বহুজাতিক কোম্পানিগুলো হচ্ছে একেকটা চলমান রোবট বানাবার কারখানা। এরা ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষকে চোখে চোখে রাখবে যতক্ষণ পর্যন্ত সে পুরোপুরি রোবট হয়ে না উঠে। আসলে উপায় থাকে না কারণ একের পর এক চকচকে লোভের হাড় মানুষের দিকে ঝড়ের গতিতে ছুটে আসতেই থাকবে- এই হাড় থেকে অবিরত চুইয়ে পড়ে বাড়ি-গাড়ি-নারি আরও কত কী, ইয়াত্তা নাই!
এভাবেই ক্রমশ মানুষের যুগ শেষ হয়ে আসছে- শুরু হচ্ছে রোবটের যুগ। যে অল্প ক’জন মানুষ আছেন এরা কিছুটা মানুষ কিছুটা রোবট। কারও হয়ত দেখা গেল দু-চোখের এক চোখ মানুষের, অন্য চোখ রোবটের। তীব্র বেদনায় এক চোখে পানি বের হচ্ছে তো অন্য চোখ শুকনো খটখটে। জমজ শিশুর একটা হয়তো মানব-ভ্রুণ, অন্যটা রোবট-ভ্রুণ।
বড় হয়ে ওই মানব ভ্রুণটা একটি কুকুরের জন্য চোখের জল ফেলছে (কুকুরটিকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছিল। সাত-আটটি ছোট ছোট দুধের বাচ্চা। সবগুলো বাচ্চা মার মৃতদেহের ওপর পড়ে আছে। বৃথাই দুধ টানার চেষ্টা করছে)।
অন্য দিক। একটি মানব সন্তানের মৃত্যু হলে রোবট-ভ্রুণটা মরা মাছের চোখ করে বলছে: শিট, একটা চিপ নষ্ট হলো।
এক বহুজাতিক কোম্পানির বড় কর্তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আচ্ছা, তোমরা কাজ-কাম চালাও কেমনে?
সে উত্তর দিয়েছিল, আমরা তো কাজ করি না মিটিং করি, মিটিং-এর উপরই থাকি। খোদা না খাস্তা যখন কেউ ফ্রি থাকে তখন বলি, কোন কাজ নাই তো একটা মিটিং ডাক। আসলে আমরা মিটিং নিয়েই থাকি, মেটিং করারও সময় পাই না।
আবার প্রশ্ন করা হয়েছিল, তোমাদের এতোসব উদ্ভট আইডিয়া পাও কোত্থেকে?
সাবলিল উত্তর, কেন, কেন রেস্ট-রুম থেকে!
মানে টাট্টিখানা-পাইখানা থেকে!
ইয়াপ।
বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্যর কিছু নমুনা দেয়া যাক। ধরা যাক একটা পণ্য, চিপস (যান্ত্রিক চিপস না, খাওয়ার চিপস। যেটা খেলে কুড়মুড় শব্দ হবে, হবেই, শব্দ না করতে চাইলে চিপস পানিতে ভিজিয়ে চামচ দিয়ে খেতে হবে)। তো ওই কোম্পানীর চিপস দেশে-বিদেশে (বুধ, বৃহস্পতি গ্রহ ব্যতীত) হু হু করে বিক্রি হচ্ছে।
এমনি এমনি না, বাজারজাত করা একটা ভারী কু-জটিল প্রক্রিয়া।
মাসের শুরুতে জানতে চাওয়া হবে এ মাসে কত বিক্রি হবে। যিনি বিক্রি করবেন তিনি অনেক আঁকজোক কষে, বৃষ্টি মেপে, গোপন জায়গায় রোদ লাগিয়ে, চুলকিয়ে; রোদের তীব্রতা বুঝে এবং ওই এলাকায় কতজন লোক আসবে কতজন যাবে এই সূক্ষ্ম হিসাব করে বললেন: ত্রিশ টন।
কিন্তু বিক্রি করতে বলা হলো চল্লিশ টন। ত্রিশ টনের হিসাব নাক মুছে কোথায় ফেলে দেয়া হয়েছে কে রাখে এর হিসাব।
তো চিপস বিক্রি শুরু হলো। চাহিদার হেরফের হলো। কিছু লোক হুট করে অন্যখানে চলে গেল ব্লাডার খালি করতে নচেৎ কিছু লোক বিচিত্র কারণে এখানে চলে আসল।
কিন্তু অমোঘ নির্দেশ এলো: চল্লিশ টন থেকে এক প্যাকেট চিপসও বেশি বিক্রি করা যাবে না। এমনটি এক প্যাকেট কমও না। মাস শেষে হাতে মজুদ থাকবে কত এটাও নাকি মাসের শুরুতেই নির্ধারিত হয়ে আছে।
তাহলে উপায়? মানব-রোবটদের এ দুর্দশা দেখে বহুজাতিক কোম্পানি তাচ্ছিল্যের হাসি হাসে। হাসে মানে ডিজটাল ডিসপ্লেতে হাসির একটা ভংগি ফুটে উঠল। গোলের নামে ব্যাখ্যা দেয়া হল, এ তো খুব সোজা। তোমরা কিছু নিম্ন শ্রেণীর রোবট মার্কেটে ছেড়ে দাও। যখন দেখবে বিক্রির বারোটা বেজে গেছে তখন এরা উদ্বৃত্ত চিপস কপাকপ করে খেয়ে ফেলবে। বিক্রি বেশি হলে কোথায় বাড়তি চিপস পাওয়া যাবে এটা অবশ্য এড়িয়ে যাওয়া হল।
আরও বলা হলো, জীবনটা হচ্ছে একটা দৌড়, লম্বা দৌড়- এখানে হিসাব ব্যতীত অন্য কিছুর স্থান নাই। তোমরা আমাদের ‘পাই... থেরাপীর’ দিকে তাকাও- আমরা যখন পাই...-এ যাই ডেলিভারী দেয়ার জন্য, হররোজ, প্রত্যেকবার ডেলিভারি নির্দিষ্ট সংখ্যা থাকে যেমন তিনশো আউন্স- এক আউন্স বেশি-কম হলে পাইখানার দরোজা আর খূলবে না।
ছবিসূত্র: ইন্টারনেট, বাথবিজ
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Monday, January 12, 2009
পাই... থেরাপী
বিভাগ
সাদাকে কালো বলিব
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment