আমাদের কিছু সংসদ সদস্য মহোদয়গণ কতিপয় মিডিয়ার উপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সংসদ সদস্য মহোদয়গণ কি দেবদূত যে তাঁদের নিয়ে সমালোচনা করা যাবে না? সমালোচনা করলেই কটাক্ষ হয়ে যাবে? কেন মহান সংসদ অবমাননা হবে না তার জন্য রুল জারি হবে?
আমরা গণতন্ত্রের যে চারাটা রোপণ করি তার গোড়ায় ঢেলে দেই গ্যালন গ্যালন রাসায়নিক দ্রব্য। অধিকাংশ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আনুমানিক চার-পাঁচ কোটি টাকায়। হাজারটা খরচ বাদ দিলেও নির্বাচন করার জন্য যে দলের টিকেট পান সেই দলে কত টাকা চাঁদা দিতে হয় সেটার প্রকৃত তথ্য জানলে হিসাবটা অনেকটা সহজ হয়ে আসে।
খরচের এই সংখ্যা নিয়ে কু-তর্ক করার পূর্বে সাধারণ একটা পৌরসভার মেয়র হওয়ার জন্য কত টাকা খরচ হচ্ছে এটা একটু খোঁজ নিলে চোখ গোল হয়ে যাবে। ১০ ফিট বাই ১২ ফিটের একেকটা ভিনায়েল বোর্ড নামের জিনিসটার খরচ দাঁড়ায় পাঁচ হাজার টাকা। এমন ৫০টা ভিনায়েল বোর্ড নস্যি! কেবল একটা খাতেই আসে আড়াই লাখ টাকা! এ তো কেবল তবলার ঠুকঠাক! তবলা বাজাবার জন্য যে সারা রাত পড়ে আছে।
অবশ্য প্রত্যেকটা ভিয়ায়েল বোর্ডে মেয়র প্রার্থীর শুভানুধ্যায়ীর আনুপাতিক হারে ছোট একটা ছবি থাকে এবং মানুষটার বক্তব্যও থাকে যে, তিনি নাচতে নাচতে অতি আনন্দে এটা তার প্রার্থীর জন্য করে দিয়েছেন। এটা জানার জন্য রকেটবিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন হয় না এই খরচটা তিনি না মেয়র প্রার্থীই জুগিয়েছেন।
তো, চার-পাঁচ কোটি টাকা খরচ করে একজন সংসদ সদস্য হন জনসেবা করার জন্য। আহারে জনসেবা! চার-পাঁচ কোটি টাকা খরচ করে জনসেবা করার জন্য সংসদ সদস্য হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না- এরচেয়ে অনেক কম টাকায় শত শত গ্রামের চেহারা আমূল পরিবর্তন করে দেয়া সম্ভব। তবুও একেকজন এমন বিপুল টাকা খরচ করে সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকেন। আমরা ঘটা করে এঁদের আবার ভোট দিতে যাই। ফল যা হওয়ার তাই হয়। জীবনে একবার সংসদ সদস্য হতে পারলে আর পায় কে! ক্ষমতা-টাকা-তকমা সমস্ত কিছুই তখন হাতের মুঠোয়। এরাই আইন করেন, পদে পদে আইন ভাঙেন!
তারপর প্রয়োজন হয় শুল্কমুক্ত গাড়ির। যিনি ছিলেন আলুর বেপারি তিনি আনেন লেক্সাস, হামার, ফেরারী। সেই গাড়িটিই পাওয়া যায় অভিজাত শো-রুমে। হাত বদল হয় অন্তত ৫০ লক্ষ টাকা! কত্তো কত্তো সুবিধা ভোগ করা যায়, কতটা যে নিলাজ হওয়া যায়! উদাহরণের জন্যে একজন দেলোয়ার সাহেবই [১] যথেষ্ঠ!
মাসের-পর-মাস, বছরের-পর-বছর ধরে একজন সংসদ সদস্য সংসদে যান না কিন্তু তাঁর বেতন-ভাতা নিতে বিন্দুমাত্র অপ্রতিভ হন না। অন্যদের কথা না-হয় বাদই দিলাম, খালেদা জিয়া বর্তমান সংসদে ১৫৮ কার্যদিবসের মধ্যে মাত্র ৫দিন উপস্থিত ছিলেন! আর গত টার্মে শেখ হাসিনা ৩৭৩ কার্যদিবসে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ৭২ দিন! এই যে মন্ত্রী, সংসদ সদস্যরা সংসদে যান না এঁরা কি বেতন-ভাতাদি গ্রহন করেন না? করেন, আনন্দের সঙ্গেই করেন।
আমাদের দেশে জবাবদিহিতার চল নেই। উন্নত দেশগুলোর মত আমরা এটার জিজ্ঞেস করার সাহস রাখি না কারণ হাতে মুখে-গণতন্ত্রের ঝান্ডা যে আমাদের।
ব্রিটেনের সেনাপ্রধান জেনারেল স্যার পিটার ওয়াল অতিরিক্ত মোটা হওয়ার কারণে সরকারি উর্দি গায়ে আঁটছে না বিধায় নতুন করে উর্দি বানাতে হয়েছে এবং এই বাড়তি খরচ লক্ষাধিক টাকা দিতে হবে তাঁর নিজের গাঁট থেকে।
বাংলাদেশের কোন সেনাপ্রধানের এই অবস্থা হলে এবং এই বাড়তি খরচটা তাঁর বেতন থেকে কাটা যাবে এটা আমরা স্বপ্নেও ভাবি না। 'খোদা-না-খাস্তা' জনসাধারণের কেউ এই নিয়ে বাতচিত করলে তিনি বাত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিত হয়ে পড়ে থাকবেন এটা বলতে পারলে ভাল লাগত। আফসোস, না থাকবে শরীর, না থাকবে বাত, না হবেন চিত! পাহাড়ে পাহাড়ে হুটোপুটি খাবে কেবল গণতন্ত্র!
সহায়ক লিংক:
১. খোন্দকার দেলোয়ার: http://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_12.html
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Friday, September 24, 2010
ধপধপে সাদা পাঞ্জাবিতে ছোপ ছোপ কালো দাগ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment