![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEj2qxKMZdkSS4OUlaYf_EIi3thn2vKEnEbPZ58SvhjxmeSYtIiKUzhvWZfI_Lx4RHtZhZbW8dZ-KP9FFo1KXkNJpMSEWfOt1F_oCmnmRnVNXKRwq2UdfZEOBMeX342TLWlfEpsmWHJbhTM/s200/images.jpg)
এই দেশের সেরা এই সন্তানটার পদোন্নতি হয়েছে। আমার তো সামরিক কায়দায় এই মানুষটাকে স্যালুট করার সুযোগ নাই কিন্তু তবুও স্যালুট করি, হে বীরপ্রসু দেশমার বীর সন্তান, অনেক কাল না-ঘুমানো চোখটাকে এবার খানিকটা বিশ্রাম দাও।
তিনি কর্ণেল জামিল উদ্দিন আহমেদ। কর্নেল জামিল নামের এই মানুষটার পদোন্নতি হয়ে আজ তিনি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল।
"১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট রাতে ঘাতকেরা যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর হামলা চালিয়েছিল তখন সেনাবাহিনীর একজন মাত্র সাহসী সৈনিক এগিয়ে গিয়েছিলেন তাঁকে রক্ষার জন্য। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কর্নেল জামিলকে ফোন দেয়ার পর কী কী ঘটেছিল দেশ টিভিকে সে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তার কন্যা আফরোজা জামিল। তিনি বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর গলা কাঁপছিল। আমার মাকে বলছিলেন, জামিল কোথায়? জামিলকে দে'।
তিনি আরও বলেন, 'বাবা ফোন ধরে বললেন, জ্বী স্যার...আমি এখনই আসছি। মা যখন জিজ্ঞাসা করলো যে, বঙ্গবন্ধু ফোনে কী বলেছে, বাবা জানালেন বঙ্গবন্ধু বলেছেন, আমি বোধহয় আর বাঁচবো না। তুই আমাকে বাঁচা'।"
কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক এই কুতর্ক থাকুক তর্কবাজদের জন্য কিন্তু একজন সৈনিকের যে দায়িত্ব, মিশন তা তিনি করে দেখিয়েছেন। একজন সৈনিক, একজন পুরুষ! বিচিহীন অন্যদের আমি পুরুষের কাতারে ফেলতে নারাজ। আমার ধারণা, এই দেশে দায়িত্বে থাকা বিচিযুক্ত কোন পুরুষ তখন ছিলেন না, 'হিজড়ো কি মেলা'!
১৯৭৫ থেকে ২০১০, অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে কর্নেল জামিল নামের পুরুষটার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে। এই প্রজন্মের একজন আমি, আবারও তোমায় স্যালুট করি, ম্যান।
বেশ, কর্নেল জামিলকে পদোন্নতি দেয়া হলো কিন্তু তৎকালিন আর্মি চিফ অভ স্টাফ শফিউল্লাহ কেন এখনও মেজর জেনারেল থাকবেন? এই কাপুরুষ মানুষটাকে কেন মেজর জেনারেল থেকে অন্তত একধাপ নীচে নামিয়ে দেয়া হবে না?
দুই কিস্তিতে ১৬.০৮.৯৩ সালের ভোরের কাগজে মেজর জেনারেল শফিউল্লাহ দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দেন। "দেখুন, বলতে গেলে ১৫ আগস্টের ঘটনাবলীর পর থেকে আমি ১৭ বছর দেশের বাইরে ছিলাম...তখন অনেক কিছু মনে পড়ে। আমি ভাবি, সেদিন যদি একটা সৈন্যদল নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম তাহলে কি হতো? তাহলে হয়তো বঙ্গবন্ধুকে বাঁচানো যেত।...একাত্তর সাল থেকেই আমি অদৃষ্টবাদী হয়ে পড়েছি।"
হা ঈশ্বর! একজন সৈনিক যুদ্ধক্ষেত্রে যখন অদৃষ্টবাদী হয়ে পড়ে, 'আল্লার মাল আল্লা নিয়া গেলে আমার কী করার আছে' এই বলে আত্মপ্রসাদ লাভ করে, তখন সেই জাতির কী হয় তা সহজেই অনুমেয়।
আমার ধারণা, একজন শফিউল্লার মত মানুষের এমন কাপুরুষিত কু-উদাহরণ সৈনিকের চেইন অভ কমান্ড নামের সাহসের শেকলটার তছনছ করে দেয়। এই মানুষটা হচ্ছেন উদাহরণের জন্য এ গ্রহের একটা জঘণ্য উদাহরণ- এমন বিপুল ক্ষতি এই দেশের আর কেউ করেছে বলে অন্তত আমার মনে হয় না। পথিকৃৎ তিনিই, অজান্তেই অন্যদের পথ বাতলে দিয়েছেন।
মানুষটা কেন এখনো জাপানি কায়দায় পেট চিরে আত্মহত্যা করেননি এটা ভেবে কূল পাই না।
No comments:
Post a Comment