এই দেশটা বড়ো বিচিত্র, ততোধিক বিচিত্র এখানকার লোকজন। প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে-জান হাতে নিয়ে, ওভারব্রীজ ফাঁকা থাকলেও ঝড়ের গতিতে ছুটে চলা অসংখ্য গাড়ির মাঝখান দিয়ে সাপের মত এঁকেবেকে রাস্তা পার হবে। যে দেশের যে চল!
উপজেলা চেয়ারমেনের বেতন একজন কাঠমিস্ত্রির সমান। তিনি যে কেমন ন্যাতা হবেন তা আর বলতে! এই ন্যাতা জনসেবা করার জন্য মুখিয়ে থাকবেন! ইনি রিলিফের গম বেচবেন না তো কো বেচবে?
মুষ্টিমেয় লেখক ব্যতীত অন্যরা লেখালেখি করবেন বিনে পয়সায়, লেংটি পরে দেশ উদ্ধার করবেন। একজন লেখকের কখনই ইচ্ছা করবে না চকচকে কাপড় পরতে, কালেভদ্রে সুস্বাদু খাবার খেতে। কারণ এঁদের রেকটাম বলে কোন জিনিস নাই অতএব খাবার গ্রহনেরও কোন তাড়া নাই। কৌপিন পরে উবু হয়ে লিখে লিখে হাতি-ঘোড়া মারবেন!
মসজিদের ইমামের বেতন হবে মেথরের চেয়েও কম! কী অবলীলায় আমরা ওঁর কাছ থেকে আশা করি ইনি ধর্ম গুলে সরবত বানিয়ে আমাদের খাইয়ে দেবেন। আমরা চুকচুক করে সেই সরবত পান করে 'সর্গে' যাত্রা করব!
অধিকাংশ মসজিদ-মাদ্রাসাই, বিশেষ করে গ্রাম-মফঃস্বলে, অবৈধ-দখলকরা জায়গায় গড়ে উঠেছে। এই নিয়ে কারও সামান্যতমও বিকার নাই। গ্রাম-গঞ্জের অধিকাংশ মসজিদগুলোয় আস্ত রেললাইন দিয়ে ঢাউস আকৃতির যে চার-পাঁচটা মাইক লাগানো থাকে এই রেললাইনগুলো চুরির মাল! একজন আমাকে জানিয়েছিলেন, আই, ডব্লিউ (রেলের ছোট পদের একজন কর্মকর্তা) সাহেব নাকি এটা দিয়েছেন। যেন আই, ডব্লিউ সাহেবের বাপের জিনিস এটা! অনেক মসজিদেরই বিদ্যুৎ সংযোগ অবৈধ!
'ঘুষ নামের সুখ-পাখিটা' নামের একটা লেখা ছিল শুভ'র ব্লগিং-এ। ওখানে লিখেছিলাম:
"আচ্ছা, আপনারা বলতে পারবেন, এ দেশে সবচেয়ে বেশি ঘুষ চালাচালি হয় কখন? দুই ঈদের আগে! এক ঈদের আগে থাকে পাক্কা একমাস রমজান। তো, রামাদান-সিয়াম-সংযমের মাসে এই কান্ডটা দেদারসে হচ্ছে...। মোদ্দা কথা, রমজানে ঘুষ খাওয়ার প্রবণতা বেশি!"
হায়রে সংযম! এ মাসে নাকি শয়তানকে বেঁধে রাখা হয়। নমুনা দেখেই বুঝতে ক্লেশ পেতে হয় না। এটা লিখে তোপের মুখে পড়েছিলাম। ওয়েবসাইটে একজন তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন, 'আপনি নিজে রোজা রাখেন না বলে আপনার গা জ্বলে'।
এই হয়েছে এক যন্ত্রণা! লিখে আবার জনে জনে ব্যাখ্যা দাও। ব্যক্তিগত আচারগুলোর প্রমাণ হাজির করিতে হইবে, গলায় আচার পালনের সার্টিফিকেট ঝুলাইয়া রাস্তায় রাস্তায় ঘুরিতে হইবে! নিমের ডাল লইয়া মসজিদ, বাজার, টাট্টিখানায় দাঁত ঘসিতে ঘসিতে...মুখে নিজের থুথু মাখিতে মাখিতে দাঁত পাতলা করিয়া ফেলিতে হইবে। আমি যে 'কেতনা বাড়া- কত্তো বড়ো' ত্যাগবাজ এটা প্রমাণ করিতে হইবে না!
যাগ গে, ধরে নিলাম, সরকারী চাকুরেরা বড়ই খারাপ লুক(!), দুষ্ট-পাজি। তা, ব্যবসায়ীরা কী? রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যর দাম কেমন হয় এটা ভুক্তভোগীরা ভালো বলতে পারবেন। সৌদির মতো বর্বর দেশেও নাকি রমজানে দ্রব্যমূল্যর দাম স্থিতিশীল থাকে। রমজানে আমাদের দেশে দশ পার্সেন্ট নাকি একশ পার্সেন্ট, ঠিক কত মার্জিনে এরা ব্যবসা করবেন এটা ব্যবসায়ী মহোদয়গণ নিজেরাও বলতে পারেন না।
ধরলাম, ব্যবসায়ীরা চুর(!), তস্কর-হার্মাদ।
আম-জনতা, সাধারণ মানুষ? যে কৃষক সারা বছর চুক্তিতে ত্রিশ টাকা লিটার দুধ বিক্রি করেছেন তিনি রমজানে ধাম করে ষাট টাকা লিটার করে দেন। বাড়তি টাকা দিতে না চাইলে দুধ দেয়া বন্ধ, শিশু একফোঁটা দুধ খেতে পেল কি না পেল তাতে তার কী আসে যায়! তিনি কেন এমনটা করলেন, কোন কারণ নাই? সবাই দু-নম্বুরি করছে তার বুঝি ইচ্ছা করে না!
অথচ হাক মাওলা-হাক মাওলা, প্রতি শ্বাসে ধর্মীয় বাতচিত শুনে মনে হয়, এমন লক্ষীদেশ এই গ্রহে আর কোথাও নাই। বেহেশত নেমে এসেছে ধরায়, এই গ্রহে কোথাও বেহেশত থেকে থাকলে এ দেশ ব্যতীত আর কোথায়!
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Sunday, August 30, 2009
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment