Search

Wednesday, September 23, 2015

কয়েদখানার মেহমান!

সবই পণ্য বিক্রয়ের জন্য- চকচকে মোড়কে আলকাতরা কোন ছাড় বাচ্চাদের ইয়েও অবলীলায় বিক্রি হয়! ধর্মকে কাঠ-মোল্লারা বেচে শস্তায় মিডিয়া বেচে চড়া দামে। যেটা আমরা মাহমুমুদর রহমানের বেলায় দেখেছি।

ডয়চে ভেলের মত আন্তর্জাতিক একটি মিডিয়া এক ব্লগারের কেবল সাক্ষাৎকার নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি সাক্ষাৎকারের নীচে আমাদের মত পাঠকদের উদ্দেশ্যে এটাও জুড়ে দিয়েছে, ‘আপনি কি এর সঙ্গে একমত পোষণ করেন?’
‘এর’ মানে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছে সেই মহান দুঁদে ব্লগার। সাক্ষাৎকারের সঙ্গে ছবিও ছাপা হয়েছে। আমরা বেকুব পাঠক যদি বুঝতে না-পারি তাই নাম লিখে আমাদেরকে অবগত করা হয়েছে। এটা দোষের কিছু না কিন্তু ওখানে লেখা হয়েছে ‘নাস্তিক ব্লগার’।

বাহ, চমৎকার তো! কানকাটা রমজান, মুরগী মিলন, বাইট্টা দবীরের মত এটাও এখন অচিরেই চালু হয়ে যাবে দেড়-চোখ ট্যারা ব্লগার, চশমাচোখা (চোষা না) ব্লগার, এক ঠ্যাংওয়ালা ব্লগার, ‘বেলুন ব্লগার’!
পেটফাঁপা ব্লগার না-বলে ‘বেলুন ব্লগার’ বলা হবে সম্ভবত এই কারণে যে ওই ব্লগার আস্ত একটা গ্যাসের খনি! সঙ্গে ব্লগারের ‘স্বহস্তে’(!) গাওয়া গান,‘বড় সাধ আকাশে উড়াই তিন কুড়ি বেলুন’, (গ্যাসের যেহেতু অভাব নেই হাজার-কুড়ি বেলুন উড়াতে দোষ কোথায়) এটাও ওখানে জুড়ে দেওয়া যেতে পারে।

তো, এই ব্লগার মহতরমা সাক্ষাৎকারে জানাল [১],…‘ফেসবুকে ইভেন্ট খুলে নবীকে সমালোচনা করার সপ্তাহ পালন দোষের কিছু না’।
বটে রে! পূর্বে ‘নবী …সপ্তাহ’ নামের ইভেন্টগুলো যখন দেখতাম সেখানে এমনসব অশ্লীল, কুৎসিত, গা শিরশিরে গালাগালি লেখা থাকত তা দেখে আমি কেবল হতবাক হয়ে ভাবতাম এমনতরো কথা তো চটুল আড্ডায় বলতেও আমাদের রুচিতে আসে না। অথচ এরা জনসমক্ষে এই কাজটাই করছে। বড়ো বাথরুম সারার কাজটাও কী এরা গিজগিজে লোকজনের মাঝেই সেরে থাকে? এই মহতরমা থার্ড রেটেড মুক্তমনা শিক্ষিত দূরের কথা এ তো দেখি চুতিয়ারও অধম!

আহ, শিক্ষিত! আমার এখন মনে পড়ছে উচ্চশিক্ষিত এক কুলাঙ্গারের কথা; কোটি-কোটি মানুষের কাছে অতি শ্রদ্ধার একজনকে নিয়ে যে নোংরা ভাষায় এন্তার আবর্জনা উৎপন্ন করে গেছে এমন ভাষা অশিক্ষিত উগ্র বেশ্যারাও ব্যবহার করে কিনা এতে আমার ঘোর সন্দেহ আছে। এ নাকি একজন মুক্তচিন্তার মানুষ ছিল! এটার নাম যদি মুক্তচিন্তা হয় এমন মুক্তচিন্তার মুখে আমি থুথু ফেলতেও আলস্য বোধ করব। কালে-কালে সবাই মিলে ব্লগিং-ব্লগার নামটাকে স্রেফ একটা শবে পরিণত করছে [২]

