে চাপা দিয়েছে, নর্দমায় ফেলে দিয়েছে। এটাও নাহয় বেদনা চেপে মেনে নেয়া গেল।
কিন্তু আমায় যেটা ভাবাচ্ছে, মারার পূর্বে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মুখ থেতলে দিয়েছে, তারপর চারতলা থেকে তাদের অনেকের দেহ নিচে ফেলে দিয়েছে!
এখানে এসে আমার ভাবনা এলোমেলো হয়ে যায়। একটা মানুষের দেহকে কেন চারতলা থেকে ফেলে দেয়া হবে?
একজন মানুষকে রাগে-ক্ষোভে খুন করা আর ঠান্ডা মাথায় কুপিয়ে কুপিয়ে টুকরা করা যোজন তফাৎ!
এই পশুত্ব এরা কোত্থেকে পেল? কোন পশু এদের কাঁধে ভর করেছিল? নাকি এই পশুটাকে এরা দীর্ঘদিন ধরে বয়ে বেড়াচ্ছে, আমাদের অজান্তেই লালন করেছে? সময়ে এর সগর্ব প্রকাশ।
আমি প্রতীক্ষায় ছিলাম, মনোবিদরা এটা নিয়ে কাজ করবেন। এঁরা এদের মস্তিষ্কের গলিঘুঁজি তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখবেন, এরা কেন এমনটা করল? কোন পশুটা এদের এমন করে কাবু করে ফেলল। এই পশুটার নিবাস কোথায়?
দরিদ্র দেশের ততোধিক দরিদ্র ভাবনা, এইসব প্রশ্নের উত্তর কখনই আমাদের জানা হবে না!
................
ডেনিম আফটার শেভ আমার অসম্ভব পছন্দের। একবার দেশে এটা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছিল। উচ্চমূল্যর কারণে তখন কিনতে পারিনি। পাশের যে মানুষটা একবার দাম জিজ্ঞেস করেই চট করে কিনে ফেললেন, মানুষটা আর কেউ না, একজন বিডিয়ার, সাধারণ সৈনিক! খুব অবাক হয়েছিলাম, এতে যে উপরি পয়সার ছড়াছড়ি আছে, এ নিয়ে আমার কোন সন্দেহ ছিল না। রাগ হচ্ছিল কিন্তু খানিক পরেই রাগ উবে গিয়েছিল। আহা, মানুষগুলো রোদে পুড়ে আমাদের সীমান্ত রক্ষা করে। নাহয়, করলই একটু এদিক সেদিক- করলই খানিকটা শখ আহলাদ পূরণ!
.................
হপ্তাহ পূর্বে এক পত্রিকায় নিশিকন্যাদের নিয়ে একটা রিপোর্ট বেরুল। যথারীতি থানা কিছু নিশিকন্যাদের ধরে নিয়ে আসল। আমাদের দেশে নিশিকন্যাদের ধরা এবং বস্তি ভেঙ্গে দেয়াটা খুব বড় একটা বীরোচিত কাজ। আমরা সুনাগরিকরা এতে উল্লসিত হই। যাক বাবা, একটা কাজের কাজ হল। আবর্জনা দূর হল। অথচ এই নিশিকন্যাদের কাছেই আমরা বিমলানন্দে যাই, বস্তির লোকজন না হলে আমাদের চলেই না- গৃহে বলুন বা বানিজ্যে!
থানায় ওই রিপোর্ট করা, ওই সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে এক নিশিকন্যা শ্লেষভরা কন্ঠে যা বলেছিলেন, 'বিরাট একটা কাম করছেন আপনে'। পরে কথায় কথায় যা বলেছিলেন আমি তা প্রায় হুবহু তুলে দেই:
"আমার নাম...। তহন আমার বয়স এগারো। ছোড থাকতেই বাবা মইরা গেল, আমাগো কোন ভাই আছিল না। আমরা দুই ভইন আছিলাম। বড় বোন চিনি ব্লেক (স্মাগলিং) করত। এই দিয়া আমাগো সংসার চলত। আমি আমার ভইনের লগে আইতাম। বিডিয়ারের কাছ থিক্যা আমার ভইন লাইন লইত (অবৈধ স্মগলিং-এর অনুমতি)।
এরা আমারে দেখলেই, সুযোগ পাইলেই লাং-এর লাহান কথা কইত। একদিন আমার ভইনডার ম্যালা জ্বর। ৩০ সের চিনি লইয়া আমি আইছিলাম। বিডিয়ার আমার চিনি ধইরা লয়া গেল। আমি হেগো (তাদের) পা-ও ধরলাম, কুনু ফায়দা হইল না। এরা কইল, বড় স্যারের অনুমতি লাগবো, মাগরিবের নোয়াজের (নামাজ) পর স্যারকে ক্যাম্পে পাওয়া যাইব।
এই ৩০ সের চিনিই আমাগো পুঁজি আছিল। এইটার আশা বাদ দিলে বাড়িত চুলা জ্বলত না। হাঝে (সন্ধ্যায়) বিডিআর ক্যাম্পে গেলে হেরা এইটা-সেইটা কইয়া ম্যালা সময় (অনেকক্ষণ) বসায়া রাখল। এরপর আমার হাত-পা বাইন্ধা চাইর পাঁচজন...।
রক্তে সব ভাইসা যাইতাছিল। আমার অবস্থা খারাপ দেইখা হেরা আমারে হাসপাতালে ভর্তি করল। আমি দুই মাস হাসপাতালে ভর্তি আছিলাম।
কুন সুমায় (কখন) নডি হয়া গেছি আমি কইতাম পারি না।
.....................
অধিকাংশ বিডিআর, এরা সীমান্ত সংক্রান্ত সমস্ত ধরনের অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত। এদের একের পর এক পাপ পশুটার খাবার যুগিয়েছে হয়তো-বা! আমি ঠিক জানি না।
আমি ভয়ে ভয়ে আছি, আল্লা না করুন, কোনদিন পুলিশ বিদ্রোহ হলে আরেক নারকীয় তান্ডব হবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নাই।
কারণ ওটাই, এরাও ক্রিমিনালদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত...।
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Saturday, May 16, 2009
কোন পশু এদের কাঁধে ভর করেছিল?
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment