Search

Sunday, June 8, 2014

সাপের বিবাহ


বাসার ঠিক সামনেই ফাঁকা যে জায়গাটা যেখানে, হাবিজাবি গাছ লাগানো এখানে ফি রোজ নিয়ম করে হাঁটাহাঁটিঁ করা, গাছের সঙ্গে সময় কাটানোটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে নইলে কেমন ফাঁকা-ফাঁকা লাগে!
শেষ বিকেলটায় পারতপক্ষে আমি কারও সঙ্গে দেখা করা বা কোনো কাজ রাখি না

আজও যথারীতি গাছের সঙ্গেসাপটা যখন আমার চোখে পড়ল তখন আমি নিঃশব্দে পিছিয়ে এলামশতবর্ষ পুরনো বাড়ি এখানে সাপ থাকাটা তো বিচিত্র কিছু নাপরী নেই এটাও জোর দিয়ে বলা চলে না
পশু-পাখি, সাপ-খোপ এরা আমাকে ঘাঁটায় না আমিও এদের লেজ মাড়াই নাকোনও সমস্যা হয় না আমাদের, চলে যায়আমি সাপটার সঙ্গীটাকে খুঁজছিলামআশেপাশে কোথাও দেখলাম না

পরে যখন আমি একজনকে ঘটনাটা বলছিলাম তিনি চোখ লাল করে বললেন, ‘ফাজলামীর একটা সীমা থাকা দরকারএ-হ, এর আবার সঙ্গীকেও খোঁজা হচ্ছে, কারণ কী’?
আমি হাসতে হাসতে বললাম, ‘সঙ্গীটাকে পেলে এদের বিবাহ দিয়ে দিতামআরে, কী মুশকিল এতে অবাক হওয়ার কী আছে! কেন পত্রিকায় তো আমরা হরদম পড়ি ব্যাঙের বিয়ে’, পড়ি না? পত্রিকাওয়ালা তো ঘটা করে প্রথম পাতায় ব্যাঙের বিবাহের খবরটা ছাপায়অবশ্য পত্রিকায় কাজের তথ্য জানা যায় নাএই যেমন ধরো, মোহরানা কত ছিল? ব্যাঙ ভাইয়া কী পরে বিবাহ করেছিলেন, শেরোয়ানি নাকি লুঙ্গি? বাসর রাতে কোন কোম্পানির জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রি ব্যবহার করেছিলেন? বা ব্যাঙ ভাইয়া ব্যাঙানি ভাবিকে বাসররাতে কি বলে সম্বোধন করেছিলেন? এরপর (সেন্সর)... ইত্যাদি ইত্যাদি...

আচ্ছা, ধরো এটা করলে কেমন হয়? বর্ষাকালে যেন বৃষ্টি না-হয় এ জন্য আমি সাপের বিবাহ দিলাম ভাল কথা, এই নিউজটা কি মতিউর রহমান ছাপাবেন? শিরোনামটাও হবেপাঠকখাওয়ানিয়াটাইপের, 'সাপের বিবাহ, যৌতুকবিহীন'...আহা-আহা, কেউ মতিউর রহমানকে রাজি করাতে পারত, চাইলে মতিউর রহমানকে বিবাহের উকিলও বানিয়ে দেওয়া যেতে পারেঅবশ্য টাকা দিলে এটা বিজ্ঞাপন আকারে হাসতে হাসতে ছাপিয়ে দেবেন
আগেভাগে এটা জানতে পারলে সাপ ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলতে হবেএরপর আবার কথা বলতে হবে মহিলা সাপের সঙ্গেযন্ত্রণার কী শেষ আছে,...’!

ভোরের কাগজ। সম্পাদক, মতিউর রহমান
প্রথম আলো। সম্পাদক, মতিউর রহমান

No comments: