সেই যে দিয়ে এলাম পরে আমি আর আমার লেখা-উপন্যাস ওরফে বাইন্ডিং খাতার কথা জিজ্ঞেস করি না। রশীদ ভাই, জনাব রশীদ হায়দারের সঙ্গে বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হত। কেবল এই বিষয়টা বাদ দিয়ে যে আমার লেখার গতি কী! এটা জিজ্ঞেস করার কিছু নেই কারণ আমার লেখা নামের কাগুজে জিনিসটা ওটা যে ডাস্টবিন ঘুরে-ঘুরে কোন-এক চটপটিওয়ালা, ফুস্কাওয়ালা, বাবুর গু- ফালানেওয়ালার বেশ কাজে লাগছে এতে আর সন্দেহ কী!
একদিন বিদায় নিয়ে চলে আসার সময় একটা উত্তরাধিকার ধরিয়ে দিয়ে বললেন, 'এটা নিয়ে যাও'।
তখনও বুঝিনি। দুদ্দাড় করে নামতে গিয়ে পাতা উল্টাতে গিয়ে দেখি, অরি আল্লা, গোটা উপন্যাসটাই দেখি ছাপা হয়েছে। কী আনন্দ-কী আনন্দ! এ-ও কী হয়!
ফিরে গিয়ে দেখি রশীদ ভাই ব্যস্ত। দরোজা দিয়ে নাক গলাতেই বললেন, 'উঁহু, বসবা না, আমার দম ফেরার ফুরসত নাই'।
পরে এক যন্ত্রণা হয়েছিল। লেখা ছাপা হওয়ার কথা শুনে কেউ যখন বলত, এটা পড়ব কেমন করে, যোগাড় করব কেমন করে? আমি ভয়ে ভয়ে বলতাম: ইয়ে, বাংলা একাডেমির বিক্রয়কেন্দ্রে। কথা এখানেই শেষ। কারণ প্রশ্নকর্তা উত্তরদাতা দু-জনেই ভাল সমঝদার, ২০ টাকার উত্তরাধিকারের জন্য কেউ ২৫ গুণ টাকা খরচ করবেন না।
পরে বাংলা একাডেমির একজন উপ-পরিচালককে এই কথাটাই বলাতে তাঁর দাম্ভিক উত্তর আমার পছন্দ হয়নি! তার সাফ কথা, 'যার প্রয়োজন হবে সে এখান থেকে যোগাড় করবে। অন্য কোথাও আমরা বিক্রি করতে যাব কেন'! আহারে-আহারে, আমি স্মরণ করিয়ে দেব এই গ্রহে ডায়নোসর নাই, সোভিয়েত ইউনিয়ন নাই, আদমজি জুটমিল নাই!
ওয়াল্লা, কিছু দিন পর দেখি ২০০১ টাকার চেক এসে হাজির- সেটা ৯৩ সালের কথা। বাহরে, এরা দেখি লেখার জন্য আবার টাকাও দেয়। লিখে আমার সেটাই প্রথম আয়। এই আনন্দ কীসের সঙ্গে তুলনা করা যায় আমি জানি না। সদ্যজাত শিশুর গায়ের গন্ধের সঙ্গে? আমি জানি না, আমার লেখালেখির কলমের কসম; জানি না।
একদিন বিদায় নিয়ে চলে আসার সময় একটা উত্তরাধিকার ধরিয়ে দিয়ে বললেন, 'এটা নিয়ে যাও'।
তখনও বুঝিনি। দুদ্দাড় করে নামতে গিয়ে পাতা উল্টাতে গিয়ে দেখি, অরি আল্লা, গোটা উপন্যাসটাই দেখি ছাপা হয়েছে। কী আনন্দ-কী আনন্দ! এ-ও কী হয়!
ফিরে গিয়ে দেখি রশীদ ভাই ব্যস্ত। দরোজা দিয়ে নাক গলাতেই বললেন, 'উঁহু, বসবা না, আমার দম ফেরার ফুরসত নাই'।
পরে এক যন্ত্রণা হয়েছিল। লেখা ছাপা হওয়ার কথা শুনে কেউ যখন বলত, এটা পড়ব কেমন করে, যোগাড় করব কেমন করে? আমি ভয়ে ভয়ে বলতাম: ইয়ে, বাংলা একাডেমির বিক্রয়কেন্দ্রে। কথা এখানেই শেষ। কারণ প্রশ্নকর্তা উত্তরদাতা দু-জনেই ভাল সমঝদার, ২০ টাকার উত্তরাধিকারের জন্য কেউ ২৫ গুণ টাকা খরচ করবেন না।
পরে বাংলা একাডেমির একজন উপ-পরিচালককে এই কথাটাই বলাতে তাঁর দাম্ভিক উত্তর আমার পছন্দ হয়নি! তার সাফ কথা, 'যার প্রয়োজন হবে সে এখান থেকে যোগাড় করবে। অন্য কোথাও আমরা বিক্রি করতে যাব কেন'! আহারে-আহারে, আমি স্মরণ করিয়ে দেব এই গ্রহে ডায়নোসর নাই, সোভিয়েত ইউনিয়ন নাই, আদমজি জুটমিল নাই!
ওয়াল্লা, কিছু দিন পর দেখি ২০০১ টাকার চেক এসে হাজির- সেটা ৯৩ সালের কথা। বাহরে, এরা দেখি লেখার জন্য আবার টাকাও দেয়। লিখে আমার সেটাই প্রথম আয়। এই আনন্দ কীসের সঙ্গে তুলনা করা যায় আমি জানি না। সদ্যজাত শিশুর গায়ের গন্ধের সঙ্গে? আমি জানি না, আমার লেখালেখির কলমের কসম; জানি না।
তবে ১টাকার মরতবা কী বুঝিনি। এটা কী বাদাম খাওয়ার জন্য! ৯৩ সালে ১ টাকায় এক ঠোঙা বাদাম পাওয়া না গেলেও বাদামওলারা অন্তত বাদাম দিত।
জিজ্ঞেস করব করব করেও ওই মানুষটাকে জিজ্ঞেস করা হয়নি। কে জানে, হয়তো না জেনে ভালই হয়েছে। নইলে হয়তো এমন একটা উত্তর শুনতাম, যাতে নিঃশব্দে ওখান থেকে উঠে আসতে হত। চেয়ার সরাতে গিয়ে ভুলে যদি টেবিলে ধাক্কা লাগে। খোদা না খাস্তা, সেই মৃদু ধাক্কায় ওই মানুষটা নড়ে গেলে, যদি, তাঁর জ্ঞান গড়িয়ে পড়ত। শেষে মার্ডার কেসের আসামি হয়ে যেতাম! কে খুনি হতে চায় এ জগতে হায়...!
জিজ্ঞেস করব করব করেও ওই মানুষটাকে জিজ্ঞেস করা হয়নি। কে জানে, হয়তো না জেনে ভালই হয়েছে। নইলে হয়তো এমন একটা উত্তর শুনতাম, যাতে নিঃশব্দে ওখান থেকে উঠে আসতে হত। চেয়ার সরাতে গিয়ে ভুলে যদি টেবিলে ধাক্কা লাগে। খোদা না খাস্তা, সেই মৃদু ধাক্কায় ওই মানুষটা নড়ে গেলে, যদি, তাঁর জ্ঞান গড়িয়ে পড়ত। শেষে মার্ডার কেসের আসামি হয়ে যেতাম! কে খুনি হতে চায় এ জগতে হায়...!
*প্রথম প্রেমপত্র যেমন ফেলে দেয়া যায় না, তেমনি লিখে প্রথম আয়ের নমুনা ফেলা যায় না। কালে-কালে কাগজ লালচে হোক, তাতে কী!
1 comment:
Post a Comment