আমার এক সুহৃদকে কথা প্রসঙ্গে বলেছিলাম, যারা নাস্তিক এদের মতো অভাগা আর কেউ নাই।
তিনি নির্বিকার ভঙ্গিতে বললেছিলেন, ভুল। এরা মোটেও অসহায় নন। এরা জেনেশুনেই নাস্তিক হচ্ছেন। অফুরন্ত জ্ঞান নিয়ে।
সাদামাটা দৃষ্টিতে এতে কোন ভ্রান্তি থাকার কথা না। কোন নাস্তিকের চোদ্দপুরূষ নাস্তিক হলে বিষয়টা যত সহজ, অন্যদের বেলায় ততটা না- উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া মস্তিস্কের গাদাগাদি করে থাকা বিপুল তথ্যভান্ডার, জেনেটিক কোডের সারি সারি অদেখা উপাত্ত।
আসলে আমার এই বক্তব্যে খানিকটা ভুল ছিল। আমার এই মন্তব্য করার পূর্বে এটা নির্দিষ্ট করা উচিৎ ছিল, কে অসহায়? যে মানুষটা বৃত্তের ভেতর (জন্মসূত্রে পাওয়া প্রচলিত কোন এক ধর্ম), না বাইরে? অবস্থানটা খুব বড়ো একটা ফ্যাক্টর- আদৌ তার অবস্থানটা কোথায়?
বৃত্তের ভেতর থাকাটা বড়োই সুখের, পরিচিত গা ছাড়া ভাব- চিরাচরিত গাদাগাদি ভাবনা। সব ব্যাটা ঈশ্বরের কাঁধে চাপিয়ে দাও। এটা সম্ভবত প্রকৃতিরও বড্ডো পছন্দ। এমনিতে প্রকৃতির প্রচলিত নিয়মে ভারী আমোদ- ব্যতয় তার খুব পছন্দের বিষয় না!
আসলে এঁদের (নাস্তিকদের) অভাগা আমি বলতে চেয়েছিলাম এই অর্থে- এমন একজন, যে বৃত্তের বাইরে এক পা ফেলে রেখেছে, অথচ যার বৃত্তের বাইরের যথেষ্ট জ্ঞান নাই।
জ্ঞান?
বেশ, ধরে নিলাম, একজন মুক্তি পেল অজ্ঞানতাপ্রসূত এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যে প্রত্যেকটা ধর্মই পক্ষপাতদুষ্ট এবং এই ইগো তার ধর্মই সেরা! এই অমোঘ নিয়মে সেই ধর্মানুসারীদের যথারীতি জন্ম নেয় অন্য ধর্মের প্রতি তাচ্ছিল্য। ক্রমশ আটকা পড়া একটা বৃত্তে অনবরত ঘুরপাক খাওয়া। যেন গডরা ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন, কার সন্তান সেরা এটা প্রমাণে। কেবল তাঁর সন্তানরাই থাকুক দুধে ভাতে, অন্যরা যাক নরকে।
যেমন এক মানুষ বহু মানুষে বিভক্ত হয়েছে। যেমনটা মানুষের হাতকে বিভক্ত করা হয়েছে আঙ্গুলে, কাজের সুবিধার জন্য। মে বী, এত ধর্ম নিশ্চয়ই মানুষের সুবিধার জন্যই হবে। কে জানে, গডকেও ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করা হয়েছে এ কারণে হয়তো বা!
এমনিতে পৃথিবীর সমস্ত ধর্ম এবং মহাপুরুষদের কাজ তো একটাই, পিস। এই পৃথিবীটা চমৎকার থাকুক। যে যেই ট্র্যাকে আছে সেই ট্র্যাকেই থাকুক, এটাই মঙ্গল। একজন মানুষের ভেতর লুকিয়ে থাকে একটা শিশু এবং পশু। আপ্রাণ চেষ্টা করা হয় পশুটাকে বার না করার, তবুও কখনো কখনো বেরিয়ে আসে পশুটা। অবিরাম চেষ্টা ধর্মীয় কিছু বিধি নিষেধ প্রয়োগ করে অন্ধকার জগতে আলোর প্রলোভন দেখানো।
কিন্ত একজন নাস্তিকের এই বাড়তি সুবিধাটুকু নেই। তাঁর ভরসা হচ্ছে অর্জিত জ্ঞান। এটুকুই তাঁর পুঁজি- লোটা কম্বল। এখন তাঁর এই ধারণা যদি এমন থাকে সর্বশেষ জ্ঞানটুকু তাঁর কাছে আছে, বেচারা বেঁচে গেল।
হায়রে জ্ঞান! কবেকার জ্ঞান, কোথাকার জ্ঞান, কোন কালের জ্ঞান! একটু যদি এভাবে দেখি, বিষুব রেখার সমতলে পৃথিবীর ব্যাস ৭৯২৭ মাইল, পৃথিবী থেকে সূর্য ১৩ লাখ গুণ বড়। সূর্যের মতো ১ লাখ নক্ষত্র আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কিওয়েতে আছে। সাধারণ হিসাবে আমাদের গ্যালাক্সিতে প্রায় দশ হাজার কোটি নক্ষত্রের অস্তিত্ব আছে। আর ইউনিভার্সে আছে বহু মিলিয়ন গ্যালাক্সি- গ্যালাক্সিগুলোর ব্যাস ৫ লাখ আলোকবর্ষ পর্যন্ত।
আপাততদৃষ্টিতে আমাদের জ্ঞান এসে দাঁড়িয়েছে এ পর্যন্ত:
অনেকটা এমন, অসীম একটা ক্যানভাসে পৃথিবীটা হচ্ছে একটা ডট মাত্র। এই ডটকে ন্যানো ভাগে ভাগ করলে আমাদের দেশ, আমাদের শহর, এই রূমটা, আরও ছোট্ট আমরা একজন।
তো, এই ক্যানভাসে অসীম একটা ছবি আঁকতে হবে অদেখা ভুবনের!
বুদ্ধিমানরা কি বলেন আমি জানি না, আমার বুকের গহীন থেকে হাহাকার করে উঠে- আমি জানি না, আমি কিচ্ছু জানি না!
*Das ist meine Welt. Wenn es auch Ihnen gehört, habe ich kein Problem mit Ihnen. Es gibt keinen Grund mit Ihnen zu kämpfen. Weil wir sind Freunde, Verwandte. * この地球は私のものです。たまたまこの地球はあなたのものでもあれば、私はあなたと争わない。あなたは私の兄弟、親族ですから。 * This planet belongs to me. By any chance, if you also claim the ownership of this planet, I have no complain, even I should not have any complain about that. Because you are my brother-relative.
Friday, June 29, 2007
নাস্তিক- আস্তিক!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
1 comment:
মাহমেদ সাহেবের লেখার প্রবাহ ঠিকই আছে...তবে কিছু অনুমান করেছেন, কিছু ব্যাপারে ভ্রান্তি কাটানোর চেষ্টা করেন নাই...
অনেক আগে মনে হয় একবার আলাপ হয়েছিলো দুলাইনের।
যাক! পুরষ্কার জেতায় অভিবাদন।
তবে আরো যুক্তি প্রখর হবার আহ্বান জানাবো, বাংলা ভাষায় এর পরিমান বড়ো কম।
আরিফ।
Post a Comment