হুমায়ূন আহমেদ "ফাউনটেনপেন" নামের আত্মজৈবনিক লেখাটা সম্ভবত অন্যত্র লিখেতেন। হুমায়ূন আহমেদ এখন কালের কন্ঠে লিখছেন। টাকার পরিমাণটা সম্ভবত মুখ ভরে লালা চলে আসার মত। আমি নিশ্চিত, হুমায়ূন আহমেদ গোলাম আজমের পত্রিকা 'মুড়ির ঘন্টে'ও লিখবেন, টাকার অংকটা আপাদমস্তক লালায় ভিজে যাওয়ার মত হলেই হলো। যাক, সমস্যা নাই, নইলে আমরা শিখব কেমন করে? কেমন করে কলম পদতলে রেখে দিতে হয়!
হুমায়ূন আহমেদের মত লেখকরা লেখেন সব সময় গা বাঁচিয়ে, চোখে রঙিন চশমা লাগিয়ে। এঁদের লেখা পড়লে মনে হয় এই দেশে কোন সমস্যা-অন্ধকার দিক নাই। চোখে থাকবে জ্যোৎস্নার প্রলেপ, কলমের নিব হবে খাঁটি জ্যোৎস্নার!
ইমদাদুল হক মিলন এবং হুমায়ূন আহমেদ পরস্পরকে নিয়ে যখন লিখেন, সেই লেখা পড়ে বোঝার জন্য রকেটবিজ্ঞানী হতে হয় না। এই লেখাগুলো হচ্ছে পরস্পরের পিঠ চুলকে দেয়া।
এইবার খানিকটা অন্য রকম হয়েছে। হুমায়ূন আহমেদ ২৬ মার্চ, ২০১০-এ 'ফাউনটেনপেন'-এ লিখেছেন, "নিজের প্রশংসা নিজে করার সবচেয়ে খারাপ উদাহরণ ইমদাদুল হক মিলন। গত বইমেলা বিষয়ে তার একটা লেখা কালের কন্ঠের সাহিত্য পাতায় ছাপা হয়েছে। সে লিখেছে...তখন আমার একটা বই বাংলা একাডেমী বেস্ট সেলার ঘোষণা করেছে। প্রকাশক চাহিদামতো বই জোগান দিতে পারছে না। বইটির জন্য বইমেলার অনেক জায়গায় কাটাকাটি মারামারি হচ্ছে...।"
ইমদাদুল হক মিলনের এই লেখা যখন আমি পড়েছিলাম তখন আমি হাঁ করে ভাবছিলাম, একটা মানুষ কেমন করে এতোটা নির্লজ্জ হয়। ইমদাদুল হক মিলন সুপুরুষ একজন মানুষ। এমন একজন সুপুরুষ মানুষ পোশাক গায়ে দিয়েও নগ্ন দেখালে ভালো দেখায় না! তখন এই প্রসঙ্গে একটা লেখা দিয়েছিলাম, ইমদাদুল হক মিলন, একজন ঢোলবাজ। মানুষটা যেমন একজন ঢোলবাজ তেমনি একজন তেলবাজও!
নিজের প্রশংসা নিজে করার আরেকটা খারাপ উদাহরণ আমি দিতে পারি। ঠিক নিজের না হলেও নিজের লোকজনের। হুমায়ুন আহমেদ একদা ভাঙ্গা রেকর্ডের মত বলেই যেতেন, "আমার বউ পরীর মত সুন্দর-আমার বউ পরীর মত সুন্দর-আমার বউ পরীর মত সুন্দর"। শুনে শুনে প্রায়শ মনে হতো, বেশ, তা আমি কী করব, বাপ!
এখন হুমায়ূন আহমেদের বউ পরিবতর্ন হয়েছে। বলার ভঙ্গিও খানিকটা পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু ঘুরেফিরে চলেই আসে- কেউ কেউ কখনো বদলান না।
'মাতাল হাওয়া'-র প্রাককথনে হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন, "...প্রুফ দেখা, গল্পের অসঙ্গতি বের করার ক্লান্তিকর কাজ করেছে শাওন। তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।"
ফাউনটেনপেনের এই পর্বে লিখেছেন, "...একটায় থাকে কাপড়চোপড়। এটা শাওন গোছায়।" এমন অসংখ্য উদাহরণ!
হুমায়ূন আহমেদের মত বড়ো মাপের মানুষরা আমাদের মত সাধারণ কলমচিকে সমস্যায় ফেলে দেন। আমাদের গতি কী!
কখনও কখনও ইস্তারী সাহেবার কটু কথা শুনতে হয়। তখন গনগনে মুখ দেখে ভ্রম হয়, সূর্যের চেয়ে বালির উত্তাপ ছাড়িয়ে গেছে। কটু কথাগুলোর মধ্যে সহনীয় যেটা, "কোন দিন তো দেখলাম না, কোন লেখায় আমার নাম আসতে, আমি কী তাড়কা রাক্ষসী? এ্যাহ তাইনে বড়ো লেখক হইছে, এক পাতা লেখতে ১০টা বানান ভুল। নিজের লেখা নিজেই পড়ে, এ্যাহ! নিজের বউয়ের কথা লেখকদের কেমন করে লিখতে হয় এটা হুমায়ূন আহমেদের কাছ থেকে শেখো।"
আমি ইস্তারী সাহেবাকে কেমন করে বোঝাই আমি তো লেখক না, লেখার রাজমিস্ত্রি- আমার কাজ কেবল একের পর এক শব্দের ইট বসাবার চেষ্টা করে একটা কাঠামো বানাবার চেষ্টা করা। ব্যস, আর কিচ্ছু না...।
হুমায়ূন আহমেদের মত মানুষরা কেন যে বুঝতে চান না, ঢোল বাজানো ভাল কিন্তু মাঝরাতে ঢোল বাজানো কোন কাজের কাজ না। এটা ওয়াজ মাহফিল না যে মধ্য রাতে চারদিকে চারটা মাইক লাগিয়ে হরদম নসিহত করতে হবে।
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Sunday, March 28, 2010
হুমায়ূন আহমেদ সাদাকে সাদা বলিলেন, তবে...
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
5 comments:
হুমায়ূন আহমেদ যা করেন জেনে শুনেই করেন। বাংলাদেশে যদি ভন্ডের কোন তালিকা করা হয় মাশাল্লা উনি এক নম্বরে থাকবেন।
এই মানুষটা, হুমায়ূন আহমেদ, কেন এমন করেন আমি বুঝি না। অনেক সময় ক্ষিধার জ্বালায় কেউ-কেউ কলম বিক্রি করে দেন। শামসুর রাহমান ক্রমশ অন্ধ হয়ে যাচ্ছিলেন, চোখের অষুধ সময়মতো কিনতে পারতেন না।
কিন্তু টাকার বস্তায় শুয়ে থাকা হুমায়ূন আহমেদের কিছু কর্মকান্ড দেখে আমার নিজেরই লজ্জা করে। এই মানুষটা বুঝতে চান না, এই দেশের লক্ষ-লক্ষ মানুষ তাঁকে অনুকরণ করে। এমন একজন মানুষ ইচ্ছা হলেই যা-খুশী করবে এমনটা ভাবা যায় না...।
লেখাটি enjoy করেছি...
keep it up....
আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগছে। @ Shakil Huq
Post a Comment