আমাদের দেশে আরজ আলী মাতব্বুরের চেয়ে বড় নাস্তিক কমই আছে। তাঁর অধিকাংশ লেখা আমার পড়া। কিন্তু কোথাও তিনি কোনও ধর্মকে নিয়ে নোংরা কথা বলেছেন এমনটা আমার জানা নাই। কিন্তু তিনি বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে কঠিন কঠিনসব যুক্তি দিয়ে লিখে গেছেন। এই লেখাগুলো পড়লে বোঝা যায় কী অগাধ পড়াশোনা তাঁর! ধর্ম নিয়ে ‘ভবঘুরে’ নামের একজনের সিরিজ আকারে লেখা আছে কিন্তু কোথাও নোংরা কথা চোখে পড়েনি। বরং তথ্য-উপাত্ত দেখে মনে হয়েছে ধর্ম নিয়ে তার প্রচুর পড়াশোনা। আলি দস্তির লেখা পড়লেও একই কথা বলা চলে। তো, এরা বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করেছেন কিন্তু মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করেননি।

ইভেন্ট খুলে…এই চুতিয়ারা বুঝতে চায় না সব কিছু নিয়ে খেলা করা চলে না যেমনটা চলে না কারও আবেগ নিয়ে। কিছু ক্ষেত্রে যুক্তি অচল। কেউ তার মৃত মার সম্ভ্রম রক্ষার জন্য লড়াই করে হিংস্র কুকুরের ন্যায়। কেন করে? কী আছে মা নামের মৃতদেহের পুরনো ক-খানা হাড়ে? উত্তর নেই! সব প্রশ্নের উত্তর হয় না।

আর আমরা নাস্তিক এবং ধর্মবিদ্বেষীকে গুলিয়ে ফেলছি। পূর্বের এক লেখায় যেটা আমি লিখেছিলাম:
“এমন অনেকেই আছেন যাদের ১০০টা লেখার মধ্যে দেখা যাবে ৯৯-টাই ধর্মসংক্রান্ত অতি জঘন্য কথা লেখা। যুক্তি, তথ্যের বালাই নেই। এদের এই কাজটা ইচ্ছাকৃত। লোকজনকে উত্তেজিত করার অপচেষ্টা! এই সমস্ত শিক্ষিত মানুষগুলো কেন এমনটা করে, 'জাস্ট এটেনশন সিকার'? কোন-এক পাহাড়ির কাছে একটা নিরেট পাথর ঈশ্বরতুল্য- অন্য একজনের কি কাজ এটায় লাথি মারার। এই গ্রহে কী লাথি মারার পাথরের অভাব পড়েছে! এরা নাস্তিক কিনা সেটা জরুরি না কিন্তু এরা নাস্তিক-মুক্তমনা(!) নামের আড়ালে একেকজন চলমান ইতরবিশেষ। অন্যের মত-বিশ্বাস-আবেগকে পদদলিত করে কেমন করে মুক্তমনা হওয়া যায় এটা আমার বোধগম্য হয় না!” [৩] 
আরেক দল আছে এরা ধর্ম উদ্ধারের নামে অবলীলায় অন্যের প্রাণ নষ্ট করছে [৪]। যেগুলো স্রেফ জঘন্য খুন! এই দুই দলই অতি উগ্র জন্তুবিশেষ। এদেরকে যত দ্রুত সম্ভব আইনের আওতায় আনাটা জরুরি। কয়েদখানার মেহমান না-হলে এরা যে বড়ো বেমানান…।

সহায়ক সূত্র:
১. ডয়চে ভেলে: http:/dw.com/p/1GTBW
২: ব্লগিং-বোলোগিং, আস্তিক-নাস্তিক! : http://www.ali-mahmed.com/2013/03/blog-post_15.html
৩. একটি খুন, অতঃপর: দুই। :http://www.ali-mahmed.com/2015_03_23_archive.html
৪. পাজি-অসভ্য-ইতর-দানব-খুনি!: http://www.ali-mahmed.com/2015_04_09_archive.html

No comments: