Search

Saturday, November 28, 2009

গোলাম আজম: স্যার, আপনার ঈদিটা...



স্যার, সবাই যখন মাংস কোপাতে ব্যস্ত তখন কেবল আমারই কোন কাজ নাই। ভারী অকাজের একজন মানুষ- প্রায় গৃহবন্দী! ভাবলাম, আপনার মত মহাপুরুষদের জীবনী পাঠ করে সময়টা পার করি।

আহ, বীরশ্রেষ্ঠ! যেখানে গিয়ে আমরা আবেগে কাঁপি, নিজেকে এতটাই ক্ষুদ্র মনে হয়; পোকা কোন ছার! 
স্যার, আপনার হাতে ধর্মের এমন কোন ইরেজার নাই, বীরশ্রেষ্ঠদের মেডেলে যে দৈববাণী জ্বলজ্বল করে, "আমার বীর সন্তান, যাদের চেয়ে প্রিয় আমার আর কেউ নাই" এটা মুছে ফেলবেন!

কোথাও পড়েছিলাম, আমাদের ৭ বীরশ্রেষ্ঠর একজন, মতিউর রহমানকে নিয়ে এবং আপনার মতে, একমাত্র বীরশ্রেষ্ঠ রশিদ মিনহাজকে নিয়ে আপনি কিছু বক্তব্য রেখেছিলেন কিন্তু আমার দুর্বল স্মরণশক্তির কারণে তা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। খোঁজ-খোঁজ-খোঁজ। নিয়তে বরকত- অবশেষে পাওয়া গেল।
স্যার, আপনার বীরত্বের কাহিনি আপনি হয়তো ভুলে গেছেন কিন্তু আমরা ভুলিনি! ভাবলাম, আপনার কিছু বীরত্বের কাহিনি আবার পাঠ করা যাক। এটাই স্যার এবারের ঈদে আপনার জন্য এই অভাজনের ঈদি-সেলামি।   

১ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১:
"...
করাচীতে গোলাম আজম, সকল বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং তাদের নেতৃবৃন্দকে শাস্তি দানের আহ্বান জানান। এই প্রসঙ্গে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ভাসানী গ্রুপ) নাম (বিশেষ করে) উল্লেখ করেন।
তাঁর মতে, এসব দলের সদস্যরা এখনো পূর্ব পাকিস্তানে গোপনে তৎপরতা চালাচ্ছে এবং জনগণের মধ্যে হতাশার ভাব সৃষ্টি করছে।
...
গোলাম আজম পাকিস্তান রক্ষা ও মানুষের জীবনের নিরাপত্তার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

তিনি বলেন, কোন ভাল মুসলমানই তথাকথিত বাংলাদেশ আন্দোলন-এর সমর্থক হতে পারে না। তিনি আরও বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নির্মূল করার জন্য একমন ও দেশপ্রেমিক লোকেরা একত্রে কাজ করে যাচ্ছেন। রাজাকাররা খুবই ভাল কাজ করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

শহীদ রশীদ মিনহাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, এই আত্মত্যাগের নিদর্শন থেকে তরুণরা উপকৃত হতে পারবে।"
(এপিপি-র বরাত দিয়ে এটা দৈনিক পাকিস্তান, ২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১-এ ছাপা হয়)

* আপনাদের জানা আছে তবুও বলি, শহীদ রশীদ মিনহাজ সেই ব্যক্তি:
'সিতারায়ে হরর' খেতাবে ভূষিত, 'ডেভিল ডেয়ার'খ্যাত দুর্ধর্ষ পাইলট মতিউর রহমান পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর সমস্ত কর্মকর্তাকে ফাঁকি দিয়ে মাসরুর বিমানঘাটিঁ থেকে অবাঙালী ছাত্র বৈমানিক রশিদ মিনহাজসহ একটি টি-৩৩ বিমান হাইজ্যাক করে ভারতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন শুক্রবার, ২০ আগস্ট, ১৯৭১। কিন্তু বিমান ক্র্যাশ করায় রশিদ মিনহাজসহ মতিউর রহমান শহীদ হন।
পরবর্তিতে পাকিস্তান বিমানঘাঁটির প্রবেশদ্বারে রশিদ মিনহাজের ছবি টাঙিয়ে রাখা হয়েছিল সমরবীর হিসাবে, তাকে অভিবাদন জানানো হত। 
অন্যদিকে মতিউর রহমানের ছবি টাঙিয়ে থুথু ফেলা হতো।

No comments: