Search

Friday, July 8, 2016

শিরোনামহীন।

[আজকের লেখার শিরোনাম খুঁজে পাচ্ছি না তাই শিরোনাম শিরোনামহীন! ]
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে যে নারকীয় হামলা হয়ে গেল এর ভয়াবহতা গুছিয়ে লেখার ক্ষমতা আমার নাই। নারকীয় কর্মকান্ড করে যে পাঁচ জন সন্ত্রাসী মারা গেল এদের স্থান নরক ব্যতীত অন্যত্র কোথায় আর। এরা জঙ্গী না ঢঙ্গি এই বাহাসে যাওয়া অর্থহীন কারণ সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই তার আবার জাত-পাত কী, ভিন্ন নামই বা কী! এরা স্রেফ একটা চলমান দানব যে দানব যে তার মাকে খেয়ে ফেলে- ধর্ম, দেশ কোন ছার।
আই্এস থেকে হামলার পরই ‘আমাক নিউজের’ বরাতে যে পাঁচজন সন্ত্রাসীর ছবি ছাপা হয়েছিল এদের মধ্যে একজন নিয়ে ঘাপলা হলো সে হচ্ছে এখানকার শেফের সহকারী। এদিকে আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, আইএসপিআর ছয় জন হামলাকারীর মৃত্যুর কথা বললেও পুলিশ ৫ জন সন্ত্রাসীর ছবি প্রকাশ করে। এই পাঁচজন সন্ত্রাসীর মধ্যে ‘রোহান’ নামের সন্ত্রাসীর ছবি ছিল না, ছিল শেফের সহকারীর ছবি। অথচ আইএস যে পাঁচজনের ছবি প্রকাশ করেছিল ওখানে রোহানের ছবি ছিল। পরে আমরা জানলাম রোহানের বাবা হচ্ছেন ক্ষমতাশীন দলের লোক!

পুলিশ মৃত ওই পাঁচজন দানবের যে নাম আমাদেরকে জানায় তারা হচ্ছে আকাশ, বিকাশ, ডন, বাঁধন ও রিপন। তবে তখন তাদের বিশদ পরিচয় আর জানানো হয়নি। কিন্তু চৌকশ লোকজন ঠিকই এটা বের করে ফেলল এই পাঁচজনের নাম আকাশ-বাতাস, ফুল-ফল না এদের নাম হচ্ছে নিবরাস, রোহান, মোবাশ্বের, খায়রুল এবং উজ্জল। এবং এদের অধিকাংশই উচ্চবিত্ত পরিবারের এবং ভালই শিক্ষিত। এর মধ্যে খায়রুলের পরিবার হচ্ছে গরীব, দুবলাপাতলা। আর যায় কোথায়! তার পরিবারের লোকজনকে নিয়ে চলছে ডাকাডাকির নামে গ্রেফতার অথচ রোহান, নিবরাসের পরিবারের লোকজনকে ‘অমায়িক ডাকাডাকি’ করার কথা তো শুনিনি! এই সব করে-করে সরকারের সদিচ্ছার প্রতি আমাদের মধ্যে এক ধরনের আস্থাহীনতা এবং পাশাপাশি ক্ষোভমিশ্রিত ভয়ও কাজ করে।
যেমনটা তীব্র ক্ষোভে আমরা কাবু হয়ে হই যখন দেখি এই হামলার পরপরই প্রধানমন্ত্রীর ঘটা করে চার লেইনের সড়ক উদ্বোধনের নামে ঢাকঢোল পেটানো হয়। এই কাজটা ৪৮-৭২ ঘন্টা পিছিয়ে দিলে সূর্য ক-হাত নীচে নেমে আসত এমনটা মনে হয় না এমনিতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করাতেই হবে এটা জরুরি কিছু না।

একটা খুব ইন্টরেস্টিং বিষয় লক্ষ করলাম, গুলশান ঘটনায় আমাদের দুইজন পুলিশ অফিসার মারা গেছেন অনেক পুলিশম্যান গুরুতর আহত হয়েছেন- পুলিশের লোকজনের প্রতি স্যালুট। অথচ জামাতে ইসলামী বিবৃতি দিল, “দুর্বৃত্তদের নিরস্ত্র করে জীবিতবস্থায় আটক করা উচিত ছিল…ব্লা-ব্লা-ব্লা”।
চুতিয়াগিরির একটা সীমা থাকা দরকার।

এই হামলার পর-পরই তিন দানবের এক ভিডিও বার্তায় ছড়িয়ে পড়ে (সঙ্গত কারণেই ভিডিও ক্লিপটা এখানে দিচ্ছি না।)। ওয়াল্লা, এই দানবগুলো দেখি আবার বাংলায় কথাও বলে! তিন দানবের মধ্যে এক দানব গুলশান হামলা প্রসঙ্গে বলছে,‘রামাদানের এই বরকতময় সময়ে খেলাফতের ভাইদের এতো চমৎকার একটি অপারেশনের খবর পড়ে আমি সত্যিই অভিভূত...’।

আমাদের দেশের চৌকশ লোকজন ঠিকই বের করে ফেলল এই তিন দানবের পরিচয়। আমাদের জন্য বিস্ময়ের-পর-বিস্ময় অপেক্ষা করে; এরাও প্রায় সবাই উচ্চবিত্ত পরিবার থেকে এসেছে এবং ভাল একাডেমিক শিক্ষা নিয়ে।
ভিডিও ঋণ: রুহুল কুদ্দুস রুহেল
ঈদের দিন শোলাকিয়ার অতি নিকটে যে হামলা হলো ওখানে পুলিশ যথাসময়ে এদেরকে আটকে না-দিলে কী ম্যাসাকার হতো তা আমি কল্পনাও করতে পারি না। একজন পুলিশ অফিসার মুর্শেদ জামান শেলাকিয়ায় নামায পড়তে গিয়েছিলেন। পরঞ্জাবি-পায়জামা পরা, কোথায় বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট কোথায় হেলমেট- লড়ে গেছেন বীরের মত। পুলিশের লোকজনের প্রতি আবারও স্যালুট। ওখানে হাতেনাতে যে জঙ্গিকে ধরা হয়েছে সে নাকি নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির। এই নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটি তো দেখি দানব বানাবার কারখানা! একে নিয়ে পুলিশ অস্ত্র উদ্ধারে না-গেলেই হয় কারণ ইতিপূর্বে ফাহিমকে [১] নিয়ে পুলিশ অস্ত্রউদ্ধারে গেছে। এসপি বাবুল আকতারের স্ত্রী মিতু খুনের সন্দেহভাজন যে খুনি সেও ক্রসফায়ারে মারা গেছে।

আচ্ছা, পুলিশ এতো অস্ত্র উদ্ধারে যায় কেন! অন্যের অস্ত্রের প্রতি পুলিশের এহেন লালচ কেন! পুলিশের কী অস্ত্রের অভাব? আহা, এমনটা হয়ে থাকলে আমরা দেশবাসীরা নাহয় চাঁদা করে কিনে দেব নে...।
ঋণ: www.bdnews24.com

১. আ হিউম্যান বম্ব! : http://www.ali-mahmed.com/2016/07/blog-post.html

No comments: